কাসিদায়ে শাহ নেয়ামাতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ভবিষ্যৎবাণী ও
প্রিয় বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি এবং গাজওয়াতুল হিন্দঃ মহান আল্লাহ পাক উনার প্রদত্ত কুদরতি
ইলহাম উনার জ্ঞান দ্বারা আজ থেকে প্রায় সাড়ে আটশত বছর পুর্বে হিজরী ৫৪৮ সাল
মোতাবেক ইসায়ী ১১৫২ সালে শাহ নেয়ামতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিখ্যাত
কাব্যগুলো রচনা করেন। মহান
আল্লাহ পাক তিনি অনেক ওলী আউলিয়া পীর মাশায়েখ রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনাদের উনার
কুদরত থেকে অসাধারন কিছু জ্ঞান দিয়েছেন যেমন উপমহাদেশের বিখ্যাত অলি আল্লাহ শাহ
ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ইলহামী ইলম দিয়ে
বিখ্যাত গ্রন্থ সাওয়াতিউল ইলহাম রচনা করেন, অনুরুপ হযরত শাহ্ নেয়ামতউল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন একজন
অনেক উচু মাপের ওলী আল্লাহ।
তাই
উনি সেই ইলমে লাদুনীর (মহান আল্লাহ পাক উনার প্রদত্ত জ্ঞান) কিছু অংশ এই কবিতায়
প্রকাশ করেছেন যা আপনি যদি এই কবিতাটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে সহজেই বুঝতে
পারবেন যদি ইসলামি জ্ঞানের মাত্রা একটু বেশি থাকে।
এই সম্মানিত পবিত্র কাসিদা শরিফ লিখার
পর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত প্রতিটি ভবিষ্যদ্বানী হুবহু মিলেছে বিন্দুমাত্র
ব্যবধান হয়নি। ব্রিটিশ
বড় লাট লর্ড কার্জনের শাসনামলে (১৮৯৯-১৯০৫) পবিত্র কাসিদা শরিফ খানা উনার প্রচার
নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কবিতার
৩৭ নং প্যারা থেকো খেয়াল করুন।
কারন
এর পুর্বের লাইন গুলো অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাওয়ায় শুধুমাত্র বর্তমান ও ভবিষতে কি
ঘটতে পারে এটাই আমাদের দেখার বিষয়।
আমারা দুর্ভাগ্যবান বলতে পারেন! কারন
পাকিস্তানি মুসলিম ভাইদের মাঝে পবিত্র কাসিদা শরিফ বেশ পরিচিত, প্রসিদ্ধ এবং সমাদৃত অথচ
বাংলাদেশে এ সম্পর্কে আমাদের কোনো খোঁজই নেই।
কাসীদায়ে শাহ নেয়ামাতুল্লাহ রহমতুল্লাহি
আলাইহি সম্পর্কে আরো জানতে এই লেখাটি পড়তে পারেন।
পবিত্র কাসিদা শরিফ টি পিডিএফ আকারে
পড়ুন ও ডাউনলোড করুন এখান থেকে।
হযরত
শাহ নেয়ামতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাসিদা শরিফ এর উর্দু পিডিএফ ডাউনলোড
লিংকঃ
(https://goo.gl/dnRMps) ১.৩
মেগাবাইট ৬০ পৃষ্টা
কবিতা টি ইসলামিক ফাউন্ডেসনের প্রকাশিত
"কাসিদায়ে সাওগাত" বইতে পাবেন। এই ছাড়াও মদিনা পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত ''মুসলিম পুনঃজাগরণ
প্রসঙ্গ ইমাম মাহদি'' বইতেও
পাবেন। যারা
উর্দু বুঝেন তারা এই নিয়ে ৮ পর্বের সিরিজ আলোচনা শুনতে পারেন, পাকিস্তানী বিশেষজ্ঞ
জায়েদ হামিদ খুব সুন্দর করে ব্যাখ্যা সহ কারে উনার সকল ভবিষ্যৎ বাণী (ইলহাম) তুলে
ধরেছেন।
বাংলা ভাষায় রুহুল আমীন খান অনূদিত শাহ
নিয়ামতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার একটি কবিতা ১৯৭০/৭১ এর দিকে এদেশে প্রকাশিত
হয়েছিল। কবিতাটিতে
৫৪ টি প্যারা রয়েছে। কোনো
এক ভাই সেটি অনলাইনে সংকলন করেছিলেন, আমি নতুন করে পরিমার্জিত করে পুনঃসম্পাদন করে নিম্নে তা দিলাম
টিকা ছাড়া।
(১)
পশ্চাতে রেখে এই ভারতবর্ষের অতীত কাহিনী
যতো
আগামী দিনের সংবাদ কিছু বলে যাই অবিরত।
(২)
দ্বিতীয় দাওরে হুকুমত হবে তুর্কী
মুঘলদের
কিন্তু শাসন হইবে তাদের অবিচার যুলুমের।
(৩)
ভোগ বিলাসে আমোদ-প্রমোদে মত্ত থাকিবে
তারা
হারায়ে ফেলিবে স্বকীয় মহিমা তুর্কী
স্বভাব ধারা।
(৪)
তাদের হারায়ে ভিন দেশী হবে শাসন
দণ্ডধারী
জাকিয়া বসিবে, নিজ নামে তারা মুদ্রা করিবে
জারি।
(৫)
এরপর হবে রাশিয়া-জাপানে ঘোরতর এক রণ
রুশকে হারিয়ে সেই রণেতে বিজয়ী হবে
জাপানীগণ।
(৬)
শেষে দেশ-সীমা নিবে ঠিক করে মিলিয়া উভয়
দল
চুক্তিও হবে, কিন্তু তাদের অন্তরে রবে
ছল।
(৭)
ভারতে তখন দেখা দিবে প্লেগ আকালিক
দুর্যোগ
মারা যাবে তাতে বহু মুসলিম হবে
মহাদুর্ভোগ।
(৮)
এরপর পরই ভয়াবহ এক ভূকম্পনের ফলে
জাপানের এক তৃতীয়াংশ যাবে হায় রসাতলে।
(৯)
পশ্চিমে চার সালব্যাপী তখন হবে ঘোরতর
মহারণ
প্রতারণা বলে হারাবে এ রণে জীমকে আলিফগণ।
(১০)
এ সমর হবে বহু দেশ জুড়ে অতীব ভয়ঙ্কর
নিহত হইবে এতে এক কোটি ত্রিশ লক্ষ নারী
ও নর।
(১১)
অতঃপর হবে রণ বন্ধের চুক্তি উভয় দেশে
কিন্তু তা হবে ক্ষণভঙ্গুর টিকিবে না
অবশেষে।
(১২)
নিরবে চলিবে মহাসমরের প্রস্তুতি বেশুমার
‘জীম’ ও
আলিফে খ- লড়াই ঘটিতে থাকিবে বারংবার।
(১৩)
চীন ও জাপানে দু’দেশ যখন লিপ্ত থাকিবে
রণে
নাসারা তখন রণ প্রস্তুতি চালাবে
সঙ্গোপনে।
(১৪)
প্রথম মহা-সমরের শেষে একুশ বছর পর
শুরু হবে ফের আবারো তখন ভয়াবহ দ্বিতীয়-সমর।
(১৫)
ভারতবাসী এই সমরে যদিও সহায়তা দিয়ে যাবে
তার থেকে তারা প্রার্থিত কোন সুফল
নাহিকো পাবে।
(১৬)
বিজ্ঞানীগণ এ সমরকালে হবে অতিশয় আধুনিক
করিবে তৈয়ার অতি ভয়াবহ হাতিয়ার আনবিক।
(১৭)
গায়েবী ধনির যন্ত্র বানাবে নিকটে আসিবে
দূর
প্রাচ্যে বসেও শুনিতে পাইবে প্রতীচীর
গান-সুর।
(১৮)
মিলিত হইয়া ‘প্রথম আলিফ’ ‘দ্বিতীয় আলিফ’ দ্বয়
গড়িয়া তুলিবে রুশ-চীন সাথে আতাত
সুনিশ্চয়।
(১৯)
ঝাপিয়ে পড়িবে ‘তৃতীয় আলিফ’ এবং দু’জীম ঘাড়ে
ছুড়িয়া মারিবে গজবী পাহাড় আনবিক
হাতিয়ারে।
(২০)
জগৎ জুড়িয়া ছয় সালব্যাপী এই রণে ভয়াবহ
হালাক হইবে অগিণত লোক ধন সম্পদ সহ।
(২১)
মহাধ্বংসের এ মহাসমর অবসানে অবশেষে
নাসারা শাসক ভারত ছাড়িয়া চলে যাবে নিজ
দেশে
কিন্তু তাহারা থাকিবার লাগি চিরকাল ভারতবাসীর
মনে
মহাক্ষতিকর বিষাক্ত বীজ বুনে যাবে সেই
সনে।
(২২)
ভারত ভাঙ্গিয়া হইবে দু’ভাগ শঠতায় নেতাদের
মহাদুর্ভোগ দুর্দশা হবে দু’দেশেরি মানুষের।
(২৩)
মুকুটবিহীন নাদান বাদশা পাইবে শাসনভার
কানুন ও তার ফর্মান হবে আজেবাজে একছার।
(২৪)
দুর্নীতি ঘুষ কাজে অবহেলা নীতিহীনতার
ফলে
শাহী ফর্মান হবে পয়মাল দেশ যাবে রসাতলে।
(২৫)
হায় আফসোস করিবেন যত আলেম ও জ্ঞানীগণ
মূর্খ বেকুফ নাদান লোকেরা করিবে
আস্ফালন।
(২৬)
পেয়ারা নবীর (সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) উম্মতগণ ভুলিবে আপন শান
ঘোরতর পাপ পঙ্গিলতায় ডুবিয়া থাকিবে
গাফেল মুসলমান।
(২৭)
কালের চক্রে স্নেহ-তমীজের ঘটিবে যে
অবসান
লুণ্ঠিত হবে মানী লোকদের ইজ্জত ও সম্মান।
(২৮)
উঠিয়া যাইবে বাছ ও বিচার হালাল ও
হারামের
লজ্জা রবে না, লুণ্ঠিত হবে ইজ্জত
নারীদের।
(২৯)
পশুর অধম হইবে তাহারা ভাই-বোনে, মা-বেটায়
জেনা ব্যাভিচারে হইবে লিপ্ত পিতা আর
কন্যায়।
(৩০)
নগ্নতা আল অশ্লীলতায় ভরে যাবে সব গৃহ
নারীরা উপরে সেজে রবে সতী ভেতরে বেচিবে
দেহ।
(৩১)
উপরে সাধুর লেবাস ভেতরে পাপের বেসাতি
পুরা
নারী দেহ নিয়ে চালাবে ব্যবসা ইবলিসের
বন্ধুরা।
(৩২)
নামায ও রোজা, হজ্জ্ব যাকাতের কমে যাবে
আগ্রহ
ধর্মের কাজ মনে হবে বোঝা দারুন ও
দুর্বিষহ।
(৩৩)
কলিজার খুন পান করে বলি শোন হে বৎসগণ
খোদার ওয়াস্তে ভুলে যাও সব নাসারার আচরণ।
(৩৪)
পশ্চিমা ঐ অশ্লীলতা আর নগ্নতা বেহায়াপনামি
ডোবাবে তোমাদের, খোদার কঠোর গজব আসিবে
নামি।
(৩৫)
ধ্বংস নিহত হবে মুসলিম বিধর্মীদের হাতে
হবে নাজেহাল, ছেড়ে যাবে দেশ ভাসিবে
রক্তপাতে।
(৩৬)
মুসলমানের জান-মাল হবে খেলনা-মুল্যহত
রক্ত তাদের প্রবাহিত হবে সাগর স্রাতের
মত।
(৩৭)
এরপর যাবে ভেগে নারকীরা পাঞ্জাব
কেন্দ্রের
ধন সম্পদ আসিবে হাতে দখলে মুমিনদের।
(৩৮)
অনুরূপ হবে পতন একটি শহর মুমিনদের
তাহাদের ধনসম্পদ যাবে দখলে হিন্দুদের।
(৩৯)
হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ সেখানে চালাইবে তারা ভারি
ঘরে ঘরে হবে ঘোর কারবালা ক্রন্দন
আহাজারি।
(৪০)
মুসলিম নেতা-অথচ বন্ধু কাফেরের তলে তলে
মদদ করিবে অরি কে সে এক পাপ চুক্তির ছলে।
(৪১)
প্রথম অক্ষরেখায় থাকিবে শীনে’র অবস্থান
শেষের অক্ষরে থাকিবে নূন’ ও বিরাজমান
ঘটিবে তখন এসব ঘটনা মাঝখানে দু’ঈদের
ধিক্কার দিবে বিশ্বের লোক জালিম
হিন্দুদের।
(৪২)
মহরম মাসে হাতিয়ার হাতে পাইবে মুমিনগণ
ঝঞ্বারবেগে করিবে তাহারা পাল্টা আক্রমণ।
(৪৩)
সৃষ্টি হইবে ভারত ব্যাপিয়া প্রচণ্ড
আলোড়ন
‘উসমান’ এসে
নিবে জেহাদের বজ্র কঠিন পণ।
(৪৪)
‘সাহেবে কিরান-‘হাবীবুল্লাহ’ হাতে নিয়ে শমসের
খোদায়ী মদদে ঝাপিয়ে পড়িবে ময়দানে যুদ্ধের।
(৪৫)
কাপিবে মেদিনী সীমান্ত বীর গাজীদের
পদভারে
ভারতের পানে আগাইবে তারা মহারণ হুঙ্কারে।
(৪৬)
পঙ্গপালের মত ধেয়ে এসে এসব ‘গাজীয়ে দ্বীন’
যুদ্ধে জিতিয়া বিজয় ঝাণ্ডা করিবেন
উড্ডিন।
(৪৭)
মিলে এক সাথে দক্ষিণী ফৌজ ইরানী ও আফগান
বিজয় করিয়া কবজায় পুরা আনিবে
হিন্দুস্তান।
(৪৮)
বরবাদ করে দেয়া হবে দ্বীন ইসলামের ছিলো
যারা দুশমন
অঝোর ধারায় হইবে তখন মহান আল্লা’র রহমত বর্ষণ।
(৪৯)
দ্বীনের বৈরী ছিলো শুরুতে ছয় হরফেতে নাম
প্রথম হরফ গাফ সে কবুল করিবে দ্বীন
ইসলাম।
(৫০)
মহান আল্লা’র খাস রহমতে হবে
মুমিনেরা খোশদিল
হিন্দু রসুম-রেওয়াজ এ ভূমে থাকিবে না এক
তিল।
(৫১)
ভারতের মত পশ্চিমাদেরও ঘটিবে বিপর্যয়
তৃতীয় বিশ্ব সমর সেখানে ঘটাইবে মহালয়।
(৫২)
এ রণে হবে ‘আলিফ’ এরূপ পয়মাল মিসমার
মুছে যাবে দেশ, ইতিহাসে শুধু নামটি
থাকিবে তার।
(৫৩)
যত অপরাধ তিল তিল করে জমেছে খাতায় তার
শাস্তি উহার ভুগতেই হবে নাহি পাপে
নিস্তার
কুদরতী হাতে কঠিন দণ্ড দেয়া হবে তাহাদের
ধরা বুকে শির তুলিয়া নাসারা দাড়াবে না
কভু ফের।
(৫৪)
যেই বেঈমান দুনিয়া ধ্বংস করিল আপন কামে
নিপাতিত শেষকালে সে যাবে নিজেই
জাহান্নামে।
(৫৫)
রহস্যভেদী যে রতন হার গাথিলাম আমি গায়েবী
মদদ লভিতে,
আসিবে উস্তাদসম কাজে তাহা ভবিষ্যতে।
(৫৬)
অতিসত্বর যদি, মহান আল্লা'র মদদ পাইতে চাও
উনারই হুকুম তালিমের কাজে নিজেকে বিলিয়ে
দাও।
(৫৭)
'কানা জাহুকার'
প্রকাশ
ঘটার সালেই প্রতিশ্রুত
ইমাম মাহাদি (আলাইহিস সালাম) দুনিয়ার
বুকে হবেন আবির্ভূত।
(৫৮)
চুপ হয়ে যাও ওহে নেয়ামত এগিও না মোটে আর
ফাঁস করিও না খোদার গায়বী রহস্যের ভাণ্ডার
এ কাসিদা বলা করিলাম শেষ 'কুনুত কানয' সালে
অদ্ভুত এই রহস্যের কাসিদা ফলিবে কালে
কালে।
টীকাঃ 'কুনুত কানয সাল'
অর্থাৎ
হিজরি সন ৫৪৮ মোতাবেক ১১৫৮ ইংরেজি সাল হচ্ছে এ কাসিদার রচনা কাল। এটা আরবি হরফের নাম
অনুযায়ী সাংকেতিক হিসাব।
0 facebook: