ওহাবী, সালাফি, লা মাযহাবী, জাকির নায়েকি ইত্যাদি বাতিল ফির্কা খুব সহজেই যেকোন পবিত্র হাদীস শরীফকে জাল/মওজু/মুনকার ইত্যাদি বলে প্রত্যাখ্যান করে। অথচ পবিত্র হাদীস সম্পর্কে কথা বলতে কতটা সতর্ক থাকতে হবে সে সম্পর্কে এসকল অজ্ঞ বাতিল ফির্কাদের কোন ধারনাই নাই। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা’লা আনহুমগন উনারা এত নৈকট্য এবং মর্যাদার অধিকারী হওয়ার পরও প্রতিটা হাদীস শরীফ যে কত সতর্ক ভাবে বর্ননা করতেন সেটা কল্পনার বাইরে।
বিখ্যাত মুহাদ্দিস এবং উছুলে হাদীস বিশারদ, মুফতীয়ে আযম হযরত আমীমুল ইহসান মুজাদ্দেদী বরকতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার "তারীখে ইলমে হাদীস" কিতাবে বর্ননা করেন-"হাদীস শরীফ বর্নার ব্যাপারে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা’লা আনহুমগন অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতেন। হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোন কথা মুবারক উচ্চারণ করতে উনারা শিউরে উঠতেন।"
বিখ্যাত ছাহাবী হযরত জায়েদ ইবনে আরকাম রদ্বিয়াল্লাহু তা’লা আনহু উনার নিকট কেউ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাদীস শরীফ শুনতে চাইলে তিনি বলতেন - الحديث عن رسول الله صلي الله عليه و سلم شديد
অর্থ: হাবীবুল্লাহ হুজুরে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে হাদীস শরীফ বর্ননা করা খুবই কঠিন।"
দলীল-
√ ইবনে মাজাহ শরীফ।
একদিন বিখ্যাত ফক্বীহ ছাহাবী হযরত ফক্বীহুল উম্মত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তা’লা আনহু হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাদীস শরীফ বর্ননা শুরু করলেন। সে সময় তিনি মাথা মুবারক নিচু করে দাঁড়িয়ে গেলেন। জামা মুবারকের গুটলি মুবারক খুলে ফেললেন। চোখ মুবারক দিয়ে অশ্রু মুবারক প্রবাহিত হতে লাগলো।"
দলীল-
√ ইবনে মাজাহ শরীফ।
√ তারিখী ইলমে হাদীস ২৪ পৃষ্ঠা।
আফদ্বালুন নাস, বা'দল আম্বিয়া, হযরত আবু বকর সিদ্দিক রদ্বিয়াল্লাহু তা’লা আনহু উনার মত ব্যক্তিত্ব মাত্র ১৪২ খানা হাদীস শরীফ বর্ননা করেছেন। অথচ তিনি ছিলেন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সবচাইতে নৈকট্যধারী, এবং সর্বক্ষনের সঙ্গী।
অনেক ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম সাবধানতার জন্য কোন হাদীস শরীফই বর্ননা করেন নাই।"
দলীল-
√ তারিখে ইলমে হাদীস ২৫ পৃষ্ঠা
প্রায় সোয়া লক্ষ সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা’লা আনহুম আজমাঈন উনাদের মধ্যে মাত্র সাত জন "মুকাছছিরীন রাবী"। অর্থাৎ সর্বাধিক হাদীস শরীফ বর্ননাকারী সাত জন।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমরা হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নামে যা বলি, ভয় করে বলি। বেশি কথা বলতে সাহস করি না।"
দলীল-
√ আল ইছাবা ৪র্থ খন্ড ২০৬ পৃষ্ঠা।
√ তারিখে ইলমে হাদীস ২৪
দেখুন স্বয়ং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা’লা আনহুমগন উনারা পবিত্র হাদীস শরীফ বর্ননা করতে কত সতর্ক ছিলেন। অথচ বর্তমানে কিছু বাংলা অনুবাদ পড়ে মুফতী, শুদ্ধ ভাবে সূরা ফাতিহা পাঠ করার যোগ্যতাহীন অজ্ঞ লা মাযহাবী, সালাফী, ওহাবীরা হাদীস শরীফ দেখলেই ওইটা জাল, ওইটা মওজু ওইটা জয়িফ ইত্যাদি বলে মুখে ফেনা তোলে। অথচ এরা একবারও চিন্তা করে না এদের এহেন বেয়াদবি তাদের নিশ্চিত জাহান্নামী করে ফেলবে।
স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন-"যে আমার নামে মিথ্যা কথা বলে সে যেন দুনিয়া থাকতেই তার স্থান জাহান্নামে নির্ধারণ করে ফেলে।"
দলীল-
√ সহীহ বুখারী শরীফ ১১০ নং হাদীস শরীফ।
এখন ফিকির করুন ওহাবী, লা মাযহাবী, সালাফী, লা মাযহাবীরা যে সকল পবিত্র হাদীস শরীফ সমূহকে জাল/মওজু/মুনকার বলে গলাবাজি করে সেসকল হাদীস শরীফ যদি জাল বা মওজু না হয় তবে তাদের কি পরিনতি হবে ?
হুজুরে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হাদীস শরীফকে বানোয়াট বলে ঈমান নিয়ে দুনিয়া থেকে যেতে পারবে ? নাকি জাহান্নামের অতল তলে নিক্ষিপ্ত হবে ?
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ পোষ্ট টা পড়ে যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্স এ আপনার মতামত জানাবেন আর আপনার বন্ধু বান্দব দের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন্না, আসসালামু আলাইকুম, ফি আমানিল্লাহ !!! আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সঠিক বুজ দান করুন।
0 facebook: