Friday, August 19, 2022

বিদআত কাকে বলে? দ্বীনের মধ্যে নতুন সব কিছুই কি বিদআত? দলিল ভিত্তিক আলোচনা!!!

///এই যামানার “কথিত সলাফি” “লা মাজহাবী” আহলে হদস ও কিছু কওমী, দেওবন্দি, ওহাবী, নজদি ওয়াজি, বক্তা ও উলামায়ে ছু’রা দেখা যায় তাদের বিভিন্ন লিখা, ও বয়ানে একটি বুলি আওড়ায় এই বলে যেঃ “বিদআতে হাসানাহ, “ভাল বিদআত” বলে কোন বিদআত নেই। বরং প্রত্যেক বিদআতই “সাইয়্যিআহ” খারাপ।/// নাউযুবিল্লাহ!!!

কথা হলো তাদের এইসব দাবী কি ইসলামিক? নাকি মনগড়া ভ্রান্ত আক্বিদাহ প্রচার প্রসারের অংশ হিসেবেই উত্থাপন করছে?

মূলত এইসব জাহিল বক্তা ওয়াজী কিতাবাদি না পড়ে কিচ্ছা কাহিনী আর তাদের ইহুদীদের দোসর শায়খদের অন্ধ অনুসরণ করে থাকে। তাই জ্ঞানী ইল্ম তালাশি ভাই ও বোনেরা আসুন প্রথমে বিদ’আত কি তা জেনে নিই, সাথে এই বিদ’আতের পরিনাম ও রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের হুকুম কি বিদ’আতের ব্যপারেঃ (حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي الْمُطَاعِ، قَالَ سَمِعْتُ الْعِرْبَاضِ بْنِ سَارِيَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُولُ: قَامَ فِينَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى ٱللّٰهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّم ذَاتَ يَوْمٍ فَوَعَظَنَا مَوْعِظَةً بَلِيغَةً وَجِلَتْ مِنْهَا الْقُلُوبُ وَذَرَفَتْ مِنْهَا الْعُيُونُ فَقِيلَ يَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى ٱللّٰهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّم وَعَظْتَنَا مَوْعِظَةَ مُوَدِّعٍ فَاعْهَدْ إِلَيْنَا بِعَهْدٍ فَقَالَ ‏ "‏ عَلَيْكُمْ بِتَقْوَى اللَّهِ وَالسَّمْعِ وَالطَّاعَةِ وَإِنْ عَبْدًا حَبَشِيًّا وَسَتَرَوْنَ مِنْ بَعْدِي اخْتِلاَفًا شَدِيدًا فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيِّينَ عَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ وَإِيَّاكُمْ وَالأُمُورَ الْمُحْدَثَاتِ فَإِنَّ كُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ) আবূ নাজীহ্ আল-'ইরবাদ ইবনু সারিয়াহ্ রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, “রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম একদিন আমাদের মাঝে দাঁড়িয়ে অত্যন্ত মর্মস্পর্শী ভাষায় নসীহত করেন, যাতে আমাদের অন্তর ভীত হয়ে পড়ে এবং আমাদের চোখে পানি এসে যায়। আমরা নিবেদন করিঃ হে মহান আল্লাহ পাকের রসূল ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম! (এটা) মনে হচ্ছে বিদায়কালীন উপদেশ; আপনি আমাদেরকে অসীয়ত করুন। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদেরকে মহান আল্লাহ পাক-কে ভয় (তাক্বওয়া অর্জন) করতে অসীয়ত করছি, আর আনুগত্য দেখাতে অসীয়ত করছি; যদি কোন (হাবশি) গোলামও তোমাদের আমীর হয় তবুও। (আর) তোমাদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকবে তারা (আমার দুনিয়া থেকে বিদায়ের পর, দ্বীনে) অনেক মতবিরোধ (ইখতেলাফ) দেখবে; সুতরাং তোমরা আমার সুন্নাত ও হেদায়াতপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদ্বীনের সুন্নত তরীকা মেনে চলবে, (আর) তা দাঁত দিয়ে (অর্থাৎ খুব শক্তভাবে) আঁকড়ে ধরে থাকবে; আর (দ্বীনে) নব উদ্ভাবিত বিষয় সম্পর্কে সাবধান থাকবে, কারণ প্রত্যেক নব উদ্ভাবিত বিষয় হচ্ছে বিদ'আত, (আর) প্রত্যেক বিদ'আতই হচ্ছে গোমরাহী” (সূনান ইবনে মাজাহ শরীফ ৪২)

এছাড়াও অন্য রিলেটেড হাদিস শরীফে বলছেনঃ (عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: كَانَ "رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى ٱللّٰهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّم" يَقُولُ فِي خُطْبَتِهِ يَحْمَدُ اللَّهَ وَيُثْنِي عَلَيْهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ يَقُولُ"‏ مَنْ يَهْدِهِ اللَّهُ فَلاَ مُضِلَّ لَهُ وَمَنْ يُضْلِلْهُ فَلاَ هَادِيَ لَهُ إِنَّ أَصْدَقَ الْحَدِيثِ كِتَابُ اللَّهِ وَأَحْسَنَ الْهَدْىِ هَدْىُ مُحَمَّدٍ وَشَرَّ الأُمُورِ مُحْدَثَاتُهَا وَكُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ وَكُلَّ ضَلاَلَةٍ فِي النَّارِ) জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম উনার খূৎবায় মহান আল্লাহ তা’আলার যথাযোগ্য প্রশংসা এবং ছানা সিফত করতেন যেরূপ প্রশংসার তিনি (আল্লাহ তা’আলা) হক্বদার, অতঃপর তিনি বলতেনঃ যাকে মহান আল্লাহ তা’আলা পথ দেখান তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে না এবং যাকে তিনি পথভ্রষ্ট করেন তাকে আর কেউ পথ দেখাতে পারে না। (হে মানুষেরা, তোমরা জেনে রেখো) নিশ্চয়ই সর্বোত্তম বাণী হচ্ছেন মহান আল্লাহ তা’আলার কিতাব (আল কুরআন) এবং সর্বোত্তম আদর্শ (হচ্ছেন) মুহাম্মদ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হল (দ্বীনের মধ্যে) নব উদ্ভাবিত বিষয়। আর নব উদ্ভাবিত প্রত্যেক বিষয় বিদআত এবং প্রত্যেক বিদআত হল ভ্রষ্টতা এবং প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম। (নাসাঈ শরীফঃ ১৫৭৮)

উপরোক্ত দুই হাদিস থেকে আমরা স্পষ্ট হয়ে গেলাম যে সর্বোত্তম আদর্শ হচ্ছেন কুরআন ও সুন্নাহ, আর যদি কখনো কুরআন সুন্নাহর অনুসারীদের মধ্যে দ্বীনের কোন বিষয়ে ইখতেলাফ দেখা দেয় তাহলে তারা যেনো সুন্নতে রসূলে পাঁক মুহাম্মদ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম ও সুন্নতে খোলাফায়ে রাশেদিন আল মাহদিহীন অর্থাৎ, হেদায়েতপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদিন আলাইহিমুস সালাম উনাদের সুন্নত, উনাদের কওল, ফেএলের অনুসরণ করে।

এবার দেখি দ্বীনে যেকোন কিছুর সৃষ্টি কি বিদআত? যেহেতু রসূলে পাঁক মুহাম্মদ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় যা ছিলনা, উনার পরে সৃষ্টি হয়েছে তাই বিদআত, সেহেতু এই বিদআত কি কেবল খারাপ ই? এই বিষয়ে অনুসরনীয় হেদায়েতপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদিন আলাইহিমুস সালাম উনাদের জীবন প্রথমে তালাশ করে দেখা যেতে পারে, কোন সমাধান পাওয়া যায় কি নাঃ (عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدٍ الْقَارِيِّ، أَنَّهُ قَالَ خَرَجْتُ مَعَ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ لَيْلَةً فِي رَمَضَانَ، إِلَى الْمَسْجِدِ، فَإِذَا النَّاسُ أَوْزَاعٌ مُتَفَرِّقُونَ يُصَلِّي الرَّجُلُ لِنَفْسِهِ، وَيُصَلِّي الرَّجُلُ فَيُصَلِّي بِصَلاَتِهِ الرَّهْطُ فَقَالَ عُمَرُ إِنِّي أَرَى لَوْ جَمَعْتُ هَؤُلاَءِ عَلَى قَارِئٍ وَاحِدٍ لَكَانَ أَمْثَلَ‏.‏ ثُمَّ عَزَمَ فَجَمَعَهُمْ عَلَى أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، ثُمَّ خَرَجْتُ مَعَهُ لَيْلَةً أُخْرَى، وَالنَّاسُ يُصَلُّونَ بِصَلاَةِ قَارِئِهِمْ، قَالَ عُمَرُ نِعْمَ الْبِدْعَةُ هَذِهِ، وَالَّتِي يَنَامُونَ عَنْهَا أَفْضَلُ مِنَ الَّتِي يَقُومُونَ‏.‏ يُرِيدُ آخِرَ اللَّيْلِ، وَكَانَ النَّاسُ يَقُومُونَ أَوَّلَهُ) আবদুর রাহমান ইবনু ‘আবদীল-ক্বারী রহমতুল্লাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রমাযানের এক রাতে ‘উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালামের সাথে মসজিদে নববী শরীফে গিয়ে দেখি যে, লোকেরা এলোমেলোভাবে জামা‘আতে বিভক্ত। কেউ একাকী নামায আদায় করছেন আবার কোন ব্যক্তি নামায আদায় করছেন (ইমাম রূপে) যাকে ইকতেদা করে একদল লোক নামায আদায় করছেন। হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম বললেন, আমি মনে করি যে, এই (সকল) নামাজিদের যদি আমি একজন ক্বারীর (ইমামের) পিছনে জমা করে দেই, তাহলে তাই উত্তম হবে। এরপর তিনি উবাই ইবনু কাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর পিছনে সকলকে জমায়েত করে দিলেন। পরে আর এক রাতে আমি উনার (উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালামের) সাথে বের হই। তখন লোকেরা তাদের ইমামের সাথে নামায আদায় করছিল। হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালামের বললেন, কতই না উত্তম বিদ’আত এটা, (অর্থাৎ নব উদ্ভাবিত এই তারাবীর জামায়াত এক ইমামের পেছনের কতইনা উত্তম আমল)। (আর) তোমরা রাতের যে অংশে ঘুমিয়ে থাক তা রাতের ঐ অংশ অপেক্ষা উত্তম যে অংশে তোমরা সালাত আদায় কর, এর দ্বারা তিনি শেষ রাত বুঝিয়েছেন, কেননা তখন রাতের প্রথমভাগে লোকেরা সালাত আদায় করত। (বুখারী শরীফঃ ২০১০)

ইলম তালাসি মুমিনেরা দেখুন, অনুসরনীয় হেদায়েতপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদিন আলাইহিমুস সালামদের অন্যতম সাইয়্যিদুনা হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম, তিনি কি বল্লেন? তিনি বল্লেনঃ (نِعْمَ الْبِدْعَةُ هَذِهِ) এটা কতইনা উত্তম বিদ’আত। হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম ফে’এলে মাদা ব্যবহার করে এই নতুন সৃষ্ট আমলের প্রশংসা করলেন। অনেক গন্ড মূর্খ বলে থাকে যে সাইয়্যিদুনা হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম নাকি কোন বিদ’আতের সৃষ্টি করেন নাই, তিনি সুন্নত তরীকার চালু করেছেন। নাউযুবিল্লাহ!!! এদের ভাব দেখলে মনে হবে হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালামের জন্ম বাংলাদেশে হয়েছিল আর আর তাদের জন্ম আরবে। কথা হলো কোনটা সুন্নতে হাসানাহ আর কোনটা বিদআতে হাসানাহ এটা বাংলার তথাকথিত শায়েখরা বেশী জানে নাকি হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম বেশী জানেন? আরবি গ্রামার/ব্যাকরন বাংলাভাষী কথিত এইসব শায়েখরা বেশী বুঝতো নাকি হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম আরবি বেশী বুঝতেন? হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম বলতেছেন (نِعْمَ الْبِدْعَةُ هَذِهِ) এটা কতইনা উত্তম বিদ’আত, যদি হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম মনে করতেন যে এই আমলটা ক্রমান্বয়ে রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম থেকে চলে আসছে, তাহলে তিনি বলতেন (نِعْمَ الْسُنَّتُ هَذِهِ) কতইনা উত্তম সুন্নত আমল এটা। অথচ তিনি বলছেন (نِعْمَ الْبِدْعَةُ هَذِهِ) এটা কতইনা উত্তম বিদ’আত, সুতরাং হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালামের উক্তি ও তাকসিম দ্বারা এটাই সাব্যস্ত হয় যে মুসলমান বিদ’আতকে দুই ভাগে ভাগ করবে, একটি বিদআতে হাসানাহ, অন্যটি বিদ’আতে সাইয়্যি’য়াহ। অত’এব কথিত এইসব শায়খদের মনগড়া হাদিস বিরোধী দাবী “বিদআতে হাসানাহ” বলে কিছু নেই বাতিল বলে গন্য করা হলো। এবং আমলে অনুসরনীয় দ্বিতীয় খলীফাকে অস্বীকার করায় বাতিল সম্প্রদায় বলে গন্য করা হলো, কারণ (সূনান ইবনে মাজাহ শরীফ ৪২) হাদিসে হেদায়েতপ্রাপ্ত খলীফাদের অনুসরণ ওয়াজিব করা হয়েছে।

এছাড়াও এইসব হাদিস ও সুন্নতে খোলাফায়ে রাশেদিন আলাইহিমুস সালামদের অস্বীকারকারী শায়খ দাবী করে থাকে যে, যেকোন আমল যদি ও তা ভালো হয় তাহলে তা বিদ’আত, নাউযুবিল্লাহ!!! অথচ শরীয়তের হুকুম হলো যদি কোন আমলের ব্যপারে স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা না থাকে, আর সেটা যদি শরীয়ত ও সুন্নতে খোলাফায়ে রাশেদিনদের বিরুদ্ধে না যায়, তখন ইহা তাদের আমলেরই অনুসরণ হয়। এখন এই দাবির স্বপক্ষে দলিল কি? প্রমান স্বরূপ সহিহ বুখারির নিম্নক্ত হাদিস খানা আমরা দেখতে পারি। যায়দ ইবনু সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতঃ (أَنَّ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أَرْسَلَ إِلَىَّ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ مَقْتَلَ أَهْلِ الْيَمَامَةِ فَإِذَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عِنْدَهُ قَالَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ إِنَّ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَتَانِي فَقَالَ إِنَّ الْقَتْلَ قَدِ اسْتَحَرَّ يَوْمَ الْيَمَامَةِ بِقُرَّاءِ الْقُرْآنِ وَإِنِّي أَخْشَى أَنْ يَسْتَحِرَّ الْقَتْلُ بِالْقُرَّاءِ بِالْمَوَاطِنِ، فَيَذْهَبَ كَثِيرٌ مِنَ الْقُرْآنِ وَإِنِّي أَرَى أَنْ تَأْمُرَ بِجَمْعِ الْقُرْآنِ‏.‏ قُلْتُ لِعُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ كَيْفَ تَفْعَلُ شَيْئًا لَمْ يَفْعَلْهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى ٱللّٰهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّم قَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ هَذَا وَاللَّهِ خَيْرٌ‏.‏ فَلَمْ يَزَلْ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يُرَاجِعُنِي حَتَّى شَرَحَ اللَّهُ صَدْرِي لِذَلِكَ، وَرَأَيْتُ فِي ذَلِكَ الَّذِي رَأَى عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ ‏.‏ قَالَ زَيْدٌ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ إِنَّكَ رَجُلٌ شَابٌّ عَاقِلٌ لاَ نَتَّهِمُكَ، وَقَدْ كُنْتَ تَكْتُبُ الْوَحْىَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى ٱللّٰهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّم فَتَتَبَّعِ الْقُرْآنَ فَاجْمَعْهُ فَوَاللَّهِ لَوْ كَلَّفُونِي نَقْلَ جَبَلٍ مِنَ الْجِبَالِ مَا كَانَ أَثْقَلَ عَلَىَّ مِمَّا أَمَرَنِي مِنْ جَمْعِ الْقُرْآنِ قُلْتُ كَيْفَ تَفْعَلُونَ شَيْئًا لَمْ يَفْعَلْهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى ٱللّٰهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّم قَالَ هُوَ وَاللَّهِ خَيْرٌ فَلَمْ يَزَلْ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يُرَاجِعُنِي حَتَّى شَرَحَ اللَّهُ صَدْرِي لِلَّذِي شَرَحَ لَهُ صَدْرَ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُما فَتَتَبَّعْتُ الْقُرْآنَ أَجْمَعُهُ مِنَ الْعُسُبِ وَاللِّخَافِ وَصُدُورِ الرِّجَالِ حَتَّى وَجَدْتُ آخِرَ سُورَةِ التَّوْبَةِ مَعَ أَبِي خُزَيْمَةَ الأَنْصَارِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ لَمْ أَجِدْهَا مَعَ أَحَدٍ غَيْرَهُ (لَقَدۡ جَآءَکُمۡ رَسُوۡلٌ مِّنۡ اَنۡفُسِکُمۡ عَزِیۡزٌ عَلَیۡهِ مَا عَنِتُّمۡ حَرِیۡصٌ عَلَیۡکُمۡ بِالۡمُؤۡمِنِیۡنَ رَءُوۡفٌ رَّحِیۡمٌ فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَقُلۡ حَسۡبِیَ اللّٰهُ ۫٭ۖ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ؕ عَلَیۡهِ تَوَکَّلۡتُ وَ هُوَ رَبُّ الۡعَرۡشِ الۡعَظِیۡمِ) ‏ حَتَّى خَاتِمَةِ بَرَاءَةَ، فَكَانَتِ الصُّحُفُ عِنْدَ أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ حَتَّى تَوَفَّاهُ اللَّهُ ثُمَّ عِنْدَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ حَيَاتَهُ ثُمَّ عِنْدَ حَفْصَةَ بِنْتِ عُمَرَ عَلَيْهَ السَّلاَمَ) তিনি বলেন, ইয়ামামাহ’র যুদ্ধে বহু সাহাবী শহীদ হবার পর হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম আমাকে ডেকে পাঠালেন। এ সময় হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম ও উনার নিকট উপস্থিত ছিলেন। হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম বললেন, ‘হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম আমার কাছে এসে বললেন, ইয়ামামাহ’র যুদ্ধে শহীদদের মধ্যে কারী(হাফিজ সাহাবী)দের সংখ্যা অনেক। আমি আশংকা করছি, এমনিভাবে যদি কারীগণ শাহীদ হয়ে যান, তাহলে কুরআন মাজীদের বহু অংশ হারিয়ে যাবে। অতএব আমি মনে করি যে, আপনি আল কুরআন সংকলনের নির্দেশ দিন। উত্তরে আমি (আবু বকর) হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালামকে বললাম, যে কাজ মহান আল্লাহ তা’আলার রসূল ছ্বল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম করেননি, সে কাজ তুমি কীভাবে করবে? হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম জবাবে বললেন, মহান আল্লাহ তা’আলার কসম! এটা একটি উত্তম কাজ। হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম এ কথাটি আমার কাছে বার বার বলতে থাকলে অবশেষে মহান আল্লাহ তা’আলা এ কাজের জন্য আমার সিনাকে উন্মোচন করে দিলেন এবং এ ব্যাপারে হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম যা ভাল মনে করলেন আমিও তাই করলাম। যায়দ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম আমাকে বললেন, তুমি একজন বুদ্ধিমান যুবক। তোমার ব্যাপারে আমার কোন সংশয় নেই। তদুপরি তুমি রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের ওয়াহীর লেখক ছিলে। সুতরাং তুমি কুরআন মাজীদের অংশগুলোকে তালাশ করে একত্রিত কর। (যায়দ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন) মহান আল্লাহ তা’আলার শপথ! উনারা যদি আমাকে একটি পর্বত এক স্থান হতে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিতেন, তাহলেও তা আমার কাছে কুরআন সংকলনের নির্দেশের চেয়ে কঠিন বলে মনে হত না। আমি বললাম, যে কাজ রসূল ছ্বল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম করেননি, আপনারা সে কাজ কীভাবে করবেন? তিনি বললেন, মহান আল্লাহ তা’আলার কসম! এটা একটা কল্যাণকর কাজ। এ কথাটি হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম আমার কাছে বার বার বলতে থাকেন, অবশেষে মহান আল্লাহ তা’আলা আমার সিনাকে উন্মোচন করে দিলেন সে কাজের জন্য, যে কাজের জন্য তিনি হযরত আবূ বকর সিদ্দীক এবং হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা ওয়া আলাইহিমাস সালামদের বক্ষকে উন্মোচন করে দিয়েছিলেন। এরপর আমি কুরআনের (সূরাহ, আয়াত) আনুসন্ধানের কাজে লেগে গেলাম এবং খেজুর পাতা, প্রস্তরখণ্ড ও মানুষের বক্ষ থেকে আমি তা সংগ্রহ করতে থাকলাম। এমন কি আমি সূরা তাওবার শেষাংশ আবূ খুযায়মাহ আনসারী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে সংগ্রহ করলাম। এ অংশটুকু তিনি বাদে আর কারো কাছে আমি পাইনি। আয়াতগুলো হচ্ছে এইঃ (হে মানুষেরা) নিশ্চয়ই তোমাদের নিজদের মধ্য থেকে তোমাদের নিকট একজন রসূল (ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম) এসেছেন, যেসব জিনিস তোমাদেরকে কষ্ট দেয়, উনার নিকট তা খুবই কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের খুবই কল্যাণকামী, মু’মিনদের প্রতি বড়ই স্নেহশীল, বড়ই দয়ালু। এর পরেও যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে (হে নবী ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম, আপনি তাদের) বলে দিনঃ মহান আল্লাহ তা’আলাই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোন ইলাহ নেই, উনার উপরই আমি ভরসা করি, তিনি হলেন মহান আরশের মালিক। (৯/১২৮-১২৯) তারপর সঙ্কলিত সহীফাসমূহ অফাৎ পর্যন্ত হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালামের কাছে রক্ষিত ছিল। উনার অফাৎ-এর পর তা হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালামের কাছে সংরক্ষিত ছিল, যতদিন তিনি জীবিত ছিলেন। অতঃপর তা হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালামের কন্যা (উম্মুল মু’মিনিন) হাফসাহ আলাইহাস সালামের কাছে সংরক্ষিত ছিল। (বুখারি শরীফ ৪৯৮৬)

উপরোক্ত হাদিস থেকে আমরা যা পেলাম, দ্বীনে ভালো কোন কাজের পরিপ্রেক্ষিতে এরূপ দাবির কোন ভিত্তি নাই যে “রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম” করেন নাই বা উনার যামানায় জারি ছিলনা বলে ইহা বিদআত বা পরিত্যাজ্য, বরং (সূনান ইবনে মাজাহ শরীফ ৪২) হাদিসে যেসব হেদায়েতপ্রাপ্ত খলীফাদের অনুসরণ ওয়াজিব করা হয়েছে তারাই কেবল না বরং নরমাল সাহাবীদের ও সুন্নত এটা যে কোন কাজ যদি আহলে সুন্নতের অনুসারী মুমিন আলিম উলামারা চালু করেন তাহলে তা সুন্নতে খোলাফায়ে রাশেদা ও সুন্নতে সাহাবার অন্তর্ভুক্ত, এরূপ বলার কোন সুযোগ নাই যে জরুরি হলে “রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম”। বরং যেকোন ভালো কাজ যদি “রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম” না করে থাকেন, হুকুম না দিয়েও থাকেন তাহলেও তা করা যায়েজ, ক্ষেত্র বিশেষ ওয়াজিব ও বটে, যেমন আজকের ৩০ পারার কুরআন সংরক্ষণ ওয়াজিব হয়ে পড়েছিলো হাফেজে কুরআন সাহাবীদের অধিক হারে শহীদ হওয়ার ফলে। অতএব কোন ভালো, কল্যাণকর কাজ করে নেওয়ার উপর ইজমায়ে খোলাফায়ে রাশেদা ও সাহাবায়ে কেরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম বিদ্যামান। এখন কি হাক্বিকতে বিদআতি শায়খরা বলবে রসূলে পাঁক মুহাম্মদ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের থেকে উনারা বেশি বুঝে কুরআন ৩০ পারার কিতাবে রূপ দিয়েছিলেন? এরূপ বললে ঈমান থাকবে?

তাছাড়া দ্বীনের মধ্যে যখনই কোন ভালো কাজের প্রয়োজন পড়ে তখনই তা করতে হবে, বিদআত বলে বিদআতি ফতওয়া মারা যাবেনা, (সূনান ইবনে মাজাহ শরীফ ৪২) হাদিসে যেসব হেদায়েতপ্রাপ্ত খলীফাদের অনুসরণ ওয়াজিব করা হয়েছে, উনাদের অন্যতম খলীফা হযরত উসমান ইবনু আফফান রদ্বীয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম যা করেছিলেন লাখ লাখ সাহাবীদের উপস্তিতিতে, সেখানে মুসলিম সাহাবী ব্যতীত কোন সলাফি, আহলে হদসের শায়খ বিদ্যামান ছিলনা বলেই সেটা নিয়ে কেউ কোন চু চেরা না করে তা দ্বীনের অংশ বলেই মেনে নিয়েছিলেন, এবং সেই হেদায়েতপ্রাপ্ত খলীফার অনুসরণ আজো আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত একাই করে যাচ্ছে, যেখানে কথিত মুসলিম দাবীদার সলাফি, আহলে হদসের শায়খ ও তাদের অনুসারীরা বিপরীতে অবস্থান করছে।

এবার আসুন দেখি উনার সেই বিদ’আতে হাসানা কি ছিলো, এবং এর থেকে আমরা কি শিক্ষা নিবঃ (أَنَّ السَّائِبَ بْنَ يَزِيدَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، أَخْبَرَهُ أَنَّ التَّأْذِينَ الثَّانِيَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَمَرَ بِهِ عُثْمَانُ حِينَ كَثُرَ أَهْلُ الْمَسْجِدِ، وَكَانَ التَّأْذِينُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ حِينَ يَجْلِسُ الإِمَامُ) সায়িব ইবনু ইয়াযীদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, (ইসলামী খিলাফতের তৃতীয় খলিফার যামানায়) মসজিদে মুসল্লীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে, “উসমান ইবনু আফফান রদ্বীয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম জুমু‘আ শরীফের দিন দ্বিতীয় আযান চালু করার নির্দেশ দেন। অথচ (ইতোপূর্বে) জুমু‘আ শরীফের দিন ইমাম যখন (মিম্বারের উপর) বসতেন, তখনই (জুমু’আর নামাযের) আযান দেয়া হতো। (সহিহ বুখারী ৯১৫) নাসাই শরীফের ১৩৯৩ নং হাদিসের বর্ণনায় এসেছে যখন মদিনা শরীফে মানুষ বেড়ে গেলো।

এইযে জুমু‘আ শরীফের দিনে জুমু’আর ওয়াক্তে অতিরিক্ত আযান নামক বিদ’আতে হাসানার চালু করলেন, দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত করলেন, যা আজ পর্যন্ত পৃথিবীর সকল মুসলমান আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের অনুসারীরা সুন্নতে সাহাবা হিসেবেই আমল করে যাচ্ছেন, আরব, আযম, সব যায়গায়, এমনকি ওয়াহাবী নজদি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত মক্কা ও মদিনা শরিফেও বিনা চু চেরায় এই আমল আজ পর্যন্ত জারি আছে।

মুদ্দাকথা, নবী করেন নাই, নির্দেশ দেন নাই, অথচ প্রয়োজন পড়েছে, খলীফা দেখলেন আমল করলেন, লাখা লাখ মুহাদ্দিস সাহাবী বিনা চু চেরায় মেনে নিলেন, অথচ টাউট বাটপার ইহুদীদের টাকায় মুসলিম সেজে থাকা ধোঁকাবাজেরা এইসব কেও বিদআত বলে পাইকারি ফতোয়া মেরে নিজেদের হাক্বিকত প্রকাশ করে, যেখানে দ্বীনের কোন বিষয়ে ইখতেলাফ হলে (সূনান ইবনে মাজাহ শরীফ ৪২) হাদিসে যেসব হেদায়েতপ্রাপ্ত খলীফাদের অনুসরণ ওয়াজিব করা হয়েছে, তিনি ছিলেন তাদের মধ্যে তৃতীয়।

তাছাড়া প্রয়োজনে বিদ’আতে হাসানা সৃষ্টি করাই মূলত কুরআনের অনুসরণ এবং খেদমতে দ্বীন ইসলাম। এর প্রমান হলো, যখন মদিনা শরীফে মানুষ বেড়ে গেলো এবং ব্যবসা বাণিজ্যও প্রসারিত হলো, তখন অধিকাংশ ব্যবসায়ী মুসলিম জুমু’আতে দেরি করে আসতে লাগলেন। ব্যবসার চাপে অনেকের খেয়াল ই থাকতনা কখন খুৎবা শেষ হয়ে যাচ্ছে, অথচ খুৎবা শোনা ওয়াজিব, যার জন্যে ৪ রাকা’আত নামাযের দুই রাকা’আত মাফ করে দেওয়া হয়েছে। ঐ সময় ব্যবসা করাই হারাম, মহান আল্লাহ তাআলা বলেনঃ (یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ) হে ঈমানদারগণ! (পবিত্র) জুমু’আহ শরীফের দিনে যখন নামাযের জন্য (তোমাদের) আহবান করা হয় (অর্থাৎ যখন আযান দেওয়া হয়), তখন তোমরা মহান আল্লাহ তা’য়ালার স্মরণের দিকে (অর্থাৎ নামাযের উদ্যেশ্যে মসজিদের দিকে) ধাবিত হও। এবং (সকল ধরণের) বেচা-কেনা পরিত্যাগ কর, এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা (তা) বুঝতে পারো। (আল কুরআনঃ ৬২/৯)। কুরআনের এই আয়াত দ্বারা জুমু’আহ শরীফের দিন খুৎবার আযানের সময় থেকে নামায শেষ হওয়া পর্যন্ত সকল ধরণের ব্যবসা বাণিজ্যকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, তাই এই সময় দোকানপাঠ অবশ্যই বন্ধ করতে হয়, ব্যবসা প্রতিষ্টানে তালা মেরে নামাযে উপস্থিত হতে হয়। খলীফা যখন দেখলেন মুসলমানদের ব্যবসা বানিজ্যে গাফেল করে দিচ্ছে, তাঁরা খুৎবায়, নামাজে দেরিতে আসছে, অথচ এই সময় বেচাকেনা হারাম, তখন মানুষের ঈমান, আমল, ও মাল-কে হারাম হওয়া থেকে রক্ষা করতে অতিরিক্ত আযান চালু করলেন, যেনো প্রথম আযান শুনে  মসজিদে আসার প্রস্তুতি নেয়, আর দ্বিতীয় আযানে মসজিদে উপস্থিত থাকে খুৎবার পূর্বে।

অতএব প্রমান হলো, দ্বীনের প্রয়োজনে ভালো যেকোন কিছুর সৃষ্টি বিদ’আত নয় বরং বিদ’আতে হাসানা, কারণ প্রথম হাদিসে পাঁকেই আমরা পড়েছি (وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ وَكُلَّ ضَلاَلَةٍ فِي النَّارِ) আর নব উদ্ভাবিত প্রত্যেক বিষয় বিদআত এবং প্রত্যেক বিদআত হল ভ্রষ্টতা এবং প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম। এখন কি এমন কোন কলিজা ওয়ালা মায়ের সন্তান জন্ম নিয়েছে যে বলার মতো সাহস রাখবে যে, খলীফা হযরত উসমান ইবনু আফফান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম বিদআত সৃষ্টি করে যাহান্নামে নিজেও গেছেন আর যারা আমল করেছে, করছে, করবে তারাও যাহান্নামে যাবে? মূলত ব্রেইনলেস মূর্খ জাহিল হলে, কুরআন হাদিসের ব্যপারে অজ্ঞ হলেই, নিজের মগজ দিয়ে চিন্তা করার যোগ্যতা না থাকলে পেইড এজেন্টদের বুলি আওড়িয়ে যেকোন কিছুকেই বিদ’আত বলতে পারবে। তবে যারা কুরআন হাদিসের হাক্বিকি অনুসারী তাঁরা জানে যে দ্বীনের, যামানার, সময়ের প্রয়োজনে সৃষ্ট যেকোন ভালো কাজ গুমরাহী নয় বরং এর বিনিময় পাওয়া যাবে কিয়ামত পর্যন্ত, যেমন হাদিসে এসেছেঃ (عَنِ الْمُنْذِرِ بْنِ جَرِيرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ  عَنْ أَبِيهِ قَالَ: قَالَ "رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى ٱللّٰهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّم"‏ مَنْ سَنَّ سُنَّةً حَسَنَةً فَعُمِلَ بِهَا كَانَ لَهُ أَجْرُهَا وَمِثْلُ أَجْرِ مَنْ عَمِلَ بِهَا لاَ يَنْقُصُ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا وَمَنْ سَنَّ سُنَّةً سَيِّئَةً فَعُمِلَ بِهَا كَانَ عَلَيْهِ وِزْرُهَا وَوِزْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ بَعْدِهِ لاَ يَنْقُصُ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْئًا) মুনযির ইবনু জারীর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, উনার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যাক্তি (দ্বীন ইসলামে) কোন উত্তম রিতির প্রচলন করলো এবং লোকে তদনুযায়ী আমল করলো, এর জন্য তার নিজের নেকি রয়েছে, উপরন্তু যারা তদনুযায়ী আমল করেছে তাদের সমপরিমাণ নেকিও সে পাবে, এতে তাদের নেকির মোটেও হ্রাস হবে না। আর যে ব্যাক্তি কোন মন্দ রিতির প্রচলন করলো এবং লোকেরা তদনুযায়ী আমল করলো, এর জন্য তার নিজের গুনাহ তো রয়েছেই, উপরন্তু যারা তদনুযায়ী আমল করেছে, তাদের সমপরিমাণ গুনাহও সে পাবে, এতে তাদের গুনাহ থেকে মোটেও হ্রাস করা হবে না। (ইবনে মাজাহ শরীফঃ ২০৩)

উপরোক্ত হাদিস থেকে একটি জিনিস স্পষ্ট হয়ে গেলো, রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম যে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে (যে ব্যাক্তি দ্বীন ইসলামে কোন উত্তম রিতির প্রচলন করলো এবং লোকে তদনুযায়ী আমল করলো, এর জন্য তার নিজের নেকি রয়েছে) বলে একটি শরিয়তের মাসালা আমভাবে কায়েম করে দিলেন কিয়ামত পর্যন্ত। এছাড়াও একটি বিষয় ক্লিয়ার করে দেই, উক্ত হাদিসে যে শব্দ “ছান্না” (مَنْ سَنَّ سُنَّةً حَسَنَةً) নবীজি ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম ব্যবহার করেছেন, ইহা আরবি লোগাত ও সহিহ বুখারির একটি হাদিস দিয়ে বুঝা প্রয়োজন, “ছান্না’র” মানে হলো কোন জিনিসের ইযাদ বা ইবতেদা করা। অর্থাৎ কেউ কোন কাজের সূচনা করলো, কিংবা প্রচলন করলো অথবা ইবতেদা করলো। “ছান্না’র” মানে সহিহ বুখারির এই হাদিসের দিকে তাকালে বুঝা যায় (قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لاَ تُقْتَلُ نَفْسٌ ظُلْمًا إِلاَّ كَانَ عَلَى ابْنِ آدَمَ الأَوَّلِ كِفْلٌ مِنْ دَمِهَا، لأَنَّهُ أَوَّلُ مَنْ سَنَّ الْقَتْلَ) রসূলূল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কোন ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে, তার এ খুনের পাপের অংশ আদম আলাইহিস সালামের প্রথম ছেলে (কাবিলের) উপর বর্তায়। কারণ সেই সর্বপ্রথম হত্যার প্রচলন/ইবতেদা করে (أَوَّلُ مَنْ سَنَّ الْقَتْلَ)। (বুখারি শরীফ ৩৩৩৫) এছাড়াও মুশরিকিনে আরব যখন হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে কাতল করতে প্রস্তুত হয় তখন তিনি তাদের নিকট দুই রাকআত নফল নামাযের ইচ্ছা প্রকাশ করেন, “খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে শহীদ করার উদ্দেশ্যে যখন হারাম এর নিকট হতে হিল্লের দিকে নিয়ে বের হয়ে পড়ল, তখন খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তাদের বললেন, আমাকে দু রাক‘আত নামাজ আদায় করতে দাও। তারা উনাকে সে অনুমতি দিল। তিনি দু’রাক‘আত সালাত আদায় করে নিলেন। (বুখারী শরীফ ৩৯৮৯) উক্ত হাদিসে বর্ণিত আছে (وَكَانَ خُبَيْبٌ هُوَ سَنَّ لِكُلِّ مُسْلِمٍ قُتِلَ صَبْرًا الصَّلاَةَ) এভাবেই খুবায়ব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু সেইসব মুসলিমের জন্য দু রাক’আত (নফল) নামাযের ইবতেদা/প্রচলন করে গেলেন যারা ধৈর্যের সঙ্গে শাহাদাত বরণ করেন। যেখানে একিই (سَنَّ) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে।

এছাড়াও, ইসলামের প্রাথমিক পর্যায়ে কোন লোক মসজিদে এসে জামা’আত চলছে দেখলে মুসল্লিদের কাছে নামায কয় রাক’আত পড়া হয়েছে তা জিজ্ঞেস করতেন। অতঃপর ইশারায় তা জানিয়ে দেয়া হতো। তারপর তারা ঐ পরিমান নামায দ্রুত আদায় করে জামা’আতে শামিল হতেন। ফলে উনার (ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলাহি ওয়া সাল্লাম) পিছনের মুক্তাদিদের অবস্থাও ভিন্ন ভিন্ন হত। কেউ দাঁড়ানো, কেউ রুকু’তে, কেউ বসা, আবার কেউ রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলাহি ওয়াসাল্লাম এর সাথেই নামাযরত অবস্থায় থাকতেন। একবার জামা’আত শুরু হওয়ার পর মু’আয ইবনু জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু আনহু আসলেন। তিনি বাকিদের মতো মিসিং রাকা’আত আগে না পড়ে বাদে পড়োলেন, তখন উনাকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, আমি আপনাকে যে অবস্থায় পাবো, তারই তো অনুসরন করব। তখন রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলাহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ মু’আয রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তোমাদের জন্য মিসিং নামাযের একটি তরীকার ইবতেদা করেছে। এখন থেকে তোমরাও সেরুপ করবে। উক্ত হাদিসের মধ্যে  (إِنَّ مُعَاذًا قَدْ سَنَّ لَكُمْ سُنَّةً كَذَلِكَ فَافْعَلُوا) ও রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলাহি ওয়া সাল্লাম (سَنَّ) শব্দ নতুন তরীকার ইবতেদা/প্রচলনের ব্যপারে ব্যবহার করেছেন। (আবূ দাউদ শরীফ ৫০৬)

এবার আসুন সেই মুসলিম শরীফের হাদিসের দিকে তাকাই (عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ، اللَّهِ قَالَ جَاءَ نَاسٌ مِنَ الأَعْرَابِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِمُ الصُّوفُ فَرَأَى سُوءَ حَالِهِمْ قَدْ أَصَابَتْهُمْ حَاجَةٌ فَحَثَّ النَّاسَ عَلَى الصَّدَقَةِ فَأَبْطَئُوا عَنْهُ حَتَّى رُئِيَ ذَلِكَ فِي وَجْهِهِ - قَالَ - ثُمَّ إِنَّ رَجُلاً مِنَ الأَنْصَارِ جَاءَ بِصُرَّةٍ مِنْ وَرِقٍ ثُمَّ جَاءَ آخَرُ ثُمَّ تَتَابَعُوا حَتَّى عُرِفَ السُّرُورُ فِي وَجْهِهِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَنْ سَنَّ فِي الإِسْلاَمِ سُنَّةً حَسَنَةً فَعُمِلَ بِهَا بَعْدَهُ كُتِبَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ مَنْ عَمِلَ بِهَا وَلاَ يَنْقُصُ مِنْ أُجُورِهِمْ شَىْءٌ وَمَنْ سَنَّ فِي الإِسْلاَمِ سُنَّةً سَيِّئَةً فَعُمِلَ بِهَا بَعْدَهُ كُتِبَ عَلَيْهِ مِثْلُ وِزْرِ مَنْ عَمِلَ بِهَا وَلاَ يَنْقُصُ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَىْءٌ) জারীর ইবনু আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, “কিছু সংখ্যক যাযাবর রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের নিকটে আসলো। তাদের পরনে পশমী পোশাক ছিল। তিনি তাদের করুন অবস্থা দেখলেন। তাদের অভাবে আক্রমণ করেছে। তখন রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম মানুষদের (তাদেরকে) দান-সদাকাহ্ করার জন্যে উৎসাহিত করলেন। মানুষেরা দান-সদাকাহ্ দিতে ইতস্তত করছিল। এমনকি এর প্রতিক্রিয়া উনার চেহারায় দেখা গেল। রাবী বলেন, তারপর একজন আনসারী লোক একটি রূপার (টাকার) ব্যাগ নিয়ে আসলেন। তারপর অন্যজন আসলেন। তারপর পর্যায়ক্রমে আসতে লাগলেন, পরিশেষে উনার মুখে আনন্দের চিহ্ন দেখা গেল। তারপর রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে লোক দ্বীন ইসলামে কোন ভালো তরীকার প্রচলন করলো এবং ভবিষ্যতে সেই তরিকার উপর আমাল করা হলো, তাহলে আমালকারীর প্রতিদানের সমান প্রতিদান তার জন্য লিখিত হবে। এতে তাদের প্রতিদানে কোন ঘাটটি হবে না, আর যে লোক দ্বীন ইসলামে কোন খারাপ তরিকার প্রচলন করলো এবং তারপর সে অনুযায়ী আমাল করা হলো তাহলে ঐ আমালকারীর খারাপ প্রতিদানের সমান গুনাহ তার জন্য লিখিত হবে। এতে তাদের গুনাহের মধ্যে সামান্য হ্রাস করা হবে না। (মুসলিম শরীফ ১০১৭ই)

এইখানে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে, হাদিসে বর্ণিত সুন্নত বলতে সুন্নতে রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম নয়, কারণ (فِي الإِسْلاَمِ سُنَّةً حَسَنَةً) ভাল তরিকার বেলায় যেরূপ ব্যবহার করা হয়েছে “সুন্নতে হাসানাহ” অনুরূপ খারাপের বেলায় ব্যবহার করা হয়েছে (فِي الإِسْلاَمِ سُنَّةً سَيِّئَةً) “সুন্নতে সাইয়্যিয়াহ”, তাই কেউ যদি এটা বিশ্বাস করে যে রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতের মধ্যে সাইয়্যিয়াহ ও আছে তাহলে তাঁর ঈমান সাথে সাথেই শেষ হয়ে যাবে। বরং এইখানে সুন্নত শব্দ রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম উনি ব্যতীত বাকি মানুষের সৃষ্ট ভালো/খারাপ তরিকার ব্যপারে ব্যবহার করেছেন, কারণ রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লামের কিছু সুন্নত ভালো আর কিছু খারাপ বলা কুফুরের অন্তর্ভুক্ত। মূলত সুন্নত এইখানে তরীকা অর্থে ব্যবহার করেছেন তিনি, অর্থাৎ (فِي الإِسْلاَمِ سُنَّةً حَسَنَةً) যে কেউ দ্বীন ইসলামে ভালো কোন তরীকা ইযাদ করবে এর নেকি সে পাবে, আর যে (فِي الإِسْلاَمِ سُنَّةً سَيِّئَةً) দ্বীন ইসলামে কোন একটি খারাপ তরীকার ইযাদ করবে, সে এর গুনাহের ভাগিদার হবে।

উপরোক্ত হাদিসের উপর ভিত্তি করে, শরহে মুসলিমের বিখ্যাত মুহাদ্দিস, আজিম মর্তবার অধিকারী ইমাম নববী রহমতুল্লাহী আলাইহি এই হাদিসের শরাতে একে (مُخَصِص) মুখাসসিস বলেছেন ঐ হাদিসের যা সুনানে আবু দাউদ শরীফের মধ্যে বিদ্যামানঃ (إِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ) অর্থাৎ (দ্বীনে) প্রতিটি নতুন কাজই হলো বিদ’আত এবং প্রতিটি বিদ’আতই হলো ভ্রষ্টতা। তিনি বলেন হাদিস (كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ) হলো আম, এবং (فِي الإِسْلاَمِ سُنَّةً حَسَنَةً) হলো (مُخَصِص) মুখাসসিস এই (كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ) হাদিসের। এই হাদিস ঐ হাদিসের হুকুম কে তাখসিস করে দিয়েছে, যার ফলে দ্বীনে ভালো নতুন কোন কাজের উপর এই (كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ) হাদিসের হুকুম আর প্রয়োগ করা যাবেনা না, বরং দ্বীনে নতুন সৃষ্ট সকল খারাপ কাজই এই (إِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ) হুকুমের অন্তর্ভুক্ত।

অতএব স্পষ্ট হয়ে গেলো, মনে চাইলেই কোন ভালো কাজ, ভালো আমলকে কোন টাউট বাটপার সলাফি আহলে হদস মুল্লা বিদ’আত বলে গলাবাজি করতে পারবেনা, বরং দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত প্রত্যেক ভালো কাজ, ভালো আমলই হচ্ছে ক্যাটাগরিকালি সুন্নতে হাসানা, ও বিদ’আতে হাসানাহ যদি না সেই কাজের দ্বারা কোন সুন্নত উঠে যায়, বিলুপ্ত হয়ে যায়, যদি না সেই ভালো কাজ কুরআন সুন্নাহর সরাসরি বিপরীত হয়।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে তাহলে দ্বীনে নব উদ্ভাবিত কোন বিষয় বিদআতে সাইয়্যিয়াহ, ও কোন বিষয় বিদ’আতে হাসানা তা চিনবো কিভাবে?

এর উত্তর ও হাদিস শরীফে পাওয়া যায়। আমাদের স্বরন রাখতে হবে, দ্বীনের যেকোন বিষয়ের ফায়সালা আমাদের প্রথমে কুরআন, অতঃপর সুন্নতে রসূল (সুন্নতে সাহাবাও সামিল), কুরআন সুন্নাহতে পাওয়া না গেলে তখনই কেবল গ্রহণযোগ্য আলিম উলামার মত, ইজমায় তালাশ করতে হবে। যেকোন বিষয়ে কুরআন সুন্নাহর স্পষ্ট দলিল পাওয়া গেলে আজকের কোন শায়খ, বাবা, পিরের বিপরীত আলম, ফতওয়া বাতিল বলেই গন্য হবে। যেহেতু আমরা কুরআন হাদিস দ্বারাই কেবল বিদআত দুই ধরণের এই বিষয়ে আলোচনা করছি তাই কোন ইমাম মুস্তাহিদের মত ও দলিল পেশ করার প্রয়োজন মনে করছিনা, নতুবা ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহী আলাইহি, ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহী আলাইহি, ইমাম আয-যাহাবি রহমতুল্লাহী আলাইহি উনাদের কওল বিদ্যামান বিদআত দুই প্রকারের বিষয়ে (ফাতহুল বারী শরাহ সহিহ বুখারি, যিলদ ১৩, পৃষ্টা ২৫৩ উর্দু, সিয়ারু আলামিন নুবালা যিলদ ৮, পৃষ্টা ২৮৬ পৃষ্টা)।

এরুপ তরতাজা দলিল প্রমান হজম করতে না পেরে যাদের গোমরাহি আরো দৃঢ় হবে, এবং বলতে চেষ্টা করবে যে সাহাবীদের কাজ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত, তাই উনাদের সৃষ্ট নব উদ্ভাবিত বিষয়কে বিদআত বলা যাবেনা, প্রথম কথা হলো সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমরাই সেইসবকে বিদআত বলছেন, এবং দ্বিতীয় কথা হলো সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুদের কি বিদ’আত সৃষ্টি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল? হদিস শরীফে এসেছেঃ (عَنْ عَائِشَةَ عَلَيْهَ السَّلاَمَ أَنَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى ٱللّٰهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّم قَالَ‏ مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ) আয়িশাহ আলাইহাস সালাম থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ ছ্বল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যদি কেউ আমাদের এই দ্বীনে নতুন কিছু উদ্ভাবন (বিদ’আত সৃষ্টি) করে যা তাতে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত। (সূনান ইবনে মাজাহ শরীফ ১৪) উক্ত হাদিস শরীফে যে (مَنْ) ব্যবহার করেছেন রসূলে পাঁক ছ্বল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম, এটা তো সকলের জন্য, একেবারে হযরত আবু বক্বর সিদ্দিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম থেকে কিয়ামত পর্যন্ত সমস্থ মানুষের জন্য এই হুকুম। অর্থাৎ যে কেউ এমন কিছুর সৃষ্টি করবে যা কুরআন, হাদিসের সাথে সাঙ্ঘরশিক, যা দ্বীন ইসলামের মধ্যে নেই, এমন কাজ, এমন আমল বাতিল, যে তা চালু করবে সে মরদুদ জাহান্নামী, অতএব প্রমাণিত হলো যে সাহাবায়ে কেরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমদের জন্যেও দ্বীনে এমন নতুন কিছুর সৃষ্টি যায়েজ নাই যা দ্বীনের বিপরীত, কারণ এর জন্য যাহান্নাম নির্ধারিত, আর যেহেতু উপরোক্ত সাহাবীরা জান্নাতের সার্টিফিকেট প্রাপ্ত সেহেতু বুঝতে হবে অতএব দ্বীনে উনারা যে ভাল কাজ, ভালো রিতির চালু করেছেন তা বিদআতে হাসানা। অতএব এইখানেও সলাফি আহলে হদস ধরা খেলো, তাদের আর কোন পথ খোলাই রইলোনা।

এখন কোন কাজ বিদ’আত কি না এটা বুঝার জন্য নিশ্চয়ই কোন ওয়ে থাকবে?

হ্যাঁ, আমরা যদি রসূলে পাঁক ছ্বল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের হাদিসের দিকে আলোকপাত করি তাহলে দেখতে পাই, তিনি বলছেনঃ (عَنْ حَسَّانَ قَالَ مَا ابْتَدَعَ قَوْمٌ بِدْعَةً فِيْ دِيْنِهِمْ إِلاَّ نَزَعَ اللهُ مِنْ سُنَّتِهِمْ مِثْلَهَا ثُمَّ لاَ يُعِيْدُهَا إِلَيْهِمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ) হাসসান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, ‘যখনই কোন সম্প্রদায় তাদের দ্বীনের মধ্যে কোন বিদ‘আত (বিদ’আতে সাইয়্যিয়াহ) সৃষ্টি করে, তখনই আল্লাহ তাদের মধ্য হতে সেই পরিমাণ সুন্নাত উঠিয়ে নেন। অতঃপর ক্বিয়ামত অবধি তা আর তাদের মধ্যে ফিরে আসে না’ (দারেমী ৯৮, মিশকাত ১৮৮)।

আসুন দেখি কারা দ্বীনে বিদ’আত সৃষ্টি করে? আপনি যদি আহলে হাদিস আন্দোলন বাংলাদেশের কর্ণধার আসাদুল্লাহ আল গালিবের খ্রিষ্টানদের মতো বিদ’আতি তরীকায় চেয়ারে বসে ইমামতি পোষ্ট পড়েন তাহলে বুঝতে পারবেন, কিভাবে সুন্নতের বিপরীতে বিদআতের সৃষ্টি হয়।

অতএব স্পষ্ট হয়ে গেলো যে, যখন কোন সুন্নত তরীকার বিপরীত কোন আমল করা হবে, তখন ইহা বিদআতে সাইয়্যিয়াহ বলে গন্য হবে, আর যখন কোন বিদআতে সাইয়্যিয়াহ চালু হবে তখন একটি সুন্নত বিলুপ্ত হবে। যেমন রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম এই হাদিসে বলেনঃ “যখনই কোন সম্প্রদায় তাদের দ্বীনের মধ্যে কোন বিদ‘আত (বিদ’আতে সাইয়্যিয়াহ) সৃষ্টি করে, তখনই মহান আল্লাহ তা’আলা তাদের মধ্য হতে সেই পরিমাণ সুন্নত উঠিয়ে নেন। অতঃপর ক্বিয়ামত অবধি তা আর তাদের মধ্যে ফিরে আসে না’ (দারেমী ৯৮, মিশকাত ১৮৮)।

এছাড়াও সলাফি আহলে হদসরা মুসলিম সমাজে ফেত্নার উদ্যেশ্যে আলাধা মসজিদ সৃষ্টি করে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়, এইসব মসজিদ কেবল বিদআত ই না বরং এইসব ভেঙ্গে ফেলাই আল কুরআনের হুকুম। (আল কুরআন ৯/১০৭) শুধু আহলে হদস না, আমি হানাফি মাজহাবের অনুসারী হয়ে বলছি, যে কোন মসজিদের নাম হানাফি, শাফেয়ী, হাম্বলি, মালেকি বা অন্য কোন ফেরকার রিপ্রেজেন্ট করে, সবগুলি বিদআত ১০০%।

এছাড়াও আরো অনেক জিনিস আছে যেসব বিদ’আতে সাইয়্যিয়াহ, আর এইসব সৃষ্টি করেছে কথিত এইসব লা মাজহাবি ফেরকার শায়েখরা। উদাহরণস্বরূপ জাকির নায়েক এর টাই, কোর্ট প্যান্ট, নুমান আলী খানের হাফ গ্যাঞ্জি শার্ট ইত্যাদি। তার এই পোশাকের কারণে লাখ লাখ মুসলিম যুবক সুন্নতী পোশাক, পাগড়ি, রুমাল পরেনা, কারণ টাইয়ের সাথে খ্রিস্টানরা কোর্ট প্যান্ট পরে, পাগড়ি রুমাল কোর্তা নয়। তার এই বিদ’আতি পোষাকের কারণে, পোশাকের সুন্নত যুব সমাজ থেকে আজ প্রায় বিলিন। দুনিয়ার সব কিছুতে এরা সুন্নাহ খুঁজে পায় অথচ পোশাকের বেলায় রুজু হয় বিধর্মী ফাসেক ফুজ্জারদের, বলি ইসলামের সব আছে অথচ পোশাকের মতো নিশান নাই তাদের ধারণা? তারা কি মনে করে রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম এরূপ পোশাক পরে দ্বীন ইসলাম কায়েমে ৬৩ বছর পার করে দিয়েছিলেন? অথচ বুখারি শরীফের ৫৮১২ নং হাদিসেই বলা আছে রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম কি ধরণের পোশাক সবচেয়ে বেশি পছন্দ করতেন। 

অতঃপর নিচের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন, ডানে রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম উনার পোশাক ও পাগড়ি বিদ্যমান, যা পড়ে নামাজে ৭০ নেকি বেশি পাওয়া যায়, আর বামে আছে বিদআতিদেরই বানানো অমর সিরিজ ও ইমাম সিরিজের ফিল্মের মধ্যে থাকা সাইয়্যিদুনা হযরত উমর ফারূক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম ও হযরত আহমদ ইবনে হাম্বলের সুন্নতি সূরত বনাম মধ্যিখানে থাকা বিদআতি জাকির নায়েকের নাসারাদের অনুকরণে পরা পোশাক।

তাছাড়া, দ্বীন ইসলাম ও নবীর সুন্নত তরীকা হলো ইসলামিক খেলাফত জারি করা, অথচ অনেক মানুষকে দেখা যায় ইসলাম প্রতিষ্টার জন্য সমাজতন্ত্র, গনতন্ত্র, রাজতন্ত্রের অনুসরণ করতে, দল বানিয়ে ভোট, নির্বাচনের দ্বারা ক্ষমতায় আসার জন্য ইসলামের নাম ব্যবহার করে, এরূপ রাজনৈতিক তরিকার সৃষ্টি করাও বিদ’আতে সাইয়্যিয়াহ।

আর উপরোক্ত হাদিসে আপনারা পড়েছেন অলরেডি যে, “যখনই কোন সম্প্রদায় তাদের দ্বীনের মধ্যে কোন বিদ‘আত (বিদ’আতে সাইয়্যিয়াহ) সৃষ্টি করে, তখনই মহান আল্লাহ তা’আলা তাদের মধ্য হতে সেই পরিমাণ সুন্নত উঠিয়ে নেন। অতঃপর ক্বিয়ামত অবধি তা আর তাদের মধ্যে ফিরে আসে না”।

আর এরা কিন্তু শুধু বিদ’আতে সাইয়্যিয়াহ সৃষ্টি করে যাহান্নামের লাকড়ি হবেনা, সাথে উম্মত থেকেও খারিজ হবে বলেছেন খোদ রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামঃ (فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِي فَلَيْسَ مِنِّي) অতএব যে ব্যক্তি আমার সুন্নত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, সে আমার কেউ নয়।” (মুসলিম শরীফ ১৪০১) অর্থাৎ যে কেউ কোন একটি বাধ্যতামূলক সুন্নত আমলকে পরিত্যাগ করে সে রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।

অতএব স্পষ্ট হয়ে গেলো, এটা বিদআত, ঐটা বিদআত বলে পাইকারি ফতওয়া মারার কোন সুযোগ নাই, বরং সলাফি লা মাজহাবিরাই অরিজিনাল বিদআতি, যা উপরে প্রমান দেওয়া হয়েছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুনঃ

এডমিন

আমার লিখা এবং প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বে আইনি।

0 ফেইসবুক: