Showing posts with label বাংলাদেশ. Show all posts
Showing posts with label বাংলাদেশ. Show all posts

Wednesday, August 21, 2024

শেখ হাসিনার চেয়েও ভয়ানক ইসলাম বিদ্বেষী সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা এস মুরশিদ, পদত্যাগ জরুরি

শেখ হাসিনার চেয়েও ভয়ানক ইসলাম বিদ্বেষী সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা এস মুরশিদ, পদত্যাগ জরুরি

সম্প্রতি ভারতের কলকাতার আর জি কর হাঁসপাতালের চিকিৎসক মৌমিতাকে ধর্ষণ করে হত্যার প্রতীবাদে ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে একটি সমাবেশ করা হয়। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবন চত্বর থেকে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যে আসে তারা। সমাবেশ উপস্থিত নারীবাদিরা বলে, ৫৪ বছর ধরে যে বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে, তা নাকি নারীবান্ধব নয়। আমাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সব কাঠামোই পিতৃতান্ত্রের নাকি শিকার। ১৬ই আগষ্ট রাতে আয়োজিত সেইদিনের শেষ প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত হয় অন্তরবর্তিকালিন সরকারের সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা এস মুরশিদ। কথিত এই নারীবাদী উপদেষ্টা উপস্থিত নারীদের কাছে একটি প্রস্তাব দেওয়ার দাবী রাখে, দাবী পেশ করলে নাকি অন্তরবর্তিকালিন সরকার সেই দাবী দাওয়া বাস্তবায়নে ঝাপিয়ে পড়বে সে আরো বলেছে, তোমরা যদি রাস্তায় থাকো, তাহলে আমিও রাস্তায়। তোমরা যদি অনিরাপদ হও, তাহলে নিরাপত্তাহীনতা কীভাবে দূর করব, তা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। যে সরকার হয়েছে, তা তোমাদের সরকার। আমি তোমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চাই। হোয়াট? যে সরকার হয়েছে, তা তোমাদের সরকার? হাও নুইসেন্স? ছাত্র জনতা কি এইসব ইসলাম বিরোধী, ধর্ম বিরোধী, কুরআন বিরোধী, পুরুষ বিরোধী দাবী দাওয়া বাস্তবায়নের জন্যেই প্রান দিয়েছে আর হাঁসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফেমিনিষ্ট আনিয়া ফাহমিন দাবী করে, নারী শিক্ষার্থীদের রাত ১০টার মধ্যে হলে প্রবেশের এক সামন্ত্রতান্ত্রিক প্রথা চালু রয়েছে। আমাদের এসব সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ফেমিনিষ্ট তানিয়া মাহমুদা তিন্নি বলেছে, ৫৪ বছর ধরে যে বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে, তা নাকি নারীবান্ধব নয়। কোনো প্রতিষ্ঠানই নাকি নারীবান্ধব নয়।

অতঃপর সমাবেশে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ফেমিনিষ্ট নুজিয়া হাসিন রাশার সঞ্চালনায় একটি অবস্থানপত্র পাঠ করে আরেক ফেমিনিষ্ট শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান। অবস্থানপত্রে সে ১৩ দফা দাবি তুলে ধরে, দাবিগুলো হলোঃ-

১) তনু মুনিয়াসহ প্রতিটি ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করতে হবে।

২) নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা ১৮০ দিনের মধ্যেই নিষ্পত্তি করতে হবে।

৩) ধর্ম, গোত্র, বর্ণের ঊর্ধ্বে গিয়ে প্রতিটি লিঙ্গের মানুষের সম্পত্তিতে সমানাধিকার দিতে হবে। (সরাসরি কুরআন বিরোধী কুফরি দাবী)

৪) ইউনিফর্ম ফ্যামিলি কোড চালু এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। (এটাও কুরআন বিরোধী কুফরি দাবী)

৫) সন্তানের অভিভাবকত্ব আইন পরিবর্তন করতে হবে। নারীকে সন্তানের অভিভাবকত্ব দিতে হবে। (এটাও কুরআন বিরোধী কুফরি দাবী)

৬) ২০০৯ সালের হাইকোর্ট নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন নিপীড়নবিরোধী কমিটি ও সেল তৈরি এবং কার্যকর করতে হবে।

৭) নারী, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী এবং ভিন্ন লৈঙ্গিক পরিচয়ের মানুষের প্রতিনিধিত্বের জন্য যৌক্তিক অনুপাতে কোটা বরাদ্দ দিতে হবে। (এটাও কুরআন বিরোধী কুফরি দাবী, এবং সমকামিতা প্রচারের লাইসেন্স)

৮) ১৮৬০ সালে গর্ভপাতের আইন বাতিল করতে হবে। নারীকে গর্ভপাতের পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। (এটাও কুরআন বিরোধী কুফরি দাবী)

৯) নারী ও লিঙ্গ বৈচিত্র্যের মানুষের জন্য সমান কর্মসংস্থানের সুযোগ দিতে হবে এবং নিরাপদ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে। (এটা তো এই গণঅভ্যুথানের মূলনীতিরই বিপরীত, চাকুরী হবে মেধার ভিত্তিতে)

১০) প্রতিটি ভিন্ন ভিন্ন লৈঙ্গিক পরিচয়ের মানুষের রাষ্ট্রীয় পরিচয়পত্রে তার লৈঙ্গিক পরিচয়ের স্বীকৃতি দিতে হবে। (সমকামীদের বৈধতার লাইসেন্স, প্রাকৃতিক লিঙ্গ ব্যতীত আর্টিফিশিয়াল লিঙ্গ ধারণ করাই হারাম কুফরি)।

১১) সব প্রকার লৈঙ্গিক বৈষম্যকারী আইন বাতিল করতে হবে। (সামাজ বিরোধী দাবী)

১২) বিচার বিভাগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য বিচার বিভাগকে স্বাধীন করতে হবে।

১৩) আন্তর্জাতিক চুক্তি মেনে রাষ্ট্রীয় সব পর্যায়ে নারীর ৩৩ শতাংশ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। (এটা তো এই গণঅভ্যুথানের মূলনীতিরই বিপরীত, চাকুরী হবে মেধার ভিত্তিতে)

এই দেশ যদি মুছলিমের হয়, দেশের মানুষ যদি ধর্মকে ইসলাম হিসেবে মেনে নেয়, যারা মারা গেছে তারা যদি মুছলিমদের সন্তান হয়ে থাকে, আবারো দ্বীন বিরোধী সমাজ ব্যবস্তা যদি বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায় না চায় তাহলে এখুনি ভয়ানক ইসলাম বিদ্বেষী সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা এস মুরশিদের পদত্যাগের দাবী তোলা হোক, ছাত্র জনতা আলীম সমাজের পক্ষ থেকে, এদের যদি মূলেই নির্মুল না করা হয় তাহলে কিন্তু চরম মুল্য দিতে হবে।

Tuesday, August 13, 2024

   হাসিনাকে ফেরত আসতে আহ্বান আওয়ামী দালাল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেনের, কারণ কি জানেন?

হাসিনাকে ফেরত আসতে আহ্বান আওয়ামী দালাল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেনের, কারণ কি জানেন?

শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে অতরবর্তিকালিন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ছুপা আওয়ামী দালাল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছে, আপনার তো নাগরিকত্ব যায়নি, দেশে ফিরে আসেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে বলছি, আপনি দেশে ফিরে আসেনআপনার নাগরিকত্ব তো চলে যায়নি আওয়ামী লীগ দেশের অন্যতম একটি বড় দলএ দলে অনেক ভালো মানুষ আছে, তাদের অনেককে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি আমি আঙ্গুলে গুনে এখনী চাইলে তাদের নাম বলতে পারি, অথচ তারা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেআপনারা দল গোছান, আপনারা তো নিষিদ্ধ না গতকাল সোমবার (১২ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলে এই দালাল খুনীদের সহমর্মী

এখন এই কথা সে কেনো বলতেছে? কিসের ভিত্তিতে? কিসের টানে? যাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা ফরজ, যার দলকে নিষিদ্ধ করা ফরজ তাকে উল্টো নববধূর মতো ট্রিট করতে চায় কেনো এই দালাল?

এটা হলো হাসিনার প্রতি প্রকাশ্যে আনুগত্যের ম্যাসেজ, হাসিনাকে স্বরন করীয়ে দেওয়া যে আপনি পালিয়ে থাকবেন কেনো? বরং আপনি দেশে আসলেই ভালো, আপনাকে জুডিশিয়াল প্রসেডিং এ রাখা হবে না, আপনার বিচারও হবে না। দেশের মূর্খ নাগরিক আবেগে আপনার শাস্তি দাবী করলেই কি আর না করলেই কি, আপনি আসলে তারা যা চাচ্ছে তার কিছুই হবে না।

এর মূল কারণ আপনাকে বলে দিচ্ছি, এখনো আওয়ামিলীগপন্থী প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করেনি, জেনারেলরাও বরখাস্ত হয়নি, ওসিরাও বরখাস্ত হয়নি, এমনকি আমি আপনার পন্থী কনস্টেবলদেরকেও বরখাস্তে রাজি নই।

আপনি কি ভুলে গেছেন? আপনি নিজেই তো আইন বানাই গেছেন ২০০৯ সালে। আপনার সেই আইনটার নাম, কথিত “জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন, ২০০৯” আপনি কি ভুলে গেছেন সেই আইনে কি কি আছে?

(১) “জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন, ২০০৯” এর ২ নং ধারায় বলা হচ্ছে, “পরিবারের-সদস্য” বলতে জাতির পিতার জীবিত দুই কন্যা (অর্থাৎ শেখ হাসিনা আর শেখ রেহানা) এবং তাঁদের সন্তানাদি, ৩ নং ধারায় এই আইনকে প্রাধান্য দিয়ে বলা হচ্ছে, আপাতত জারি আছে এমন অন্য আইনে যা ই থাকুক না কেন এই আইন কার্যকর হবে।

আইনের ৪ (১) ধারায় বলা হচ্ছে, (Special Security Force Ordinance, 1986 (Ordinance No. XLIII of 1986) এর অধীন Very Important Person এর জন্য যেরকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা আছে সেইরকম নিরাপত্তা সরকার জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণকে আজীবন সর্বস্থানে প্রদান করবে।

৪ (২) এ বলা হচ্ছে, উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত নিরাপত্তা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকার পরিবার-সদস্যগণের মতামতকে প্রাধান্য দিবে

৪ (৩) এ বলা হচ্ছে, জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে সরকারঃ-

(ক) তাঁদের দ্বারা নির্ধারিত শর্তে উক্ত পরিবার-সদস্যগণের প্রত্যেকের জন্য নিরাপদ ও সুরক্ষিত আবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে; এবং

(খ) সেসব বিবেচনায় প্রয়োজনীয় অন্যান্য সুবিধাবলিও তাদেরকে প্রদান করবে

(২) এখন এইখানে আরেকটা ব্যাপার আছে, Special Security Force Ordinance, 1986” এই অধ্যাদেশ টা বাতিল হয়ে গেছে এবং আরো শক্তিশালী করার জন্য “বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (Special Security Force) আইন, ২০২১” বানানো হয়েছে এই আইনের ২ নং ধারার ক, গ, ঙ এর সাথে এই লেখার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক, তাই এই তিনটা ই দিচ্ছি

২ নং ধারায় বলা হচ্ছে, বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনেঃ-

(ক) ‘‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’’(VIP) অর্থ সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের রাষ্ট্র প্রধান বা সরকার প্রধান এবং এই আইনের উদ্দেশ্যসমূহ পূরণকল্পে, অনুরূপ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষিত অন্য কোনো ব্যক্তিও এই আইনের অন্তর্ভুক্ত হবেন;

(গ) ‘‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর পরিবারের সদস্যগণ’’ অর্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর দুই কন্যা এবং তাঁদের সন্তানাদি ও ক্ষেত্রবিশেষে তাঁদের সন্তানাদির স্বামী বা স্ত্রী এবং তাঁদের সন্তানাদি;

(ঙ) ‘‘বাহিনী’’ অর্থ বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (Special Security Force)

অর্থাৎ,

২০০৯ ও ২০২১ এর আইন দুইটা থেকে সারমর্ম হলো, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স দ্বারা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা এবং তাদের উত্তরসূরীদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে এবং নিরাপদ বাসস্থান এ তাদেরকে সুরক্ষা প্রদান করা হবে”।

এ অবস্থায় তাকে দেশে আনার জন্য চাপ দেওয়া মূলত দেশের ছাত্র জনতা ও বিপ্লবীদের বিপ্লবকে আবারো স্বৈরাচারী খুনি হাসীনার সন্ত্রাসলীগ ও প্রশাসনলীগের হাতে তোলে দেওয়ার নীল নকসা ব্যতীত মনে করার কিছুই নাই। হে ছাত্রজনতা, হে যুব সমাজ, তোমরা শাহাদাৎ এর বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতা বেহাত হতে দিওনা।

Saturday, August 3, 2024

কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্রকরে আওয়ামীলীগের গণহত্যার ব্যপারে ফতওয়া

কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্রকরে আওয়ামীলীগের গণহত্যার ব্যপারে ফতওয়া

প্রশ্নঃ বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই মাসের কোটা বিরোধী শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রীদের নির্দেশে, বাংলাদেশের মুছলিম শিশু, কিশোর, যুবক, নারী, বৃদ্ধ বৃদ্ধার উপরঃ “ছাত্রলীগ, পুলিশ, রেব, আর্মি বিডিয়ার, মিলে যে গণহত্যা চালিয়েছে, মেরেছে, মরেছে, তাদের উপর ইছলামিক শরীয়ত উনার ফতওয়া কি? তারা কি আদৌ মুছলিম বলে গন্য হচ্ছে ইছলামিক শরীয়ত অনুসারে? দয়া করে এর উপর আপনার ফতওয়া পেশ করবেন, কোন মুফতিই এদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে নারাজ তাই আপনার শরণাপন্ন হয়েছি।

وَعَلَيْكُمُ ٱلسَّلَامُ وَرَحْمَتُ ٱللّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ

উত্তরঃ বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে, বাংলাদেশ বিষয়ক দেশি বিদেশি বিশ্লেষকদের মতামত, চলমান ঘটনার উপর শত শত ভিডিও, হাজার হাজার ছবি, আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্য মিডিয়ার নিউজ ও আমার বিশ্বস্ত সকল অনুসারীদের থেকে প্রাপ্ত সরাসরি জবানবন্দী দ্বারা যে বিষয়গুলি পাওয়া গেছে তা হলোঃ

১) বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ মেধার ভিত্তিতে চাকুরিপ্রাপ্তির দাবী জানিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করেছিলো, যেখানে তাদের হারাম রাজনৈতিক কোন এজেন্ডা ছিলো না।

২) কথিত আওয়ামী সরকার তাদের শান্তিপূর্ণ সেই দাবীকে কবুল তো করেনাই, উল্টো বাংলাদেশের কথিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ও বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ. আরাফাত সহ অনেক মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী ও তাদের অঙ্গসংঘটন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগকে নিরীহ নিরপরাধ অধিকার আদায়ের সংগ্রামী সকল ছাত্রদের উপর এজিদি হামলার নির্দেশ প্রদান করে।

৩) কথিত সরকারের গুন্ডাবাহিনী যখন নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্রদের আক্রমণ করে তখন ছাত্ররা সম্মিলিতভাবে আওয়ামী হানাদার বাহিনীর হামলার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে তারা পালিয়ে যায় পিছু হটে।

৪) কথিত আওয়ামী সরকার তার গুন্ডাবাহিনী দিয়ে যখন ছাত্রদের দমাতে পারেনাই, তখন এইসব মন্ত্রিরা “দেখা মাত্র গুলি করতে” নির্দেশ দেয় পুলিশকে, ফলশ্রুতিতে আবু সাইদকে দিয়ে তাদের গণহত্যার যাত্রা শুরু হয়।

৫) আন্দোলন তীব্র হয়, পুলিশের গুলিতেও যখন নিরস্ত্র ছাত্রসমাজকে থামানো যাচ্ছেনা তখন মাঠে নামানো হয় বিডিয়ার, কিন্তু এদের গুলিতেও তাজা তাজা মুছলিম, অমুছলিম যুবক, বৃদ্ধ এমনকি শিশুদেরও যখন হত্যা করে কোন ফায়দা হয়নি তখন শেষ ভরসা আর্মিকে নামানো হয়।

৬) বাংলাদেশের মানুষের শেষ আশারস্থল আর্মি ও যখন হুকুমের গোলাম হয়ে নিজ দেশের শিশু, কিশোর, যুবক-যুবতি, বৃদ্ধার বুকে চোখ বন্ধ করে গুলী চালায়, তখন বাংলার আম জনতাও বাধ্য হয়ে ছাত্রদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে।

৭) পরিস্থিতি বেসামাল দেখে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট টানা ৬ দিন ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন সারা বাংলার মোবাইল ব্যবহারকারীরা। ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে দিনে রাতে সমানতালে চলে গণহত্যা। কেবল ছাত্রছাত্রীদেরই নয়, বরং দোকানি, পথচারী, দিনমজুর, এমনকি মানুষের বাসায় ঢুকে পর্যন্ত গুলীবর্ষন করা হয়েছে, ফলে শিশু ও বৃদ্ধ পর্যন্ত হত্যার স্বীকার হয়েছেন। এছাড়াও হেলিকপ্টার দিয়েও গ্রেনেড ছোড়া হয়েছে প্রতিবাদী ছাত্রসমাজের উপর। এমনকি ৯৫% মুছলিমের বাংলাদেশে বেওয়ারিশ হিসেবে জানাযা ছাড়াও করা হয়েছে অসংখ্য দাফন, পুলিশি জুলুম কত কঠিন আকার ধারণ করেছে তা বোঝা যায় অনলাইনে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা জানাযা পড়ানোর কারণে ইমামকে নামাজরত অবস্থায় এরেষ্ট করার দিকে তাকালে।

৮) কথিত সরকারি হিসেবেই ২০০+ মুছলিম, মুমিন, অমুছলিমকে হত্যা করেছে আওয়ামীপন্থীরা, শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রীদের হুকুমে, এই হত্যাযজ্ঞে হাসিনার আনুগত্য প্রকাশে যেনো ত্রুটি না হয় সেকারণে অনেক পুলিশ, রেব, আর্মি, বিজিবিও গণহত্যায় শামিল হয়। যদিও নির্ভরযোগ্য সুত্র বলছে হাজারের উপর বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে, আর হাসপাতালে ২০ হাজারের উপর আহত মুছলিম কাতরাচ্ছেন, কেউবা মৃত্যুর জন্যে প্রহর গুনছেন।

৯) পবিত্র সম্মানিত মুহর্মুল হারাম শরীফের মাসে ইয়াজীদ, ইবন যিয়াদ, শিমার, বাহিনীর কায়িম মাক্বাম হতে কোন ত্রুটি রাখেনি আওয়ামী সরকার ও তাদের পোষা বাহিনীরা।

১০) শেখ হাছিনা ও তার অনুসারী অন্ধ আওয়ামীলীগের কিছু মানুষ ছাড়া এই গণহত্যাকে ভুলক্রমেও কুফর হিসেবে মেনে নিতে রাজি নয়।

১১) সন্তানকে হত্যা করে এখন আবার পিতামাতাকেও হয়রানি করা হচ্ছে যাতে তারা কোন ধরণের মামলা মোকদ্দমায় না যায় শেখ হাসিনা ও আওয়ামীলীগের কোন নেতার উপরে।

১২) ক্ষমতার মসনদে বসে থাকার জন্যে যদি পুরো দেশকেও হুমকির মুখে ফেলতে হয় তাহলে তাই করা হবে, তবুও কেউ হক্বের অধিকারে শান্তিপূর্ণ সংগ্রাম পরিচালিত করতে পারবেনা।

জানার বিষয় হলোঃ সরকার বা শাসনব্যবস্থায় কর্তৃত্ব পেলেই কি নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা যাবে? মোটেও না মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ (فَهَلۡ عَسَیۡتُمۡ اِنۡ تَوَلَّیۡتُمۡ اَنۡ تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَ تُقَطِّعُوۡۤا اَرۡحَامَكُمۡ اُولٰٓئِكَ الَّذِیۡنَ لَعَنَهُمُ اللّٰهُ فَاَصَمَّهُمۡ وَ اَعۡمٰۤی اَبۡصَارَهُمۡ) তোমাদের কাছ থেকে এর চাইতে বেশী কি প্রত্যাশা করা যাবে যে, তোমরা (একবার) যদি (জমিনে) শাসন ক্ষমতায় বসতে পারো তাহলে (মহান আল্লাহ তায়ালা উনার) যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং যাবতীয় আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করে ফেলবে (মূলত) এরাই হচ্ছে সে সব মানুষ, যাদের ওপর মহান আল্লাহ তা’য়ালা লানত দিয়েছেন, (এছাড়াও, তিনি তাদের) বোবাও করে দিয়েছেন (তাই তারা সত্য কথা বলতে পারে না) এবং তাদের তিনি অন্ধও করে দিয়েছেন (তাই তারা সত্য কি তা দেখতেও পায় না) (আল কুরআন ৪৭/২২-২৩)

আওয়ামী লিগের দাবী অনুসারে শেখ হাসিনা ৫ ওয়াক্ত নামাজের পাবন্ধি, তাহাজ্জুদ পড়নে ওয়ালা মুছলিমাহ। যেহেতু আ’লা দরজার মুছলিমাহ বলে দাবি করা হচ্ছে সেহেতু আশা করা যায় যে কুরআন ছুন্নাহ (ছ্বহীহ হাদিছ)-এর অনুসারী। তাই ফায়সালা কুরআন ছুন্নাহ তথা শরীয়ত অনুসারেই দেওয়া হলো। আওয়ামীলীগের মধ্যে কুরআন ছুন্নাহর অনুসারী থাকলে তা নির্দ্বিধায় মেনে নেবে ইনশাআল্লাহ।

নিরপরাধ মানুষকে হত্যাকারী, গণহত্যার হুকুমদাতা খুনীদের গডফাদারদের কেবল দুনিয়াই নয়, বরং আখেরাত ও তাদের বরবাদ হয়ে যায়, যেমনঃ মহান আল্লাহ পাক বলেনঃ (وَّ یَقۡتُلُوۡنَ الَّذِیۡنَ یَاۡمُرُوۡنَ بِالۡقِسۡطِ مِنَ النَّاسِ ۙ فَبَشِّرۡهُمۡ بِعَذَابٍ اَلِیۡمٍ اُولٰٓئِكَ الَّذِیۡنَ حَبِطَتۡ اَعۡمَالُهُمۡ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ۫ وَ مَا لَهُمۡ مِّنۡ نّٰصِرِیۡنَ) আর মানুষের মধ্য থেকে যারা ন্যায়-পরায়ণতার নির্দেশ দেয় তাদেরকে (যারা) হত্যা করে, (পেয়ারে হাবীব ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম) আপনি তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিনএরাই হচ্ছে তারা যাদের সমস্ত (নেক) আমল দুনিয়া ও আখেরাতে বরবাদ হয়ে যাবে এবং (সেদিন) তাদের কোন সাহায্যকারীও থাকবেনা। (আল কুরআন ৩/২১-২২)

মহান আল্লাহ্ তাআলা আরো বলেনঃ (وَمَنْ يَّقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيْهَا وَغَضِبَ اللهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيْمًا) ‘‘আর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোন মুমিনকে হত্যা করে তার শাস্তি হবে জাহান্নাম, তার মধ্যে সে সারাজীবন থাকবে এবং মহান আল্লাহ্ তায়ালা সেই লোকের প্রতি ক্রুদ্ধ হবেন ও তাকে লানত প্রদান করবেনএছাড়াও তিনি তার জন্য প্রস্ত্তত করে রেখেছেন মর্মন্ধুত শাস্তি’’। (আন নিছা ৪/৯৩)

(مَنۡ قَتَلَ نَفۡسًۢا بِغَیۡرِ نَفۡسٍ اَوۡ فَسَادٍ فِی الۡاَرۡضِ فَكَاَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِیۡعًا ؕ وَ مَنۡ اَحۡیَاهَا فَكَاَنَّمَاۤ اَحۡیَا النَّاسَ جَمِیۡعًا) যে ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে হত্যার বিনিময়ে অথবা ভূপৃষ্ঠে ফাসাদ সৃষ্টির কারণ ছাড়া অন্যায়ভাবে হত্যা করলো সে যেন সকল মানুষকেই হত্যা করলোআর যে ব্যক্তি কাউকে অবৈধ হত্যাকান্ড থেকে রক্ষা করলো সে যেন সকল মানুষকেই রক্ষা করলো’’। (আল মায়িদাহ শরীফ ৫/৩২)

আর এই ধরণের হত্যাকান্ডকে হাদীসের পরিভাষায় সর্ববৃহৎ গুনাহ্ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছেযেমন আনাস বিন মালিক রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘সর্ববৃহৎ কবীরা গুনাহ্ হচ্ছে চারটি, “১) মহান আল্লাহ্ তায়ালা উনার সাথে কাউকে শরীক করা, কোন ব্যক্তিকে অবৈধভাবে হত্যা করা, (মুমিন) মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া এবং মিথ্যা সাক্ষী দেয়া’’। (বুখারী শরীফ ৬৮৭১; মুসলিম শরীফ ৮৮)

তাছাড়া এখন দলিল হিসেবে যা যুক্ত করবো হাদিছ শরীফ থেকে সেই হাদিছ শরীফগুলোতে হত্যাকান্ডের ভয়াবহতা ও ভয়ঙ্করতা আরো সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে

মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট ইচ্ছাকৃত হত্যাকারীর ক্ষমার আশা খুবই ক্ষীণকেননা রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম বলেনঃ ‘‘প্রতিটি গুনাহ্ আশা করা যায় যে, মহান আল্লাহ্ তাআলা তা ক্ষমা করে দিবেনতবে দুটি গুনাহ্ যা আল্লাহ্ তাআলা ক্ষমা করবেন নাআর তা হচ্ছে, কোন মানুষ কাফির অবস্থায় মৃত্যু বরণ করলে অথবা ইচ্ছাকৃত কেউ কোন মুমিনকে হত্যা করলে’’। (নাসাঈ শরীফ ৩৯৮৪; মুছনাদে আহমাদ ১৬৯০৭; হাকিম ৪/৩৫১)

এতো গেলো অন্যকে হত্যার ব্যাপারে, অথচ আপন সন্তান ও যদি কোন মহিলার গর্ভ ধারণের চার মাস পর দরিদ্রতার ভয়ে তার গর্ভপাত করানোরই হুকুম নাই, কেননা কাউকে অবৈধভাবে হত্যা করার শামিলআব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ ‘‘জনৈক ব্যক্তি রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলো, ইয়া রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম! কোন পাপটি মহান আল্লাহ্ তায়ালার নিকট মহাপাপ বলে বিবেচিত? রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম বললেন, মহান আল্লাহ তায়ালার সাথে কাউকে শরীক করা; অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেনসে বললো অতঃপর কি? তিনি বললেন নিজ সন্তানকে (গর্ভে থাকা অবস্থায়) হত্যা করা ভবিষ্যতে তোমার সঙ্গে খাবে বলে। (বুখারী শরীফ ৪৪৭৭, ৪৭৬১, ৬০০১, ৬৮১১, ৬৮৬১, ৭৫২০, ৭৫৩২; মুসলিম শরীফ ৮৬) এই হাদিছ শরীফের মূল হুকুম কালামুল্লাহ শরীফে পাওয়া যায়, যেখানে মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি বলেনঃ (وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَوۡلَادَكُمۡ خَشۡیَۃَ اِمۡلَاقٍ ؕ نَحۡنُ نَرۡزُقُهُمۡ وَ اِیَّاكُمۡ ؕ اِنَّ قَتۡلَهُمۡ كَانَ خِطۡاً كَبِیۡرًا) দরিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে (ভ্রুনেই) হত্যা করো না। (ভুলে যেওনা) তোমাদের ও তাদের রিযিকদাতা (কেবল) আমিই, (একারণে দরিদ্রতার ভয়ে) তাদের হত্যা করা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। (ছুরাহ আল ইসরা ১৭/৩১ ও আল আনআম ৬/১৫১) এখন আপন পিতামাতা ভ্রুনেই যেখানে সন্তানকে হত্যার অধিকার পাচ্ছেনা, সেখানে জলজ্যান্ত নিরপরাধ মানুষকে হত্যার কোন সুযোগই নাই, না এর আছে কোন ক্ষমার সুযোগ।

এই ব্যপারে হাদিছ শরীফে এসেছেন, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘হত্যাকৃত ব্যক্তি হত্যাকারীকে সঙ্গে নিয়ে কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তায়ালার সামনে উপস্থিত হবেহত্যাকৃত ব্যক্তির মাথা তার হাতেই থাকবেশিরাগুলো থেকে তখন রক্ত পড়বেসে মহান আল্লাহ তাআলাকে উদ্দেশ্য করে বলবেঃ হে আমার প্রভু! এ ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছেএমনকি সে হত্যাকারীকে আরশের অতি নিকটেই নিয়ে যাবেশ্রোতারা আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিআল্লাহু আনহুকে উক্ত হত্যাকারীর তাওবা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উপরোক্ত সূরাহ নিসার আয়াত শরীফটি তিলাওয়াত করে বললেনঃ উক্ত আয়াত রহিত হয়নিপরিবর্তনও হয়নিঅতএব তার তাওবা কোন কাজেই আসবে না’’। (তিরমিযী শরীফ ৩০২৯; ইব্নু মাজাহ্ শরীফ ২৬৭০; নাসায়ী শরীফ ৪৮৬৬)

আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘মুমিন ব্যক্তি সর্বদা ধর্মীয় স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা ভোগ করবে যতক্ষণ না সে কোন অবৈধ রক্তপাত করবে’’। (বুখারী শরীফ ৬৮৬২)

আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে আরো বর্ণিত তিনি বলেন রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘এমন ঝামেলা যা থেকে বাঁচার কোন উপায় নেই তা হচ্ছে অবৈধভাবে কারোর রক্তপাত করা (অর্থাৎ কাউকে হত্যা করা বিনা অপরাধে)’’। (বুখারী শরীফ ৬৮৬৩)

আব্দুল্লাহ ইবনে মাস্ঊদ রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘কিয়ামতের দিন মানবাধিকার সম্পর্কিত সর্বপ্রথম হিসেব হবে রক্তের’’। (বুখারী শরীফ ৬৫৩৩, ৬৮৬৪; মুসলিম শরীফ ১৬৭৮; ইব্নু মাজাহ্ শরীফ ২৬৬৪, ২৬৬৬)

আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিআল্লাহু আনহু ও আবূ হুরায়রাহ রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত উনারা বলেনঃ রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘যদি আসমান ও জমিনের সকলে (মাখলুক) মিলেও কোন মুমিন হত্যায় অংশ গ্রহণ করে তবুও মহান আল্লাহ তাআলা তাদের সকলকে মুখ থুবড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন’’। (তিরমিযী শরীফ ১৩৯৮)

জারীর বিন আব্দুল্লাহ্ আল-বাজালী, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ও আবূ বাক্রাহ রদ্বিআল্লাহু আনহুমাদের থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, “রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘আমার দুনিয়া থেকে পর্দা তথা বিছাল শরীফের পর তোমরা কাফির হয়ে যেও নাআর তোমরা একে অন্যকে হত্যা করো না’’। (বুখারী শরীফ ১২১, ১৭৩৯, ৪৪০৫, ৬১৬৬, ৬৭৮৫, ৬৮৬৮, ৬৮৬৯, ৭০৮০; মুসলিম শরীফ ৬৫, ৬৬, ১৬৭৯)

আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট একজন মুসলিমকে হত্যা করার চেয়ে পুরো দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাওয়া অধিকতর সহজ’’। (তিরমিযী শরীফ ১৩৯৫; নাসাঈ শরীফ ৩৯৮৭; ইব্নু মাজাহ শরীফ ২৬৬৮)

আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে আরো বর্ণিত রয়েছে, তিনি বলেন, রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘যে ব্যক্তি চুক্তিবদ্ধ কোন কাফিরকে হত্যা করলো সে জান্নাতের সুগন্ধও পাবে না; অথচ জান্নাতের সুঘ্রাণ চল্লিশ বছরের রাস্তার দূরত্ব থেকেও পাওয়া যায়’’। (বুখারী শরীফ ৩১৬৬, ৬৯১৪; ইব্নু মাজাহ্ শরীফ ২৬৮৬)

আবদুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন, আমি রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লামকে কাবা ঘর তাওয়াফ করতে দেখলাম এবং তিনি বলছিলেনঃ কত উত্তম আপনি হে কাবা! আকর্ষণীয় আপনার খশবু, কত উচ্চ মর্যাদা আপনার (হে কাবা)! কত মহান সম্মানের অধিকারী আপনিসেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ!, মহান আল্লাহ তায়ালা উনার নিকট মুমিন ব্যক্তির জান-মাল ও ইজ্জতের মর্যাদা আপনার চেয়ে অনেক বেশীআমরা মুমিন ব্যক্তি সম্পর্কে সুধারণাই পোষণ করি। (তিরমিযী ২০৩২, ইব্নু হিববান ৫৭৬৩, ইবনে মাজাহ শরীফ ৩৯৩২)

অতএব ছাত্র আন্দোলনের পুরো ঘটনা পর্যালোচনা করে শরীয়ত অনুসারে যে রায় পাওয়া যায়, তা হলোঃ “শেখ হাসিনা ও তার বাহিনীর যারা এই হত্যাযজ্ঞে জড়িত, যারা মনেপ্রাণে এই হত্যাগুলিকে সমর্থন করে, যায়েজ মনে করে, তারা সবাই মুর্তাদ, এদের বিয়ে বাতিল, স্ত্রীর/স্বামীর সাথে মিলিত হলে জিনা হবে, সন্তান জন্মালে তা হবে জারজ, কেননা তারা কুফুরি করেছে। হাদিছ শরীফে এসেছেনঃ “আব্দুল্লাহ ইবনে মাস্ঊদ রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিছে, রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘কোন মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসেকি এবং তাকে হত্যা করা কুফরি’’ (বুখারী শরীফ ৪৮, মুসলিম শরীফ ৬৪) আর আয়াতে পাকে স্পষ্ট বলা হয়েছেঃ (وَمَنْ يَّقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيْهَا وَغَضِبَ اللهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيْمًا) ‘‘আর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোন মুমিনকে হত্যা করে তার শাস্তি হবে জাহান্নাম, তার মধ্যে সে সারাজীবন থাকবে এবং মহান আল্লাহ্ তায়ালা সেই লোকের প্রতি ক্রুদ্ধ হবেন ও তাকে লানত প্রদান করবেনএছাড়াও তিনি তার জন্য প্রস্ত্তত করে রেখেছেন মর্মন্ধুত শাস্তি’’। (আন নিছা ৪/৯৩) উক্ত আয়াত শরীফে ৪ শাস্তি হত্যাকারীর ব্যপারে মহান আল্লাহ পাক উল্লেখ করেছেন, যেখানে প্রথমেই যাহান্নামের বাসিন্দাদের অন্তর্ভুক্ত করে দিয়েছেন, এরপর বলেছেন, হত্যাকারী সেই জাহান্নামে সারাজীবন থাকবে, এরপর বলেছেন গজবনাক হবেন এবং ভয়ানক আযাবের ব্যবস্থাও করে রেখেছেন।

এই জামানার স্বৈরাচারীরা মনে করে যে হত্যা কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত, তাওবা করলেই মাফ পেয়ে যাবে অথচ আমরা দেখেছি যে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিআল্লাহু আনহুর মুখনিঃসৃত হাদিছ শরীফে তিনি বলেছেন হত্যাকারীর তাওবা কবুল হয়না, তাহলে বোঝা গেলো যে ইহা কবিরা গুনাহের চেয়েও অনেক উপরের বিষয়। তাছাড়া আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বিদাহ হলেন কবিরা গুনাহ দ্বারা ইনছান কাফের হয়না, আর কবিরাহ গুনাহ ইনছানকে সারাজীবন জাহান্নামে রাখার মতো কারণের অন্তর্ভুক্ত ও নয়। তাহলে উক্ত আয়াত শরীফের জাহির তো জানলাম, বাতিনের ব্যপারে ইমামগণের মত কি? মহান আল্লাহ পাক তিনি তো স্পষ্ট করেই আল কুরআনে বলে দিয়েছেন, হত্যা, গণহত্যাকারী চিরস্থায়ী যাহান্নামী, এর মানে কি? এর মানে হলো যে ব্যক্তি, গোত্র মিলে কোন মুছলিমকে হত্যা করবে তার ক্বলব থেকে কলিমা শরীফ সরাই দেওয়া হবে, অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্বে সে কাফের হয়ে মরবে, কারণ যত বড় গুনাহগার হোক, জররা পরিমাণ ঈমান তার মধ্যে থাকলে সে জাহান্নামে চিরজীবন থাকবেনা, একারণেই আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিআল্লাহু বলেছেন হত্যা, গণহত্যাকারীর তাওবা কবুল হবেনা কারণ তাওবা কবুল হলে সে জাহান্নামে চিরস্থায়ী থাকবেনা, একারণেই প্রথমদিকেই হাদিছ শরীফ উল্লেখ করা হয়েছে যে মুছলিমকে হত্যা করা কুফরি তথা হত্যাকারীর মৃত্যুও হবে কুফরের উপর, এতে সে যত বড় আবিদই হোক না বাহ্যিক দৃষ্টিতে।

উক্ত ফতোয়ার আলোকে বাংলাদেশী মুছলিমরা কি করবেন এইসব হত্যাকারীদের ব্যপারে?

১) হাসিনা ও তার সহযোগী সকল খুনীই চির যাহান্নামী লানতুল্লাহ।

২) যেহেতু এরা চির যাহান্নামী তাই হাসিনা, ও তার যেসকল মন্ত্রী, ও দলের সদস্য, পুলিশ, আর্মি, বিজিবি, রেব, আনসারের মধ্যে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে তাদের সাথে দ্বীনি সকল সম্পর্ক ত্যাগ করতে হবে।

৩) এরা মারা গেলে এদের মুছলিমদের কবরে দাফন করা ও জানাযা পড়া হারাম।

৪) সামাজিকভাবে এদের বয়কট করতে হবে।

৫) কখনো ইসলামিক হুকুমাত বাংলাদেশে কায়েম হলে, এদের যারা বেঁচে থাকবে তাদের কিসাসের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

রইলো, আওয়ামীলীগের যেসকল সদস্য, পুলিশ, আর্মি, বিজিবি, রেব, আনসার বা অন্যান্য দলের (বিএনপি, জামায়াত, জাতীয়পার্টি ইত্যাদি) মারা গেছে তাদের ফায়ছালা কি? তারা কি শহীদ?

মোটেও না, শহীদ কেবল তারা যারা ছাত্র ছিলো, এবং আম জনতা, পথচারী, মৃত্যুর সময় আক্বিদাহ বিশুদ্ধ ছিলো মহান আল্লাহ পাক, রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম, কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাহ-এর ব্যপারে, কোটা বাতিল ব্যতীত সরকার পতনের কোন মোটিভ নিয়ে রাস্থায় নামে নাই। কিন্তু যারা সরকার দলীয় বা বিরোধী দলের লোক গণতন্ত্র নামক কুফরের চেয়ারে বসে থাকা আওয়ামীলীগকে সরিয়ে নিজেদের বসানোর সুযোগ মনে করে রাস্তায় নেমে মরেছে তারা মূলত জাহেলিয়াতের উপর মৃত্যুবরণ করলো, কেননা আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ যে ব্যক্তি (ইসলামি খিলাফতের) আমীরের আনুগত্য থেকে বেরিয়ে গেল এবং জামায়াত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল সে জাহেলিয়াতের (অবস্থায়) মৃত্যুবরণ করলআর যে ব্যক্তি (দ্বীনের) লক্ষ্যহীন নের্তৃত্বের পতাকাতলে যুদ্ধ করে দলপ্রীতির জন্য ক্রুদ্ধ হয় অথবা দলের দিকে আহবান করে অথবা দলের সাহায্যার্থে যুদ্ধ করে (মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির কোন ব্যাপার সেখানে থাকেনা) আর তাতে নিহত হয়, সেও জাহেলিয়াতের উপর মৃত্যুবরণ করে। (মুসলিম শরীফ ১৮৪৮এ, নাসাঈ শরীফ ৪১১৪, মিশকাত শরীফ ৩৬৬৯) 

وَاللهُ أعْلَمُ بِالصَّوَابِ

مُحَمَّد رَجِيبْ خَوَاجَهْ

شَيْخُنَا وَ مُرْشِدِنَا إِمَامُ الطّٰرِيْقَةِ الْرَاج

٢٨/٠١/١٤٤٦

Monday, January 7, 2019

রাজিনীতিকে ফরজ বানানেওয়ালা জাহেলদের কুফুরি ফতোয়ার পোস্টমর্টেম

রাজিনীতিকে ফরজ বানানেওয়ালা জাহেলদের কুফুরি ফতোয়ার পোস্টমর্টেম


এই হেদায়েতপূর্ণ লিখাটি যারা ১০০% কুরআন সুন্নাহ উনাদের অনুসারী মুসলিম তাদের জন্য তাই দলকানারা দূরে থাকবেন। দয়াকরে প্যাঁচাল না পাড়লেই খুশী হবো। ত্যানা পেঁচাইয়া কোন ফায়দা হবেনা।


এরপর


এরপর

বাংলাদেশ "ইসলামী ফ্রন্ট" এর এক মুফতি ফতোয়া দিলো, মোমবাতিতে ভোট দেওয়া নামাজের চেয়েও বড় ফরজ

এরপর

বিএনপির সমর্থকেরা বলছে আওয়ামীলীগের যুলুমের বিপরীতে নাকি বিএনপিকে ভোট দেওয়া ফরজ হয়ে গেছে।

এরকম আরো কতো ভূরি ভূরি কুফুরী ইমানবিধ্বংসী বুলি যে এই মুহূর্তে ভোটের মার্কেটে বিদ্যমান তা বলার বাহিরে।

নাউযুবিল্লাহ!!! নাউযুবিল্লাহ!!! নাউযুবিল্লাহ!!!

আসলে তাদেরকে আমার বলার কিছুই নাই, তবে বলার অনেক কিছুই আছে মুসলমানদের। তাই মুসলমানদেরকেই বলছি।

সম্মানিত পবিত্র দ্বীন ইসলাম যদি আপনার ধর্ম হয়ে থাকেন আর আপনি যদি শুধু জন্মে নন কর্মেও ১০০% মুসলমান হয়ে থাকেন তাহলে আপনার আক্বিদাহ পরিশুদ্ধ করতে হবে। আপনাকে মেনে নিতে হবে যে, ইসলাম প্রতিষ্টার জন্য কোন কুফুরি মতবাদ তথা, গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র, সমাজতন্ত্র বা যেকোন তন্ত্র মন্ত্রই হোক এসব দিয়ে আপনি দ্বীন প্রতিষ্টা করতে পারবেন না কস্মিনকালেও, কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেনঃ (بِمَا أنزَلَ اللّهُ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ بِمَا أَنزَلَ اللّهُ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ) যারা আমার অবতীর্ণকরা বিধান (সম্মানিত আল কুরআন ও রাসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নাহ) দ্বারা দুনিয়ার শাসনকার্য পরিচালনা করেনা, তারাই কাফের, তারাই যালিম। (সূত্রঃ সুরাহ মায়েদা শরীফ আয়াত শরীফ ৪৪-৪৫)

এখন আপ্নিই বলেন, মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্রগুলো কি মহান আল্লাহ পাক উনার বিধান দ্বারা পরিচালিত হয়েছে নাকি হচ্ছিলো নাকি হচ্ছে নাকি হবে নাকি কুফফার্দের বানানো বিঁধানে পরিচালিত হয়েছে, হচ্ছে, হবে?

আওয়ামীলীগ বিএনপি বাদ দিলাম, এরা তো নিজেদের ইসলামিক দল বলে দাবী করছেনা কিন্তু যারা নিজেদের ইসলামের ঠিকাদার বলছে তারা কি ইসলাম কি তা একচুয়েলি জানে? জানলে কি বুঝে? বুঝলে কি মানে?

তারা আদতে কি তা বোঝার জন্য পাঠকের সম্মুখে কয়েকটি হাদিস শরীফ উপস্থাপন করছিঃ পবিত্র হাদীছ শরীফে উল্লেখ আছেঃ (عَنْ حَضْرَتْ اَبِي مُوسٰى رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ دَخَلْتُ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَا وَرَجُلَانِ مِنْ بَنِيْ عَمِّيْ فَقَالَ اَحَدُ الرَّجُلَيْنِ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَمِّرْنَا عَلٰى بَعْضِ مَا وَلَّاكَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ‏.‏ وَقَالَ الاٰخَرُ مِثْلَ ذٰلِكَ فَقَالَ اِنَّا وَاللهِ لَا نُوَلِّيْ عَلٰى هٰذَا الْعَمَلِ اَحَدًا سَأَلَهُ وَلَا اَحَدًا حَرَصَ عَلَيْهِ‏.‏অর্থঃ হযরত আবূ মুসা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়া'লাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে আমি ও আমার দুজন চাচাত ভাই উপস্থিত হলাম। সে দুজনের একজন বললেন, ইয়া রছুলাল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়া'লাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম! আল্লাহ পাক আপনাকে যেসকল কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন, আপনি আমাদেরকে ওটার মধ্য হতে কোন একটির শাসক নিযুক্ত করুন এবং দ্বিতীয়জনও অনুরূপই বললো। উত্তরে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়া'লাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমরা এ কাজে (শাসক পদে) এমন কোন ব্যক্তিকে নিয়োগ করিনা, যে ওটার প্রার্থী হয় এবং ঐ ব্যক্তিকেও নিয়োগ করিনা, যে ওটার লোভ বা আকাঙ্খা করে।
√ (মুসলিম শরীফঃ কিতাবুল ইমারাতঃ বাবুন নাহয়ি আর ত্বলাবিল ইমারাত ওয়াল হিরছ আলাইহাঃ হাদীছ শরীফ নং ৪৫৬৬, ইফা)

পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত রয়েছেঃ (عَنْ حَضْرَتْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ سَـمُرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ لِي رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا عَبْدَ الرَّحْمَنِ لَا تَسْأَلِ الْإِمَارَةَ فَاِنَّكَ اِنْ اُعْطِيْتَهَا عَنْ مَسْأَلَةٍ اُكِلْتَ اِلَيْهَا وَاِنْ اُعْطِيْتَهَا عَنْ غَيْرِ مَسْأَلَةٍ اُعِنْتَ عَلَيْهَا‏অর্থঃ হযরত আব্দুর রহমান ইবনে সামুরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়া'লাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম তিনি আমাকে বললেন, হে আব্দুর রহমান! আপনি নেতৃত্ব বা পদ চাইবেন না। কেননা, যদি আপনাকে ওটা চাওয়ার কারণে দেয়া হয়, তবে ওটা আপনার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। আর যদি ওটা আপনাকে চাওয়া ব্যতীত দেয়া হয়, তাহলে এ ব্যাপারে আপনাকে সাহায্য করা হবে।
√ (মুছলিম শরীফ: কিতাবুল ইমারাত: বাবুন নাহয়ি আর ত্বলাবিল ইমারাত ওয়াল হিরছ আলাইহা: হাদীছ শরীফ নং ৪৫৬৪, ইফা)

আরো বর্ণিত রয়েছেঃ (عَنْ حَضْرَتْ اَبِي هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ تَـجِدُوْنَ مِنْ خَيْرِ النَّاسِ اَشَدَّهُمْ كَرَاهِيَةً لِـهَذَا الْاَمْرِ حَتّٰى يَقَعَ فِيْهِঅর্থঃ হযরত আবূ হুরায়রা রদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়া'লাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এই শাসনভারকে যারা কঠোরভাবে ঘৃণা করে, উনাদেরকে আপনারা উত্তম লোক হিসেবে পাবেন, যে পর্যন্ত উনারা তাতে লিপ্ত না হয়।
√ (বুখারী শরীফঃ কিতাবুল মানাক্বিবঃ বাবু আলামাতিন নুবুওওয়াতি ফিল ইসলামঃ হাদীছ শরীফ নং ৩৫৮৮)

পাঠক লক্ষ্য করুন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়া'লাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম প্রত্যেক ব্যক্তিকে পদপ্রার্থী হতে নিষেধ করেছেন। তাহলে যারা ইসলামের নাম দিয়ে নির্বাচনে পদপ্রার্থী হচ্ছে, যদি তারা উম্মত দাবী করে থাকে, তাদের খালিছ তওবা করে এ ধরনের হারাম কাজ থেকে ফিরে আসতে হবে।

আমি জানি যে এর পরেও কতিপয় নামধারী মুফতি গোয়ারমী করবে যে ইসলাম প্রতিষ্টার জন্য এখন রাজনীতি, নির্বাচন, কুফুরিতন্ত্র ব্যতীত আর কোন পথ নাই, নাউযুবিল্লাহ!!! তবে কি রাসূলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়া'লাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম সেই ১৪০০+ বছর আগে মিথ্যা বলে গিয়েছিলেন? নাউযুবিল্লাহ!!!

হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছেঃ (قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : تَكُونُ النُّبُوَّةُ فِيكُمْ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ تَكُونَ ، ثُمَّ يَرْفَعُهَا إِذَا شَاءَ أَنْ يَرْفَعَهَا ، ثُمَّ تَكُونُ خِلاَفَةٌ عَلَى مِنْهَاجِ النُّبُوَّةِ ، فَتَكُونُ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ تَكُونَ ، ثُمَّ يَرْفَعُهَا إِذَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَرْفَعَهَا ، ثُمَّ تَكُونُ مُلْكًا عَاضًّا ، فَيَكُونُ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَكُونَ ، ثُمَّ يَرْفَعُهَا إِذَا شَاءَ أَنْ يَرْفَعَهَا ، ثُمَّ تَكُونُ مُلْكًا جَبْرِيَّةً ، فَتَكُونُ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ تَكُونَ ، ثُمَّ يَرْفَعُهَا إِذَا شَاءَ أَنْ يَرْفَعَهَا ، ثُمَّ تَكُونُ خِلاَفَةً عَلَى مِنْهَاجِ نُبُوَّةٍ ثُمَّ سَكَتَঅর্থঃ হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক যতদিন ইচ্ছা করেন ততদিন আপনাদের মাঝে নুবুওওয়াত পরিপূর্ণভাবে বিদ্যমান থাকবে। অতঃপর তিনি এক সময় তা তুলে নিবেন। তারপর দুনিয়ার যমীনে খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ প্রতিষ্ঠিত হবে। মহান আল্লাহ পাক যতদিন ইচ্ছা করেন ততদিন দুনিয়ার যমীনে খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ প্রতিষ্ঠিত থাকবে। অতঃপর একসময় এই খিলাফত বিদায় নিয়ে এমন শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে, যেখানে অত্যাচারী রাজা-বাদশাহরা ক্ষমতা লাভের জন্য একে অপরের সাথে কামড়াকামড়ি করবে। (অর্থাৎ রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।) তারপর হবে অত্যাচার, বেইনসাফীতে পরিপূর্ণ শাসন ব্যবস্থা, (গণতন্ত্র)। মহান আল্লাহ পাক এক সময় তা মিটিয়ে দিবেন। অতঃপর পুনরায় দুনিয়ার যমীনে খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ প্রতিষ্ঠিত হবে।সুবহানাল্লাহ!!!

(লীলঃ মুসনাদে আহমদ, হাদীছ শরীফ নং ১৮৪০৬, মুসনাদে ত্বয়ালসী, হাদীছ শরীফ নং ৪৩৯, বাযযার, হাদীছ শরীফ নং ২৭৯৬, বাইহাক্বী শরীফ, আল মুজামুল কাবীর হাদীছ শরীফ নং ১/১৫৯: হাদীছ হাদীছ শরীফ নং ৩৭২, আহকামুশ শরীয়াহ হাদীছ শরীফ নং ৪/৫২৫, মাজমাউঝ ঝাওয়াইদ, হাদীছ শরীফ নং ৫/২২৬, জামিউল আহাদীছ, হাদীছ শরীফ নং ৯/১৩২)

এই হলো নবুওওয়াত মুবারক থেকে শুরু করে দুনিয়ার জমিনের শেষ পর্যন্ত শাষন ব্যবস্থার চিত্র।

ইসলামের কথিত ঠিকাদারদের কাছে আমার জানার বিষয় হচ্ছে যারা আজ কুফুরিতন্ত্রের মাধ্যেমে ইসলাম প্রতিষ্টার জন্য যারা পদপ্রার্থী হওয়া জায়িয বলছে, গনতন্ত্র জায়িয বলছে, তারা উপরোক্ত হাদীছ শরীফের কোন অংশের দাবিদার? উত্তর কি পাবো?

এখন তাহলে পথ কি? কিভাবে আপনি আমি জালিমের যুলুম থেকে পরিত্রান পাবো?

পথ বলার আগে আমাদের জানা প্রয়োজন যে আমরা যদি নিজেদের শুধু জন্মে নয় বরং কর্মেও মুসলিম মনে করি আর চাই মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সাহায্য করবেন তাহলে আমাদের কি নিজেদের মনগড়া চলে তা হাসিল করা যাবে নাকি আমাদের যেভাবে চলার কথা বলা হয়েছে সেরকম চলে তা হাসিল করতে হবে?

আর বর্তমান বিশ্বপরিস্থিতিতে যদি প্রশ্ন করেনঃ- ইসলামী খিলাফত আবার কবে ফিরে আসবে দুনিয়ার মাঝে?

তাহলে উত্তর হলোঃ মহান মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেনঃ (وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُم فِي الْأَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ الَّذِي ارْتَضَى لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُم مِّن بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْنًا يَعْبُدُونَنِي لَا يُشْرِكُونَ بِي شَيْئًا وَمَن كَفَرَ بَعْدَ ذَلِكَ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَতোমরা যখন প্রকৃত ঈমান আনবে বা ঈমানদার হতে পারবে এবং একই সাথে আমলে ছ্বলেহ অর্থাৎ ছুন্নাহ মুতাবিক নিজেদের আমল আখলাক সুসজ্জিত করতে পারবে তখনি তোমাদেরকে খিলাফত অর্থাৎ শাসন কতৃত্ব দান করা হবে-এটাই মহান আল্লাহ পাক উনার ওয়াদা। সুবহানাল্লাহ! (সূত্রঃ সুরাহ নুর শরীফ, আয়াত শরীফ নং ৫৫)

আবার আপনি বলুন আপনি যে গণতন্ত্র দিয়ে ইসলাম প্রতিষ্টার কুফুরী চিন্তা করছেন তা কি কনদিন সফল হবে?

বিএনপির সাথে জামায়াত শিবিরের বাঘা বাঘা কথিত ইসলামীক নেতা ছিলো পূর্বে এদেশের শাসনকার্যে, আমাকে কেউ কি বলবেন ইসলাম কতটুকু প্রতিষ্টা হয়েছিলো?
আসলে আপনাদের এই কঠিন সত্যের সম্মুখে কুতর্ক ব্যাতিত কিছুই বলার নাই, কারন হলো আপনি আপনার নফসের পূজারী, মহান আল্লাহ পাক ও উনার রাসুল ছল্লাল্ললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নন।

উনাদের হলে তো আপনি মোমিন হতেন, কুফুরিতন্ত্রের ধারকবাহক হতে হারাম পন্থায় বিজয়ের স্বপ্ন দেখতেন না কারন বিজয় কেবল মোমিনদের জন্যেই বরাদ্ধ, যা ক্লিয়ার কাট মহান আল্লাহ পাক তিনি বলে দিয়েছেনঃ (وَلاَ تَهِنُوا وَلاَ تَحْزَنُوا وَأَنتُمُ الأَعْلَوْنَ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَতোমরা নিরাশ/হতাশ/আশাহত বা মন ভাঙ্গা হয়ো না, দুঃখিতও হয়ো না, তোমরাই বিজয়ী হবে, যদি তোমরা (সত্যিকারার্থে) মুমিন হও। (সূত্রঃ সুরাহ আলে ঈমারান শরীফ, আয়াত শরীফ নং ১৩৯)

উপরে বর্ণীত কুরআন শরীফ, হাদিস শরীফ ও উনাদের ব্যখা বিশ্লেষণ পড়ে কি আপনার মনে হয় এসব গণতন্ত্র নামক কুফুরীতন্ত্রের ধারকবাহকেরা মোমিন? এরা তো মুসলমানের কাতারেই পড়েনা মোমিন তো বহুদূর।


মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের যা বলেছেন তা বোঝার, মানার ও পালন করার তৌফিক দিন আমিন।