যৌতুক প্রথায় বাংলাদেশের ঠিক বিপরীত
চিত্র ওহাবিদের দ্বারা পরিচালিত বর্তমান সৌদি আরবে। অর্থাৎ বিয়ে করতে হলে ছেলে পক্ষকে লক্ষ লক্ষ রিয়াল
পরিশোধ করতে হয় মেয়ের পরিবারকে। ফলে বাবার হোটেলে বড় হওয়া যুবসমাজের এক বিরাট অংশ
হাই-রেটে যৌতুক দিতে অনেক ক্ষেত্রে অপারগ হওয়ায় বিয়ের পিড়িতে না বসেই পার করছে
বিয়ের বয়স। বিবাহিতদের মধ্যেও বাড়ছে ডিভোর্স। অন্যদিকে দেশটিতে রেগুলার পতিতালয় বা
নাইটক্লাব না থাকায় সৌদি পুরুষরা চাইলেই যখন-তখন পূরণ করতে পারে না জৈবিক চাহিদা।
ফলে বহুবিধ বিকৃত রুচির পাশাপাশি ‘নগদ
নারায়ণ’ হিসেবে
এর প্রভাব গিয়ে পড়ে ঘরের ভেতর থাকা ভিনদেশি হাউজমেইড তথা নারী গৃহকর্মীর ওপর। পবিত্র
ভূমিতে মহাসম্মানিত ক্বাবা শরীফ এবং মদিনা শরীফ কে বুকে ধারণ করা জাজিরাতুল আরব আজ
সৌদি আরব হয়ে এভাবেই ভয়াবহ যিনা ও সামাজিক সঙ্কটের মুখে। অথচ জেনেও না জানার, শুনেও না শুনার ভূমিকায়
বাংলাদেশ সরকার!
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যে দেশের প্রধানমন্ত্রী
একজন গর্বিত নারী, যে
দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ সংসদে বিরোধী নেত্রী এমনকি পার্লামেন্টের স্পিকারও
নারী, যে
দেশে রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধান বিচারপতির আসনও অলংকৃত করা নারীদের জন্য হয়তো
অনেকটাই সময়ের ব্যাপার,
সোনার
বাংলার হিরার টুকরা নারীদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারো আছে কি? বাংলাদেশের শ্রমমন্ত্রীর
সৌভাগ্য, ৮শ’ রিয়ালে বিক্রি হয়ে যাওয়া
এই নারীদের মধ্যে তার পরিবারের কেউ থাকবে না। ২০১৫ সালে আজকের এই আধুনিক যুগে
স্বদেশি মা-বোনদের ‘নিশ্চিত
যৌনদাসী’ হিসেবে
সৌদি আরবে চালান করতে কি তার একটুও বিবেকে বাধে না? মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সবিনয়ে বলবো, ডিজিটাল বাংলাদেশেই কেন
করছেন না তাদের কাজের সুযোগ?
কেন
ঠেলে দিচ্ছেন মরুপ্রান্তরের বর্তমান অহাবিদের জান্নাত ভেঙ্গে তৈরি করা জাহান্নামে?
সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মী প্রেরণ ইস্যুতে
‘নিরব’ বাংলাদেশের ‘মুখচেনা’ নারীবাদীদের কথা না
বললেই নয়। হাতা-কাটা ব্লাউজে নাভির নিচে শাড়ি আপনারা পরতেই পারেন, সবই আপনাদের স্বাধীনতা।
দিন শেষে ক্লাবে ক্লাবে ঘুরে গাড়ি আর ফ্ল্যাটের ধান্ধা করবেন, এতেও আমাদের মাথাব্যথার
কিছু নেই। তবে মনে রাখবেন,
গ্রাম-গঞ্জের
নিরীহ মা-বোনরা কিন্তু আপনাদের মতো ‘করপোরেট’
ধান্ধা
করেন না। সৌদি আরবের ঘরে ঘরে ভিনদেশি হাউজমেইডদের ওপর ভয়াবহ শারীরিক নির্যাতনের
পাশাপাশি ঢালাও যৌন অত্যাচারের মুখে পৃথিবীর বহু দেশই যেখানে সৌদিতে নারী গৃহকর্মী
প্রেরণ বন্ধ করে দিয়েছে। সেখানে আপনাদের জ্ঞাতসারেই বাংলার মা-বোনদের
ইজ্জত-সম্ভ্রম নিলামে তোলার প্রস্তুতি সম্পন্ন হচ্ছে আজ। কী বিচিত্র নারীবাদের ‘বাংলাদেশী ভার্সন’!
‘নারীবাদী’
মানেটা
কি? নারীবাদী
মানে কি বাংলাদেশের অবলা নারীদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়া? সৌদি আরবে গৃহকর্মী
প্রেরণের নামে ‘যৌনদাসী’ সাপ্লাই ইস্যুতে ঢাকার ‘সো-কল্ড’ নারীবাদীরা নিরব কেন? মুখচেনা এক নারীবাদী
ফেসবুক ইনবক্সে আমাকে জানালেন,
‘আমাদের
নারীদের সৌদি আরবে যেতে দিন,
উন্নয়নে
বাধা দেবেন না’।
তার কাছে সবিনয়ে জানতে চাইলাম,
‘উন্নয়ন’ মানে কি নিরীহ মা-বোনদের
জেনে-শুনে বিষ পান করিয়ে যৌনদাসত্ব বরণ করিয়ে আরব্য জানোয়ারদের হাতে তুলে দেয়া? আরো জানতে চাইলাম, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে
কেন আমাদের মা-বোনদের ভিন্ন পেশায় অন্য সব দেশে পাঠানো হচ্ছে না? যুক্তিতে কুলিয়ে উঠতে না
পেরে ভদ্রমহিলা লিখলেন,
‘বাই
বাই ফর এভার’!
তবে যে যাই বলুক, ‘এবার পবিত্র রমজানে
গৃহকর্মী সঙ্কটের মুখে সৌদি আরব’
-জেদ্দা
ভিত্তিক আরব নিউজে এমন সংবাদ দেখে ভালোই লাগলো, কারণ নবী-রাসুল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্র ভূমির ‘কলঙ্ক’ তথা চরিত্রহীন সৌদিরা
এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে,
গরীব
দেশের অবলা নারীদের বাসা-বাড়িতে কাজের জন্যে এনে শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি ‘সকালে বাবা বিকেলে ছেলে’ মিলেমিশে ভোগ করার
পরিণতি। সবকিছু জেনেই বাংলাদেশ সরকার কোমর বেঁধে নামে বাংলার নিরীহ নারীদের আরব্য
জানোয়ারদের মুখে ঠেলে দিতে। ৫ লাখ ১০ লাখ নিবন্ধনের আশায় মন্ত্রী মশাই বুক বাঁধলেও
সুখকর সংবাদ এই যে, স্যোশাল
মিডিয়াসহ রকমারী প্রচার মাধ্যমের আশীর্বাদে ৫ হাজার নারীও জাহান্নামের চৌরাস্তায়
নাম লেখায়নি। বাংলার মা-বোনদের তাই হাজারো সালাম!
0 facebook: