হোলি পূজার সময় নারী হেনস্থার ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ৩ তরুণকে নিয়ে
ডিএমপি ও কোতয়ালী থানার দেয়ার তথ্যের মধ্যে গরমিল লক্ষ্য করা গেছে যেমনঃ- ডিএমপির’র ওয়েবসাইটে মার্চ
১৫, ২০১৭, ১৭:০৩ সময়ে বলা হচ্ছে-কোতয়ালী থানার শাঁখারীবাজারে হোলি উৎসবকে
কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো মোঃ আকাশ (১৯), মোঃ সিফাত (২০), ও মোঃ মামুন (১৮)। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ জানানো হলে পুলিশ দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয় এবং অভিযান
পরিচালনা করে এ ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার করে। (http://bit.ly/2mwZVDZ, আর্কাইভ- http://archive.is/HL1GT)
১৫ই মার্চ বিকাল ৫:০৩ এর খবর অনুযায়ী তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু স্পষ্ট বলা আছে অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার ভিত্তিতে নয়। পুলিশের এই তথ্যটুকু এই প্রমাণ করে পুলিশ অপরাধীদের শুধু গ্রেফতার
করেছে। উল্লেখ্য, বিকাল ৫টায় ঢাকা সিএমএম আদালত বন্ধ হয়ে যায়। সুতরাং মামলা দিয়ে বিকাল ৫টার পর কোর্টে তোলা কিংবা কারাগারে
প্রেরণ কোনটাই সম্ভব নয়।
এবার আসি বাংলাট্রিবিউনের রিপোর্টেঃ- সেখানে মার্চ ১৫, ২০১৭ তারিখের ২০:১২ মানে রাত ৮ টার খবরে বলা
হচ্ছে-পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজারে হোলি উৎসবের সময় দুই বোনকে জোর করে রঙ মাখানোর অভিযোগে
তিন তরুণের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তারা এখন কারাগারে
আছে। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)
এবিএম মশিউর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ভুক্তভোগী দুই বোনের বড় ভাই আহাদ ফেরদাউস এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় বখাটেদের বিরুদ্ধে
অভিযোগ এনে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ আইনের ১০ (৩০) ধারায় একটি মামলা করেন। এরপর আকাশ (১৯), মো. সিফাত (২০) ও মো. মামুন (১৮) তিন জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে
আদালতে নিলে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। বখাটেরা সবাই পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ভাড়াটিয়া। (http://bit.ly/2ndjg0I, আর্কাইভ http://archive.is/DC1tW)
রাত ৮টার মধ্যে মামলা হলো, কিন্তু তাদের কোর্টে তুলতে হবে পরের দিন, মানে ১৬ তারিখ, কারণ ১৫ তারিখ বিকাল ৫টায় কোর্ট বন্ধ হয়ে
গেছে। কোর্টে তোলার পর সিদ্ধান্ত হবে তাকে রিমান্ডে
নেয়া হবে,
নাকি কারাগারে প্রেরণ
করা হবে। কিন্তু ৫টার খবরে গ্রেফতার, মামলা নাই। কিন্তু ৮টার খবরে কারাগারে এটা যারা মামলা মোকাদ্দমা সম্পর্কে ধারণা রাখেন, তারা বুঝবেন একে গোজামিল দেয়া ছাড়া কিছু না। কারণ মামলার পর (৫ টার খবরে মামলা হয় নাই) কোর্টে তুলতে হয়, তারপর কারাগারে পাঠাতে হয়। কিন্তু ৫টায় তো কোর্ট বন্ধই হয়ে গেছে, কারাগারে পাঠাবে কিভাবে ???
স্বাভাবিক ছিলো, যেহেতু ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া (জনগণের প্রতিবাদস্বরূপ) ভিডিও দেখে
অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাই
ডিএমপির প্রথম উচিত ছিলো গ্রেফতারকৃতদের ছবি প্রকাশ করা, কিন্তু সেটা তারা করেনি। বরং ডিএমপির প্রকাশিত খবরে উদ্দেশ্যমূলক কিছু শব্দ ব্যবহার করতে
দেখা যায়,
যা ডিএমপির খবরটিকে
প্রশ্নবিদ্ধ করে। যেমন-“গ্রেফতারকৃতরা হলো মোঃ আকাশ (১৯), মোঃ সিফাত (২০), ও মোঃ মামুন (১৮)।........বখাটেদের এ ধরণের আচরণ অনাকাঙ্খিত এবং তা ধর্মীয় উৎসবটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে বলে
বিভিন্নজন মন্তব্য করেন।”
আমি বলবো- ডিএমপির খবরে ‘বিভিন্নজন’ টাইপের
আগান্তুক শব্দের ব্যবহার রহস্য অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। খবরই বলে দিচ্ছে পুলিশ প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা করছে।
0 facebook: