Thursday, June 23, 2022

পবিত্র ইয়াওমুল জুমু’আহ ২৩ শে জিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৩ হিজরির বয়ান।

أَعُوْذُ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّيْطٰانِ الرَّجِيْمِ - بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

رَبِّ اشْرَحْ لِى صَدْرِى وَيَسِّرْ لِىٓ أَمْرِى وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِّن لِّسَانِى يَفْقَهُوا قَوْلِى

سُبْحَانَ اللہِ وَالْحَمْدُ لِلّٰہِ وَ لآ  اِلٰہَ اِلَّا اللہُ وَاللہُ اَکْبَرُ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّۃَ اِلَّا بِاللہِ الْعَلِیِّ الْعَظِیْمِ

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلَىٰ سَيِّدِنَا وَمَوْلَانَا مُحَمَّدٍ مَعْدَنِ الْجُوْدِ وَالْكَرَمِ وَ عَلَى آلِهٖ وَبَارِكْ وَسَلِّمْ

মসজিদে উপস্থিত সম্মানিত মুসল্লিয়ানে কেরাম সহ পর্দার অন্তরালে থাকা মা-বোনদের প্রতি (ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ) আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ

আজ পবিত্র ইয়াওমুল জুমুআহ শরীফের দিন, মুমিনদের সাপ্তাহিক ঈদের দিনআজ ১৬ই জিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৩ হিজরিগত সপ্তাহে আমরা বনু কুরায়জার ইহুদীদের মুনাফিকির বদলে দেওয়া শাস্তির আলোচনা করে শেষ করেছিলামআজকে এর পরের ঘটনা সম্মানিত সূলা হুদাইবিয়ার আলোচনা করবো ইনশা-আল্লাহ

মদীনা শরীফে হিজরতের ষষ্ঠ বছরে জিলক্বদ মাসে রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম একটি স্বপ্ন দেখেছিলেন যে, তিনি উনার বরকতময় সাহাবীদের নিয়ে মক্কা মুকাররমায় নিৰ্ভয়ে ও নির্বিঘ্নে প্রবেশ করছেন এবং ইহরামের কাজ সমাপ্ত করে কেউ কেউ নিয়মানুযায়ী মাথা মুণ্ডন করেছেন, কেউ কেউ চুল কাটিয়েছেন এবং তিনি বায়তুল্লাহ শরীফে প্রবেশও করেছেন, বায়তুল্লার চাবিও উনার হস্তগত হয়েছেঅধিকন্তু, উনারা আরাফাতের ময়দানেও অবস্থান করেছিলেন। (সীরাতে হালবিয়াহঃ খণ্ড ৩, পৃষ্টা ১৩ ইংরেজি)

সাধারণ মানুষের স্বপ্ন ৩ ভাগে বিভক্ত হলেওঃ নবীদের স্বপ্ন হলো ওয়াহী, মহান আল্লাহ পাঁক উনার নির্দেশ, হুকুম, আহকাম (বুখারী ৩০০)তাই, ৬ হিজরির পবিত্র জিলক্বদ শরীফ মাসে রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম উনার ১৪০০ খাস সাহাবীকে সঙ্গে নিয়ে পবিত্র ওমরাহ করার উদ্দেশ্যে মক্কা শরীফের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। (নাসাঈ ২৭৭৩) তখন উনাদের হুদায়বিয়াতে থাকতে হয়েছিলমক্কার মুশরিকরা উনাদেরকে উমরা করতে বাঁধা দিবে, এ আশঙ্কায় তাঁরা মক্কার তিন মাইল উত্তরে হুদায়বিয়ার শিবির স্থাপন করেনএরপর আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মক্কাবাসীদের সাথে সন্ধি হয়সন্ধির শর্তগুলো আপাতদৃষ্টিতে মুসলিমদের জন্য মেনে নেওয়ার মতো মনে না হলেও রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম শান্তির খাতিরে তা মেনে নিয়েছিলেনসন্ধির শর্তানুযায়ী উমরা না করেই উনারা মদিনা শরীফে প্রত্যাবর্তন করেনপথিমধ্যে আল কুরআনের ৪৮ নং সূরাহ ফাতাহর (اِنَّا فَتَحۡنَا لَکَ فَتۡحًا مُّبِیۡنًا) (হে আমার হাবীব ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিশ্চয়ই আমি আপনাকে সুস্পষ্ট বিজয় দান করেছি। (আল কুরআন ৪৮/১) নাযিল হয়অধিকাংশ তাফসীরকারের মতে এ সন্ধিকে মহান আল্লাহ তাআলা স্পষ্ট বিজয় বলে ঘোষণা করেছেনএতে বোঝা যাচ্ছে যে, কেবল জাহিরী বিজয়ই প্রকৃত বিজয় নয়বরং জাহিরের বিপরীত অবস্থাতেও অনেক বিজয় নিহিত থাকে কখনো কখনো যা অধিকাংশ মানুষ বুঝতে অক্ষম

হুদাইবিয়া মক্কা শরীফের বাইরে হারামের সীমানার সন্নিকটে অবস্থিত একটি স্থানের নামআজকাল এই স্থানটিকে সুমাইছী বলা হয়ঘটনাটি এই স্থানেই ঘটেআমরা আগেই জেনেছি যে নবী-রাসূলগণের স্বপ্ন ওয়াহী হয়ে থাকেতাই স্বপ্নটি যে বাস্তবরূপ লাভ করবে, তা নিশ্চিত ছিলেন রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার সাহাবায়ে কেরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমরাকিন্তু স্বপ্নে এই ঘটনার কোন সন, তারিখ বা মাস নির্দিষ্ট করা হয়নি মহান আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকেপ্রকৃতপক্ষে স্বপ্নটি মক্কা বিজয়ের সময় প্রতিফলিত হওয়াই যুক্তিযুক্ত ছিল বেশী, কিন্তু রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার সাহাবায়ে কেরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমদেরকে স্বপ্নের বৃত্তান্ত শুনালেন, তখন উনারা সবাই পরম আগ্রহের সাথে মক্কা শরীফে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিলেনসাহাবায়ে কেরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমদের প্রস্তুতি দেখে রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলাইহি ওয়া সাল্লামও কঠিন সংকল্প করে ফেললেনকেননা, স্বপ্নে কোন বিশেষ সাল অথবা মাস নির্দিষ্ট ছিল নাকাজেই এই মুহূর্তেই উদ্দেশ্য সিদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনাও ছিলকিন্তু মক্কার কাফেররা উনাকে মক্কা মুকাররমায় প্রবেশে বাধা দান করে

অতঃপর তারা এই শর্তে সন্ধি করতে সম্মত হয় যে, এ বছর তিনি মদীনা শরীফে ফিরে যাবেন এবং পরবর্তী বছর তিনি উমরা করতে আসবেনসাহাবায়ে কেরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের মধ্যে অনেকেই বিশেষত হযরত উমর ফারূক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এ ধরনের সন্ধি করতে অসম্মত ছিলেনকিন্তু রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই সন্ধিকে পরিণামে মুসলিমদের জন্যে সাফল্যের উপায় মনে করে গ্রহণ করে নেনরসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন উমরার এহরাম খুলে হুদাইবিয়া থেকে ফেরত রওয়ানা হলেন, তখন পথিমধ্যে ঐ পূর্ণ সূরাটি নাযিল হয় যেসব সাহাবীদের মন খারাপ ছিলো তাদের শান্তি দান করতেএতে বলা হয়েছে যে, রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্বপ্ন সত্য এবং অবশ্যই বাস্তবরূপ লাভ করবেকিন্তু তার সময় এখনও আসেনিপরে মক্কা বিজয়ের সময় এই স্বপ্ন বাস্তবরূপ লাভ করেএই সন্ধি প্রকৃতপক্ষে মক্কা বিজয়ের কারণ হয়েছিলতাই একে প্রকাশ্য বিজয় বলে ব্যক্ত করা হয়েছে

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও অপর কয়েকজন সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা বলেনঃ তোমরা মক্কা বিজয়কে বিজয় বলে থাক; অথচ আমরা হুদাইবিয়ার সন্ধিকেই বিজয় মনে করিজাবের রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ আমি হুদাইবিয়ার সন্ধিকে বিজয় মনে করিবারা ইবনে আযেব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ তোমরা মক্কা বিজয়কেই বিজয় মনে কর এবং নিঃসন্দেহ তা বিজয়ই; কিন্তু আমরা হুদাইবিয়ার ঘটনার বাইয়াতে রিদওয়ানকেই আসল বিজয় মনে করিএতে রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম একটি বৃক্ষের নীচে উপস্থিত চৌদ্দশত সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমদের কাছ থেকে জ্বিহাদের শপথ নিয়েছিলেন। (বুখারী শরীফ ৪২৮, মুসলিম শরীফ ৭৯৪)

বাইয়াতে রিদওয়ান ইসলামিক ইতিহাসে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়মুসলমানদের বিরুদ্ধে মক্কার কুরাইশদের শত্রুতা তখনো শেষ হয়নিতারা মুসলমানদের প্রতিরোধ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে রইলখুযায়া গোত্রের সর্দার বুদাইলের মাধ্যমে কুরাইশদের এই মনোভাবের কথা রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম জানতে পারলেনরসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বুদাইলের মাধ্যমে কুরাইশদের এই মর্মে সংবাদ দিলেন যে, মুসলমানরা কোনো যুদ্ধের জন্য নয়, বরং শান্তিপূর্ণভাবে কাবা শরীফে উমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেকিন্তু মুসলমানদের বাধা দেবার জন্য কুরাইশরা ছিল সংকল্পবদ্ধরসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম হুদায়বিয়া নামক স্থানে যাত্রাবিরতি করে উনার পাঠানো সংবাদের উত্তর জানার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেনকুরাইশদের মধ্যে কিছু বিজ্ঞ ব্যক্তি রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম-এর শান্তিপূর্ণ প্রস্তাব গ্রহণ করতে চাইলেনতারা জানতেন যে, রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামকে যদি উমরাহ পালন করতে দেয়া না হয় তাহলে এর ফলে যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারেতাছাড়া রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হলে মক্কার কুরাইশরা সিরিয়ার সাথে তাদের বাণিজ্য সম্পর্ক পুনঃচালু করতে পারবেকারণ মদিনার উপর দিয়ে যাওয়া এই বাণিজ্য পথটি মুসলমানদের দখলে রয়েছেঅতএব, কুরাইশরা তাদের মুখপাত্র হিসেবে উরওয়া ইবনে মাসউদকে রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এই সন্ধিচুক্তির শর্ত নির্ধারণের জন্য প্রেরণ করলোউরওয়া রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলোকিন্তু উভয় পক্ষের আলোচনাকালে রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসারীদের সম্পর্কে তার অপ্রীতিকর ও শত্রুভাবাপন্ন মনোভাবের কারণে চুক্তি সম্পন্ন সফল হননিতবে উরওয়া রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর সাহাবীদের প্রগাঢ় ভক্তি, ভালোবাসা ও আস্থা লক্ষ্য করে এবং মক্কায় ফিরে গিয়ে কুরাইশদের তা অবহিত করেরসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম দ্বিতীয়বার কুরাইশদের নিকট খিরাস ইবনে উমাইয়া নামক একজন দূতকে প্রেরণ করলেন, কিন্তু কুরাইশরা তার সাথে দুর্ব্যবহার করে এবং তার উটের পায়ের রগ কেটে দেয়কুরাইশরা রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে খুবই শত্রুতামূলক আচরণ করে তখনতারা মুসলমানদের হত্যা করার জন্য একটি ক্ষুদ্র দলকেও পাঠায়কুরাইশদের এ সমস্ত লোক আক্রমণ করতে এসে নিজেরাই মুসলমানদের হাতে বন্দী হয়কিন্তু রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম তাদের সবাইকে ক্ষমা করে দেন এবং মক্কার পবিত্র কাবা ঘরের আওতার মধ্যে রক্তপাত করতে নিষেধ করেনঅতপর রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম হজরত ওসমান ইবনে আফফান রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে শান্তির জন্য কুরাইশদের নিকট প্রেরণ করেনহজরত ওসমান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু মক্কায় পৌঁছলে কুরাইশরা উনাকে বন্দী করেমুসলিম শিবিরে এরূপ গুজব রটে যে, কুরাইশরা হজরত ওসমান ইবনে আফফান রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে হত্যা করেছেরসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম এই খবরে খুবই মর্মাহত হলেন, এবং মারাত্বক রেগে গেলেনপবিত্র কাবা শরীফের এলাকার মধ্যে পবিত্র মাসগুলীতে কোনো আরব গোত্র প্রধানকে হত্যা করা ইসলামপূর্ব জাহেলিয়াতের আরবদের জন্যেও জঘন্য অপরাধ বলে বিবেচিত হতোসেখানে হজরত ওসমান ইবনে আফফান রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে হত্যা কল্পনাই করা যায়না, তিনি ছিলেন মুসলিম মিল্লাতের মধ্যে সবচেয়ে দানবীর সাহাবী, ইসলামের রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের দুই নূরের টুকরা মেয়ের স্বামী

রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম খুবই কঠোর হয়ে উনার সাহাবীদের ডেকে নতুন করে শপথ নেয়ার জন্য বললেন যে, তাদের ধর্ম ও ঈমানের জন্য শেষ পর্যন্ত উনারাও যুদ্ধ করবেনএকটি গাছের নিচে এই শপথ নেয় হয়ইতিহাসে এই শপথকে বাইয়াতুর রিদ্বওয়ানবলা হয়পবিত্র আল কুরআনে এ সম্পর্কে বলা হয়েছেঃ (لَقَدۡ رَضِیَ اللّٰهُ عَنِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اِذۡ یُبَایِعُوۡنَکَ تَحۡتَ الشَّجَرَۃِ فَعَلِمَ مَا فِیۡ قُلُوۡبِهِمۡ فَاَنۡزَلَ السَّکِیۡنَۃَ عَلَیۡهِمۡ وَ اَثَابَهُمۡ فَتۡحًا قَرِیۡبًا) মহান আল্লাহ পাঁক মুমিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন যখন তারা (হুদাইবিয়ায়) গাছের তলে আপনার নিকট বায়আত বাইআত গ্রহণ করলমহান আল্লাহ তাআলা জানতেন তাদের অন্তরে কী আছে, এজন্য তিনি তাদের উপর প্রশান্তি অবতীর্ণ করলেন আর পুরস্কার হিসেবে তাদেরকে দিলেন নিকট আসন্ন বিজয়। (আল কুরআন ৪৮/১৮)

সকল সাহাবীর শপথ গ্রহণ শেষ হলে রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম উনার ডান হাত বাম হাতের উপর দিয়ে হজরত ওসমান রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর মৃত্যুর প্রতিশোধ গ্রহণ কল্পে নিজে শপথ নিলেনপরে অবশ্য হজরত ওসমান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু নিরাপদে মুসলিম শিবিরে ফিরে আসেনউনাকে কুরাইশরা অফার করে যে একা একা উমরা করতে চাইলে তারা উনাকে অনুমতি দিবে কিন্তু রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম ছাড়া উনি উমরা করবেন না বলে তাদের সাফ জানিয়ে দেন

জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, হুদাইবিয়ার দিনে আমাদের সংখ্যা ছিল চৌদ্দশত৷ রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন তোমরা ভূপৃষ্ঠের অধিবাসীদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। (বুখারী শরীফঃ ৩৮৩৯, মুসলিম শরীফঃ ৩৪৫৩) অন্য হাদীসে এসেছে, যারা এই বৃক্ষের নীচে শপথ করেছে, তাদের কেউ জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। (মুসলিম শরীফঃ ৪০৩৪) এছাড়াও এই চুক্তির আগের সাহাবয়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমদের মর্যাদা বাদের সাহাবী সহ সকল মুসলমানদের চেয়েও বেশী

অতঃপর কুরাইশরা যখন বুঝতে পারলো যে, এই অপ্রতিদ্বন্দ্বী ও বিস্ময়করভাবে একান্ত অনুগত ভক্ত সমন্বয়ে গঠিত এই দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তারা সফলকাম হতে পারবে নাতাদের অবিস্মরণীয় অতীত ও শোচনীয় পরাজয়ের স্মৃতি তখনো তাদের মনে স্পষ্ট হয়ে আছেতাই তারা সুহাইল ইবনে আমরকে মুসলমানদের নিকট সন্ধি করার জন্য দূত বানিয়ে পাঠালোতার সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে উভয় পক্ষে একটি যুদ্ধ বিরতিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়ইতিহাসে এটিই হুদায়বিয়ার সন্ধিনামে খ্যাত

আসুন জেনে নিই, কি ছিলো এই হুদায়বিয়ার সন্ধিতেঃ

আনাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, কুরাইশরা নবী করীম ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সন্ধি করলতাদের মধ্যে (কুরাইশের পক্ষে) সুহায়ল ইবনু আমরও ছিলতখন নবী করীম ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম আলী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে বললেনঃ লিখ (بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ) সুহায়ল বললো, বিসমিল্লাহ? আমরা তো জানিনা বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম কী? তবে আমরা যা জানি বি-ইসমিকা আল্লাহুম্মা, (হে আল্লাহ্‌! তোমার নামে) রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লামবল্লেন তাই লিখ

তারপর নবী করীম ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ লিখ, মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম-এর পক্ষ থেকেতখন তারা বলে উঠলো, আমরা যদি আপনাকে আল্লাহ তাআলার রসূলই মানতাম, তাহলে তো আমরা আপনার অনুসরণই করতামবরং আপনি আপনার নাম এবং আপনার পিতার নাম লিখুনতখন নবী করীম ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ লিখ, মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ (ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম) পক্ষ থেকেহযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বল্লেন, না, মহান আল্লাহ তাআলার কসম! আমার পক্ষে (মহান আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত্ব) আপনার (শান) কাটা সম্ভব নয়অতঃপর রসূলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বল্লেন, আমাকে চুক্তিপত্র দেখাও হযরত আলি রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনাকে দেখালেন, তখন রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম উনার নিজ হাতে ডিলিট করে লিখে দিলেনঃ (فَمَحَاهَا، وَكَتَبَ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ) এতদ্বারা চুক্তি করলেনমুহম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ (ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম)

অতঃপর তারা নবী করীম ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের উপর এ মর্মে শর্ত আরোপ করলো যে, যারা আপনাদের নিকট থেকে চলে আসবে, আমরা তাকে ফেরৎ পাঠাবোনা, কিন্তু আমাদের কেউ যদি আপনাদের নিকট চলে যায়, তবে আপনারা তাকে অবশ্যই ফেরৎ পাঠাবেন

তখন সাহাবীগণ বললেন, “ইয়া রাসুলাল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম! আমরা কি এরূপ লিখবো? জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁআমাদের মধ্য থেকে কেউ যদি তাদের কাছে যায় তবে আল্লাহই তাকে (রহমত থেকে) সরিয়ে দিয়েছেন এবং তাদের মধ্য থেকে যে আমাদের কাছে আসবে (তাকে ফেরত দিলেও) আল্লাহ অচিরেই তার কোন ব্যাবস্থা ও পথ বের করে দিবেন। (মুসলিম শরীফঃ ৪৪৮১ ইঃফাঃ, বুখারি শরীফঃ ২৯৫৯, আঃনাঃ ৩১৮৪, এছাড়াও (মুসনাদে আহমদ ১৮৬৫৮, সুনানে কুবরা বায়হাকী ৭/৪২ হাদীস ১৩৬৬৮, দালায়েলুন নবুওওয়াত ৪/৩৩৮, সুনানে দারেমী ২৫০৭, ফতহুল বারী ৭/৫০৩, তাফসীরে ইবনে কাছীর, তাফসীরে বাগবী ৭/৩১৭, রুহুল মায়ানী ১১/৬)

সন্ধির প্রধান প্রধান শর্তগুলো ছিল এরূপঃ

মদিনা শরীফের মুসলমান ও মক্কা শরীফের কুরাইশদের মধ্যে দীর্ঘ দশ বছর পর্যন্ত সকল প্রকার যুদ্ধ-বিগ্রহ বন্ধ থাকবে

এই বছর মুসলমানেরা উমরাহ না করেই মদিনা শরীফে ফেরত যাবেন

আগামী বছর তারা মক্কা শরীফে আগমণ করতে পারবেনএ সময় তারা সাথে তীর ও বর্শা আনতে পারবেন নাআত্মরক্ষার জন্য শুধু কোষবদ্ধ তলোয়ার সাথে রাখতে পারবেন

মক্কা শরীফে তারা কেবল তিন দিন অবস্থান করতে পারবেনতিন দিন পার হওয়ার সাথে সাথে মক্কা থেকে বের হয়ে চলে যেতে হবে

এই দশ বছরের মধ্যে মক্কা শরীফের কোন লোক যদি মুসলমান হয়ে মদিনা শরীফে আশ্রয় নেয় তাহলে মদিনা শরীফবাসীগণ তাকে আশ্রয় দিবে নাপক্ষান্তরে মদিনা শরীফের কোন লোক যদি মক্কায় চলে আসে তাহলে মক্কাবাসীগণ তাকে মদিনা শরীফে ফেরত দিবে না

চুক্তির এই শেষ শর্তটি মেনে নেওয়া মুসলমানদের জন্য খুবই কঠিন ছিলতারা নবী করীম ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বলতে লাগলেনঃ হে মহান আল্লাহ তাআলার রসূল ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম! আমরা কি এই শর্তটিও মেনে নিব? নবী করীম ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বললেন- তাদের যে লোক মুসলমান হয়ে আমাদের কাছে চলে আসবে, আমরা তাকে তাদের নিকট ফেরত দিবমহান আল্লাহ তাআলা তার কোন না কোন ব্যবস্থা করবেন

চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর নবী করীম ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদেরকে আদেশ দিলেন যে, তোমরা দাঁড়িয়ে যাও, কুরবানী করে ফেল এবং মাথা কামিয়ে ফেলএই ছিলো হুদাইবিয়া ও বাইয়াতে রিদ্বওয়ানের বিস্তারিত ঘটনা এতক্ষন যা আলোচনা করলাম

এবার প্রিয় মুসল্লিয়ানে কেরাম একটি বিষয়ে কথা না বললেই নয়, আপনারা সবাই অবগত যে সিলেট, সুনামগঞ্জ সহ আরো কয়েকটি জেলার মানুষ পানিবন্ধি, বন্যার ক্ষয়ক্ষতি হিসাবের বাহিরে, মানুষের দুঃখ দুর্দশার শেষ নাই, ৬০ জনের মত মানুষ মারা গেছেন এখন পরন্ত জাতীয় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পত্রিকা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারেআর কোরবানি সহ, মানুষের পেলে পুষে বড় করা গৃহপালিত মৃত পশুর তো হিসাব ই নাই, এছাড়াও কুকুর বেড়াল, হাস মুরগী তো আনলিমিটেডঅথচ আজকে আপনি আমি যে এই পবিত্র জুম্মা কোন বাঁধা বিপত্তি ছাড়াই আদায় করতে পারছি, আসুন মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে শুকরিয়া আদায় করি, সবাই বলুন আলহামদুলিল্লাহ

ভাইয়েরা আমার, আমাদের দ্বীনি ভাই, বোন পরিবার বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে কি কঠিন মুসীবতে পড়েছে আজ, আমাদের কি কোন দায়-দায়িত্ব নেই? আমাদের কি উচিৎ না যার যার তৌফিক অনুসারে যারা ত্রান দিচ্ছে তাদের সাথে শরীক হওয়া? হাদিসে এসেছেঃ (عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَثَلُ الْمُؤْمِنِينَ فِي تَوَادِّهِمْ وَتَرَاحُمِهِمْ وَتَعَاطُفِهِمْ مَثَلُ الْجَسَدِ إِذَا اشْتَكَى مِنْهُ عُضْوٌ تَدَاعَى لَهُ سَائِرُ الْجَسَدِ بِالسَّهَرِ وَالْحُمَّى) নুমান ইবনু বাশীর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন, রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিনদের উদাহরণ তাদের পারস্পরিক ভালবাসা, দয়ার্দ্রতা ও সহানুভূতির দিক থেকে একটি মানব দেহের ন্যায় যখন তার একটি অঙ্গ আক্রান্ত হয় তখন তার সমস্ত দেহ ডেকে আনে তাপ ও অনিদ্ৰা। (মুসলিম শরীফঃ ইঃফাঃ ৬৩৫০, ইঃসেঃ ৬৪০০, হাঃএঃ ৬৪৮০, আঃনাঃ ২৫৮৬) অথচ আমাদের অনেকেই ব্যপারটা এড়িয়ে যাচ্ছি, আমাদের আচরণে মনে হয় আমরা এই হাদিসের হুকুম কে মানিই না

এছাড়াও আল কুরআনে মহান আল্লাহ পাক হুকুম দিচ্ছেনঃ (وَ اَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتُوا الزَّکٰوۃَ وَ اَقۡرِضُوا اللّٰهَ قَرۡضًا حَسَنًا) আর (তোমরা) নামায কায়েম কর, যাকাত প্রদান করো এবং মহান আল্লাহ তাআলাকে দাও উত্তম ঋণ। (আল কুরআন ৭৩/২০) নামায কায়েম ও যাকাত আদায় তো আমরা করে থাকি, কিন্তু মহান আল্লাহ তাআলাকে যে ঋন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তা কি পালন করছি? এছাড়াও মহান আল্লাহ তাআলা এইসব বন্যার্ত অভাবি মানুষের ব্যপারে কি বলেছেন জানুনঃ (اِنۡ تُبۡدُوا الصَّدَقٰتِ فَنِعِمَّا هِیَ ۚ وَ اِنۡ تُخۡفُوۡهَا وَ تُؤۡتُوۡهَا الۡفُقَرَآءَ فَهُوَ خَیۡرٌ لَّکُمۡ ؕ وَ یُکَفِّرُ عَنۡکُمۡ مِّنۡ سَیِّاٰتِکُمۡ ؕ وَ اللّٰهُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ خَبِیۡرٌ) তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান কর তবে তাও উত্তম, কিন্তু যদি তোমরা তা গোপনে করে থাকো এবং তা (যদি) অভাবগ্রস্তদেরকে দান কর, তবে তা তোমাদের জন্য সবচেয়ে উত্তম, এবং এর দ্বারা তোমাদের কিছু পাপ (এর কালিমা তিনি) মোচন করে দেবেন; আর তোমরা যে আমল কর মহান আল্লাহ তাআলা সে সম্পর্কে সম্মক অবহিত। (আল কুরআন ২/২৭১) অনেকের অনেক গুনাহ-খতা আছে, এই সূযোগে তা মাফ করিয়ে নিন, এইসব অভাবগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে

বিখ্যাত সুফী ইমাম আল কুশায়রী নিশাপুরি রহমতুল্লাহ বলেন, “কর্যে হাসানার ১০টি শর্ত রয়েছেসূরাহ আলে ইমরানের উক্ত আয়াতের হুকুম তন্মধ্যে একটিঃ ( لَنۡ تَنَالُوا الۡبِرَّ حَتّٰی تُنۡفِقُوۡا مِمَّا تُحِبُّوۡنَ ۬ؕ وَ مَا تُنۡفِقُوۡا مِنۡ شَیۡءٍ فَاِنَّ اللّٰهَ بِهٖ عَلِیۡمٌ) তোমাদের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু হতে (আল্লাহ তাআলার উদ্যেশে) ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনই নেকি লাভ করতে পারবেনা; এবং তোমরা যা কিছুই ব্যয় কর, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তাআলা সে বিষয়ে খুব ভালভাবেই অবগত আছেন। (আল কুরআন ৩/৯২)

আর হাদিসে এসেছে, (عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُولُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَا ابْنَ آدَمَ مَرِضْتُ فَلَمْ تَعُدْنِي ‏.‏ قَالَ يَا رَبِّ كَيْفَ أَعُودُكَ وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ ‏.‏ قَالَ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ عَبْدِي فُلاَنًا مَرِضَ فَلَمْ تَعُدْهُ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّكَ لَوْ عُدْتَهُ لَوَجَدْتَنِي عِنْدَهُ يَا ابْنَ آدَمَ اسْتَطْعَمْتُكَ فَلَمْ تُطْعِمْنِي ‏.‏ قَالَ يَا رَبِّ وَكَيْفَ أُطْعِمُكَ وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ ‏.‏ قَالَ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّهُ اسْتَطْعَمَكَ عَبْدِي فُلاَنٌ فَلَمْ تُطْعِمْهُ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّكَ لَوْ أَطْعَمْتَهُ لَوَجَدْتَ ذَلِكَ عِنْدِي يَا ابْنَ آدَمَ اسْتَسْقَيْتُكَ فَلَمْ تَسْقِنِي ‏.‏ قَالَ يَا رَبِّ كَيْفَ أَسْقِيكَ وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ قَالَ اسْتَسْقَاكَ عَبْدِي فُلاَنٌ فَلَمْ تَسْقِهِ أَمَا إِنَّكَ لَوْ سَقَيْتَهُ وَجَدْتَ ذَلِكَ عِنْدِي) আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রসুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “মহান আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিনে বলবেন, হে আদম সন্তান! আমি অসুস্থ হয়েছিলাম; কিন্তু তুমি আমার খোজ-খবর রাখনিসে বলবে, হে পরওয়ারদিগার! আমি কী করে আপনার খোজ-খবর করব, অথচ আপনি সারা জাহানের প্রতিপালকমহান আল্লাহ তাআলা বলবেন, তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ হয়েছিলেন, আর তুমি তার সেবা করনিতুমি কি জানতে না যে, তুমি তার সেবা-শুশ্রুষা করলে তার কাছেই আমাকে পেতে

(অতঃপর মহান আল্লাহ পাঁক বলেনঃ)

হে আদম সন্তান! আমি তোমার কাছে খাবার চেয়েছিলাম; কিন্তু তুমি আমাকে খেতে দাওনিসে (বান্দা) বলবে, হে আমার পরওয়ারদিগার! আমি কি করে আপনাকে আহার করাতে পারি! আপনি তো সারা জাহানের প্রতিপালকতিনি (মহান আল্লাহ তাআলা) বলবেন, তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে আহার চেয়েছিলেন? তুমি তাকে খেতে দাওনিতুমি কি জানতে না যে, যদি তুমি তাকে আহার করাতে, তাহলে তা অবশ্যই আমার কাছে (আজ) পেতে

(অতঃপর মহান আল্লাহ পাঁক বলেনঃ)

হে আদম সন্তান! আমি তোমার কাছে পানীয় চেয়েছিলাম; কিন্তু তুমি আমাকে পানি পান করাওনিসে (বান্দা) বলবে, হে আমার পরওয়ারদিগার! আমি কী করে আপনাকে পান করাব, অথচ আপনি সারা জাহানের প্রতিপালকমহান আল্লাহ তাআলা বলবেন, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে পানীয় চেয়েছিল, তুমি তাকে পান করাওনিযদি তুমি তাকে পান করাতে, তবে তা আমার কাছে (আজ) পেতে। (মুসলিম শরীফ ৬৩২২)

আর প্রতি সপ্তাহের মতো আজকেও সবাইকে আহ্বান করছি, অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই শুরু হবে জুমুআহ শরীফের খুৎবা, আর খুৎবার আযান থেকে শুরু করে নামায চলাকালীন সময়ে করা সকল হালাল ব্যবসাই মহান আল্লাহ পাক নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন, মহান আল্লাহ পাক বলেনঃ (یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ) হে ঈমানদারগণ! (পবিত্র) জুমুআহ শরীফের দিনে যখন নামাযের জন্য (তোমাদের) আহবান করা হয় (অর্থাৎ যখন আযান দেওয়া হয়), তখন তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালার স্মরণের দিকে (অর্থাৎ নামাযের উদ্যেশ্যে মসজিদের দিকে) ধাবিত হওএবং (সকল ধরণের) বেচা-কেনা পরিত্যাগ কর, এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা বুঝতে পারো। (সূরাহ জুমুআহ শরীফ ৬২/৯)

কুরআনের এই আয়াত দ্বারা জুমুআহ শরীফের দিন খুৎবার আযানের সময় থেকে নামায শেষ হওয়া পর্যন্ত সকল ধরণের ব্যবসা বাণিজ্যকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, তাই এই সময় দোকানপাঠ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে, ব্যবসা প্রতিষ্টানে তালা মেরে নামাযে উপস্থিত হতে হবেএই সময় বেচাকেনা হারাম, আমাদের ফিকির করা উচিৎ যে, মাত্র আধা ঘন্টার জুমুআহ নামাযের সময় আমরা কি এমন বেচাকেনা করছি, কি এমন লাভ করছি যে সামান্য কিছু টাকার জন্য সমস্ত উপার্জনটাই হারাম করে দিচ্ছি, কারণ ঐ মুহূর্তে করা এক টাকার ব্যবসাও বাকি টাকার সাথে মিলে সম্পূর্ণ টাকাই হারাম করে দিচ্ছেআর হারাম উপার্জনে কখনোই মহান আল্লাহ তায়ালার বরকত থাকেনা, যার কারণে দিনশেষে দেখা যায় সারাদিন খেঁটেও ফায়দা হচ্ছেনা

এর পরের আয়াতে মহান আল্লাহ পাক বলেনঃ (فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلٰوةُ فَانتَشِرُوا فِى الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ) অতঃপর নামাজ শেষ হলে তোমরা পৃথিবীতে (অর্থাৎ জমিনে) ছড়িয়ে পড় এবং মহান আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ (অর্থাৎ জীবিকা) তালাশ কর এবং মহান আল্লাহ তায়ালাকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা (জীবিকা উপার্জনে) সফলকাম হও। (সূরাহ জুমুআহ শরীফ ৬২/১০)

আয়াতে পাকে, মহান আল্লাহ তায়ালা যে অনুগ্রহ তালাশের কথা বলেছেন, এর অর্থ দুনিয়াবি কাজ-কর্ম ও ব্যবসা-বাণিজ্য আবার শুরু করোঅর্থাৎ, জুমুআর নামায শেষ করার পর তোমরা পূনরায় নিজ নিজ কাজে-কামে এবং দুনিয়ার ব্যস্ততায় লেগে যাওতবে আমার স্মরণ থেকে গাফেল হয়োনা, বরং মনে মনে আমার যিকির করো আর কাজ কাম করতে থাকোএছাড়াও একটি বিষয় পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, জুমুআহ শরীফের দিন কাজ-কর্ম বন্ধ রাখা জরুরী নয়কেবল নামাযের জন্য, নামাযের সময় তা বন্ধ রাখা জরুরীমহান আল্লাহ পাক-এর এরূপ স্পষ্ট হুকুম জানার পরেও যারা এই হুকুম অমান্য করে ব্যবসা করবেন তারা ইচ্ছা অনিচ্ছা আর অজ্ঞতায় নিজেদের হালাল মালের মধ্যে হারাম কে মিশিয়ে দেবেনআর হারাম মালের সংমিশ্রণের রিযিক দ্বারা গঠিত দেহ কখনোই জান্নাতে যাবেনা

এছাড়াও যারা নিয়মিত নামায পড়েন, জুমুআতে আসেন, তারা যেনো সুন্নাহ অনুসরণ করেই মসজিদে আসেন, এতে রহমত ও বরকতপ্রাপ্ত হবেন, শাওয়ার বা পুকুরে এক ডুইব দিয়েই যেকোন একটা পোশাক পরে জুমুআর দুই রাকাত ফরজ নামায আদায়ের উদ্যেশে মসজিদে না এসে ভালো মতো প্রিপারেশন নিয়েই আসবেনহাদিস শরীফে হযরত, (عَنْ سَلْمَانَ الْفَارِسِيّ رَضِیَ اللّٰہُ عَنۡہُ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ آلِهٖ وَسَلَّمَ  لاَ يَغْتَسِلُ رَجُلٌ يَوْمَ الْجُمُعَةِ، وَيَتَطَهَّرُ مَا اسْتَطَاعَ مِنْ طُهْرٍ، وَيَدَّهِنُ مِنْ دُهْنِهِ، أَوْ يَمَسُّ مِنْ طِيبِ بَيْتِهِ ثُمَّ يَخْرُجُ، فَلاَ يُفَرِّقُ بَيْنَ اثْنَيْنِ، ثُمَّ يُصَلِّي مَا كُتِبَ لَهُ، ثُمَّ يُنْصِتُ إِذَا تَكَلَّمَ الإِمَامُ، إِلاَّ غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ الأُخْرَى) “সালমান ফারসী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি জুমুআর দিন গোসল করে এবং যথাসাধ্য ভালরূপে পবিত্রতা অর্জন করে এবং নিজের তেল থেকে ব্যবহার করে বা নিজ ঘরের সুগন্ধি ব্যবহার করে এরপর (নামাযের উদ্যেশ্যে) বের হয় এবং (মসজিদে প্রবেশ করে) দুজন লোকের মাঝে ফাঁক না করে (যেখানে যায়গা পায় সেখানেই দাড়িয়ে যায়), অতঃপর তার নির্ধারিত নামায আদায় করে এবং ইমামের খুতবা দেওয়ার সময় চুপ থাকে, তা হলে তার সেই জুমুআহ শরীফের (নামায) থেকে পরের জুমুআহ শরীফের (নামাযের আগ) পর্যন্ত (মধ্যবর্তী) সময়ের (মধ্যে ঘটা) যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (বুখারী শরিফঃ ইঃফাঃ ৮৩৯, আঃনাঃ ৮৮৩)

জুমুআ শরীফের দিনকে খাটো করে দেখার কোন সুযোগ নাই, না আছে সুযোগ জুমুআর নামায কে অবহেলারহদিস শরীফে এসেছেঃ (عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ ـ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ آلِهٖ وَسَلَّمَ ـ فَقَالَ ‏ "‏ يَا أَيُّهَا النَّاسُ تُوبُوا إِلَى اللَّهِ قَبْلَ أَنْ تَمُوتُوا وَبَادِرُوا بِالأَعْمَالِ الصَّالِحَةِ قَبْلَ أَنْ تُشْغَلُوا وَصِلُوا الَّذِي بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ رَبِّكُمْ بِكَثْرَةِ ذِكْرِكُمْ لَهُ وَكَثْرَةِ الصَّدَقَةِ فِي السِّرِّ وَالْعَلاَنِيَةِ تُرْزَقُوا وَتُنْصَرُوا وَتُجْبَرُوا وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ قَدِ افْتَرَضَ عَلَيْكُمُ الْجُمُعَةَ فِي مَقَامِي هَذَا فِي يَوْمِي هَذَا فِي شَهْرِي هَذَا مِنْ عَامِي هَذَا إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ فَمَنْ تَرَكَهَا فِي حَيَاتِي أَوْ بَعْدِي وَلَهُ إِمَامٌ عَادِلٌ أَوْ جَائِرٌ اسْتِخْفَافًا بِهَا أَوْ جُحُودًا بِهَا فَلاَ جَمَعَ اللَّهُ لَهُ شَمْلَهُ وَلاَ بَارَكَ لَهُ فِي أَمْرِهِ أَلاَ وَلاَ صَلاَةَ لَهُ وَلاَ زَكَاةَ لَهُ وَلاَ حَجَّ لَهُ وَلاَ صَوْمَ لَهُ وَلاَ بِرَّ لَهُ حَتَّى يَتُوبَ فَمَنْ تَابَ تَابَ اللَّهُ عَلَيْهِ أَلاَ لاَ تَؤُمَّنَّ امْرَأَةٌ رَجُلاً وَلاَ يَؤُمَّنَّ أَعْرَابِيٌّ مُهَاجِرًا وَلاَ يَؤُمَّ فَاجِرٌ مُؤْمِنًا إِلاَّ أَنْ يَقْهَرَهُ بِسُلْطَانٍ يَخَافُ سَيْفَهُ وَسَوْطَهُ) হযরত জাবির ইবনু আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন, রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্দেশে ভাষণ দেনতিনি বলেনঃ হে মানবমন্ডলী! তোমরা মরার পূর্বেই মহান আল্লাহ পাকের নিকট তওবা করো এবং কর্মব্যস্ত হয়ে পড়ার পূর্বেই সৎ কাজের দিকে দ্রুত ধাবিত হওতাঁর অধিক যিকরের মাধ্যমে তোমাদের রবের সাথে তোমাদের সম্পর্ক স্থাপন করো এবং গোপনে ও প্রকাশ্যে অধিক পরিমাণে দান-খয়রাত করো, এজন্য তোমাদের রিযিক বাড়িয়ে দেয়া হবে, সাহায্য করা হবে এবং তোমাদের অবস্থার সংশোধন করা হবে

তোমরা জেনে রাখো, নিশ্চয় মহান আল্লাহ তাআলা আমার এই স্থানে আমার এই দিনে, আমার এই মাসে এবং আমার এই বছরে তোমাদের উপর কিয়ামতের দিন পর্যন্ত জুমুআর নামাযকে ফরয করেছেনঅতএব যে ব্যক্তি আমার (মুবারক) জিন্দেগীতে বা আমার প্রস্থানের পরে, ন্যায়পরায়ণ অথবা যালেম শাসক থাকা সত্ত্বেও জুমুআর নামাযকে তুচ্ছ মনে করে বা অস্বীকার করে তা বর্জন করবে, মহান আল্লাহ পাক তার বিক্ষিপ্ত বিষয়কে একত্রে গুছিয়ে দিবেন না (অর্থাৎ তার দুনিয়াবি জঞ্জালগুলি আরো জগাখিচুড়ী হয়ে যাবে) এবং তার কাজে-কর্মে বরকত দান করবেন নানাউযুবিল্লাহ!

(অতএব) সাবধান! তার সালাত, যাকাত, হাজ্জ (হজ্জ), সাওম (রোযা) এবং অন্য কোন নেক আমল গ্রহণ করা হবে না, যতক্ষণ না সে তওবা করেযে ব্যক্তি তওবা করে, মহান আল্লাহ তাআলা তার তওবা কবূল করেনসাবধান! কোনো নারীকে পুরুষের ওপর ইমাম নিযুক্ত করবেনা, কোনো বেদুইনকে কোনো মুহাজিরের ওপর ইমাম নিযুক্ত করবেনা, কোনো খারাপ ব্যক্তিকে কোনো (সত্যিকার) মুমিনের ওপর ইমাম নিযুক্ত করবেনাতবে কোন স্বৈরাচারী শাসক যদি বাধ্য করে এবং তার তরবারি ও চাবুকের ভয় থাকে তাহলে তা স্বতন্ত্র কথা। (ইবনে মাজাহ শরীফঃ ১০৮১)

মহান আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে পবিত্র জুমুআহ শরীফ সহ দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামায জামায়াতে আদায়ের তৌফিক দিন, জামায়াতে না পারলেও অন্তত একা আদায়ের তৌফিক যেনো দেন, এই আর্জি পেশ করলাম মালিক মহান রব্বুল আলামিনের দরবারেআল ফাতিহা (সূরাহ ফাতিহা দিয়ে দোয়া শেষ করবেন।)


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুনঃ

এডমিন

আমার লিখা এবং প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বে আইনি।

0 ফেইসবুক: