যদিও
বাংলাদেশের সংবিধানে লিখা রয়েছে “মহান আল্লাহ পাক উপর পূর্ন আস্হা ও বিশ্বাস”। কিন্তু সেই সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতার এবং সকল সম্প্রদায়ের সমান অধিকারের
নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে, একইসঙ্গে ইসলামকে প্রধান ধর্ম ঘোষণা করে নিজেকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র
হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। যা ইসলামি
শরিয়তের পরিপন্থি। তাই ইসলামী আইন ও
গনতন্ত্রের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরার সামান্য চেষ্ট্রা করলাম নিচে।
নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লাম ইসলাম প্রতিষ্ঠার
ক্ষেত্রে গণতন্ত্রকে বা প্রচলিত অন্য কোনো ব্যবস্থাপনাকে মেনে নেননি। নেওয়ার প্রশ্নই আসেনা, কারণ তিঁনি কিতাব প্রাপ্ত হয়েছেন মহান আল্লাহ পাক রব্বুল য়ালামিনের কাছ থেকে, এ্যারিষ্টটল বা প্লেটোর কাছ থেকে নয়
এমনকি রোমের বাদশাহের কাছ থেকেও নয়, তাই ইসলামী রাজনিতীতে গনতন্ত্র মেনে
নেয়ার কোন সুযোগ নাই।
আজকের পৃথিবীর
গণতন্ত্রের জন্মদাতা হলো এ্যরিষ্টটল এবং সে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে এই ব্যবস্থাপনা তৈরী
করেছে। এরপর তারই পথ ধরে যুগে
যুগে গণতন্ত্রের অনেক প্রবক্তা এসেছে এবং গণতন্ত্রের মূলসূত্র ঠিক রেখে তাকে
নানাভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে, নানাভাবে সাজিয়ে
সমাজ ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনেছে।
যাই হউক, এখন মুছলিম হিসেবে আমরা যদি গণতন্ত্র সম্পর্কে ফায়ছালা চাই তাহলে
আমাদের ফায়ছালার একমাত্র উৎস হলেন কুরআন-ছুন্নাহ।
পবিত্র আল-কুরআনে মহান আল্লাহ পাক উনার বিঁধান ও গণতন্ত্রের
মধ্যে কি কি পার্থক্য রয়েছে তা পেশ করা হলোঃ
# আল-কুরআনঃ “যাবতীয় ক্ষমতা শুধুমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। ” [২:১৬৫]
গনতন্ত্রঃ জনগনই
সকল ক্ষমতার উৎস ।
# আল-কুরআনঃ “মহান আল্লাহ পাক ছাড়া কারও বিধান দেবার ক্ষমতা নেই।”
[১২:৪০]
গনতন্ত্রঃ আইন
প্রণয়নের ক্ষমতা জনগন, সংসদ, মন্ত্রী-এমপির (মদ, পতিতালয় বৈধও হতে পারে) ।
# আল-কুরআনঃ মহান আল্লাহ তা’য়ালা সার্বভৌমত্বের মালিক। [৩:২৬]
গনতন্ত্রঃ
সার্বভৌমত্বের মালিক জনগন।
# আল-কুরআনঃ “(হে নবী ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লাম) আপনি যদি
অধিকাংশের রায়কে মেনে নেন তাহলে তারা আপনাকে দ্বীন থেকে বিচ্যুত করে ছাড়বে।”
[৬:১১৬]
গনতন্ত্রঃ
অধিকাংশের রায়ই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
# আল-কুরআনঃ “আল্লা’হ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। ” [২:২৭৫]
গনতন্ত্রঃ
গণতন্ত্র সূদভিত্তিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করে।
# আল-কুরআনঃ ব্যভিচার শাস্তিযোগ্য অপরাধ। [২৪:২]
গনতন্ত্রঃ সংসদ
পতিতালয়ের (যিনা) লাইসেন্স দেয়।
# আল-কুরআনঃ সৎকর্ম ও খোদা ভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। [৫:২]
গনতন্ত্রঃ
অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রার্থী নিজের সুনাম ও প্রতিদ্বন্দ্বীর কুৎসা রটায়।
# আল-কুরআনঃ মদ, জুয়া, লটারী নিষিদ্ধ। [৫:৯০]
গনতন্ত্রঃ মদ এর
লাইসেন্স দেয়। জুয়া, লটারী বৈধ।
# আল-কুরআনঃ “হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। (কেননা) তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই
অন্তর্ভুক্ত। মহান আল্লাহ পাক
জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। ” [৫:৫১]
গনতন্ত্রঃ কোন
সমস্যা নাই। যার সাথে ইচ্ছা (আমেরিকা, ইসরাইল) বন্ধুত্ব কর।
এখন সিদ্ধান্ত
আপনাদের হাতে, গনতন্ত্র গ্রহন করবেন নাকি ইসলাম ?
মহান আল্লাহ তা’য়ালা
বলেনঃ “যারা আমার আবতীর্ণকরা বিঁধান দ্বারা সমাজে বিধান দেয়না বা শাসনকাজ পরিচালনা করেনা , তারাই কাফির, তারাই জালিম, তারাই ফাসিক।”(৫/৪৪-৪৬)
সুতরাং যারা
গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশ পরিচালনা করছে, এবং ইহা হালাল
পন্থা মনে করছে তারা ১০০% কাফির, জালিম, ফাসিক। আর যারা এই কাফিরদের উদ্ভাবিত সুদ-ভিত্তিক অর্থনীতি পরিচলনা করে, সুদ-প্রথা সমর্থন করে, সুদ ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত
তারাও কুফরীতে লিপ্ত।
আর এই কাফিরদের
যারা সমর্থন করে তাদের জন্য নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লাম ইরশাদ করেন-“যে ব্যক্তি কোন জাতির সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করবে তাদের অনুকরণ এবং তাদের মত
হওয়ার চেষ্টা করবে, সে তাদের মধ্যেই গণ্য হবে।“(আবু দাউদ হাদীস নং ৪০৩১) তার অর্থ এটা দাড়ায় যে যারা বাংলাদেশে গনতন্ত্র চায় ও
গনতান্ত্রিক নেতাদের সমর্থন করে তারাও তাদের অন্তর্গত।
মহান আল্লাহ পাক
তিনি বলেনঃ আমি অবশ্যই কাফেরদেরকে
কঠিন আযাব আস্বাদন করাব এবং আমি অবশ্যই তাদেরকে তাদের মন্দ ও হীন কাজের প্রতিফল
দেব। এটা মহান আল্লাহর
শত্রুদের শাস্তি-জাহান্নাম। তাতে তাদের জন্যে রয়েছে স্থায়ী আবাস, আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করার প্রতিফলস্বরূপ। (৪১/২৭-২৮)
আর যারা নিজের সুবিদার জন্যে কালামুল্লাহ শরীফের যে আয়াতগুলো নিজের
সাথে মিলে তা শুধু মানে আর যা মিলেনা তার বিরোধিতা করে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে মহান
আল্লাহ পাক রব্বুল য়ালামিন বলেন “তোমরা কি কুরআনের এক অংশে বিশ্বাস কর ও অন্য অংশে অবিশ্বাস পোষণ কর? অতএব তোমাদের মধ্যে যারা এরকম করে তাদের ইহজীবনে লাঞ্ছনা ছাড়া আর কী পুরস্কার
আছে? আর কিয়ামতের দিনে তাদের ফেরত পাঠানো
হবে কঠোরতম শাস্তিতে। আর তোমরা যা
করছো মহান আল্লাহ তা’য়ালা সে-বিষয়ে অজ্ঞাত নন। (২/৮৫)
একজন ঈমানদার
কখনোই মহান আল্লাহ পাক রব্বুল য়ালামিন ও নূরে
মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লাম উনাদের বিপক্ষে যাবেনা
এবং গেলে সে আর মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত
থাকবেনা। আর রব্বুল য়ালামিন আল্লাহ পাক তা স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছেন যেঃ “মহান আল্লাহ তা’য়ালা ও নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লাম কোন বিষয়ে
ফায়সালা (দান) করলে কোন মু’মিন পুরুষ কিংবা মু’মিন নারীর নিজেদের কোন বিষয়ে অন্য কোন সিদ্ধান্তের ইখতিয়ার থাকবে না। কেউ মহান আল্লাহ তা’য়ালা ও নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লামকে অমান্য করলে সে তো স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে।” (৩৩/৩৬) আর যারাই মহান আল্লাহ পাক রব্বুল য়া’লামিন ও নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লামের বিপক্ষে অবস্থান করবে তাদের উদ্দশ্যে মালিক বলেন যেঃ “তারা কি একথা জেনে নেয়নি যে, মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে এবং নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লামের সাথে যে মোকাবেলা করে তার জন্যে নির্ধারিত রয়েছে যাহান্নাম; তাতে সে চিরকাল থাকবে। (আর মূলত) এটিই হলো মহা-অপমান। (৯/৬৩)।
পবিত্র দিন
ইসলামের সাথে গণতন্ত্রের যে সমস্ত মৌলিক পার্থক্য রয়েছে তা নিচে উল্লেখ করা হলো, মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেনঃ
(১) “মহান আল্লাহ তা’য়ালাই হচ্ছেন তোমাদের মালিক, সার্বভৌমত্ব উনারই।” (আল-কুরআন ৩৫:১৩) অতএব পবীত্র ও মহান তিনি আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়ালা, যিনি প্রত্যেকটি বিষয়ের উপর সার্বভৌম
ক্ষমতার একচ্ছত্র অধিপতি।” (আল-কুরআন ৩৬:৮৩) আপনি কি জানেন না যে, আসমানসমূহ ও যমীনসমূহের যাবতীয়
সার্বভৌমত্ব একমাত্র মহান আল্লাহ তা’য়ালার জন্য নির্দিষ্ট, তিঁনি ছাড়া তোমাদের কোন বন্ধু নেই, কোন সাহায্যকারীও নেই?” (আল-কুরআন ২:১০৭) অথচ যদি গণতন্ত্র
দেখেন তাহলে দেখবেন সেখনে বলা
হয়েছে “সকল সার্বভৌমত্বের একচ্ছত্র মালিক জনগণ। (নাউজুবিল্লাহ)
(২) গণতন্ত্রে দলীয় শাসন
থাকে অর্থাৎ রাষ্ট্র একটি দলের লোকেরা শাসন করে। কিন্তু ইসলামিক রাষ্ট্রে বহু গোত্রের উপস্থিতি থাকলেও, কোন গোত্র শাসন ক্ষমতা পরিচালনা
করতে পারবেনা, কারণ এতে পক্ষপাতিত্বের সম্ভাবনা খুব বেশী এবং আমরা তা বর্তমান ব্যবস্থাপনায়
দেখতে পাই। খলিফা (ইসলামী রাষ্ট্রের
প্রধান) বা জনগণের প্রতিনিধি কোন দলের লোক হলে তিনি দল ত্যাগ করে খলিফা হবেন। দলের সাথে তার কোন সংযোগ থাকবে না এবং তিনি যোগ্যতার ভিত্তিতে রাষ্ট্রের
নাগরিকদের মধ্য থেকে বিভিন্ন
বিষয়ে কর্মকর্তা নিয়োগ করবেন।
(৩) গণতন্ত্রে একটি
নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শাসক ক্ষমতায় থাকে। কিন্তু ইসলামী খিলাফতে শাসক যতক্ষণ যোগ্যতার সাথে শাসনকার্য পরিচালিত করতে
পারবেন ততক্ষণ থাকবেন, তিনি ব্যর্থ হলে ঐ মুহুর্তেই বিদায় নিবেন বা বিদায় করা হবে (খিলাফতকে
প্রতিষ্ঠিত করা এবং খলিফাকে নির্বাচিত করা যেমন ফর্জ তেমনিভাবে তিনি কুরআন
সুন্নাহ অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ হলে তাকে হটিয়ে দেওয়াও ফরজ দায়িত্ব, যা উম্মাহ ইবাদত হিসেবে পালন করে)।
(৪) গণতন্ত্রে
সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যের মতামতে একটি আইন পাস হয় এবং তা যেকোন ব্যাপারেই হতে
পারে। আইনসভার সংখ্যা গরিষ্ঠ
সদস্য যদি বলে- মানুষ হত্যা করা উচিৎ তাহলে, তা আইনে পরিনত হবে (ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, ফিলিস্থিন, লেবানন, ভারত, আফগানিস্থান, বার্মা, চিনে নিরপরাধ মুসলমানদের উপর হত্যাযজ্ঞ
চালানোর আগে আমেরিকা, ইসরাইল, ভারত, চীন এবং সহযোগী অন্য দেশগুলোর আইনসভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাব উত্থাপিত হয় এবং
সংখ্যা গরিষ্ঠের ভিত্তিতে তা পাস হয় অর্থাৎ নিরপরাধ মুসলমানদের মারার ব্যাপারটি
রাষ্ট্রীয়ভাবে জায়েজ করা হয়, এ ব্যাপারে আপনারা অধিকাংশ অবগত আছেন।
কিন্তু ইসলামে
সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মতামত যদি ইসলামের সুস্পষ্ট আইনের বিরোধী হয় তাহলে তা কখনোই গ্রহন যোগ্যতা পাবেনা। তবে এমন কোন ব্যাপার যদি হয়, যার সাথে ইসলামের কোন বিরোধ নেই তবে সে সমস্ত ক্ষেত্রে সংখ্যা গরিষ্ঠের
মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেনঃ “যারা আমার আবতীর্ণকরা বিঁধান দ্বারা সমাজে বিঁধান দেয়না বা শাসনকাজ পরিচালনা করেনা , তারাই কাফির, তারাই জালিম, তারাই ফাসিক।” (আল-কুরআন ৫:৪৪-৪৬)।
(৫) গণতন্ত্রে জনগণকে
শাসন তত্বাবধানের দ্বায়ীত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে জনগণের রায় নিয়ে যেই ক্ষমতায় যায়, সমস্ত ক্ষমতা তাদেরকে কেন্দ্র করে
আবর্তিত, পরিচালিত হয়, শাসন ক্ষমতার ৪/৫ বছরে জনগণের আসলেই
কোন ক্ষমতা থাকেনা। শাসকগোষ্ঠী ভুল করলে বা
জনস্বার্থ বিরুদ্ধ কাজ করলে তা সংশোধনের জন্য ৪/৫ বছর অপেক্ষা করতে হয় নির্বাচনের
মাধ্যমে আরেকটি ভাল রায় দেওয়ার জন্য এবং সেটি মিস্ হলে বা জনগণ প্রতারিত হলে
আবারও ৪/৫ বছর কপাল চাপড়াতে হয়। কিন্তু ইসলামী খিলাফত পদ্ধতিতে প্রতিনিধি বা খলিফা যে কোনো সময় ভুল করলে
সমাজের যে কোন শ্রেণীর লোক সামনা সামনি খলিফার ভুল ধরিয়ে দিতে পারে, কৈফিয়ৎ নিতে পারে, এমনকি তাকে কটাক্ষ করে কথা বললেও
খলিফার কিছুই করার নেই। কারণ
ব্যক্তিগতভাবে রাগান্বিত হয়ে তিনি কিছুই করতে পারেন না। ভুল শুধরাতে ব্যর্থ হলে তাকে তাৎক্ষনিকভাবে বিদায় নিতে হয়।
(৬) গণতন্ত্রে নেতা নিজের
চরিত্র সম্পর্কে উত্তম বয়ান করে তাকে ভোট দিতে বলেন এবং তিনি নেতৃত্বের যোগ্য বলে
ঘোষণা করেন। শুধু তাই নয় অন্য প্রার্থী
তার থেকে কোন ক্রমেই ভালো নয় একথা নিশ্চয়তার সাথে প্রচার করেন ও প্রকাশ্যভাবে বা
অপ্রকাশ্যভাবে তার গীবত করেন। অনেক সময় তার বিরুদ্ধে কাল্পনিক অভিযোগ পেশ করেন এবং অন্যায়,কুটিল,অদ্ভুত চাল চালেন যাতে মানুষ তাকে ফেরেশতা এবং তার প্রতিপক্ষকে শয়তান মনে করে। কিন্তু ইসলামে
নেতৃত্ব চাইলেই- তিনি নেতৃত্ব দানে অযোগ্য বলে বিবেচিত হন এবং তিনি বাদ পড়েন বা
বিদায় হন। নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লাম উনার কাছে নেতৃত্ব
দাবী করা লোকটিকে বাদ দিয়ে অন্যদের মধ্য থেকে নেতা খুঁজতে বলেছেন, কারণ নেতৃত্ব চেয়ে নেওয়ার কারনে সে
নেতৃত্বের যোগ্যতা হারিয়েছে (একদা দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি এসে নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লামকে বললেন, ইয়া রছুলাল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লাম! আমাদেরকে আমাদের
এলাকার শাসক মনোনিত করুন। নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লাম বললেন, “আমরা এরুপ ব্যক্তিকে কোন পদে মনোনিত করি না, যে তার পদ চেয়ে নেয় বা পদের প্রতি লালায়িত হয়।” (বুখারী শরীফ)। আর খলিফা নির্বাচনের পর
যদি অন্য কেউ এসে বলে এ ব্যক্তি খলিফা হবার অযোগ্য, আমিই যোগ্য, আমাকে খলিফা বানানো হোক তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লাম বলেন- এ লোকটিকে হত্যা কর। কারণ সে ফেৎনা সৃষ্টি
করতে চায়, ফেৎনা হত্যা অপেক্ষা ভয়াবহ। আর খলিফার ব্যাপারটা এমন যে খলিফা মহান আল্লাহ তা’য়ালার আইন বাস্তবায়ন করেন। পবিত্র কুরআন, ছুন্নাহ, ইয্মা, কিয়াছ, ইজতিহাদ অনুসরণ করে সমস্যার সমাধান করেন। মৌলিক ক্ষেত্রে নিজের মতামত দিতে তিনি অক্ষম তাই মহান আল্লাহ তা’য়ালার প্রতি অনুগত মানুষ তার কথায় দ্বিমত পোষণ করেনা বরং মহান আল্লাহ তা’য়ালার ইবাদতের স্বার্থেই জনগণ খলিফার আদেশ, উপদেশ, নিষেধ মেনে চলে। এতে জনগনের ঐক্যে
ফাটল ধরার সম্ভাবনা খুবই কম (নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লাম) বলেন, ‘কোন ব্যক্তি যদি আমীরের (রাষ্ট্রের শাসক বা খলিফা) আনুগত্য ছিন্ন করে এক বিঘৎও দূরে সরে যায় এবং
এই অবস্থায় তার মৃত্যু হয়, তাহলে সেই মৃত্যু হবে তার জাহেলিয়াতের মৃত্যু’। (মুসলিম শরীফ) খলিফা নির্বাচন নিয়ে অরাজকতা সৃষ্টির আশংকা কম, কারণ এত কঠিন দায়ীত্ব সাধারনতঃ কেউ নিতে চায় না। তাছাড়া এ দায়ীত্বের সাথে বৈষয়িক অনেক লোকসান জড়িত।
(৭) গণতন্ত্রে সরকারী দল – বিরোধী দল থাকে এবং তারা একে অন্যের প্রতিপক্ষ কিন্তু খিলাফতে বহু দলের
অস্তিত্ব থাকলেও কোন দল সরকার গঠন করে না। প্রত্যেকটা দলের থেকে মানুষেরা তাদের নিজেদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য, ঈমানদার, আলিম বা উচ্চ শিক্ষিত, উত্তম চরিত্রবান, যেকোন পরিস্থিতিতে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম এমন এক
বা একাধিক জনকে খলিফা মনোনিত করতে পারেন এবং এরপর নির্বাচন কমিটির (নির্বাচন কমিটির সদস্যরা খলিফা হিসেবে
নির্বাচিত হতে পারবেন না) কাছে পাঠাবেন। যাকে মতোনিত করা হবে বা নির্বাচিত করা হবে তিনি নিজে এ পদ চাইতে পারবেন না, তবে মনোনিত করা হলে বিশেষ গুরুতর
কারণ ছাড়া এ নেতৃত্ব প্রত্যাখ্যান করতে পারবেন না। খলিফা কোন দলের হলেও তিনি দলের প্রতিনিধিত্ব করেন না। খলিফা হবার আগে দলত্যাগ করেন এবং তার কাছে তখন জাতি, ধমর্, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ সমান। এটি খলিফার কাছে ফর্জ ইবাদত তাই প্রকাশ্য ও গুপ্ত উভয় অবস্থাতে তার নীতি, প্রচেষ্টা কল্যানকর হবে।
(৮) গণতন্ত্রে শাসক এমন
কতৃপক্ষের নিকট জবাবদিহিতার নীতিতে বিশ্বাসী হয় যাদেরকে (মানুষ) শাসক ফাঁকি দিতে পারে, আপোস রফা করতে পারে। কোন কোন ক্ষেত্রে মানুষের পক্ষে শাসকের সুক্ষ্ম ফাঁকি ধরা সম্ভব হয়না, কারণ সে সীমাবদ্ধ জীব। কিন্তু ইসলামী
ব্যবস্থাপনা বা খিলাফতে শাসক স্রষ্টা মহান আল্লাহ তা’য়ালার নিকট জবাবদিহিতার নীতিতে বিশ্বাসী হয় আর মহান আল্লাহ প্রকাশ্য ও গুপ্ত সকল
অবস্থা অবগত। তিনি মানুষিকতা, বাহ্যিকতা, অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত সবকিছুর হিসাব রাখেন। মহান আল্লাহ তা’য়ালাকে ফাঁকি দেওয়া সম্ভব নয়, এটি খলিফা জানেন, মানেন, কারণ তিনি ঈমানদার। তিনি মহান আল্লাহর নিকট কৈফিয়ৎ প্রদানে বিশ্বাসী।
(৯) গণতন্ত্র সমাজে
পুঁজিবাদ প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু ইসলাম
প্রতিষ্ঠা করে- কুরআন ও সুন্নাহ যা পদ্ধতিগতভাবে পুঁজিবাদকে পুরোপুরি খতম করে।
(১০) গণতান্ত্রিক শাসনে
সমাজে সরকারী দল, বিরোধী দলের বিরোধ ছাড়াও উঁচু শেণী ও নীচু শ্রেণীর মধ্যে মারাত্মক বৈষম্য
সৃষ্টি হয়। ইসলামী ব্যবস্থাপনা বা
খিলাফতে সরকারী দল, বিরোধী দল থাকে
না এবং ধনী ও দরীদ্রের বৈষম্য থাকে না।
(১১) গণতন্ত্রে সম্পদ
শুধু ধনীদের মধ্যে আবর্তন করে এতে ধনী হয় আরো ধনী, গরীব হয় আরো গরীব। এ ব্যবস্থায়
গরীবের কাছ থেকে সম্পদ পদ্ধতিগতভাবে ধনীর হাতে গিয়ে আটকে থাকে। খিলাফতে সম্পদ ধনী ও গবীবের মাঝে আবর্তন করে। ইসলামিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠিত হবার কারনে ধনীরা গরীবের প্রাপ্য সম্পদ ফর্জ
ইবাদত হিসেবে প্রদান করতে বাধ্য থাকে। কতিপয় ব্যক্তি কতৃক নয় বরং রাষ্ট্র কতৃক অর্থনীতি নিয়ন্ত্রিত হয়, এতে সম্পদের
ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সকল নাগরিকের কল্যান সাধন হয়।
(১২) গণতন্ত্রে জনগণের
সম্পদ ব্যক্তি বা তাদের প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়া হয় আর ব্যক্তির বৈশিষ্ট হলো
সে কখনই লোকসান করতে চায় না, যে ভাবেই হোক না
কেন সে লাভ করতে চায়। ফলে তাদের লাভের
চিন্তা জনগণের অপরিসীম দুঃখ কষ্ট বয়ে আনে। কিন্তু খিলাফতে খলিফা বা শাসক জনতার পক্ষ থেকে তাদের সম্পদের (পানি, বনভূমি, তেল, গ্যাস, কয়লা ইত্যাদি) সুষ্ঠ ব্যবহার করেন
এবং সুষম বন্টন করেন। খিলাফত সরকার যদি
হিসাব করে দেখে তারা জনগণকে সরকারী বিভিন্ন সুবিধা, সেবা বিনা মূল্যে প্রদান করতে পারছে, তবে খিলাফত সরকার জনগণকে সেগুলো ফ্রি দিয়ে থাকে। এ সরকার লাভের চিন্তা করে না বরং সেবার দিকটিই প্রাধান্য পায়। শাসক এ কাজটি ইবাদত হিসেবে করেন ফলে নিষ্ঠা, আন্তরিকতা, একাগ্রতার ছাপ থাকে প্রতিটি বৈধ কাজে।
(১৩) গণতন্ত্রে কিছু
পুঁজিপতি বাজার নিয়ন্ত্রণ করে এবং তারা তাদের লাভের জন্যে কৃত্তিম সঙ্কট সৃষ্টি
করে লাভবান হবার চেষ্টা করে। জনগণের ক্রয় ক্ষমতা এখানে বিবেচ্য বিষয় নয়, মুনাফাই বিবেচ্য। গণতন্ত্রে এটা
বৈধ এবং মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে (পুঁজিবাদে) শাসকের কিছুই বলার নেই। কিন্তু খিলাফতে জনগণের ক্রয় ক্ষমতা অনুযায়ী পণ্য দ্রব্যের মূল্য নিরুপিত হয়, সরকার ব্যপক ভূর্তুকী দেয়। কতিপয় ব্যক্তি এখানে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে না। বাজার নিয়ন্ত্রণ করে সরকার এবং পণ্য দ্রব্য মজুদ করে কৃত্তিম সঙ্কট
সৃষ্টিকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বন্দোবস্ত রয়েছে। তাছাড়া শাসক জনতাকে মহান আল্লাহর ভয়ে এবং মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে
আচরণ করতে উদ্বুদ্ধ করেন। ফলে সামাজিক, অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি এখানে স্বতস্ফুর্ত।
(১৪) গণতান্ত্রিক
ব্যবস্থায় ধনী, প্রভাবশালী শ্রেণী বেশী সম্পদশালী হবার কারনে এবং গরীবেরা পদ্ধতিগতভাবে বঞ্চিত
হবার কারনে সমাজে নিরাপত্তাহীনতার সৃষ্টি হয়। বঞ্চিতরা ক্ষুব্ধ হয় এবং তাদের ক্ষোভের বহির্প্রকাশে ধনীরা অধিক পরিমানে
নিরাপত্তা হীনতায় ভূগতে থাকে, মধ্যবিত্তরাও এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সমাজে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কিন্তু খিলাফত ব্যবস্থায় ধনী লোকেরা গরীবকে সম্পদের ভাগ দেওয়ার কারনে উভয়ের
মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করে ফলে ধনীরা গরীব কতৃক ক্ষতির শিকার হয়না বরং
তারাই তাকে নিরাপত্তা দিতে থাকে।
(১৫) গণতন্ত্র তৈরী হয়েছে
ইসলাম বিরুদ্ধ চিন্তা চেতনা থেকে এবং এটি কুরআন, সুন্নাহ বহির্ভূত। কিন্তু ইসলামী
খিলাফত ব্যবস্থা মহান আল্লাহ কতৃক মনোনিত এবং নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লাম কতৃক অনুসৃত। গণতন্ত্র তৈরী হয়েছে সৃষ্ট জীব মানুষের চিন্তা, পরিকল্পনা থেকে অপরদিকে খিলাফত ব্যবস্থা তৈরী হয়েছে মহান স্রষ্টা মহান আল্লাহ
তা’য়ালার পরিকল্পনা থেকে। যারা বলে ইসলামে গনতন্ত্র আছে তারা ইসলামের ভূল ব্যাখ্যাই করে, ইসলামে কখনো গনতন্ত্র মেনে নেওয়া
যায়না, আজ পর্যন্ত পৃথিবীর কোথাও গনতন্ত্রের
মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হয়নি। আর নারী নেত্রীত্বের কুফল, নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লামের হাদীস অবমানার ফল, আমারা আমাদের সামনেই দেখতে পাচ্ছি। আর যারা নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লামের হাদীসের অবমাননা করে
দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তারা আর যাই হোক মুসলিম হতে পারেনা। নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লাম বলেনঃ “যখন তোমাদের ধনী শ্রেণী
কৃপণ হবে, যখন তোমাদের যাবতীয় কাজে কর্তৃত্ব
তোমাদের নারীদের হাতে চলে যাবে, তখন তোমাদের জন্য পৃথিবীর উপরিভাগের চেয়ে অভ্যন্তর ভাগ অধিক কল্যাণকর হবে।” (তিরমিযী শরীফ)
হযরত আবু বকর
ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম উনার হতে বর্ণিত, যখন নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লামের নিকট এ সংবাদ পৌঁছলো
যে, (ইরানী) পারস্যের জনগণ কিসরার কন্যাকে (মেয়ে) তাদের বাদশাহ মনোনীত করেছে, তখন তিনি বললেন, সে জাতি কখনো সাফল্য অর্জন করতে পারে
না, যে জাতি স্বীয় কাজকর্মের কর্তৃত্ব ও
দায়িত্বভার একজন নারীর হাতে সোপর্দ করে।” (বুখারী শরীফ ও তিরমিযী শরীফ )
দিলে আরো অনেক
উধাহরন দেওয়া যাবে কিন্তু আমি মনে করি মুমিনদের জন্যে মহান আল্লাহ তা’য়ালা এবং নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লামের একটা নিষেদই যথেষ্ট। তাই মন থেকে এই হারাম গনতন্ত্রের বিষয়টা ঝেড়ে ফেলুন আর যতটুকু সম্ভব খেলাফত
সৃষ্টির জন্যে সমাজে ইসলাম কায়েম করার জন্যে চেষ্টা করে যান কেউ খুশি না হলেও মহান আল্লাহ পাক রব্বুল য়া’লামিন অবশ্যই
খুশি হবেন।
অনেকেই বর্তমান
বিশ্বপরিস্থিতিতে প্রশ্ন করেছেন, ইসলামী খিলাফত আবার কবে ফিরে আসবে দুনিয়ার মাঝে?
এই প্রশ্নের
উত্তরও কিন্তু মহান মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফের ছুরা নুর-এর ৫৫ নং আয়াতে পাকে বলে দিয়েছেনঃ অর্থাৎ “তোমার যখন প্রকৃত
ঈমান আনবে বা ঈমানদার হতে পারবে এবং একই সাথে আমলে ছ্বলেহ অর্থাৎ ছুন্নাহ মুতাবিক
নিজেদের আমল আখলাক সুসজ্জিত করতে পারবে তখনি তোমাদেরকে খিলাফত অর্থাৎ শাসন কতৃত্ব
দান করা হবে-এটাই মহান আল্লাহ পাক উনার ওয়াদা। ছুবহানাল্লাহ! এতএব কি করনীয় নিস্চই বুজতে পেরেছেন? যাজাকাল্লাহুল খইর।
0 ফেইসবুক: