ওহাবী-ছ্বলাফি খারেজী স্কলার ও তাদের দ্বারা
ব্রেইন ওয়াশ হওয়া যুবকেরা যখন অলী আউলিয়াদের ব্যপারে কটূক্তি করে, বিদ্বেষ, শত্রুতা প্রকাশ করে, তখন তাদের পরিণতি কি হয়?
হক্বানী অলী-আউলিয়ার প্রতি বিদ্বেষ রাখা
প্রসঙ্গে হাদীসে ইরশাদ, হয়েছেঃ (عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِنَّ اللَّهَ قَالَ مَنْ عَادَى لِي وَلِيًّا فَقَدْ آذَنْتُهُ بِالْحَرْبِ،
وَمَا تَقَرَّبَ إِلَىَّ عَبْدِي بِشَىْءٍ أَحَبَّ إِلَىَّ مِمَّا افْتَرَضْتُ عَلَيْهِ،
وَمَا يَزَالُ عَبْدِي يَتَقَرَّبُ إِلَىَّ بِالنَّوَافِلِ حَتَّى أُحِبَّهُ، فَإِذَا
أَحْبَبْتُهُ كُنْتُ سَمْعَهُ الَّذِي يَسْمَعُ بِهِ، وَبَصَرَهُ الَّذِي يُبْصِرُ
بِهِ، وَيَدَهُ الَّتِي يَبْطُشُ بِهَا وَرِجْلَهُ الَّتِي يَمْشِي بِهَا، وَإِنْ سَأَلَنِي
لأُعْطِيَنَّهُ، وَلَئِنِ اسْتَعَاذَنِي لأُعِيذَنَّهُ، وَمَا تَرَدَّدْتُ عَنْ شَىْءٍ
أَنَا فَاعِلُهُ تَرَدُّدِي عَنْ نَفْسِ الْمُؤْمِنِ، يَكْرَهُ الْمَوْتَ وَأَنَا أَكْرَهُ
مَسَاءَتَهُ) আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু উনার
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রছুলুল্লাহ্ ছ্বল্লল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম বলেনঃ মহান আল্লাহ পাক বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমার কোনো অলি-আউলিয়ার সাথে শত্রুতা পোষণ করে, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি। (لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِٱللَّٰهِ ٱلْعَلِيِّ ٱلْعَظِيمِ)
আমার বান্দা এমন কোনো আমল দ্বারাই আমার নিকটবর্তী হতে পারে না, যা আমার কাছে তার উপর
করা ফরজ ইবাদতসমূহের চেয়ে বেশি প্রিয়। তবে আমার বান্দা নফল ইবাদতের মাধ্যমে ক্রমাগত
আমার নিকটবর্তী হতে থাকে, যতক্ষণ না আমি তাকে ভালোবেসে ফেলি। আর যখন আমি তাকে ভালোবেসে ফেলি, তখন আমিঃ
√ তার কান হয়ে যাই যা দিয়ে
সে শোনে,
√ তার চোখ হয়ে যাই যা দিয়ে
সে দেখে,
√ তার হাত হয়ে যাই যা দিয়ে
সে ধরে
√ এবং তার পা হয়ে যাই যা
দিয়ে সে চলাফেরা করে।
সে আমার কাছে কিছু চাইলে, আমি তাকে তা দেই। সে যদি আমার নিকট আশ্রয় কামনা করে, তাহলে আমি তাকে আশ্রয় দেই। আমি যা করার ইচ্ছা করি, সে ব্যাপারে (কখনো) কোন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগি না কেবল
মুমিনের আত্মার ব্যাপার ছাড়া। (আর তা হলো) সে (ঈমানহীন অবস্থায়) মৃত্যু হওয়াকে
অপছন্দ করে আর আমি তার মৃত্যুযন্ত্রণাকে অপছন্দ করি। (বুখারী শরিফঃ ৬৫০২)
এখন এই হাদিছ শরীফে মোট কতগুলো বিষয়/সাবজেক্ট আছে?
পয়েন্ট আকারে বিষয়সমূহঃ
১. আওলীয়ায়ে কেরাম/মুর্শিদে
কামিল/মুহসিন/ অর্থাৎ মুত্তাক্বীনদের সাথে শত্রুতা করা হারাম ও মারাত্মক গুনাহ, এমনকি ঈমান নষ্টের
অন্যতম কারণ।
২. মহান আল্লাহ তা’য়ালা ঐ ব্যক্তির
বিরুদ্ধে স্বয়ং যুদ্ধ ঘোষণা করেন।
৩. ফরয আমল দ্বারাই বান্দা মহান আল্লাহ
তা’য়ালার সবচেয়ে নিকটবর্তী হয়।
৪. কিন্তু নফল আমলের মাধ্যমে বান্দা
মহান আল্লাহ তায়ালার এতো বেশি নৈকট্য লাভ করে যে,
৫. ফলশ্রুতিতে এই নফল আমলের ধারাবাহিকতায়
বান্দা অলীর মাক্বাম লাভ করে আর মহান আল্লাহ তায়ালার ভালবাসার
পাত্র হয়ে যায়, আর
৬. মহান আল্লাহ তায়ালার ভালবাসা লাভের
পর অলীর ইন্দ্রিয়সমূহে (কান, চোখ, হাত, পা) মহান আল্লাহ তায়ালার তাজাল্লি
প্রকাশিত হয়।
৭. অলী দুআ করলে মহান আল্লাহ তায়ালা
তা কবুল করেন।
৮. আশ্রয় চাইলে মহান আল্লাহ তায়ালা উনাদেরকে আশ্রয় দেন।
৯. মহান আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছা বাস্তবায়নে
কোনো দ্বিধা থাকে না কিন্তু অলীদের মৃত্যু বিষয়ে একটি ব্যতিক্রম আছে।
১০. অলীরা বেঈমান হয়ে মৃত্যু হওয়াকে অপছন্দ করেন।
১১. আর মহান আল্লাহ তা’য়ালা অলীদের মৃত্যু যন্ত্রণা অপছন্দ
করেন।
মোটঃ ১১টি মৌলিক বিষয় বিদ্যমানঃ যার প্রতিটি তাসাউফ, ফিকহ, আকীদাহ ও আধ্যাত্মিক বাস্তবতার দিক
দিয়ে গভীর ব্যাখ্যার দাবি রাখে।
১১টি বিষয়ের দলিল ভিত্তিক ব্যাখ্যাঃ
১. আওলীয়ায়ে কেরাম/হক্বানী মুর্শিদের সাথে শত্রুতা করা মারাত্মক গুনাহ।
ব্যাখ্যাঃ হাদিছ কুদসীতে মহান আল্লাহ তা’য়ালা সরাসরি বলেনঃ (مَنْ عَادَىٰ لِي وَلِيًّا فَقَدْ آذَنْتُهُ بِالْحَرْبِ) “যে ব্যক্তি আমার কোনো অলি-আউলিয়ার সাথে শত্রুতা পোষণ করে, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি”। এখানে “ওলী” বলতে বোঝানো
হয়েছে “হক্বানী মুর্শিদ ও আউলিয়ায়ে কেরাম, যারা হাক্বিকতে
মহান আল্লাহ তায়ালা উনার নৈকট্যে পৌঁছেছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ, শত্রুতা পোষণ করা, কটুক্তি করা বা অপমান করা, এই সবই সরাসরি মহান আল্লাহ তায়ালা উনাকে নিজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করানোর
শামিল।
২. মহান আল্লাহ তা’য়ালা ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্বয়ং যুদ্ধ ঘোষণা করেন।
ব্যাখ্যাঃ অথচ ফেরাউন নিজে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার
বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে খোদা দাবী করে, আল্লাহ পাক আগ বাড়িয়ে
করেন নাই। আর মহান আল্লাহ তায়ালা উনাকে যুদ্ধের ময়দানে নিজের বিরুদ্ধে পাওয়ার অর্থ হলঃ
নিজের দুনিয়া বরবাদ করা, ঈমান নষ্ট করানো, মৃত্যুর আগে তাওবা করার সুযোগ না পাওয়া, এবং আখিরাতে কঠিন
শাস্তি নিশ্চিত করা।
তাফসিরে কুশাইরী ও রূহুল মাআনীতে এটাকে (أَشَدُّ
الْوَعِيدِ) (সর্বাধিক কঠিন হুঁশিয়ারি) বলা হয়েছে।
৩. ফরয আমল দ্বারাই বান্দা মহান আল্লাহ
তা’য়ালার সবচেয়ে নিকটবর্তী হয়।
ব্যাখ্যাঃ ফরয ইবাদতসমূহ হল বান্দার উপর মহান আল্লাহ তা’য়ালার নির্ধারিত কর্তব্য। বান্দা যখন এগুলো যথাযথভাবে পালন করে, তখন সে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার নির্দেশ পালনের মাধ্যমে উনার দিকে অগ্রসর হয়। এই অগ্রসর হওয়ার পথই
হচ্ছে নৈকট্য লাভের প্রথম সোপান। কুরআন শরীফে বলা হয়েছেঃ (وَٱعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّىٰ يَأْتِيَكَ ٱلْيَقِينُ) আর আপনি আপনার রবের ইবাদত করতে থাকুন, এভাবে যেন তা
আপনাকে হক্বুল-ইয়াক্বীনের দরজায় পৌঁছে দেয়। (ছুরাহ আল-হিজর ১৫:৯৯)। ফরজ আমল কি? ২৪ ঘন্টা “আল্লাহ/লা ইলাহা ইল্লাহ”-এর ক্বলবি যিকির করা, হুজুরি ক্বলব নিয়ে ছ্বলাত পাঠ করা, ছুন্নত ত্বরীকায় জাকাত আদায় করা ফরজ হলে, ছুন্নত ত্বরীকায়
রোজা ও হজ্জ পালন করা, জিহাদ ফরজ হলে যেরূপে ফরজ অর্থাৎ শারীরিক, আর্থিক, ইলমি, উনার খেদমতে
আঞ্জাম দেওয়া।
৪. তবে নফল আমলের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালার সর্বোচ্চ নৈকট্য লাভ করা, অর্থাৎ মুক্বাররাবীন হয়ে যাওয়া।
ব্যাখ্যাঃ বান্দা যদি ফরয, ওয়াজিব ও ছুন্নত নিয়মিত
পালন করেও নফল ইবাদতের মাধ্যমে আরও এগিয়ে যায়, তখন সেই আমল তাকে
বিশেষভাবে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার নৈকট্যে নিয়ে যায়। নফল ইবাদতের পরিমাণ যত বাড়ে এবং যত বিশুদ্ধ হয়, তত বেশি বান্দা ‘মুক্বাররাবীন’-এর শ্রেণিতে প্রবেশ করে। এখন সবচেয়ে পছন্দনীয় নফল আমল কি? নিয়মিত তাহাজ্জুদ
পড়া, অতিরিক্ত দুরুদ শরীফ পড়া, পরহেজগার মুমিনদের দান-ছ্বদাকা
করা, ২৪ ঘন্টা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া
আলিহি ওয়া ছাল্লাম উনাদের আলোচনা করা, ছুন্নত মোতাবেক
জীবনযাপন করা।
৫. নফল আমলের ধারাবাহিকতায় বান্দা অলীর মাক্বাম লাভ করে আর মহান আল্লাহ তায়ালার
ভালবাসার পাত্র হয়ে যায়ঃ
ব্যাখ্যাঃ যখন কেউ ধারাবাহিকভাবে অধিক নফল আমলে রত হয়, তখন সে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার দৃষ্টিতে নির্বাচিত হয়ে পড়ে। মহান আল্লাহ তা’য়ালা তখন তাকে মুহব্বতের পাত্র হিসেবে কবুল করেন এবং তার প্রতি নিজ নূরের
তাজাল্লি নাজিল করেন। তখন সে অলৌকিক তাওফীক ও কুদরতের অধিকারী হয়ে যায়।
৬. মহান আল্লাহ তায়ালার ভালবাসা লাভের
পর অলীর ইন্দ্রিয়সমূহে (কান, চোখ, হাত, পা) মহান আল্লাহ তায়ালার তাজাল্লি প্রকাশিত হয়।
ব্যাখ্যাঃ হাদিছ শরীফে ইরশাদঃ (كُنْتُ
سَمْعَهُ الَّذِي يَسْمَعُ بِهِ، وَبَصَرَهُ الَّذِي يُبْصِرُ بِهِ، وَيَدَهُ الَّتِي
يَبْطُشُ بِهَا وَرِجْلَهُ الَّتِي يَمْشِي بِهَا) অর্থাৎ, মহান আল্লাহ তা’য়ালা উনার রিলেটেড ছিফতি নূর তার জন্যে এক্টিভ
করে দেওয়া হয়, তখন তার কান, চোখ,
হাত ও পায়ে এমনভাবে তাওফীক দান করেন যেন এসব অঙ্গ শুধুমাত্র
মহান আল্লাহ তায়াল উনার জন্যই কাজ করে। তাসাউফে একে বলা হয়ঃ “তাজাল্লি ফিল-আরকান” (ইন্দ্রিয়সমূহে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার তাওফীক ও সিফাত প্রকাশ পাওয়া)।
৭. অলীরা যখন মহান আল্লাহ তায়ালা উনার কাছে কিছু চান, মহান আল্লাহ তা’য়ালা উনাদেরকে তা দান করেন।
ব্যাখ্যাঃ এটি হলো মুহব্বতের ফায়দা। যখন বান্দা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার
প্রিয় বান্দা হয়, তখন তার দুআ “তাক্বদীরের উপরও প্রভাব ফেলে”। যেমনঃ (وَ قَالَ رَبُّكُمُ ادۡعُوۡنِیۡۤ اَسۡتَجِبۡ
لَكُمۡ)
আর আপনার রব তায়ালা বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি (তোমাদের ডাকে) সাড়া দেব”। (ছুরাহ আল গাফির ৪০:৬০) যে বান্দা অলীর মাক্বামে পৌঁছে যায়, তার দুআর মাঝে নূরের তাজাল্লি মিশে যায়। ফলে সে যা চায় তাই আল্লাহ কবুল করেন।
৮. সে আশ্রয় চাইলে মহান আল্লাহ তা’য়ালা তাকে রক্ষা করেন।
ব্যাখ্যাঃ এটি অলীদের উপর মহান আল্লাহ তায়ালা উনার বিশেষ হেফাযতের নিদর্শন। উনারা যখন বিপদে পড়েন বা
শয়তান, নফস,
কিংবা দুনিয়ার ফিতনা থেকে বাঁচতে চান “মহান আল্লাহ তা’য়ালা নিজেই উনাদেরকে আশ্রয় দেন। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ (اَللّٰهُ وَلِیُّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا ۙ یُخۡرِجُهُمۡ مِّنَ الظُّلُمٰتِ
اِلَی النُّوۡرِ) মহান আল্লাহ তায়ালাই মুমিনদের প্রকৃত অভিভাবক, তিনি তাদের জুলমাতের অন্ধকার থেকে হেদায়েতের নূরের দিকে নিয়ে আসেন। (ছুরাহ বাক্বরহ ২:২৫৭) এছাড়া আরও বলেন (فَسَیَكۡفِیۡكَهُمُ اللّٰهُ) মহান আল্লাহ তা’য়ালা আপনার পক্ষ থেকে তাদের মোকাবিলা করবেন। (ছুরাহ বাক্বরহ ২:১৩৭) তাফছিরে পাওয়া যায় “এই আয়াত হুকুম দিচ্ছেনঃ হে নবী ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম, শত্রুর ব্যপারে আপনার কোন চিন্তা নেই, আমিই যথেষ্ট। কাফেরদের ষড়যন্ত্র ও অবজ্ঞা আপনাকে কষ্ট দেবে
না, মহান আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং তাদের মোকাবেলায় যথেষ্ট। এছাড়াও এটি মহান আল্লাহ তায়ালা উনার এক “ইলাহি জামানত”, যার দ্বারা ওলীদের রূহ মুতমাইন থাকে।
৯. মহান আল্লাহ তায়ালা যা ইচ্ছা করেন, এবং কোন কিছু
করতে তিনি কখনো দ্বিধা করেন না, কিন্তু মুমিনের একটি
বিষয়ে ব্যতিক্রম রয়েছে।
ব্যাখ্যাঃ সেটা হচ্ছে “মুমিন বান্দার মৃত্যু” অন্য সব বিষয়ে
মহান আল্লাহ তায়ালা উনার কোনো দ্বিধা থাকে না, কিন্তু মুমিনের
মৃত্যুর বিষয়ে উনার মুহব্বতের বান্দাদের কষ্ট দেখলে উনার করুণা হয়। এটিকে “তরাদ্দুদুল ইলাহি” বলা হয়, যা “মহান আল্লাহ তায়ালা উনার
দয়া ও স্নেহের বহিঃপ্রকাশ”। কালামুল্লাহ শরীফে
এসেছেনঃ (كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ ٱلْمَوْتِ) প্রত্যেক নফসই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। (ছুরাহ আলে ইমরান ৩:১৮৫) এইখানে মহান আল্লাহ
তায়ালা উনার তরাদ্দুদ মানে বান্দার সাথে রূহানী লিপ্ততা ও মুহব্বতের গভীরতা। কারণ তিনি নিজ বান্দার
কষ্ট চান না, যা (مقام
الأُنس)
“মাক্বামে উনস”-এর ইশারা।
১০. মুমিন বান্দা মৃত্যুকে অপছন্দ করেঃ
ব্যাখ্যাঃ হাক্বিকতে মুমিন ব্যক্তিই মৃত্যুকে ভয় করে, কারণ তার সামনে হিসাব-নিকাশ, কবর, কিয়ামত ইত্যাদি ভয়ের বিষয় রয়েছে। তবে যারা রূহানীভাবে প্রস্তুত, তারা মৃত্যুকে (لِقَاءُ اللَّهِ) “লিক্বউল্লাহ” “মাহান আল্লাহ তায়ালা উনার সাক্ষাৎ” হিসেবে গ্রহণ করে। ইমাম গাযযালী রহমতুল্লাহ বলেনঃ “মৃত্যু মানে প্রেমিকের জন্য পর্দা উন্মোচন; আর গ্বফিলের জন্য অন্ধকার ঘরে প্রবেশ। অর্থাৎ মৃত্যু তখনই অপছন্দনীয় হয় যখন বান্দা নাছুত পূজায় মশগুল থাকে। কিন্তু যারা আলমে মালাকূতের সাথে সংযুক্ত, তাদের জন্য মৃত্যু লিক্বাউল্লাহ।
১১. মহান আল্লাহ তা’য়ালাও মুমিন বান্দার মৃত্যুযন্ত্রণা অপছন্দ
করেন।
ব্যাখ্যাঃ এটি মহান আল্লাহ তায়ালা উনার দয়ার পরাকাষ্ঠা। তিনি মুমিন বান্দা কষ্ট
পাক এটা চান না। মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেনঃ (إِنَّ رَبَّكُمْ لَرَءُوفٌ رَّحِيمٌ) নিশ্চয়ই তোমাদের রব অতি দয়ালু পরম করুণাময়। (ছুরাহ নাহল ১৬:৭)
এই হলো উক্ত হাদিছ শরীফের খোলাছা, এখন এর পরেও যারা
গুমরাহ হতে চায় বাজারি মুল্লা, লাল রুমালী পেট্রোলি
মুল্লাদের দ্বারা ব্রেইন ওয়াশ হয়ে, তাহলে তারা
জাহান্নামে যাক, তাদের হেদায়েত কামনা করার কিছুই নাই।
0 ফেইসবুক: