Tuesday, November 15, 2022

মুসলমান এখন এন্টি নাস্তিক ট্রেন্ড নামক ইহুদীবাদি খপ্পরে পড়েছে

একজন ইহুদি রাবাই, একজন খ্রিষ্টান ফাদার, একজন সমকামি নাস্তিক একসাথে বসে বিড়ি টানছে।
সম্মানিত দ্বিন ইসলামকে স্বমূলে ধংস করার যে প্রয়াস আর প্রচেষ্টায় লিপ্ত ইহুদিরা, তা সফল করার পেছনে বিরাট অবদান এইসব নাস্তিক এবং এন্টি নাস্তিক লেখকের (সবাই নয়)।

এই দুটি গ্রুপ-ই মূলত ইহুদীদের সৃষ্টি, এরা উভয় গ্রুপকেই পর্দার আড়াল থেকে নিয়ন্ত্রণ করে মুসলমানদের ঈমানদার থেকে ঈমানহীন মোডারেট মুসলিম বানানোর মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে। উদ্যেশ্য, মুসলমান যেনো তাদের মূল কাজ কি এবং তাদের মূল শত্রু কারা তা তারা ভূলে যায়।

রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বা খোলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম বা সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম আযমাঈন বা তাবেঈ - তবে তাবেঈন রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা এমনকি ইমাম মুস্তাহিদ, সূফী আউলিয়া, মুজাহিদে মিল্লাত রহমতুল্লাহি আলাইহিমগন উনাদের কেউই কিন্তু উনাদের জীবন যৌবন কেবল নাস্তিকদের বিরুদ্ধে কিতাবের পর কিতাব লিখে নাস্তিকরাই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুষমন বলে শিখিয়ে যান নি, উনারা মুসলমানদের হাতে তসবির গোটা ধরিয়ে মসজিদে সকাল বিকাল পাচ ওয়াক্ত হাজিরা দিয়ে নাস্তিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা ফরজ শিখান নি বরং মুসলমানদের মূল শত্রু “ইহুদী, মুশরিক, নাসারা” আর মূল কাজ এদের বিরুদ্ধে কেয়ামত পর্যন্ত জিহাদ করা ফরজ শিখিয়ে গিয়েছেন।

আমার জানামতে পবিত্র আল কুরানের এমন কোন আয়াত শরীফ নাযিল হয়নি যেখানে মহান আল্লাহ পাক মুসলমানদের চিরশত্রু “ইহুদী, মুশরিক, নাসারা” কে রেখে গুটি কয়েক নাস্তিকদের বিরুদ্ধেই কেবল সোচ্চার হতে বলেছেন। (কারো জানা থাকলে পেশ করেন)। তাহলে আজকে কেনো তাঁরা “ইহুদী, মুশরিক, নাসারা’র ব্যপারে এক লাইন লিখে না? কেবল গুটি কয়েক নাস্তিকদের বিরুদ্ধে লিখে যুব সমাজকে তাদের মূল চেতনা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়?

গ্রামে গঞ্জে এমনকি অজো পাড়া গাঁয়ে এমন একজন মুসলিমকে পাওয়া যাবেনা যাকে কোন নাস্তিক গুমরাহ করতে পারবে, আমার নিজের দেখা; আমার এলাকার এক লোক (পাহাড়ে কাজ করে, যে ভালো করে সূরা ফাতেহা শরীফ পড়তে পারেনা) সম পর্যায়ের আরেক লোককে একদিন বলছে তুই তো বেটা দিন দিন নাস্তিক হয়ে যাচ্ছিস, ধর্ম কর্ম করস না, অথচ এই লোক কে সহিহ আক্বিদার কিছু যুবক এমন সব কুফুরি আক্বিদা শিখিয়েছে যে এখন সে মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের মতো, উনার হাত পাও চোখ আছে বলে বিশ্বাস করে, মসজিদ মাদরাসায় যিকির দুরুদের মাহফিলকে বিদআত বলে নাউযুবিল্লাহ!!!

মূলত ইহুদীরা খুব সুক্ষভাবে আপনার আমার অজান্তে আমাদেরকে মুরতাদ বানিয়ে দেবে অথচ আপনি নিজেকে অলি আল্লাহ ছাড়া কিছুই ভাব্বেন না। মানুষকে নাস্তিক বানানো সোজা নয় বরং অনেক কঠিন কাজ কিন্তু ইহুদীরা মুসলমানদের সূরতে থাকা ইহুদিবাদি মোডারেট শায়খ দিয়ে কুফুরি আক্বিদা শিখীয়ে মানুষকে খুব সহজেই মুরতাদ বানিয়ে দিতে পারে যা প্রকৃত আলেম উলামার, শায়েখ, মুর্শিদ (ভন্ড পিরদের নয়) সহবত বিহীন যুব সমাজের পক্ষে বোঝা অনেক কঠিন।

আচ্ছা বলুনতো আপনারা কখনো দুনিয়ার কোন নাস্তিককে ইহুদী, মুশরিক, খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে বইয়ের পর বই লিখতে দেখেছেন?

না খুজেও পাবেন না এরকম রেয়ার বিষয়, কারন এই গুটি কয়েক নাস্তিক মূলত ইহুদীদের টাকায় ইসলাম বিরোধী লিখা অনলাইনে লিখে থাকে আর বিপরীত দিকে তাদের প্রতিহত করার নামে কেবলই নাস্তিক বিরোধী বই-ই কতিপয় মোডারেট মুসলিম নামধারী লেখক লিখে থাকে আর মানুষকে বোঝাতে চায় নাস্তিক ব্যতীত মুসলমানদের আর কোন শত্রু নাই, অমুসলিমরা আমাদের বন্ধু। এগুলো সবই ইহুদীদের মুসলিম ও ইসলাম বিদ্বেষী প্লানের অংশ, তাঁরা এই দুই ক্যাটাগরির মানুষ দিয়ে এই কাজ করায়, মূলত মানুষ যেনো গুটি কয়েক নাস্তিক ব্যতীত “ইহুদী, মুশরিক, নাসারা”দের শত্রু না ভাবে, বিদ্বেষ পোষন না করে তাহলেই কেবল মুসলমানদের মধ্যে কোন সালাহউদ্দিন বিন আইয়্যুবি রহমতুল্লাহি আলাইহি’র আর জন্ম হবেনা যিনি মানুষকে শিখাবেন “ইহুদী, মুশরিক, নাসারা”র বিরুদ্ধে জিহাদ করা সবচেয়ে বড় ফরয এবং অনায়াসে ফিলিস্থিন, সিরিয়া, কাশ্মীর, উইগুর ও রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত জ্বিহাদ করা যাবে। কিন্তু মুসলমানদের সময় কই? তাঁরা তো “ইহুদী, মুশরিক, নাসারা” নয় বরং গুটি কয়েক নাস্তিক নিয়েই ব্যস্ত।

আপনাদের সাথে একটি ঘটনা শেয়ার করলে ব্যপারটা আরো ক্লিয়ার হবেঃ

আবদুল্লাহ আল-কাসিমি নামে এক লোক ছিল, জন্ম সৌদিতে, কিন্তু একপর্যায় সে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে মিসর চলে যায়। বেঁচে ছিল ১৯০৭ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত। গত শতাব্দির প্রথমভাগে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও আব্দুল ওয়াহাব নজদি লানতুল্লার সমর্থনে এবং বিভিন্ন ভ্রান্ত ফিরকাহ ও নাস্তিক্যবাদ ইত্যাদির বিরুদ্ধে আল-কাসিমি অনেকগুলো বই লিখেছিল। তার গভীর জ্ঞান ও ইসলামের খেদমতে অবদানের প্রশংসা করে আবদুয যাহির আবু সামহ (হারাম শরিফের একজন ইমাম; ইন্তিকাল ১৯৫২) একটি কবিতাও লিখেছিল। এ থেকেই অনুমেয় যে সে কত বিখ্যাত ছিল সেসময়। আপনি যদি তার বইগুলো পড়েন তাহলে দেখবেন সেগুলোতে অত্যন্ত সুন্দরভাবে সে নাস্তিকদের কুযুক্তি মূলক কথা বার্তার খণ্ডন করেছে। আপনারা যদি তার বইগুলো পড়েন কিংবা তার সময়ে যদি আজকের মতো অডিও ভিডিও রেকর্ডার বা ইউটিউব ভিডিও লেকচার থাকত, তাহলে আপনি মনে করতেন পূর্ববর্তী নেককারদের পথের ওপর থাকা ইমামদের মধ্যে সেই হলো অগ্রগণ্য। আপাতভাবে তার ব্যাপারে এমনটাই মনে হবে। কিন্তু আসলেই কি তাই?

না বরং এই আবদুল্লাহ আল-কাসিমিই একসময় ঘোরতর নাস্তিক বলে অত্বপ্রকাশ করে। প্রকৃতপক্ষে সে ছিল এমন একজন লোক যার বাহ্যিক আমলের সাথে তার অন্তরের অবস্থা মিলত না। আজকে যাদের দেখছেন এমন অনেক মূর্খের ব্যাপারটাও একই রকম। এদের অবস্থা আল-কাসিমির মতো এত গুরুতর না হলেও মৌলিকভাবে এক। ১০-১৫ বছর আগেও যারা পবিত্র কুর'আন সুন্নাহর আলোকে কথা বলত, তারা আজ ইহুদীদের শেখানো বুলি আওড়াচ্ছে। ধর্মীয় বিশ্লেষক বনে গেছে।

আল-কাসিমি, যে একসময় কলম হাতে তাওহিদের পক্ষে লড়াই করত, সে-ই ঘোরতর নাস্তিকে পরিণত হয়েছিল। তার ঘনিষ্ট এক বন্ধুর কাছ থেকে জানা যায়, ‘আকিদাহ ও তাওহিদের পক্ষ নিয়ে বই লেখার সময়েই সে তার বন্ধুদের সাথে রাতের খাবার খেতে বসে রাসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও মহান আল্লাহ তা’য়ালা উনাকে নিয়ে সে এমন সব প্রশ্ন তুলত, যা থেকে সংশয় ও সন্দেহ প্রকাশ পেত। আবার দিনের বেলায় আমি তাকে দেখতাম সহিহ মুসলিমের দ্বরস দিতে!'

আজ অনেকের ক্ষেত্রে এটিই দেখা যায়। অন্তরে শয়তানের ওয়াসওয়াসা এমন এক পর্যায় চলে যায় যে, ব্যক্তি মহান আল্লাহ তা’য়ালা উনার অস্তিত্বের ব্যাপারে সন্দিহান হয়ে পড়ে। (উনার হুকুম আহকামের বাস্তবতা এবং যৌক্তিকতা খুঁজতে গিয়েও অনেকে সন্দিহান হয়ে পড়ে)। অপরদিকে মুমিন এমন থাকে যারা দৃঢ়তার সাথে শুবুহাত (সন্দেহ) দমন করতে পারে। আবার দেখা যায় অনেকে দৃঢ়তার সাথে প্রবৃত্তি মোকাবেলা করতে পারেন না। নারী, বাদ্যযন্ত্র এগুলো প্রবৃত্তির উদাহরণ।'

এবার বুঝে নিন আজকে যারা আপনাদের কেবল নাস্তিকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার বই গেলাচ্ছে অথচ কুরআন, হাদিসে বার বার বলার পরেও “ইহুদী, মুশরিক, নাসারা”র বিরুদ্ধে কিছু বলেনা লিখেনা, জিহাদ থেকে নিরুৎসাহিত করে তাঁরা মূলত ইহুদীদের দ্বারা পরিচালিত মডারেট মুসলিম মূলত এরা ইহুদীই। মহান আল্লাহ পাক আমাদের হেফাজত করুন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুনঃ

এডমিন

আমার লিখা এবং প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বে আইনি।

0 ফেইসবুক: