Wednesday, October 19, 2022

মুসলিমদের মূল যে দুটি জিনিস আজ ইহুদি নাসারা ও মুশরিকদের দখলে।


ইহুদী, নাসারা ও মুশরিকদের জন্য সবচেয়ে বিপদজনক যে দুটি জিনিস ছিলো মুসলমানদের ভেতর, তা আজ তারা পুরোপুরি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে।

১.ক) ইলমে তাসাউফ (যার দ্বারা পাপকর্ম থেকে বেচেঁ থেকে আত্মশুদ্ধি অর্জন করে ঈমানদার হতো মুসলমান)।
২.খ) সম্মানিত ইসলামিক খিলাফত ও জিহাদ (যার দ্বারা মুসলমান জমিনে দ্বীন কায়েম ও পরিচালনা করতো)।

উভয় বিষয় আজ ৯৫% ইহুদীদের নিয়ন্ত্রণে বলা যেতে পারে। যার কারণে উভয় পথের হাক্বিকি তালাশীদের আজ কেবল হোচট খেতে হচ্ছে, অনেকে আবার গন্তব্যে পৌঁছার আগেই শেষ হয়ে যাচ্ছেন।

ক) ইলমে তাসাউফের বর্তমান অবস্থাঃ ইহুদীদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার কারনে বর্তমান ইলমে তাসাউফের অবস্থা এরূপ হয়েছে যে, আমরা বাজার থেকে যে আমের জুস খাই সেখানে যেমন আমের বদলে কেবল ফ্লেভার থাকে, তেমনি ইহুদীদের হাতের দ্বারা পরিচালিত ইলমে তাসাউফেও তাই আজ আত্মশুদ্ধি নাই কেবল ফ্লেভার আছে। যেখানে সুফীবাদের লেবেলে পাওয়া যায় পর্দাহীন অশ্লীল জীবনযাপন, গান বাজনা, গনতন্ত্র, তাগুত পূজা, নেতা পূজা, বেইমানি, অলি আল্লাহ উনাদের মাজার শরীফ নিয়ে ব্যবসা, বিকৃতাবস্থার উরুস, পিরদের নিজের মনগড়া বিদয়াতি তর্জ তরিকা যার সাথে কুরুনে সালাসার কোন আমলের দূর তম কোন সম্পর্কও পাওয়া যায়না, উল্টো অনেক কিছুই সুন্নতের বিপরীত, সুন্নত ধ্বংসকারী বিদআতও বিদ্যমান, এছাড়াও সাথে আছে ঈমান ধ্বংসকারী আমিত্ব, অহংকার, আর দুনিয়াদারী এবং জিহাদ থেকে সব সময় দূরে থাকার একটি প্রচেষ্টা।

অথচ প্রকৃত সূফিবাদ এর সূফীদের দ্বারা পরিচালিত ইলমে তাসাউফের অবস্থা কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিলো, যেমনঃ

প্রকৃত সূফীদের উদাহরন দিতে গিয়ে হযরত বায়েজীদ বোস্তামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলনঃ সূফী হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যিনি তার দক্ষিণ পার্শ্বে মহান আল্লাহ তাআলার কিতাব এবং উত্তর পার্শ্বে রাসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার সুন্নত আঁকড়ে ধরেন। এক চোখ দিয়ে জান্নাত দেখেন আর অপর চোখ দিয়ে দেখেন জাহান্নাম। দুনিয়াকে রাখেন পিছনে আর আখিরাতকে জড়িয়ে ধরেন; আর এ দুইয়ের মাঝে মাওলা উনার কাছে এভাবে হাজিরা দিয়ে থাকেনঃ- লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক (আমি হাজির। হে মহান আল্লাহ পাক, আমি হাজির)। (শাতহাতে সূফিয়া-৯৬ পৃষ্ঠা)

মুহম্মদ ইবনে আলী ইবনে হুসাইন ইবনে আলী ইবনে আবু তালিব আলাইহিস সালাম বলেনঃ সুফীবাদ হচ্ছে আখলাক বা সৎ স্বভাবের নাম। মানুষের চরিত্র যত উন্নত হবে তার ইলমে তাসাউফ ততটা বৃদ্ধি পাবে।

আখলাক বা সৎ চরিত্রের ২টি শ্রেণি রয়েছেঃ প্রথমটি হলো স্রষ্টার সাথে সৎ স্বভাব দ্বিতীয়টি হলো সৃষ্টির সাথে সদ্ব্যবহার।

১) এখন মহান আল্লাহ তাআলার সাথে সৎ স্বভাব এর মানে হচ্ছে মহান আল্লাহ তাআলার নাজিলকৃত বিধানে রাজি থাকবে। উনার কোনো কাজেই সে অভিযোগ করবে না। উনার সকল আদেশ নিষেধ অবনত মস্তকে মেনে নিবে।

২) আর সৃষ্টির সাথে সদ্ব্যবহারের মানে হচ্ছে সৃষ্টির প্রতি মহান আল্লাহ পাক যে দায়িত্বভার দিয়েছেন তা মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে অবশ্যই পালন করবে এবং নিঃস্বার্থ ভাবেই তা আদায় করবে।

এক সুফিয়ায়ে কেরাম রহমাতুল্লাহী আলাইহি বলেনঃ সৎ স্বভাবের নামই হচ্ছে তাসাউফ, আর তা হচ্ছেন তিন প্রকার, যথাক্রমেঃ

১) প্রথমতঃ মহান আল্লাহ তাআলার সাথে সৎ স্বভাব এর মানে হচ্ছে মহান আল্লাহ তাআলার নাজিলকৃত বিধানে রাজি থাকবে। উনার কোনো কাজেই সে অভিযোগ করবে না। উনার সকল আদেশ নিষেধ অবনত মস্তকে মেনে নিবে।

২) সৃষ্টির সাথে সদ্ব্যবহারের মানে হচ্ছে সৃষ্টির প্রতি মহান আল্লাহ পাক যে দায়িত্বভার দিয়েছেন তা মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে অবশ্যই পালন করবে এবং নিঃস্বার্থ ভাবেই তা আদায় করবে।

৩) তৃতীয়তঃ শয়তান ও কু প্রবিত্তির আনুগত্য না করা।

আর হজরত জুনায়েদ বোগদাদী রহমাতুল্লাহী আলাইহি বলেন, সূফীদের ৮টি নিদর্শন রয়েছেঃ

যথাক্রমেঃ সাখাওয়াত, রেজা, সবর, ইশারাত, গুরবাত, পশমি পোশাক, সিয়াহাত, এবং আল-ফাকর।

১) সাখাওয়াত(দানশীলতা): এর উদাহরণ হজরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম। তিনি উনার পুত্রের জীবন মহান আল্লাহ তাআলার পথে উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন বিনা চু চেরায়।

২) রেজা(মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি): এর উদাহরণ হজরত ঈসমাইল আলাইহিস সালাম। তিনি মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্য আত্মোৎসর্গ করেছিলেন বিনা চু চেরায়।

৩) সবর(ধৈর্য): এর নমুনা হচ্ছেন হজরত আইয়্যুব আলাইহিস সালাম। যিনি নিজের চোখের সামনে পরিবারের সকলকে ধ্বংস হয়ে যেতে দেখেও এবং নিজের সর্ব শরীর কীটে খেয়ে ফেলার পরও তিনি কোনো দিন অধৈর্য হোন নি।

৪) ইশারাত(ইঙ্গিত): এর উদাহরণ হচ্ছেন হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালাম। তিনি মহান আল্লাহ তাআলার নির্দেশ পালনার্থে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন এবং ইশারায় কাজ সম্পাদন করতেন।

৫) গুরবাত(অপরিচিত হওয়া): এর উদাহরণ হজরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম। তিনি মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্য নিজের দেশেও অপরিচিত ছিলেন।

৬) পশমী পোশাক পরিধানঃ হজরত মুসা আলাইহিস সালাম পশমী পোশাক ব্যবহার করতেন। তবে আমরা যেহেতু উম্মতে মুহম্মাদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাই আমাদের জন্য হুবুহু রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার পোশাক এর অনুরূপ পরা সুন্নত।

৭) সিয়াহাত(ভ্রমণ): এর উদাহরণ হজরত ঈসা আলাইহিস সালাম। তিনি একটি পান পাত্র আর একটি চিরুনি সাথে নিয়ে দ্বীনের জন্য বাড়ি ত্যাগ করেন। পথি মধ্যে একজন কে আঙ্গুল দিয়ে চুল বিন্যাস এবং অঞ্জলি ভরে পানি পান করতে দেখে পান পাত্র এবং চিরুনি ও ফেলে দিয়েছিলেন। অর্থাৎ নিজেকে সম্পুর্ন দুনিয়া বিমুখ করেছিলেন।

৮) আল-ফাকর(দরিদ্রতা): এর প্রকৃত উদাহরণ হুজুরে আকরাম, নবীয়ে মুহতারাম, সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালিন, খতামান্নাবীঈন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম। যিনি সমস্ত কায়েনাতের খাজানার অফার পেয়েও সাধারণ জীবনযাপন করেছেন। যাকে সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের জীবনযাপন করার জন্য মহান আল্লাহ তাআলার কায়েনাতের সকল সম্পদের চাবি উনার হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু এক দিন পেট ভরে খাওয়া এবং দুই দিন অনাহারে থাকাকেই তিনি অধিক পছন্দ করলেন। আবার তিনি মহান আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করলেনঃ হে মহান আল্লাহ! পাক আপনি আমাকে দরিদ্র অবস্থায় জীবিত রাখুন, দরিদ্র অবস্থায় বিছাল (অফাৎ) শরীফ লাভ করার তৌফিক দান করুন এবং দরিদ্রদের সাথে হাশর এর ব্যবস্থা করুন।

অনেকের নিকট আজ কাল তাসাউফ একটি নাম মাত্র, অনেক মূর্খের ধারনা এর পক্ষে কোনো যাথার্থ্য যুক্তি প্রমান নেই। কিন্ত হাক্বিকত হচ্ছে সাহাবায়ে কেরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম আজমাঈন ও তাবেঈ-তবে তাবেঈন রহমতুল্লাহি আলাইহিমদের আমলে এর উপস্থিতি প্রত্যেক মুহূর্তেই বিদ্যমান ছিলো। নিঃসন্দেহে ঐ যুগে তাসাউফ নামে কিছু ছিলো না কিন্তু আসল বিষয় বস্তটা ঠিকিই বিদ্যমান ছিল। তাই যারা তাসাউফের বিরোধিতা করে তাদের জানা উচিৎ তোমরা যা বলো তা যদি বর্তমান অবস্থা দেখে বলো তাহলে আমরাও তার সমর্থক। তাসাউফকে অস্বীকার করার ব্যাপারে তোমাদের অভিমত যদি নাম নিয়ে হই তবে তা দোষনীয় নয়। কারন তার মুল বিষয় বস্ত যদি বিদ্যমান থাকে তাহলে নাম নিয়ে কোনো ঝগড়া বিবাদ বা গোঁড়ামির কিছুই নেই। কিন্তু যদি মূল বিষয়বস্তুকে অস্বিকার করো তাহলে স্মরন রেখো যে, তা দ্বারা কেবল শরীয়তকেই অস্বীকার করা হয় না বরং রসূলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লামের প্রশংসানীয় ফজিলত এবং সাহাবায়ে কেরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম আযমাঈনের প্রশংসনীয় গুণাবলীকেও অস্বীকার করা হয়ে থাকে। কারন এই জাতীয় অস্বীকার করার পর ধর্মের সব কিছুতেই রিয়াকারী দেখায়। ধর্মের মূল বিষয়বস্তু তো মহান আল্লাহ তা'আলার প্রতি আন্তরিকতা ও ভালোবাসার সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। একে অস্বিকার করলে ধর্মের কোথায় আর বল থাকলো? হাঁ এখন যদি তোমারা তাকে স্বীকার করো এবং তা যদি বিদ্যমান থাকে তাহলে আমরা তাকেই তাসাউফ বলবো। বাংলাদেশের কলাকে তুরস্কে "মুজ" বলে, একারণে এটার মূল অস্তিত্বের কোন পরিবর্তন ঘটেনা।

মুলত তাসাউফ কোনো নির্দিষ্ট আচার আচরণ বা বিদ্যার সনদ পত্রের নাম নয়। বরং সচ্চরিত্র ও সদ্ব গুনাবলির নামই সূফীবাদ। এছাড়াও কু প্রবৃত্তি, লোভ লালসার দাসত্ব থেকে মুক্ত থাকা; অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং পার্থিব লৌকিকতা থেকে দূরে থাকার নামই মূলত তাসাউফ। নিজের সম্পদ অসহায়দের মাঝে বিলিয়ে দেওয়া এবং দুনিয়াকে অন্যের হাতে ছেড়ে দেয়ার নামই হাক্বিকি সূফীজম। আর শরীয়ত এর নির্দেশ পালন করা এবং শিষ্টতা রক্ষা করার নামই সূফীবাদ। যে ব্যাক্তি প্রতিটি মুহূর্তে এর আদব বা শিষ্টতা মান্য করে চলে, সে মানুষের কাঙ্কিত স্থান লাভ করতে সক্ষম হয়। আর যে তা মেনে চলে না সে তার কাঙ্কিত স্থানে পৌঁছতে সক্ষম হয় না।

তথ্যসূত্রঃ কাশফুল মাহজুব। সৈয়দ আবুল হাসান আলী দাতা গঞ্জেবখশ হাজবেরী রহমাতুল্লাহী আলাইহি।

খ) ইসলামকে ধংস করার সবচেয়ে সফল কার্যক্রম ইহুদীরা চালায় ইসলামিক খিলাফত ধংস করার মাধ্যমে। খিলাফত হলো ইসলামের কল্ব, আর কল্বের মৃত্যু হলে দেহের ও পতন হয়।

ইহুদীরা ইসলামিক খিলাফতকে যে পরিমাণ ভয় পায় তা কোন দেশের পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যপারে ও পায় না। কোন দেশ যদি পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চায় ইসরায়েল আমেরিকা কোন অবস্থায় তার অনুমতি দিবেনা কিন্তু সেই দেশ না, দেশের বিভাগ ও না, জেলা ও না, উপজেলা ও না, থানা ও না, ইউনিয়ন ও না যদি একটি গ্রামে ও ইসলামিক খিলাফত কায়েম এর ঘোষণা দেওয়া হয় তাহলে তারা বলবে যে আমরা পারমানবিক এর অনুমতি দিলাম তোমাদের খিলাফত কায়েম করা লাগবেনা।

এই ইসলামিক খিলাফতই বৃটিশরা তাদের ইহুদী গোয়েন্দা হ্যম্পার কে দিয়ে আব্দুল ওয়াহাব নজদি লানতুল্লাহ দ্বারা ধংস করে ইসলামিক দুনিয়া কে টুকরা টুকরা করে গনতন্ত্র আর রাজতন্ত্রের রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম করে। আফসোস লাগে মুসলিম দাবি করেও যখন মানুষ এইসব স্পষ্ট বিষয় বুঝতে অক্ষম হয়। শুধু এতেই ক্ষান্ত নয়। জমিন থেকে ইসলামিক খিলাফত ধংস করে দিলেও মানুষের অন্তরে থাকা ইসলামিক খিলাফত সৃষ্টির একমাত্র হাতিয়ার জিহাদের চেতনাকে একেবারে নির্মূল করে দিতে দিন রাত প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে, কারন মানুষের অন্তরে যদি জ্বিহাদের যজবা বিদ্যমান থাকে তাহলে ইসলামিক খিলাফত কায়েম হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে আর ইসলামিক খিলাফত কায়েম হয়ে যাওয়া মানেই ইসরায়েল আমেরিকায় বসে ইউঘুর, ফিলিস্থিন, ইরাক, ইরান, সিরিয়া, লিভিয়া, লেবানন, আফগান, কাশ্মীরে মুসলিম নির্যাতন সম্ভব না, সাথে এদেরই ভাই আলে সৌদের হাত থেকে পবিত্র ভূমী হাক্বিকি মুসলিমদের হাতে চলে আসবে যারা বিগত ১৩০০ বছর এর দায়িত্বে ছিলেন।

জিহাদ ও বর্তমান মুসলমানের অবস্থাঃ যে মুসলমানদের অনলাইনেও কোন রেগুলার একটিভ মুজাহিদ বাহিনী বিদ্যমান নাই সেই মুসলমানদের অফলাইনে মুজাহিদ বাহিনী বিদ্যমান, সহিহ দ্বীনের জন্য ইহুদীদের হাতের বাহিরে গিয়ে জিহাদ করছে এটা আমাকে বিশ্বাস করতে বলেন?

মুসলমানদের তো একজন পাক্কা হ্যাকার ও নাই, যার একটি হুংকারে পেন্টাগন এর মাথা খারাপ হয়ে যেত, ক্রাম্লিনের সিস্টেম ব্রেক হয়ে মিসাইল চলে যেত ইসরায়েলের ভুমিতে, ইস্রায়েলের নিউক্লিয়ার যেত আমেরিকায়।

মুসলমানদের আছে ফতোয়াবাজ, গলাবাজ, টাকার বিনিময়ে লেক্সাস পাজারো আর হেলিকপ্টার চড়া এক ঘন্টার ওয়াজী মুল্লা, বিদেশে দামি হোটেলে, দামি বিছানা আর সোফায় বসে জিহাদ মানেই সন্ত্রাসবাদ ফতোয়া দেনে ওয়ালা, জিহাদ মানে যুদ্ধ নয় বরং নফসের ধোঁকা থেকে বাঁচা বলে মানুষকে ফতোয়া দেনে ওয়ালা দরবারী মুফতী-মুহাদ্দিস নামের উলামায়ে ছু'রা।

অথচ প্রকৃতপক্ষে জিহাদ হচ্ছেন ইসলামী শরীয়তের সর্বোচ্চ, সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

জিহাদ সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফ-এ আমার জানায় ৪১১ আয়াত ও ছহীহ হাদীছ শরীফ-এ ২০০ এর অধিক হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে। ফিক্বাহের নির্ভরযোগ্য কিতাবসমূহেও জিহাদের গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত, হুকুম-আহকাম বিস্তারিতভাবে বর্ণিত রয়েছে। নির্ভরযোগ্য সিরাত গ্রস্থসমূহে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম উনার প্রতিটি জিহাদ মুবারক-এর বর্ণনা সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত রয়েছে।

অথচ এ জিহাদ সম্পর্কে আজ খোদ মুসলমানদের মধ্যেই রয়েছে নানা প্রকার বিভ্রান্তি। বিশেষ করে কাফির-মুশরিকগুলো এ পবিত্র জিহাদকে সন্ত্রাসবাদ বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! উদ্দেশ্য হচ্ছে, মুসলমানদের অন্তর থেকে জিহাদের গুরুত্ব তুলে দেয়া।

মূলত ইসলামী জিহাদ আর টেররিজম তথা সন্ত্রাসবাদ কখনোই এক বিষয় নয়। বরং সম্পূর্ণ আলাদা দুটি বিষয়। কারণ, ইসলামী জিহাদ হচ্ছে ক্ষেত্র বিশেষে ফরযে কিফায়া। আবার ক্ষেত্র বিশেষে ফরযে আইন। আর টেররিজম তথা সন্ত্রাসবাদ ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম। তাই মুসলমান যাতে ইসলামী জিহাদের গুরুত্ব ও আহকাম সম্পর্কে জানতে পারে, পাশাপাশি টেররিজম তথা সন্ত্রাসবাদের কুফল সম্পর্কে জেনে টেররিজম তথা সন্ত্রাসবাদ সমূলে উৎখাত করতে পারে সে লক্ষ্যেই এ লেখা আপনাদের সম্মুখে হাজির করা হয়েছে।

জিহাদের শাব্দিক ও শরয়ী অর্থ কি?

জিহাদ আরবী জাহদুন বা জুহদুন শব্দমূল হতে নির্গত। এর শাব্দিক অর্থ হলো চেষ্টা, প্রাণান্ত প্রচেষ্টা, সশস্ত্র লড়াই, মুসলমানদের দ্বীনীযুদ্ধ। সমস্ত ফিকাহবিদ উনাদের মতে, শরীয়তের পরিভাষায় জিহাদ বলা হয় মহান আল্লাহ তা'আলার রাস্তায় সশস্ত্র যুদ্ধ এবং উনার জন্য সর্বপ্রকার সাহায্য-সহযোগিতা করার নাম জিহাদ।

আমাদের হানাফী মাযহাব মতে জিহাদের সংজ্ঞা হলো- মহান আল্লাহ তাআলার রাস্তায় সশস্ত্র যুদ্ধে স্বীয় জান, মাল, যবান এবং অন্যান্য জিনিস দ্বারা প্রাণান্ত প্রচেষ্টা চালানো। (বাদায়িউছ ছানায়ে)

ফিক্বাহের বিখ্যাত কিতাব ফতহুল ক্বাদীর-এ উল্লেখ আছে, জিহাদের অর্থ কাফিরদেরকে দ্বীনে হক্ব বা ইসলামের দিকে দাওয়াত দেয়া এবং তা যদি তারা গ্রহণ না করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করা।

মালিকী মাযহাব মতে জিহাদের সংজ্ঞা হলো- জিহাদের অর্থ মুসলমানদেরকে যালিম কাফিরদের বিরুদ্ধে ইসলামের ঝান্ডা বুলন্দ করার উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করা। (শরহুছ ছগীর)

শাফিয়ী মাযহাব মতে জিহাদের সংজ্ঞা হলো-শরীয়তের দৃষ্টিতে জিহাদের অর্থ কাফিরদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে নিজের সমস্ত শক্তি ব্যয় করা। (ফতহুল বারী)

হাম্বলী মাযহাব মতে জিহাদের সংজ্ঞা হলো- কাফিরদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করা। (মাতালিবে আদলাননুহা)

জিহাদ কত প্রকার?

কাফিরের বিরুদ্ধে জিহাদ দুই প্রকার। যথাঃ

১) ইক্বদামী বা আক্রমণাত্মক জিহাদ।
২) দিফায়ী বা প্রতিরোধ ও প্রতিরক্ষামূলক জিহাদ।

ইক্বদামী বা আক্রমণাত্মক জিহাদ হলো, কাফিরদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের নিজ উদ্যোগে যুদ্ধ করা। আর এটা যদি হয় ওই সমস্ত কাফিরদের বিরুদ্ধে, যাদের কাছে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছেছে, তাহলে আক্রমণের পূর্বে তাদেরকে সরাসরি দাওয়াত দেয়া মুস্তাহাব। আর যদি দাওয়াত না পৌঁছে থাকে, তাহলে প্রথমে দাওয়াত দেয়া হবে। যদি গ্রহণ না করে, তাহলে জিযিয়া চাওয়া হবে। যদি জিযিয়া দিতে অস্বীকার করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করা হবে।

ইক্বদামী জিহাদ বা আক্রমণাত্মক যুদ্ধের তাৎপর্য হলো, যে সকল কুফরী শক্তি মুসলমানদের বিরুদ্ধে আক্রমণের চিন্তা রাখে, তাদেরকে ভীতসন্ত্রস্ত রাখা ও তাদের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে বাঁধা প্রদান করা এবং ইসলামের দাওয়াত পৃথিবীর প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছিয়ে দেয়া ও দাওয়াতের রাস্তা থেকে সব ধরনের বাঁধা দূর করা। উল্লেখ্য, ইক্বদামী জিহাদ করা ফরযে কিফায়ার অন্তর্ভুক্ত।

ফরযে কিফায়ার অর্থ হলো, যদি কিছু সংখ্যক মুসলমান ওই ফরযকে আদায় করে, তাহলে সকলের পক্ষ হতে তা আদায় হয়ে যায়। আর যদি কেউ আদায় না করে, তাহলে সকলেই গুনাহগার হয়।

তবে জিহাদের ক্ষেত্রে কিফায়ার অর্থ হলো, এই পরিমাণ মুসলমান ঐ ফরযকে আদায় করবে, যাতে ইসলামের পতাকা সমুন্নত থাকে। অন্যথায় সকলেই গুনাহগার হবে।

স্মর্তব্য যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম উনার মুবারক যামানার অধিকাংশ জিহাদ ছিলো ইক্বদামী। কুরআন শরীফেও মহান আল্লাহ পাক তিনি মুসলমানদেরকে ইক্বদামী জিহাদের প্রতি উৎসাহিত করেছেন এবং এতে কোন সন্দেহ নেই যে, যদি ইক্বদামী জিহাদ জারী থাকে, তাহলে দিফায়ী জিহাদের প্রয়োজনই হবে না। কিন্তু যখন মুসলমান ইক্বদামী জিহাদের ফরয পালনে গাফলতী করে, তখন তাদের দিফায়ী বা প্রতিরক্ষামূলক জিহাদে বাধ্য হতে হয়। যেমনটি এ যুগে হচ্ছে।

আর দিফায়ী বা প্রতিরক্ষামূলক জিহাদ হলো- স্বদেশের উপর আক্রমণকারী কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধ করা। এটা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি ফরয বিধান।

কোন কোন অবস্থায় জিহাদ ফরযে আইন হয়?

১) যখন কুফরী শক্তি মুসলমানদের কোনো শহর, জনপদ বা কোনো গ্রামের উপর আক্রমণ করে বা দখল করে নেয়।
২) যখন কুফরী শক্তি মুসলমানদের কিছু সংখ্যক লোককেও গ্রেফতার করে নেয়।
৩) একজন মুসলমান নারীও যদি কাফিরদের হাতে গ্রেফতার হয়ে যায়, তাহলে ওই মুসলমান নারীকে কাফিরদের হাত থেকে উদ্ধার করার জন্য জিহাদ করা পর্যায়ক্রমে পৃথিবীর সকল মুসলমানের উপর ফরয হয়ে যায়।
৪) যখন ইমাম বা আমীরুল মুমিনীন সমস্ত দেশবাসী বা কিছুসংখ্যক ব্যক্তিকে জিহাদের জন্য বের করেন।
৫) যখন মুসলমান ও কাফির পরস্পর মুখোমুখি হয়ে যায় এবং জিহাদ শুরু হয়ে যায় তখন জিহাদ ফরযে আইন হয়ে যায়।

জিহাদ ফরযে আইন হওয়ার অর্থ হলো- ওই জিহাদে সকলেই অংশগ্রহণ করবে। এমনকি ছেলে- মাতা-পিতার অনুমতি ব্যতীত, স্বামী-স্ত্রীর অনুমতি ব্যতীত, ঋণী-পাওনাদারের অনুমতি ব্যতীত জিহাদে অংশগ্রহণ করবে এবং গোলাম- মালিকের অনুমতি ব্যতীত জিহাদে অংশগ্রহণ করবে। অর্থাৎ প্রথমত ওই এলাকার মুসলমানদের উপর জিহাদ ফরয হয়, যাদের উপর আক্রমণ করা হয়। যদি তারা কাফিরদের আক্রমণ প্রতিহত করতে অক্ষম হয়। কিংবা অলসতা করে। তবে তাদের পার্শ্ববর্তী এলাকার মুসলমানদের উপর জিহাদ ফরয হয়ে যায়। আর তারাও যদি যথেষ্ট না হয় বা শিথিলতা প্রদর্শন করে, তাহলে তাদের পার্শ্ববর্তী এলাকার মুসলমানদের উপর জিহাদ ফরয হয়। এভাবে পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত সমগ্র মুসলিম জাতির উপর জিহাদ ফরযে আইন হয়ে যায়। অর্থাৎ প্রথমত পুরুষরা জিহাদে অংশগ্রহণ করবে। যদি শুধুমাত্র পুরুষদের পক্ষে কাফিরদেরকে প্রতিরোধ করা সম্ভব না হয় তখন প্রয়োজনে মহিলারাও জিহাদে অংশগ্রহণ করবে।

জিহাদ অস্বীকারকারীদের ব্যাপারে শরীয়তের ফায়সালাঃ যে ব্যক্তি জিহাদকে অস্বীকার করে কিংবা জিহাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, তার শরয়ী ফায়ছালা সম্পর্কে ফতহুল ক্বাদীর কিতাবের ৫ম খন্ডের, ১৯১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, হযরত ইমাম সারাখসী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, জিহাদ মহান আল্লাহ তাআলার একটি মুহকাম বা অকাট্য ফরয বিধান, যা অবশ্য পালনীয়। জিহাদকে অস্বীকারকারী এবং জিহাদের সাথে বিদ্বেষ পোষণকারী কাফির।

আল কুরআনে জিহাদের বর্ণনাঃ মহান আল্লাহ পাক তিনি মুসলমানগণের ওপর জিহাদের হুকুম ২য় হিজরী সনের ১২ই সফর অবতীর্ণ করেন। সর্বপ্রথম জিহাদের হুকুম প্রদানকারী আয়াত শরীফখানা হচ্ছে, সূরা হজ্জ-এর ৩৯ নম্বর আয়াত শরীফ। আল কুরআনে মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রায় ৪১১টি আয়াত শরীফ-এর মধ্যে জিহাদের কথা স্পষ্ট অস্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেছেন। যার কারণে মুহাক্কিক্বীনগণদের অভিমত হলো, জিহাদ সম্পর্কে কুরআন শরীফে যতটুকু স্পষ্ট ও বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে, অন্য কোন আমলের ক্ষেত্রে ততটুকু বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়নি।

যারা জিহাদের প্রতি বিদ্বেষ রাখেনা, আঞ্জাম ও দেয়না তাদের জন্যেও প্রকৃত ঈমানদার হওয়া অসম্ভব, এই ব্যপারে আল্লাহ পাক স্পষ্ট করেই বলেছেন। মহান আল্লাহ বলেনঃ (إِنَّمَا ٱلْمُؤْمِنُونَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا۟ وَجَٰهَدُوا۟ بِأَمْوَٰلِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ ۚ أُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلصَّٰدِقُونَ) প্রকৃত মুমিন তারাই যারা মহান আল্লাহ পাক ও রসুল ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ঈমান আনার পর আর সন্দেহে পড়ে না এবং তারা জান ও মাল দিয়ে মহান আল্লাহ তাআলার পথে জিহাদ করে। (সূরা হুজরাত ৪৯:১৫)

এর কারন হচ্ছেঃ (إِنَّ اللَّهَ اشْتَرٰى مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنفُسَهُمْ وَأَمْوٰلَهُم بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ۚ يُقٰتِلُونَ فِى سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ ۖ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِى التَّوْرٰىةِ وَالْإِنجِيلِ وَالْقُرْءَانِ ۚ وَمَنْ أَوْفٰى بِعَهْدِهِۦ مِنَ اللَّهِ ۚ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِى بَايَعْتُم بِهِۦ ۚ وَذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ) মহান আল্লাহ তাআলা তো মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও সম্পদ কিনে নিয়েছেন। এর মূল্য হিসেবে (পরকালে) তাদের জন্য জান্নাত রয়েছে (অর্থাৎ মহান আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে পরকালে জান্নাত লাভের প্রতিশ্রুতি পেয়ে মুমিনরা তাদের জানমাল বিসর্জন দিচ্ছে)। তারা মহান আল্লাহ তাআলার পথে যুদ্ধ করছে এবং (শত্রুকে) হত্যা করছে ও (নিজেরা) শহিদ হচ্ছে। এটা তাওরাত শরীফ, ইনজীল শরীফ ও কোরআন শরীফেও (বর্ণিত রয়েছে) মহান আল্লাহ তাআলার ওয়াদা (যে) সত্য। আর মহান আল্লাহ তা'আলার চেয়ে বড় ওয়াদা পূরণকারী কে আছে? অতএব, তোমরা যে বিক্রয় সম্পন্ন করেছো তাতে সন্তুষ্ট থাক। আর ওটাই বড় সাফল্য। (সূরা তাওবাহ ৯/১১২) আর যারা প্রকৃতপক্ষে মুমিন, তাদের মূল বৈশিষ্ট্যগুলো বর্ননা করে মহান আল্লাহ পাক এর পরের আয়াতেই বলেছেনঃ (ٱلتَّٰٓئِبُونَ ٱلْعَٰبِدُونَ ٱلْحَٰمِدُونَ ٱلسَّٰٓئِحُونَ ٱلرَّٰكِعُونَ ٱلسَّٰجِدُونَ ٱلْءَامِرُونَ بِٱلْمَعْرُوفِ وَٱلنَّاهُونَ عَنِ ٱلْمُنكَرِ وَٱلْحَٰفِظُونَ لِحُدُودِ ٱللَّهِ ۗ وَبَشِّرِ ٱلْمُؤْمِنِينَ) তারা তওবাকারী, ইবাদতকারী, শোকরগোযার, (দুনিয়ার সাথে) সম্পর্কচ্ছেদকারী, রুকু ও সিজদা আদায়কারী, সৎকাজের আদেশ দানকারী ও মন্দ কাজ থেকে নিবৃতকারী এবং মহান আল্লাহ তাআলার দেওয়া সীমাসমূহের হেফাযতকারী। বস্তুতঃ সুসংবাদ দিন ঈমানদারদেরকে। (সূরা তাওবাহ ৯/১১২)

আপনি আমি কি টিকবো? জান ও মালের কি সেক্রিফাইস করার মতো কলিজা আমাদের আছে? অনেকেই তো আহালকেই সেক্রিফাইস করতে পারেনা দ্বীনদার সতীনের কাছে। জান মাল তো অনেক পরের ব্যপার। কিন্তু এই জান মাল ঘর বাড়ির প্রতি থাকা মুহব্বত যদি জিহাদ ফরজ থাকা অবস্থায় জিহাদের থেকে দূরে সরিয়ে রাখে তাহলে কিন্তু হেদায়েত পাওয়ার তো কোন সুযোগই নাই উল্টো এমন ফাসেকদের অন্তর্ভুক্ত হতে হবে যাদের ব্যপারে মহান আল্লাহ পাক ধমকী দিচ্ছেন আযাব আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করার। এই বিষয়ে বলতে গিয়ে মহান আল্লাহ পাক বলেনঃ (قُلْ إِنْ كَانَ آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُمْ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَجِهَادٍ فِي سَبِيلِهِ فَتَرَبَّصُوا حَتَّىٰ يَأْتِيَ اللَّهُ بِأَمْرِهِ ۗ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ) (হে আমার হাবিব ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আপনি তাদের বলে দিন, তোমরা যদিঃ

১) তোমাদের পিতা (মাতাও অন্তর্ভুক্ত)
২) তোমাদের ছেলে (মেয়েও অন্তর্ভুক্ত)
৩) তোমাদের ভাই (বোনও অন্তর্ভুক্ত)
৪) তোমাদের স্ত্রীগণ (মহিলাদের বেলায় স্বামী)
৫) তোমাদের বংশ-গোত্র, এবং
৬) তোমাদের ধন-সম্পদ যা তোমরা উপার্জন করেছ এবং
৭) ব্যবসা-বানিজ্য যা লোকসান হয়ে যাবে বলে তোমরা ভয় করো,
৮) তোমাদের বাড়ীঘরসমূহ, যা তোমরা পছন্দ করো।

যদি (এগুলো) তোমাদের কাছে মহান আল্লাহ পাক, রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম, এবং জিহাদ ফি সাবীলিল্লাহ তথা মহান আল্লাহ তাআলার রাস্তায় বাতিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার চাইতে বেশি প্রিয় হয়ে যায়, তাহলে তোমরা মহান আল্লাহ তা'আলার (পক্ষ থেকে উনার আযাবের) ঘোষণা আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করো, (আর জেনে রাখো) মহান আল্লাহ তাআলা কখনোই ফাসেক সম্প্রদায়কে হেদায়েত দান করেন না। (সূরা তওবা ৯/২৪)

এবার আপনি ফিকির করুন, আপনার জীবনে পবিত্র জিহাদের গুরুত্ব কতটুকু, জিহাদ বিমূখ নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত আর কলিমায় ভর দিয়ে আপনি কি ঈমান নিয়ে মরতে পারবেন। মহান আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে হক্ব বোঝার তৌফিক দিন। আমিন সুম্মা আমিন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুনঃ

এডমিন

আমার লিখা এবং প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বে আইনি।

0 ফেইসবুক: