বাংলাদেশের জনগণের একটা অংশ মনে করে ভারত চাইলে ১ ঘন্টার মধ্যে
আমাদের দেশটি দখল করে নিতে পারে। অথচ ওরা নিজ চোখে দেখছে যে পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর
দেশ আমেরিকা এবং ন্যাটো সামরিক জোট সর্বাত্মক চেষ্টা করেও লম্বায় ৪১ কি.মি. আর প্রস্থে
৬ থেকে ১২ কি.মি. গাজাকে তারা গত ২ বছরেও দখল করতে পারছে না। কারণটা কী? কারণটা হচ্ছে,
যে দেশ বা জাতি স্বাধীন থাকতে চায় তারা কোনোদিনও পরাধীন হয় না।
যারা পরাধীন হয় তারা প্রথমেই নিজ অন্তরে পরাধীনতাকে মেনে নেয় এবং তারপরই প্রকৃত পরাজয় বরণ করে।
পাকিস্তানের কারাবন্দী নেতা ইমরান খান প্রায়শই একটা কথা বলতেন, “You only lose when you give up” তুমি তখনই পরাজিত হও, যখন তুমি নিজের অধিকার কিংবা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার সামর্থ্য রাখ না বলে ধারণা করো।
আমাদের সার্বভৌমত্ব আমরা জান, মাল ও জীবন দিয়ে রক্ষা করব এ ধরনের উপলব্ধির স্থানে কেউ যদি ধারণা করে ভারত চাইলেই আমাদেরকে দখল করে নিতে পারে, সেক্ষেত্রে প্রশ্ন হচ্ছে তবে ১৯৭১ এ স্বাধীনতা চাইলাম কেন? ৩০ লক্ষ মানুষের জীবনের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করলাম কেন? ঐ স্বাধীনতার অর্থ ছিল কি পরবর্তীতে ভারতের পদতলে রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সমর্পণ? দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে সাধারণ জনগণ এহেন নেতিবাচক ধারণা পোষণ করতে শুরু করেছিল ১৫-২০ বৎসর পূর্ব থেকেই!
বর্তমানে পরিস্থিতি হচ্ছে, এ দেশের সেনাবাহিনীর কিছু অংশও আজকাল এ ধরনের ধারণা পোষণ করতে শুরু করেছে! কারণটা হচ্ছে শত্রুর মনস্তত্ত্ব বিশারদরা যুবসমাজ ও আপামর জনগণকে বাধাহীনভাবে মগজ ধোলাই করতে পারে এবং করে যাচ্ছে, কারণ শত্রুর আক্রমণের ধারা, পরিধি এবং এর ধ্বংসাত্মক প্রভাব যাচাই করার কোন প্রতিষ্ঠান আমরা পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতার অভাবে গড়ে তুলতে পারিনি! যেখানে শত্রুর মনস্তাত্ত্বিক আক্রমণের ধারাই আমরা চিহ্নিত করতে অক্ষম সেখানে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও প্রতি আক্রমণ (counter attack) করার তো প্রশ্নই উঠে না।
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশীদের চেতনা সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করছে দুজন, তাদের একজন হচ্ছে বনি আমিন অপরজন হচ্ছে আর জে কিবরিয়া। বনি আমিন পৃথিবীর এমন কোনো দর্শনীয় স্থান নেই যেখানে তার স্ত্রী ভেরোনিকাকে নিয়ে ভ্রমণ করে নাই। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ঘুরে ফিরে কোটি কোটি টাকা খরচ করে বাংলাদেশীদের জন্য কনটেন্ট তৈরি করে। টিআরপির মাধ্যমে সে যা আয় করে তা তার খরচের ১০০ ভাগের এক ভাগও হবে না। তো এত টাকা সে পায় কোথা থেকে? আজ পর্যন্ত সে তার কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা চাকুরী সংক্রান্ত বিষয়ে ভিডিও তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করেনি। কারণ তার সোর্স অব ফান্ড হচ্ছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা RAW এর SS মানি। RAW এর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশীদের perception পরিবর্তনে কোটি টাকা খরচ করতেও দ্বিধা করে না। কারণ একটি দেশকে দখল নিতে যে চারটি স্তর পার করতে হয় তার প্রথম স্তরটি হচ্ছে Demoralization, যা এই দুইজন ইউটিউবার নিরবিচ্ছিন্নভাবে করে যাচ্ছে।
এদিকে আর, জে, কিবরিয়া শুরুতে কিছু ধর্মীয় ও সমাজ সচেতন মূলক পডকাস্ট প্রচার করে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে ভাইরাল হয়। আর এখন সে রেগুলার যে কাজটি করছে তা হলো, রগরগে যৌন অভিজ্ঞতার অবতারণা, মেয়েগুলোর শরীর দেখিয়ে মুখ ঢেকে/না ঢেকে যৌবনের যৌনতার কল্পকাহিনী খোলামেলাভাবে ভিডিও বক্তব্য মিডিয়াতে দিচ্ছে। আমাদের দেশের যুবসমাজকে ধ্বংসের উদ্দেশ্যে প্রচারিত এ ধরনের যৌন উত্তেজক ঘটনাগুলোর অবতারণা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমাদের সমাজের উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েরা এসব দেখে কী শিখছে? সমাজে যৌনতা ছড়ানো ছাড়াও ব্যাপক হারে ধর্ষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এই দেশে কি কোন কর্তৃপক্ষ নেই যারা সোশ্যাল মিডিয়া মনিটর করবে আর সামাজিক মূল্যবোধ রক্ষার্থে যৌন উত্তেজক কন্টেন্টগুলো রিমুভ করবে?
জাতীয় চরিত্র ধ্বংসের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াতে এই যৌনতার চালু হয়েছিল স্বৈরাচারের আমলে। এখন কেন তা চালু থাকবে?
শত্রুর মনস্তাত্ত্বিক যোদ্ধারা যারা এদেশে অবস্থান করছে তাদেরকে এরেস্ট করা উচিত এবং এদের পোস্ট মিডিয়াতে পার্মানেন্টলি এবং প্রতিনিয়ত ব্লক করা উচিত।
এই মগজ ধোলাই কার্যক্রম কিভাবে পরিচালনা করা হয় তা বুঝতে হলে
এই শিরোনামের প্রথম পর্বটি পড়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।

0 ফেইসবুক: