Thursday, May 29, 2014

ছবি আকা, বা ক্যামেরায় ছবি, সেলফি তোলা, অনলাইনে আপলোড করা কি জায়েয, নাকি হারাম?

বর্তমান যামানা হলো ফেত্নার যামানা, ফেত্না থেকে বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব, কঠিন নফসের জিহাদ করা লাগে, যেহেতু মানুষ আল্ট্রা মডার্ন আর তাসাউফের ধারে কাছেও নাই তাই তার পক্ষে নফসের জীহাদের বদলে পূজাই হয়ে ওঠে দ্বীন পালন

ছবির ফেত্না থেকে বেঁচে থাকা য়া’লীম উলামা খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব, সাহারার মধ্যে সুঁই খোঁজার মতো। ৯৯.৯৯% য়া’লীম উলামা এই হারাম কাজে জড়িত যারা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে।

যাইহোক, নিচে বিভিন্ন ফেরকার ছবির ব্যপারে দেওয়া ফাতওয়া, কুরআন শরীফ ও হাদিছ শরীফে সরাসরি যা পাওয়া যায়, এছাড়াও মানতেক ও বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা সহ উপস্থাপন করা হচ্ছে। প্রথমেই জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, উক্ত দলিল আদ্বীল্লা থেকে আপনি যা বুঝেন সেটাই আপনার জন্যে মেনে নেওয়া ফরজ। এখন আমার মতামত তাহলে কি? সেটা আমি নিচে ব্যক্ত করবো ইনশাআল্লাহ।

দেওবন্দি ফেরকার মুফতিদের ফাতওয়া হলো ফেসবুকে ছবি আপলোড করা সম্পুর্ণ হারাম ও নায়ায়েজউর্দূ ফতওয়াপ্রশ্নঃ (حضرت، میرا سوال یہ ہے کہ مجھے فیس بک پر اپنی تصویر دینا جائز ہے یا انٹرنیٹ پر جب کہ ہم جانتے ہیں کہ مسلمان عورتیں بھی نیٹ استعمال کرتی ہیں، اور ظاہر ہے کہ وہ آنکھیں بند کر کے استعمال نہیں کر سکتیں، ان کی نامحرم پر نظر لازمی پڑتی ہے، تو جو لوگ یہ جانتے ہوئے بھی اپنی تصویریں دیتے ہیں، کیا وہ درست ہے؟ میں نے علمائے دیوبند کو بھی غیر ضروری تصویریں دیتے دیکھا ہے) অনুবাদঃ হযরত! আমার জানার বিষয় হলো, ফেসবুক-ইন্টারনেটে আমার ছবি আপলোড দেয়া কী যায়েজ হবে? আমরা এ সম্পর্কে অবগত আছি যে, মুছলিম নারীরাও আজকাল নেট ব্যবহার করছেআর এটা তো স্পষ্ট যে, তারা চোখ বন্ধ করে নেট ব্যবহার করে নাপরপুরুষের ওপর তাদের দৃষ্টি পতিত হয়তো, যারা এটা জানা সত্ত্বেও নিজের ছবি আপলোড দেয়, সেটা কী জায়েয? আমি ওলামায়ে দেওবন্দকেও অপ্রয়োজনীয় ছবি আপলোড করতে দেখেছি

উত্তরঃ ফেসবুক-ইন্টারনেটে নিজের ছবি তোলে আপলোড দেয়া জায়েয নয়এই বিধান জনসাধারণ এবং আলেম সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্যযারা জেনেশোনে স্বেচ্ছায় নিজেদের ছবি ফেসবুক-ইন্টারনেটে আপলোড করে বা করাই, তাদের এই কাজ শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েয নয়চায় আপলোডকারী বা আপলোডের নির্দেশদাতা যে কেউ হোক (وَٱللَّهُ تَعَالَىٰ أَعْلَمُ)

দারুল ইফতা, দারুল উলূম দেওবন্দ, সাহারানপুর, ভারত (ফতোয়া নং ১৫৪৬৮২)

হর-হামেশা ছবি তোলে অনলাইন ও ফেসবুকে আপলোডকারী দেওবন্দীরা কেমন মুনাফিক তাহলে, পাঠকেরা কি এখন বুঝতে পারলেন?

ছ্বলাফি, আহলে হাদিস, ওয়াহাবী ফেরকার অনেকেই দেখলাম ক্যামেরায় ছবি তোলা যায়েজ বলছে, এ বিষয়ে তাদের নিজেদের ফেরকার জবাব কি?

উত্তরঃ যারা ক্যামেরায় ছবি তোলা যায়েজ বলছে তাদের সিলসিলার কিতাব থেকে দলীল দেওয়া যায়, সেখানে ছবি বানানো হারাম বলা হয়েছে, কিন্তু পোলাপান আবার আজকাল বাপদের মানতে রাজি নাএর পরেও সৌদি আরবের দারুল ইফতার ফাতওয়া দেখা যাক ছবির ব্যপারেউক্ত ফাতওয়াতে ক্যামেরায় ছবি তোলার বিষয়ে একটা প্রশ্নের জবাবে বলা হয়েছেঃ

التَّصْوِيرُ بِالْكَامِيرَا

العَالِمُ: اللَّجْنَةُ الدَّائِمَةُ

(3592) السُّؤَالُ الثَّامِنُ مِنَ الفَتْوَى رَقْمِ 

س8: هَلْ التَّصْوِيرُ بِالْكَامِيرَا حَرَامٌ أَمْ لَا شَيْءَ عَلَى فَاعِلِهِ؟

ج8: نَعَمْ، تَصْوِيرُ ذَوَاتِ الْأَرْوَاحِ بِالْكَامِيرَا وَغَيْرِهَا حَرَامٌ، وَعَلَى مَن فَعَلَ ذَٰلِكَ أَنْ يَتُوبَ إِلَى اللَّـهِ وَيَسْتَغْفِرَهُ وَيَنْدَمَ عَلَى مَا حَصَلَ مِنهُ وَلَا يَعُودُ إِلَيْهِ. وَبِاللَّـهِ التَّوْفِيقُ. وَصَلَّى اللَّـهُ عَلَىٰ نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ وَآلِهِ وَصَحْبِهِ وَسَلَّمَ.

প্রশ্ন: ক্যামেরার মাধ্যমে ছবি তোলা হারাম কিনা, যারা এ কাজ করবে তাদের বিষয়ে ফায়সালা কি

উত্তরঃ হ্যা হারামপ্রানীর ছবি তা ক্যামেরায় হোক বা যেকোন মাধ্যমেই হোক তা হারামযারা এ কাজ গুলো করবে তাদের তওবা করতে হবে, এ কাজের জন্য অনুতপ্ত হতে হবে এবং এ ধরনের হারাম কাজের পূনারাবৃত্তি যাতে না হয় সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে (ফতেয়ায়া আল লাজনাতু দায়িমা লি বুহুছিল ইলমিয়াত ওয়াল ইফতা ১ম খন্ড ৪৬১ পৃষ্ঠা; ফতোয়া নং ৩৫৯২)

সূতরাং তাদের ফাতওয়া ক্যামেরা ব্যবহার করে নিজের সেলফী তোলা বা কোন মৌলবী, ভাড়াটিয়া ওয়াজি, কথিত টেলিভিশন, ইউটিউব মুল্লার ছবি যে কারোরই তোলা শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম সেটা প্রমাণ হলো

প্রানীর ছবি আঁকা বা ক্যামেরায় তোলা সবই হারাম এই সম্পর্কে উপমহাদেশের ছুন্নীদের নয়নমণি ভারতের ফুরফুরা দরবার শরীফের পীর ছাহেব হজরত আবু বকর সিদ্দিকী ফুরফুরাবি রহমতুল্লাহি আলাইহির অন্যতম প্রধান খলিফা হযরত নেছারুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি (তিনি পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ থানার ছারছীনা গ্রামে বাংলাদেশের অন্যতম ইসলামী বিদ্যাপীঠ ছারছীনা দারুসছুন্নাত কামিল মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন), উনাকে প্রানীর ছবি হাত দ্বারা বা ক্যামেরা দ্বারা তোলার বৈধতা বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়এটার জবাবে তিনি বলেন, চাই হস্তাঙ্কিত হউক, কিংবা কোন যন্ত্রাদির সাহায্যে হউক জীব জন্তুর ছবি তোলা সর্বতোভাবে নিষিদ্ধ হারামএরপর তিনি বলেন, হাত দ্বারা আঁকলেও ছবি হইবে, আর যন্ত্র দ্বারা তুললেও ছবিই হবেহাত দ্বারা না তুল যন্ত্র দ্বারা তুললে গুনাহ হবে না এরূপ ধারনা যুক্তিহীনকেননা যন্ত্রগুলো ছবি তুলবার সহজ উপায় মাত্রএরপর ৮ পৃষ্ঠা ব্যাপী প্রানীর ছবি হারাম সংশ্লিষ্ট হাদীছ শরীফ এনে ৩৮৬ পৃষ্ঠায় ফতোয়ার শেষে মতামত হিসাবে লিখেন, ভবিষ্যতে কোন প্রকার জীব জন্তুর ছবি বা মূর্তি অংকন করবে নাএবং জীবজন্তুর ছবি অঙ্কিত কোন দ্রব্য ক্রয় করবেনা, করলে মহান আল্লাহ তায়ালার রহমত হইতে বঞ্চিত হইবে ও গুনাগার হইবেযেহেতু উহা মূর্তিপূজকদের সহিত মোশাবাহ করায় হাশরে জবাবদিহী করতে হবে। (ফতোয়ায়ে ছিদ্দীকিয়া ৩৭৭- ৩৮৬ পৃষ্ঠা; ৬ষ্ঠ অধ্যায়)

আমরা দেখলাম, ওয়াহাবি (আহলে হাদিছ, ছ্বলাফি, লা মাজহাবি) ফেরকা, দেওবন্দি ফেরকা, এমনকি ছুন্নী তথা আহলে ছুন্নত ওয়াল জামায়াতের ফতোয়া মতে হারাম হলেও এদের অনুসারীরা তা মানেনা, মুনাফিকদের ফতোয়া দেখালে আবার ক্বলবে লাগে

ছবির বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা কি?

ছবির সংজ্ঞা: প্রতিফলন এবং প্রতিসরণ ব্যতীত যদি কোনো বস্তু বা জীব যে কোনো উপায়ে কোনো স্থানের আকার-আকৃতিতে আবির্ভূত হয়, তবে সেটাকে ছবি বলা হয়তবে, একটি ছবি যদি প্রতিফলন বা প্রতিসরণের মাধ্যমে তৈরি হয়, তখন সেটি ছবি হিসেবে গণ্য হয় নাছবির ধারণাকে আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা জরুরি:

  • আলোর প্রতিফলন
  • আলোর প্রতিসরণ

আলোর প্রতিফলন, আলোর প্রতিসরণ কি?

আলোর প্রতিফলন: আলোকরশ্মি যখন বায়ু বা অন্য কোনো স্বচ্ছ মাধ্যমের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় কোনো কঠিন বা অস্বচ্ছ মাধ্যমে বাধা পায়, তখন সেই বিভেদ তল থেকে কিছু আলো প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসেএই ফিরে আসাকে আলোর প্রতিফলন বলে

আলোর প্রতিসরণ: আলোকরশ্মি এক স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে প্রবেশ করার সময় বিভেদ তলে দিক পরিবর্তন করেএকে আলোর প্রতিসরণ বলেএকই মাধ্যমে ঘনত্বের পার্থক্যের কারণেও প্রতিসরণ ঘটে

প্রতিফলনের উদাহরণ: মনে করুন, একটি অন্ধকার কক্ষে একটি গোলাপ ফুল রয়েছেকোনো আলোর উপস্থিতি না থাকায় আমরা ফুলটি দেখতে পাই নাকিন্তু বাতি জ্বালানোর পর বাতির আলো ফুলে পড়ে এবং সেই আলো প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে পৌঁছায়, তখন আমরা ফুলটি দেখতে পাই

আয়নার উদাহরণ: যদি ওই ফুলটিকে একটি আয়নার সামনে রাখা হয়, তাহলে বাতির আলো ফুল থেকে প্রতিফলিত হয়ে আয়নার পৃষ্ঠে পড়ে এবং পুনরায় প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে পৌঁছায়তখন আমরা আয়নার ভেতরেও একটি ফুলের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাইএই প্রতিফলিত আলোই প্রতিফলনের উদাহরণ

প্রতিসরণের উদাহরণ: যদি কেউ চশমা পরে থাকেন, তবে ফুলটি দেখতে গেলে ফুল থেকে বিচ্ছুরিত আলো চশমার কাঁচের মধ্য দিয়ে আমাদের চোখে পৌঁছায়বায়ু থেকে কাঁচে এবং কাঁচ থেকে চোখে আলোর দিক পরিবর্তন ঘটেএই প্রক্রিয়াকে প্রতিসরণ বলা হয়

আলোর প্রতিফলন ও প্রতিসরণের মাধ্যমে তৈরি দৃশ্য ছবি নয়: শরীয়তের দৃষ্টিতে কোনো বস্তু বা জীব যেখানেই থাকুক, আলোর প্রতিফলন বা প্রতিসরণের মাধ্যমে যদি তা কোনো স্থানে আকার-আকৃতিতে দৃশ্যমান হয়, তবে সেই আকার-আকৃতিকে ছবি বলা হয় নাহাদিস শরিফে উল্লেখ রয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ রছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম গামলার পানির মধ্যে এবং দর্পণে নিজের চেহারা মুবারক দেখেছেন

কোন কোন মাধ্যমে তৈরি দৃশ্য ছবি হয়?

ক্যামেরা কিভাবে ছবি তৈরি করে? ক্যামেরা দিয়ে কোনো বস্তুর ছবি তোলা হলে, সেই বস্তুর থেকে বিচ্ছুরিত আলো ক্যামেরার লেন্সের মাধ্যমে ক্যামেরার ভেতরে প্রবেশ করেক্যামেরার ভেতরে একটি ফিল্ম বা সেন্সর থাকে যেখানে সেই আলোর একটি রাসায়নিক ছাপ পড়ে বা ইলেকট্রিক সিগনালের মাধ্যমে ছবি সংরক্ষিত হয়এভাবে একটি স্থায়ী ছবি তৈরি হয় যার ফলে আমরা দেখতে পাই, আয়নার সামনের বস্তুটিকে যদি ঢেকে দেয়া হয় তখন সেটাকে আর আয়নার ভেতর দেখা যায়নাকিন্তু ক্যামেরার মাধ্যমে ছবি তোলার পর যদি ক্যামেরার সামনের বস্তুটিকে ঢাকা হয় তাহলে কিন্তু ছাপটা (ছবি) ফিল্মের মধ্যে থেকেই যাবেএটাই হচ্ছে একটা ডুপ্লিকেট কপি যেটা ওয়াশ বা (প্রিন্ট) করার পর আমরা ছবি হিসেবে দেখতে পাই

টিভি কিভাবে ছবি তৈরি করে? প্রথমে একটি ক্যামেরা দিয়ে দৃশ্য ধারণ করা হয়সেই তথ্য টিভি সেন্টারে প্রক্রিয়াজাত হয়ে বড় অ্যান্টেনার মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়টিভি বাক্সের মধ্যে থাকা অ্যান্টেনা সেই তথ্য গ্রহণ করে এবং মনিটরে প্রদর্শন করেটিভি মনিটরে ছবি তৈরির জন্য ইলেকট্রন বা এলসিডি প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়উল্লেখ্য, বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ না বোঝার কারণে অনেকেই টিভিকে আয়না বা পানির প্রতিফলনের সাথে তুলনা করে থাকেন এবং টিভি দেখা বৈধ মনে করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেন

সিসিটিভি কিভাবে ছবি তৈরি করে? সিসিটিভি বা ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা একটি সরাসরি সংযোগযুক্ত ব্যবস্থাক্যামেরায় ধারণ করা দৃশ্য তাৎক্ষণিকভাবে একটি ডিসপ্লেতে দেখানো হয়সিসিটিভি ক্যামেরাগুলি ওয়্যারড বা ওয়্যারলেস হতে পারে

ছবিকে আরবীতে تصوير (তাসউইর), ইংরেজীতে Photo, Picture ইত্যাদি বলা হয়যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন এবং যে কোন পদ্ধতিতেই তৈরী, আঁকা বা তোলা হোক না কেন, উপরোক্ত ফাতওয়া অনুসারে প্রাণীর ছবি তৈরী করা, তোলা, তোলানো, আঁকা, দেখা, দেখানো ইত্যাদি হারাম ও নামাজে সাব্যস্ত হয়

এবার হাদীস শরীফ-এ প্রাণীর ছবি বিষয়ে রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম কি বলেন তা জেনে নেইঃ

মুছলিম (রহমতুল্লাহী আলাইহি) থেকে বর্ণিতঃ (حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ مُسْلِمٍ، قَالَ كُنَّا مَعَ مَسْرُوقٍ فِي دَارِ يَسَارِ بْنِ نُمَيْرٍ، فَرَأَى فِي صُفَّتِهِ تَمَاثِيلَ فَقَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ إِنَّ أَشَدَّ النَّاسِ عَذَابًا عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الْمُصَوِّرُونَ) তিনি বলেন, আমরা (একবার) মাসরূকের সাথে ইয়াসার ইবনু নুমাইরের ঘরে ছিলামহযরত মাসরূক, ইয়াসার ইবনু নুমাইরের ঘরের আঙিনায় কতগুলো মূর্তি দেখতে পেয়ে বললেনঃ আমি আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‌ঊদ রদ্বিল্লাহু আনহু থেকে শুনেছি এবং তিনি রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লামকে বলতে শুনেছেন যে, (ক্বিয়ামাতের দিন) মানুষের মধ্যে সব থেকে বেশি শাস্তি প্রদান করা হবে তাদেরকে, যারা ছবি তোলে বা প্রতিকৃতি বানায় (বুখারী শরীফ ৫৯৫০)

হযরত ছাঈদ রদ্বিল্লাহু তায়ালা আনহু বলেনঃ (عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي الْحَسَنِ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَقَالَ إِنِّي رَجُلٌ أُصَوِّرُ هَذِهِ الصُّوَرَ فَأَفْتِنِي فِيهَا ‏.‏ فَقَالَ لَهُ ادْنُ مِنِّي ‏.‏ فَدَنَا مِنْهُ ثُمَّ قَالَ ادْنُ مِنِّي ‏.‏ فَدَنَا حَتَّى وَضَعَ يَدَهُ عَلَى رَأْسِهِ قَالَ أُنَبِّئُكَ بِمَا سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏"‏ كُلُّ مُصَوِّرٍ فِي النَّارِ يَجْعَلُ لَهُ بِكُلِّ صُورَةٍ صَوَّرَهَا نَفْسًا فَتُعَذِّبُهُ فِي جَهَنَّمَ ‏"‏ ‏.‏ وَقَالَ إِنْ كُنْتَ لاَ بُدَّ فَاعِلاً فَاصْنَعِ الشَّجَرَ وَمَا لاَ نَفْسَ لَهُ) এক ব্যক্তি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিল্লাহু তায়ালা আনহুর নিকট এসে বলল, আমি এমন এক ব্যক্তি যে প্রাণীর ছবি অংকন করি, সুতরাং এ ব্যাপারে আমাকে ফাতওয়া দিনহযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিল্লাহু তায়ালা আনহু তাকে বললেন, তুমি আমার নিকটবর্তী হওসে ব্যক্তি উঁনার নিকটবর্তী হলপুণরায় বললেন, তুমি আরো নিকটবর্তী হওসে আরো নিকটবর্তী হলে হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিল্লাহু তায়ালা আনহু তার মাথায় হাত রেখে বললেন, আমি কে এ ব্যাপারে যা বলতে শুনেছি তোমাকে তা বলবো, “রছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম বলেছেন, “প্রত্যেক প্রাণীর ছবি প্রস্ততকারিই জাহান্নামে যাবেএবং মহান আল্লাহ্ পাঁক তিঁনি প্রত্যেকটি ছবিকে প্রাণ দিবেন এবং সেই ছবি গুলো তাদেরকে জাহান্নামে শাস্তি দিতে থাকবেএবং ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, তোমার যদি ছবি আঁকতেই হয় তবে, গাছ-পালা বা প্রাণহীন বস্তুর ছবি আঁক। (মুছলিম শরীফ ২১০৯)

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা য়ালাইহা ছালাম বর্ণনা করেন যেঃ (وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَكُنْ يَتْرُكُ فِي بَيْتِهِ شَيْئًا فِيهِ تَصَالِيبُ إِلَّا نَقَضَهُ. رَوَاهُ البُخَارِيّ) রছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ঘরে প্রাণীর ছবি বা ছবিযুক্ত সকল জিনিস (থাকলে) ধ্বংস করে ফেলতেন। (মিশকাত শরীফ ৪৪৯১)

আবূ যুররহমতুল্লাহ থেকে বর্ণিতঃ (حَدَّثَنَا أَبُو زُرْعَةَ، قَالَ دَخَلْتُ مَعَ أَبِي هُرَيْرَةَ دَارًا بِالْمَدِينَةِ فَرَأَى أَعْلاَهَا مُصَوِّرًا يُصَوِّرُ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ ذَهَبَ يَخْلُقُ كَخَلْقِي، فَلْيَخْلُقُوا حَبَّةً، وَلْيَخْلُقُوا ذَرَّةً.‏) তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা রদ্বিআল্লাহু আনহুর সাথে মদীনা শরীফের এক ঘরে প্রবেশ করিঘরের উপরে এক ছবি নির্মাতাকে তিনি ছবি তৈরী করতে দেখলেনতিনি বললেনঃ আমি রছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লামকে বলতে শুনেছি। (আল্লাহ বলেছেন) ঐ ব্যাক্তির চেয়ে অধিক যালিম আর কে, যে আমার সৃষ্টির অনুরূপ কোন কিছু সৃষ্টি করতে যায়? তা হলে তারা একটি দানা সৃষ্টি করুক অথবা একটি অণুপরিমাণ কণা সৃষ্টি করুক? (বুখারী শরীফ ৫৯৫৩)

হযরত আবু হুজায়ফা রদ্বিল্লাহু তায়ালা আনহু উঁনার পিতা হতে বর্ণনা করেনঃ (وَعَن أبي حجيفة أَنَّ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ ثَمَنِ الدَّمِ وَثَمَنِ الْكَلْبِ وَكَسْبِ الْبَغِيِّ وَلَعَنَ آكِلَ الرِّبَا وَمُوكِلَهُ وَالْوَاشِمَةَ وَالْمُسْتَوْشِمَةَ وَالْمُصَوِّرَ)রছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম তিঁনি রক্তের দাম, ও কুকুরের দাম নিতে এবং যিনা-ব্যভিচারের বিনিময় মূল্য গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন, এবং যে ঘুষ খায়, যে ঘুষ দেয়, যে অঙ্গে উলকি আঁকে এবং যে আঁকায়, আর যে ছবি অংকন করে, এদের সবার ওপর রছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম তিঁনি লানত দিয়েছেন” (মিশকাতুল মাছাবিহ ২৭৬৫)

উম্মুর মুমিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা য়ালাইহা ছালাম তিঁনি বলেনঃ (عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ دَخَلَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا مُتَسَتِّرَةٌ بِقِرَامٍ فِيهِ صُورَةٌ فَتَلَوَّنَ وَجْهُهُ ثُمَّ تَنَاوَلَ السِّتْرَ فَهَتَكَهُ ثُمَّ قَالَ "‏إِنَّ مِنْ أَشَدِّ النَّاسِ عَذَابًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ الَّذِينَ يُشَبِّهُونَ بِخَلْقِ اللَّهِ"‏.) রছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম আমার নিকট আসলেন, প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা চাদর গায়ে দেয়া ছিলামএটা দেখে রছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম উঁনার চেহারা মুবারক জালাল চলে আসলো, অতঃপর তিঁনি চাদর খানা নিয়ে ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেন ক্বিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাঁক উঁনার সৃষ্টির সাদৃশ্য (কোন প্রাণীর ছুরত) সৃষ্টি করে” (মুছুলিম শরীফ ২১০৭)

হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিল্লাহু তায়ালা আনহু উঁনার হতে বর্ণিতঃ (عن ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " يَخْرُجُ عُنُقٌ مِنَ النَّارِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لَهَا عَيْنَانِ تُبْصِرَانِ وَأُذُنَانِ تَسْمَعَانِ وَلِسَانٌ يَنْطِقُ يَقُولُ: إِنِّي وُكِّلْتُ بِثَلَاثَةٍ: بِكُلِّ جَبَّارٍ عَنِيدٍ وَكُلِّ مَنْ دَعَا مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخر وبالمصوِّرين) রছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম তিঁনি বলেন, ক্বিয়ামতের দিন এমন একখানা আগুনের গর্দান বের হবে, যার দুটো চক্ষু থাকবেযদ্বারা সে দেখতে পাবেদুটো কান থাকবে, যদ্বারা সে শুনতে পাবেএকটি মূখ থাকবে, যদ্বারা সে কথা বলবেগর্দানটি বলবে, নিশ্চয় আমাকে তিন ব্যক্তির অভিভাবক বানান হয়েছে- (১) প্রত্যেক অহংকারী অত্যাচার লোকের

(২) যারা মহান আল্লাহ পাঁক উঁনার সাথে অন্যকেও মাবুদ ডাকে

(৩) আর যারা প্রাণীর ছবি তৈরী করে। (মিশকাত শরীফ ৪৫০২)

হযরত জাবের রদ্বিল্লাহু তায়ালা আনহু তিঁনি বলেনঃ (أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ - رضى الله عنه - زَمَنَ الْفَتْحِ وَهُوَ بِالْبَطْحَاءِ أَنْ يَأْتِيَ الْكَعْبَةَ فَيَمْحُوَ كُلَّ صُورَةٍ فِيهَا فَلَمْ يَدْخُلْهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى مُحِيَتْ كُلُّ صُورَةٍ فِيهَا) রছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম তিঁনি মক্কা বিজয়ের সময় হযরত ওমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিল্লাহু তায়ালা আনহুকে আদেশ দিলেন যে, তিঁনি যেনো পাথর দিয়ে ক্বাবা ঘরের সমস্ত মূর্তি বা চিত্রগুলি ধ্বংস করে দেন (অতঃপর) রছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ক্বাবা ঘরের মুর্তি বা চিত্রগুলো ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত ক্বাবা ঘরে প্রবেশ করলেন না। (আবু দাউদ শরীফ ৫৬)

হযরত ঈসা বিন হুমাইদ রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উঁনার হতে বর্ণিত- তিঁনি বলেন, হযরত ওকবাতুল হাসান রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিঁনি বললেন, আমাদের মসজিদে প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা কাপড় রয়েছেতখন হযরত ঈসা বিন হুমাঈদ রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিঁনি বললেন, তুমি (মসজিদ থেকে) ওটা সরিয়ে ফেল। (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা)

হযরত আবু উসমান রদ্বিল্লাহু তায়ালা আনহু উঁনার হতে বর্ণিত তিঁনি বলেন, লোবাবাহ উঁনার মাতা হতে আমার নিকট বর্ণনা করেন যে, উঁনার মাতা হযরত ওসমান রদ্বিল্লাহু তায়ালা আনহু উঁনার খেদমতে ছিলেন, আর হযরত উসমান রদ্বিল্লাহু তায়ালা আনহু নামায পড়ছিলেন তখন প্রাণীর ছবিযুক্ত একটি সিন্দুকের দিকে চোখ পড়লে হযরত উসমান রদ্বিল্লাহু তায়ালা আনহুর আদেশে ওটা নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হলো। (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা)

হযরত ইবনে মাস্উদ রদ্বিল্লাহু তায়ালা আনহু তিঁনি বলেন, মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিদের ক্বিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তি হবে, যারা কোন নবী য়ালাইহিমু ছালামদেরকে শহীদ করেছে অথবা কোন নবী য়ালাইহিমু ছালাম যাদেরকে হত্যা করেছেন এবং ঐ সমস্ত লোক যারা বিনা ইলমে মানুষদেরকে গোম্রাহ করে এবং যারা প্রাণীর ছবি তৈরী করে। (মুসনদে আহমাদ)

হযরত উসামা রদ্বিল্লাহু তায়ালা আনহু উঁনার হতে বর্ণিততিঁনি বলেন, আমি রছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লামর সঙ্গে পবিত্র ক্বাবা ঘরে প্রবেশ করলামআমি ক্বাবা ঘরের ভিতরে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলামঅতঃপর রছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লামর হুকুমে আমি পাত্রে করে পানি নিয়ে আসলাম রছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম তিঁনি ঐ ছবিগুলিতে পানি নিক্ষেপ করলেন এবং বললেন, “মহান আল্লাহ্ পাঁক তিঁনি ঐ গোত্রের সাথে জ্বিহাদ ঘোষণা করেছেন, যে গোত্র এরূপ প্রাণীর ছুরত তৈরী করেযা সে তৈরী করতে অক্ষম অর্থাৎ জীবন দিতে পারেনা” (মুছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা, তাহাবী)

হযরত আবু তালহা রদ্বিল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিতঃ (عَن أبي طَلْحَة قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ وَلَا تصاوير) রছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেন, “ঐ ঘরে রহমতের ফেরেস্তা প্রবেশ করে না, যে ঘরে প্রাণীর ছবি বা কুকুর থাকে” (মিশকাত শরীফ ৪৪৮৯)

মাজুর বা অপরাগতা

ইসলাম কোন ক্ষেত্রেই যেমন বাড়াবাড়ি বা জোড় জবরদস্তী করেনি বা করার অনুমতিও দেয়নি তেমনিভাবে কঠিনও করেনিবরং সহজ করে দিয়েছেযেমন- ফরয নামাযের সময় ক্বিয়াম করা বা দাড়ানো হচ্ছে ফরযএখন কেউ যদি এরূপ হয় যে, সে দাড়াতে সক্ষম নয় তার ব্যাপারে শরীয়তের ফায়ছালা কি?

তার ব্যাপারে শরীয়তের ফায়ছালা হলো সে যদি দাড়াতে না পারে তবে সে বসে বসেই নামায আদায় করবেযেহেতু সে দাড়ানোর ব্যাপারে মাজুর বা অক্ষম অন্যত্র আরো ইরশাদ হয়েছে, (لَاۤ اِكْرَاهَ فِى الدِّيْنِ) অর্থাৎ দ্বীনের মধ্যে কোন প্রকার কাঠিন্যতা নেই” (ছুরা বাক্বারা শরীফ ২/২৫৬) আর হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে (إِنَّ الدِّينَ يُسْرٌ) অর্থাৎ, ‘দ্বীন বা শরীয়ত হচ্ছে সহজ(মিশকাত) অনুরূপভাবে হারাম খাওয়া সকলের জন্যই হারামকিন্তু কেউ যদি একাধারে তিনদিন না খেয়ে থাকে তার নিকট যদি কোন হালাল খাদ্য মওজুদ না থাকে তবে তার ব্যাপারে শরীয়তের ফায়ছালা কিতার ব্যাপারে শরীয়তের ফায়ছালা হলোঃ- এমতাবস্থায় হারামটা তার জন্য মুবাহ হয়ে যায় জীবন রক্ষার্থেএ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাঁক বলেনঃ (فَاتَّقُوا اللهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ) অর্থাৎ, “তোমরা মহান আল্লাহ পাঁক উঁনাকে ভয় কর তোমাদের সাধ্য ও সামর্থ্য অনুযায়ী। (ছুরা তাগাবুন-১৬) অর্থাৎ সাধ্যের বাইরে শরীয়ত কাউকে কোন আদেশ করেনি

আল্লাহ পাঁক আরো ইরশাদ করেনঃ (لَا يُكَلِّفُ اللهُ نَفْسًا اِلَّا وُسْعَهَا) অর্থাৎ, মহান আল্লাহ পাঁক কাউকে তার সাধ্যের বাইরে কিছু চাপিয়ে দেন না। (ছুরা বাক্বারা শরীফ ২/২৮৬) আর উছুলের কিতাবে উল্লেখ আছে, (الضَّرُورَةُ تُبِيحُ الْـمَحْظُورَاتِ) অর্থাৎ, জরুরত হারামকে মুবাহকরে দেয়। (উছূলে বাযদূবী, উছূলে কারখী)

শরীয়তের পরিভাষায় এরূপ অবস্থাকে মাজুর বা অপরাগতাবলা হয়ফিক্বাহ-এর কিতাবসমুহে এরূপ অসংখ্য মাজুর এর মাসয়ালা বর্ণিত রয়েছে

১. চাকরি-ব্যবসাঃ এখন চাকরি-ব্যবসা একটি জরুরী বিষয়কারণ বেঁচে থাকতে হলে খেতে হবেঅর্থাৎ প্রত্যেককে বাঁচার জন্য তার জীবন রক্ষা করা হচ্ছে ফরযআর সে জন্য হালাল রিযিক তালাশ করা বা কামাই করাও ফরয এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাঁক তিঁনি ইরশাদ করেনঃ (فَاِذَا قُضِيَتِ الصَّلٰوةُ فَانْتَشِرُوْا فِى الْاَرْضِ وَابْتَغُوْا مِنْ فَضْلِ اللهِ) অর্থাৎ, “নামায শেষ করে তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড় এবং মহান আল্লাহ পাঁক উঁনার ফযল তথা হালাল রিযিক অন্বেষণ কর” (ছুরা জুমুয়াহ শরীফ ৬২/১০) আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছেঃ (عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: "طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالِ فَرِيضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ) অর্থাৎ, হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেনরছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম বলেন, (পুরুষের জন্য) অন্যান্য ফরযের পর হালাল কামাই করাও ফরয। (বাইহাক্বী ফী শুয়াবিল ঈমান, মিশকাত-২৪২ পৃঃ) এখন কারো জন্য যদি হালাল কামাই করতে গিয়ে চাকরি-ব্যবসা করতেই হয়তবে তাকে প্রথমতঃ কোশেশ করতে হবে ছবি ছাড়া চাকরি ও ব্যবসা করারযদি ছবি ছাড়া চাকরি-ব্যবসার কোন ব্যবস্থা না হয় তবে সেক্ষেত্রে মাজুর বা অপরাগ হিসেবে চাকরি বা ব্যবসার ক্ষেত্রে যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই ছবি তুলতে পারবেতবে অবশ্যই তাও হারাম জেনেই তুলতে হবে

২. পাসপোর্টঃ যদি কারো পক্ষে দেশে থেকে জরুরত আন্দাজ হালাল কামাই করা সম্ভব না হয় এবং কেউ এরূপ অসুস্থ হয় যে- দেশে তাকে চিকিৎসা করে ভাল করা সম্ভব নয় বিদেশে নিলে ভাল হবে এক্ষেত্রে মাজুর হিসেবে ছবিসহ পাসপোর্ট করে বিদেশ যেতে পারবেএছাড়া ভ্রমণ বা জরুরত ব্যতীত অন্যকোন কারণে ছবিসহ পাসপোর্ট করা জায়িয নেই

৩. ড্রাইভিং লাইসেন্সঃ যানবাহন বর্তমানে একটি জরুরী বিষয়আর ড্রাইভার ব্যতীত যান বাহনের কোন চিন্তাই করা যায় নাতাছাড়া অনেকের জন্য ড্রাইভিং পেশাটাও যেহেতু হালাল কামাইয়ের একটি অন্যতম মাধ্যম তাই এক্ষেত্রে মাজুর হিসেবে লাইসেন্স এর জন্য ছবি তোলা মুবাহ

৪. ব্যাংক একাউন্টঃ যদি কারে জন্য টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার, নিজ ঘরে রাখা নিরাপদ মনে না হয়বরং চুরি-ডাকাতির আশঙ্কা থাকে তবে এক্ষেত্রেও ছবিসহ ব্যাংক একাউন্ট করা মাজুর হিসেবে মুবাহ হবে

৫. জমি রেজিস্ট্রীঃ জমি ক্রয় বিক্রয়ের বিষযটিও ক্ষেত্র বিশেষে জরুরীকাজেই যদি কারো জন্য জমি ক্রয় করা বিক্রয় করা অপরিহার্য হয়েই পরে তবে সেক্ষেত্রে মাজুর হিসেবে ছবিসহ জমি ক্রয় বিক্রয় করতে পারবে

৬. লেখা-পড়াঃ যেহেতু জরুরত আন্দাজ ইলমঅর্জন করা সকলের জন্য ফরযতার পাশাপাশি হুনর বা দুনিয়াবী জ্ঞানঅর্জন করাও জরুরী বিধায় উল্লিখিত ক্ষেত্রে ছবি তোলার ব্যাপারে সকলে মাজুরতবে ছবি ছাড়া পড়া শুনা করার যদি কোন সুযোগ থাকে তবে সেক্ষেত্রে ছবিসহ পড়া-শুনা করা জায়িয হবে না

মূলতঃ উল্লিখিত প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা মাজুরযেহেতু আমাদের দেশে খিলাফত জারী নেইগণতান্ত্রিক সরকার জোড় পূর্বক অনেক শরীয়ত বিরোধী আদেশ আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়ে থাকেযেমন ছবি চাপিয়ে দিয়েছেএক্ষেত্রে জরুরতে মাজুর হিসেবে যারা ছবি তুলবে কোন গুণাহ হবে না বরং এ সমস্ত গুনাহের দায়-দায়িত্ব সরকারের উপরই বর্তাবেকেননা হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, হযরত জারীর বিন আব্দুল্লাহ বাজালী রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, রছুলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম বলেন, “যে কেউ ইসলামে কোন উত্তম পদ্ধতি উদ্ভাবন করবে (যা শরীয়তসম্মত) তার জন্যে তিঁনি ছওয়াব পাবেন এবং তারপর যারা এ পদ্ধতির অনুসরণ করবে তার ছওয়াবও তিঁনি পাবেনআবার যে কেউ দ্বীন ইসলামে কোন শরীয়ত বিরোধী পদ্ধতি উদ্ভাবন করবে, তার গুনাহ সে পাবে এবং তার পরে যারা এ পদ্ধতির অনুসরণ করবে তাদের গুনাহও তার আমলনামায় দেয়া হবে” (নাসাঈ শরীফ ২২৫৪)

উক্ত হাদিসের জাহেরি মানে হলো এই সরকারের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হবে উল্লিখিত প্রতিটি ক্ষেত্রে ছবিকে বাদ দেয়াযেহেতু শরীয়তে ছবি তোলা বা তোলার শক্ত হারাম ও কবীরা গুনাহকাজেই ৯৭% মুসলমানের এদেশে শরীয়ত বিরোধী ও গুনাহের কাজ মুসলমানের এদেশে শরীয়ত বিরোধী ও গুনাহের কাজ মুসলমানদের উপর জোর পূর্বক চাপিয়ে দেয়া সরকারের উচিত হবে নাযেখানে পরিচয় বা সনাক্ত করণের জন্য ছবি ছাড়া বৈধ আরো পদ্ধতি রয়েছে- যেমন ফিঙ্গার প্রিন্টসেখানে ছবিকে বাধ্যতামূলক করা হারাম ও কুফরী হবে

আইডি কার্ডের জন্য ছবি তোলার শরয়ী বিধানঃ সাধারণভাবে কোন প্রকার আইডি কার্ড বা পরিচয় পত্রের জন্যই ছবি তোলা জায়িয নেইভোটার আইডি কার্ড ও ন্যাশনাল আইডি কার্ডের জন্যও ছবি তোলা জায়িয নেইকারণ এগুলো কোনটাই জরুরতের মধ্যে পড়ে নাকাজেই সাধারণভাবে এক্ষেত্রে মাজুরের মাসয়ালাও গ্রহণযোগ্য নয়তবে হ্যাঁ সরকার বা কোম্পানী অথবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ যদি জোরপূর্বক ছবিসহ পরিচয় পত্র করতে বাধ্য করে আর পরিচয় পত্র না করলে যদি চাকরি চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তবে সেক্ষেত্রে সে মাজুর বলে গণ্য হবে

নিষিদ্ধ ছবির প্রচারণা নেপথ্যে কারা

প্রথমতো এটা চিন্তার বিষয় যে, কিভাবে বিশ্ব মুছলিম ছবির ধোঁকায় পড়ে ঈমান হারাচ্ছে? কারা মুসলমানদের মধ্যে সূক্ষ্মভাবে ছবির প্রচলণ ঘটিয়ে মুসলমানদের ঘরকে রহমত থেকে বঞ্চিত করছে? মূলত ইহুদী, খ্রিস্টান, কাফির-মুশরেক তারাই এর নেপথ্যে অতি সূক্ষাতিসূক্ষ ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে, ছবি তুলতে আমাদের বাধ্য করছে, আমাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেকালামুল্লাহ শরীফে এরশাদ হয়েছে, “মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে প্রথমে ইহুদী, এরপরে মুশরিক (ছুরা মায়েদা শরীফ ৫/৮২)

আহলে কিতাব (ইহুদী, মুশরিকরা) হিংসাবশত সবসময় চেয়ে থাকে মুসলমানদের ঈমান আনার পর কিভাবে তাঁদের ঈমান নষ্ট করে দেয়া যায়নাউযুবিল্লাহ! মূলত এজন্যই তারা কৌশলে ছবি তোলা, বেপর্দা হওয়া, হারাম টিভি চ্যানেল ইত্যাদিতে মুসলমানদের মশগুল করে দিয়েছেনাউযুবিল্লাহ!

ইহুদীদের পরে দ্বিতীয়ত কারা হারাম ছবিকে জায়েয বলে?

ইহুদী-মুশরেকদের পক্ষে তাদেরই ক্রয়কৃত গোলাম/এজেন্ট হিসেবে ছবির পক্ষে মুসলমানদের বিভ্রান্ত করেছে কিছু সংখ্যক ধর্মব্যবসায়ী কথিত মাওলানা-মুফতি যাদেরকে কালামুল্লাহ শরীফ-এ উলামায়ে ছূবলা হয়েছেএরা দুনিয়াবী অর্থ-সম্পদের লালসায় ধর্ম বিক্রী করে থাকে অর্থাৎ হারামকে হালাল, হালালকে হারাম বলে ফতওয়া দেয়এসব মোল্লা ছুরতের ধর্মব্যবসায়ীরা বলে থাকে বর্তমান যুগে ছবি তোলা জায়েযনাউযুবিল্লাহ

হাদীস শরীফ-এ এরশাদ হয়েছে, “আমার উম্মতের মধ্যে যারা উলামায়ে ছূতাদের জন্য ধ্বংসকারণ তারা তাদের অর্জিত ইলিমকে ব্যবসার জন্য ব্যবহার করে থকে এবং তারা আমির-ওমরা, রাজা-বাদশাহদের পেছন পেছন ঘুরে অর্থ-সম্পদের লোভেআল্লাহ পাঁক বলেছেন, এ শ্রেণীর ধর্মব্যবসায়ীদের ব্যবসায় আল্লাহ পাঁক বরকত দিবেন নাআমাদের দেশে ওয়াহাবী, খারিজি, জামাতী, দেওবন্দী, তবলীগী, মুফতি আমিনী, চরমোনাইর ভন্ড পীর সহ নামে বে-নামে অনেক ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে ছূরয়েছে যারা বর্তমান যুগে ছবি তোলা জায়েযবলে, ‘নবীজিকে আমাদের মতো সাধারণ মানুষবলে, এরুপ অনেক ভ্রান্ত ফতওয়া দেয় যা বিশ্বাস করলে মুসলমানদের ঈমান নষ্ট হয়ে যায়

মূলতঃ এরা হচ্ছে ইবলিসের অনুরুপইবলিস ছয় লক্ষ বছর ইবাদত করেও ধ্বংস হয়ে গেছেঅনুরুপ এরাও অনেক ইলিম অর্জন করার পরও এরা ধ্বংসসূতরাং এদের থেকে সবসময় সাবধান থাকতে হবে

ছবি নিয়ে ধর্মব্যবসায়ীদের ফতওয়া ভুল কেন?

·      ধর্মব্যবসায়ীরা বলে থাকে বর্তমান যুগে ছবি তোলা জায়েয’, ‘বর্তমান আধুনিক যামানায় ছবি ছাড়া চলেনানাউযুবিল্লাহ!

·        ছবি নিয়ে ইহুদীদের শেখানো এসব ফতওয়া ভ্রান্ত হওয়ার কারণ-কালামুল্লাহ শরীফ-এ এরশাদ হয়েছে, “ইসলাম হচ্ছে পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থাঅর্থাৎ মানুষের জন্য যা কিছু প্রয়োজন তা ইসলাম দিয়ে দিয়েছেযেহেতু প্রাণীর ছবি তোলা, আঁকা, দেখা ইসলামী শরীয়তেই হারাম করা হয়েছে সূতরাং ক্বেয়ামত পর্যন্ত এটা মানুষের কোন প্রয়োজন নেই, এটা ছাড়াও মানুষের চলবেমূলতঃ আল্লাহ পাঁক এবং উঁনার হাবীব যেটা নিষেধ করেছেন সেটা বান্দা ও উম্মতের কোন প্রয়োজন নেই, সেটাতে কোন ফায়দা নেই

·        অনেকে মনে করে থাকে, সবাই যেটা করে

মূলতঃ কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফ কেয়ামত পর্যন্ত অপরিবর্তনীয় থাকবেএখানে পরিবর্তন বা সংশোধন করার মতো কিছু নেইতাই এখানে যেটাকে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে সেটা কেয়ামত পর্যন্ত হারাম

তৃতীয়ত ছবি তুলতে বাধ্য করছে কারা ?

·        ইহুদীদের চক্রান্ত আর ধর্মব্যবসায়ীদের উলামায়ে ছূদের ধোঁকার পর তৃতীয়ত পর্যায়ে মুসলমানদের হারাম ছবি তুলতে বাধ্য করছে হারাম তন্ত্রে-মন্ত্রে পরিচালিত জালিম সরকার গং

·        পরিপূর্ণ ইসলামী খিলাফত জারি না থাকায় হারাম ছবি থেকে মুসলমান বাঁচতে পারছেনাজালিম সরকার মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে, বাধ্য করছে ছবি তুলতেনাউযুবিল্লাহ

·        এখন হজ্জ্ব পালন করতে হলেও অসংখ্য ছবি তুলতে বাধ্য হতে হয় অর্থাৎ একটি ফরয আদায় করতে হলে বাধ্য হয়ে অসংখ্য কবীরা গুনাহ করতে হয়। (যদিও এমতাবস্থায় হজ্জ্ব ফরয থাকেনা)

·        অনেকে সৌদি আরবকে অন্ধ অনুসরণ করে বলে থাকে যে, সৌদি আরবে ছবির প্রচলন আছে, সেখানেও হজ্জ্বের জন্য ছবি তুলতে হয়, কাজেই এটা জায়েযনাউযুবিল্লাহ

মূলতঃ দেশ কখনো অনুসরণীয় নয়, অনুসরণীয় হচ্ছে কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফসূতরাং সৌদি আরব দলীল নয়বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, বর্তমান সৌদিয়াহাবী সরকার সবচাইতে বড় জালিম সরকারযারা ইহুদীদের খাছ এজেন্টকাজেই এদের অনুসরণ করা উচিত হবেনা

ছবির বিকল্প কি?

মহান আল্লাহ পাঁক রব্বুল আলামিন মানুষের জন্য প্রয়োজন এমন সকল ব্যবস্থা দিয়েই মানুষকে জমিনে প্রেরণ করেছেনমানুষের পরিচিতি, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিশেষ প্রয়োজনেও যে ব্যবস্থা দিয়েছেন তার বিকল্প কোন কিছু হতে পারেনাযেমন- ছবির বিকল্প হিসেবে প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই যেসব বিশ্ময়কর ব্যবস্থা দিয়ে দিয়েছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো-

ফিঙ্গার প্রিন্ট

প্রত্যেক মানুষেরই আঙ্গুলের তালুতে নকশার মতো অসংখ্য অতি সূক্ষ্ম রেখা বিদ্যমান যে নকশা প্রতিটি মানুষের জন্য পৃথকএকজনের নকশা অন্য জনের সাথে কখানোই মিলবেনা এমনকি জময ভাই(যাদের চেহারা একই রকম দেখতে) তাদের আঙ্গুলেরও রেখার সাথে মিল থাকেনাসুবহানাল্লাহ! পৃথিবীর সবজায়গায় গুরুত্বপূর্ণ কাজে ছবির চেয়ে ফিঙ্গার প্রিন্টকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়যেমন- মূল্যবান দলিলপত্রে, ব্যাংকে, বিমান বন্দরে, অধিক নিরাপত্তামূলক এমন বিভিন্ন স্থানেতাই ছবির প্রচলনকে বাদ দিয়ে সর্বত্র ফিঙ্গার প্রিন্টসহ অন্যান্য বিকল্প ব্যবস্থা চালু করা উচিত

কয়েকটি সহজলভ্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট ডিভাইস ছবির আরো কি কি বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে? ফিঙ্গার প্রিন্ট ছাড়াও কোন ব্যাক্তিকে চিহ্নিত করণ বা সনাক্তকরণের অনেক বিকল্প পদ্ধতি রয়েছে

যেমন-

·        চোখের রেটিনা স্ক্যান

·        চেখের রং

·        চোখের পুতুলির দুরত্ব

·        জন্ম দাগ(স্পট): অধিকাংশ মানুষেরই শরীরের কোথাও না কোথাও জন্ম দাগ থাকে যেটা মৃত্যু পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকে

·        ডিএনএ

·        তিল

·        দস্তখত (স্বাক্ষর)

তাহলে বর্তমান যুগে ছবি তোলার বিষয়ে আমাদের কি করা উচিত?

জরুরত বা মাজুরতার কারণে হারামটা মুবাহ হয়ে যায়যেমন জীবন বাঁচানো ফরযএখন কেউ যদি তিনদিন পর্যন্ত হালাল খাদ্য না পেয়ে অনাহারে থাকে তার জন্য হারাম খাদ্য এমনকি শুকরের গোস্তও মুবাহ হয়ে যায়ঠিক নামায, রোযার ক্ষেত্রেও কেউ অসুস্থ বা শরীয়তের দৃষ্টিতে মাজুর বলে গন্য হলে তার জন্য নামায বা রোযা ফরয থাকেনাএকইভাবে যেহেতু হালাল রুজি অন্বেষন করা ফরয তাই হালাল রুজি উপার্যন করতে গিয়ে যদি ছবি তোলা বাধ্যতামূলক হয়ে যায় সেক্ষেত্রে ছবি তুলে যতকপি প্রয়োজন ঠিক ততকপিই করতে হবেবেশি করাটা উচিত হবেনাএবং মনে মনে এটাকে হারাম জেনে, মন থেকে ঘৃণা করে, আল্লাহ পাঁক উঁনার নিকট অনুতপ্ত হতে হবে এবং সাথে সাথে তওবাহ-ইস্তেগফার করতে হবে যেন আল্লাহ পাঁক ক্ষমা করেন। (বর্তমান যুগে বিশ্বের কোথাও ইসলামী শাসন ব্যবস্থ্যা জারি নেইতাই জালিম সরকার ও মানবরচিত শাসন ব্যবস্থার কারণে বাধ্য হয়ে ছবি তুলতে হয়শরীয়তের দৃষ্টিতে এখানে হালাল উপার্যনকারী ব্যাক্তি মাজুর বলে গন্য হবে।)

আমার মতামতঃ আমি ছবি তুলি না, না আমার পরিবারের কারো ছবি এই তুরষ্কেও রয়েছে। আমি চাইলে দলিল প্রমাণ দিয়ে, লজিক, যুক্তি, মানতেক ও বাতিন থেকে দলিল দিয়ে এই সব হাদিছ শরীফকে অস্বীকার না করেও যায়েজ বানানো যায়, কিন্তু আমি এই কাজ করবনা, কারণ আমার ক্বলব এখনো বিপক্ষে যায়েজ বলার, আর উলামায়ে ছু দের শাস্তি অবশ্যই পেতে হবে, আমি দলিল দিয়ে তাদের সেইভ করার কোন প্রশ্নই আসেনা।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুনঃ

এডমিন

আমার লিখা এবং প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বে আইনি।

0 ফেইসবুক: