বাংলাদেশের সংবিধানের শুরুতে প্রস্তবনায় বলা আছেঃ- “আমরা অঙ্গীকার করিতেছি
যে, যেসকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয়
মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিলঃ-
জাতীয়তাবাদ,
সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ
এই সংবিধানের মূলনীতি হইবে”।
সংবিধানের শুরুতেই দাবি করা হচ্ছে- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতায় নাকি উব্ধুদ্ধ
হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন এবং শহীদ হন। অথচঃ- ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেনঃ- ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনীরা অতর্কিতভাবে পিলখানায়
ইপিআর ঘাঁটি,
রাজারবাগ পুলিশ লাইন
আক্রমণ করেছে এবং শহরের লোকদের হত্যা করেছে। ঢাকা,
চট্টগ্রামের রাস্তায়
রাস্তায় যুদ্ধ চলছে। আমি বিশ্বের জাতিসমূহের কাছে সাহায্যের আবেদন
করছি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সঙ্গে মাতৃভূমি
মুক্ত করার জন্য শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করছে। সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ পাক উনার নামে আপনাদের কাছে আমার আবেদন ও আদেশ দেশকে
স্বাধীন করার জন্য শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান। কোনো আপোস নাই, জয় আমাদের হবেই। আমাদের পবিত্র মাতৃভূমি
থেকে শেষ শত্রুকে বিতাড়িত করুন। সকল দেশপ্রেমিক ও স্বাধীনতাপ্রিয়
লোকদের এ সংবাদ পৌঁছে দিন। মহান আল্লাহ পাক আপনাদের মঙ্গল করুন। জয় বাংলা।’
পাঠক ! খেয়াল করুন-
শেখ মুজিব যদি সত্যিই স্বাধীনতার ঘোষক হোন এবং ২৬ মার্চের ঘোষণাই
যদি স্বাধীনতার ঘোষণা হয়, তবে
সেই ঘোষণায় তিনি স্পষ্টই বলে দিয়েছেনঃ- “সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ পাক উনার নামে আপনাদের
কাছে আমার আবেদন ও আদেশ দেশকে স্বাধীন করার জন্য শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ
চালিয়ে যান”। আবার শেষে গিয়ে তিনি বলছেনঃ- “মহান আল্লাহ পাক আপনাদের
মঙ্গল করুন”।
এই ঘোষণাপত্রে স্পষ্ট- মুক্তিযোদ্ধারা “মহান আল্লাহ পাক
উনার নামেই মুক্তিযুদ্ধে উব্ধুদ্ধ হয়েছিলেন এবং শহীদ হয়েছিলেন। এবং সেই মুক্তিযুদ্ধের ভরসাই ছিলোঃ- “মহান আল্লাহ পাক
তিনি আপনাদের মঙ্গল করুন”।
অথচ বর্তমানে সংবিধানের মধ্যে পুরো উল্টো লেখা, শুধু তাই নয়-মিথ্যাচারমূলক মূলনীতিকে অবলম্বন
করে আওয়ামী সরকার কয়েকবছর আগে সংবিধান থেকে মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসও
তুলে দেয়।
আরো উল্লেখ্য, এই সংবিধানের মূলনীতি ধর্মনিরপেক্ষতার অজুহাত দিয়ে আজকে মুসলমানদের
পায়ে ঠেলে হিন্দুদের ঘাড়ে তোলা হচ্ছে, যায়গায় যায়গায় মূর্তি বানানো হচ্ছে, বৈশাখী পূজা, মঙ্গলপূজা করানো হচ্ছে, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম তুলে দিতে রিট করা হচ্ছে। অথচ সেই সংবিধানের মূলনীতিতেই রয়েছে বর্তমানে যা করা হচ্ছে
তা গলদ ও প্রকাশ্য মিথ্যাচার, যেখানে
দ্বিমত করার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। তাই অবিলম্বে সংবিধানে
মূলনীতি সংশোধনের দাবি জানাচ্ছি এবং পুরনায়- “মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস”
অংশটি ফিরিয়ে আনার
দাবি জানাচ্ছি।
0 ফেইসবুক: