আমাকে আপনি পছন্দ করেন বা না করেন, আমার মতামত-টা চুপিসারে হলেও, মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। (আজ থেকে ৩ মাস আগে ইউটিউবে এই পোষ্ট প্রথমে দেওয়া হয়েছে)
রাজারবাগ দরবার পরিত্যাগের প্রায় ২ বছর হয়ে গেছে, এবং এই দুই বছর আমি ফেইসবুক, টুইটার, সহ প্রায় সকল সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলাম, গুগল সার্চ থেকেও আমার নাম আমি মুছে দিয়েছিলাম, এমনকি আমার এই ওয়েবসাইট পর্যন্ত আমি অফ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু কেনো? কি কারণে?
এর কারণ হলো আমি কোন ফেত্নায় জড়াতে চাইনি, কারণ মহান আল্লাহ পাক বলেনঃ (وَالْفِتْنَةُ أَكْبَرُ مِنَ الْقَتْلِ) আর ধর্মের ব্যাপারে ফেতনা সৃষ্টি করা নরহত্যা অপেক্ষাও মহা পাপ। কিন্তু মানুষ চাইলেই ফেত্না থেকে বাঁচতে পারবেনা, এর কারণ ইবলিশ ফেত্না পছন্দ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ইবলিসের ওয়াস ওয়াসায় ফেইসবুকে আমার অবর্তমানে আমার ব্যপারে গিবত, পরচর্চা, নিন্দা, চোগলখুরি করে আমার নামে ফেইক আইডি বানিয়ে আমি সেজে অশ্লীল কমেন্ট করা শুরু করে রাজারবাগের কতিপয় মুরিদরা(যার মধ্যে পিচ্চি আমজাদ আলী ও মুঞ্জির অন্যতম), অথচ এরা যদি মহান আল্লাহ পাক-কে ভয় করতো তাহলে তারা মান্য করতো আল কুরআনের এই আয়াতখানাঃ (وَیۡلٌ لِّکُلِّ هُمَزَۃٍ لُّمَزَۃِۣ) “দুর্ভোগ এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে (সামনাসামনি) মানুষের নিন্দা করে আর (অসাক্ষাতে) করে দুর্নাম”। যদিও এই কাজগুলি খুবই জঘন্য, কিন্তু যেহেতু এদের মূল উদ্যেশ্য হলো আমাকে ফেইসবুকে জোর করে হলেও টেনে নিয়ে আসা, যেনো আমি তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে নতুনকরে কলম হাতে নেই আর তারা এর বিপরীতে ফিতনা করতে পারে। তবে আমি ফেইসবুক নামক জাহিলদের বিচরণের স্থানে এতো সহজে পাড়া দেবনা।
যাইহোক, এবার আসি মূল কথায়ঃ (ইউটিউবে) আমার রাজারবাগ দরবারকে পরিত্যাগের পাবলিক ঘোষণায় আমার পরিচিতঃ সুন্নী, দেওবন্দি, সালাফি মহলে ভালই ঝড় উঠেছে। তবে এর দায় কিন্তু সম্পূর্ণ অতি উৎসাহী রাজারবাগি মুশরিক পিরের অন্ধ মুরিদ-দের(বিশেষ করে মুঞ্জির ও আমজাদ আলীর)। এরা ইঞ্জিনিয়ার সোহেল ইকবাল ভাইয়ের রাজারবাগ দরবার পরিত্যাগ ও ফেইসবুকে তাদের ভন্ডামি নিয়ে লিখা প্রকাশের কারণে সেখানে উনার প্রচুর শুভাকাঙ্ক্ষী দেখে পাগল হয়ে যায়। তারা ভাবে যে আমি লুকিয়ে ইঞ্জিনিয়ার সোহেল ইকবাল ভাইকে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছি। অথচ এই মূর্খগুলি ভুলে গেছে আমি দেশে থাকতে সেইসব মানুষের বিরুদ্ধে কলম চালিয়েছিলাম যাদের বিরুদ্ধে বিদেশে বসেও মানুষ কলম চালাতে ভয় পায় এখনো। অথচ সেই আমিই কি ফেইসবুকে লুকিয়ে ফেইক আইডি দিয়ে মুশরিক দিল্লুর রহমানের কুফুরি নিয়ে লিখালিখি করবো? সামান্য নুন্যতম কমন সেন্স থাকলেও তো বোঝার কথা, যে লোক তার ইউটিউবে (১০৭০০ সাবস্ক্রাইবার ওয়ালা) নিজের নামের চ্যনেলে রাজারবাগ সম্পর্কে স্পষ্ট করে নিজের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে, তার কিসের ঠেকা পড়েছে নিজের নাম গোপন করে ফেইক আইডি বানিয়ে রাজারবাগের কুফুরি নিয়ে ফেইসবুকে লিখতে যাবে?
তবে মহান আল্লাহ পাক যা করেন ভালোর জন্যেই করেন। মূর্খদের টানাটানিতে, ফেইসবুকে না গেলেও, এইখানের (ইউটিউবের পোষ্টের) মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে রাজারবাগের যারা মুরিদ তাদের অনেকেই সচেতন হয়ে উঠছেন। আমি খেয়াল করে দেখলাম এরা তিন শ্রেনিতে বিভক্তঃ
১) রাজারবাগি ইলমের অধিকারী চতুর মুরিদ
(এরা চুপচাপ দেখতেছে আমি আগামীতে কি পদক্ষেপ নেই তাদের দরবারের ব্যপারে। তবে এরা সংখ্যায়
খুবই কম সর্বোচ্চ ১০/১৫ জন হবে। তবে তাদের ভদ্র আচরণের কারণে, এদের আমি সম্মান করি
সব সময়।)
২) হক্ব তালাশি মুরিদ (এরাও সংখ্যায় বেশী
নয়, ৪/৫০০শ হবে
হয়তো, এরা আমার সাথে
যোগাযোগ শুরু করেছে, জানতে বুঝতে
চাচ্ছে কেনো আমার এই কঠিন সিদ্ধান্ত যা তাদের কনফিউজড করে দিয়েছে রাজারবাগের ব্যপারে।
এদের জন্য আমি সব সময় নিবেদিতপ্রাণ।)
৩) অন্ধ ব্রেইন ওয়াশ করা মুরিদ (এরা সংখ্যায় অগণিত, হাজার হাজার, এরা হলো রোবট টাইপ মুরিদ, যাদের মূল কাজ হলো, ফেইসবুক ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজারবাগি পিরের দালালি ও তার পক্ষ নিয়ে ইতরামি করা, তারা কোন দলিল, প্রমান, কুরআন হাদিসের ধার ধারেনা। আমিও মুগুর রেডি করে রেখেছি এদের জন্য।)
এখন আপনি আগামীতে রিয়েকশন দেখানোর আগে উপরের কোন শ্রেণীতে বিরাজমান তা প্রথমেই নির্ধারণ করবেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমার আচরণ অনুরূপ হবে আপনার ব্যপারে।
প্রিয় ভাই ও বোনেরা, মন দিয়ে শুনেন। আপনার মৃত্যু, আপনার কবর, আপনার হাশর, আপনার আখিরাত একা আপনারই হবে। যেখানে ঈমান ছাড়া দ্বিতীয় কোন জিনিস বা ব্যক্তির দ্বারা আপনি নিজেকে মহান আল্লাহ পাক উনার পাকড়াও থেকে রক্ষা করতে পারবেন না। তাই প্লীজ আপনি সেইসব মানুষের অন্তর্ভুক্ত থাকবেন না যাদের ব্যপারে মহান আল্লাহ পাক বলেছেনঃ (وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللّهِ إِلاَّ وَهُم مُّشْرِكُونَ) “অধিকাংশ মানুষ ঈমান আনা সত্ত্বেও মুশরিক”। ভন্ড মুশরিক পিরের ভ্রান্ত মনগড়া তাসাউফের উপর ঈমান রেখে প্লিজ আপনারা আর মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত থাকবেন না। বে-ঈমান হয়ে মৃত্যুবরণ করার আগে ফিরে আসুন। ইবনু আববাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যারা মহান আল্লাহ তা’য়ালাকে সৃষ্টিকর্তা, রিযিকদাতা, জীবন এবং মৃত্যুদাতা বলে বিশ্বাস করে, কিন্তু ইবাদতের ক্ষেত্রে (আল্লাহর সাথে) অন্যকে শরীক করে, উক্ত আয়াতে তাদেরকে মুশরিক বলা হয়েছে (তাফসীর ইবনু কাছীর, উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রঃ; বুখারী, ‘তাওহীদ’ অধ্যায় ৪০ অনুচ্ছেদ)। আবু জাহেল ও আবু লাহাবের ন্যায় আজকের যুগেও আপনারা যারা রাজারবাগির মুরিদ তারা মহান আল্লাহ তা’য়লাকে একক সৃষ্টিকর্তা হিসাবে বিশ্বাস করলেও ইবাদতের ক্ষেত্রে আপনারা শিরক করে থাকেন। আর উক্ত আয়াতে আপনাদেরকেই উদ্দেশ্য করা হয়েছে। কিভাবে করেনঃ
- আপনারা আল্লাহ পাকের ভরশা বাদ দিয়ে মুশরিক দিল্লুর রহমানের উপর ভরশা করেন, বিপদে আপদে যেখানে আল্লাহ ভরশা বলার কথা সেখানে বলেন মামদুহ ভরশা।
- আপনারা মুশরিক দিল্লুর রহমানকে বলেন আস ছমাদ, যেখানে আল্লাহ পাক ব্যতীত কোন সাধারণ মানুষ তো দূর খোদ রাসূলে পাক ছল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত আস ছমাদের অধিকারী নন।
- আপনারা কুরআনের প্রথম শব্দ ও খাস বাক্য আলহামদুলিল্লাহ থেকে আল্লাহ পাকের নাম কেটে দিয়ে পিরের নাম বসালেন।
- আপনারা সুবহানআল্লাহ থেকে আল্লাহ পাকের নাম কেটে দিয়ে পিরের নাম বসালেন।
- আপনারা আল্লাহু আক্ববার থেকে আল্লাহ পাকের নাম কেটে দিয়ে পিরের নাম বসালেন।
- আপনারা ইং শা আল্লাহ থেকে আল্লাহ পাকের নাম কেটে দিয়ে পিরের নাম বসালেন।
- এমনকি আপনাদের বাবা গতো দুইদিন আগে তো একেবারে নিজেকে রাহমাতাল্লিল আলামিন ও দাবী করেছে, অথচ আল্লাহর রাসূল ছল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যতীত অন্য কোন নবী রাসূল আলাইহিমুস সালাম পর্যন্ত সমস্থ আলমের জন্য রহমত নন।
- এমনকি আরো দাবী করেছে সে এখন যাকে খুশী তাকে আহলে বাইত বানানোর ঠিকা নাকি পেয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে, অথচ আপনারা জানেন না যে সে নিজেই আহলে বাইত নয়, তার কোন বংশ লতিকাই নেই রাসূলে পাক ছল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত, সে হলো স্বপ্নের মাধ্যমে আহলে বাইত নাউযুবিল্লাহ।
দিল্লুর রহমানের দাবীকৃত কিছু কুফুরিমূলক উক্তির ভিডিও দিলাম দেখে নিন। বাকিটা ধিরে ধিরে প্রকাশ করবো ইন’শা-আল্লাহ!
এছাড়াও অনুরূপ অসংখ্য কুফুরি বিদ্যমান যা কিতাবে দলিল সহ প্রকাশ করা হবে ইং শা আল্লাহ। আরেকটি বিষয় হচ্ছে যারা জানেন না তারা পড়তে পারেন "যেভাবে হঠাৎ পির সেজেছেন দিল্লুর রহমান!"
জ্ঞানীদের জন্য এগুলিই যথেষ্ট মনে করি রাজারবাগের মুশরিক পিরকে পরিত্যাগ করার জন্যে। পরিশেষে একটি কথাই বলবোঃ সেইসব মানুষের অন্তর্ভুক্ত হইয়েন না যাদের আল্লাহ পাক জাহান্নামের লাকড়ি হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। নিজেকে হেফজত করবেন, নিজের বিবেক বুদ্ধি খাটিয়ে, আজকের ভ্রান্ত বিকৃত তাসাউফকে ইসলাম মনে করে দেওয়ানবাগী, চন্দ্রপাড়া, সুরেশ্বর, আটরশির মতো যায়াগাগুলিতে অসংখ্য কুফুরি দেখেও যারা ছুটতে পারেনা ঈমান গেলে যাক মুরিদ থাকবো বলে, প্লীজ তাদের অন্তর্ভুক্ত হইয়েন না।
সুন্নী থাকার, ও সুন্নী হিসেবে মরার জন্য আপনার কোন মুশিরিক বাবার পূজারী হতে হবেনা, বরং আপনি যদি নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুযুরপাক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম ও উনার হেদায়েতপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদিন, সাহাবী, তাবেঈ ও হক্বানী আউলিয়ায়ে কেরামদের মুহব্বত করেন তাহলে আপনার নাজাত ১০০%।
আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে হক্ব বোঝার তৌফিক
দিন। যারা হক্ব তালাশি তারা নক দিবেন, আপনাদের জন্য মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমি সব সময় ফ্রি এই বিদেশের মাটিতেও।
ইং শা আল্লাহ। (যোগাযোগ করতে চান? ইমেইল করুন rajib.khaja@gmail.com)
0 ফেইসবুক: