Friday, June 3, 2022

রাজারবাগের পির দিল্লুর রহমান ১০০% মিথ্যা আওলাদে রসূল ও আহলে বাইতের দাবিদার!

হে মহান আল্লাহ পাক আপনারই নিকট পানাহ চাচ্ছি বিতাড়িত সয়তান রাজারবাগী ও তার অনুসারীদের থেকে

রাজারবাগী পির দিল্লুর তার ওয়েবসাইট, পত্রিকা, কিতাবাদিতে নিজেকে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী ওয়াল কুরাঈশী অর্থাৎ আওলাদে রসূল বলে দাবি করে থাকে, অথচ হাক্বিকতে এর কোন দালিলিক প্রমান নাইআপনারা শুনলে আশ্চর্য হবেন যে নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজারের প্রভাকরদীর এক প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমানের ৯ সন্তানের মধ্যে একমাত্র দিল্লুর রহমান-ই জানে যে সে আহলে বাইত, আওলাদে রসূল, হাসানী ওয়াল হুসাইনী ওয়াল কুরাঈশী নাউযুবিল্লাহ!!! বাপ-দাদা, ভাই বোনেরা কেউই জানেনা যে আমাদের বংশ সৈয়দ বংশ, আমরা বংশ পরম্পরায় রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের বংশধর, আওলাদ, রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের রক্ত আমাদের দেহে প্রবাহিত হচ্ছে

এটা খুবই ভয়ানক বিষয় যে, কোন আম পাবলিক ও কারো সাথে নিজের রক্তের সম্পর্কের দাবি করবে অথচ বাস্তবে সে তার আওলাদ নয়কুরআন হাদিসে এই ব্যপারে কঠিন নিষেধাজ্ঞা আছে, আছে শাস্তির উল্লেখতাই কারো জন্যেই এটা যায়েজ না যে সে যাকে তাকে তার বাপ-দাদা-পরদাদা বানিয়ে নিজেকে আলা দরজার নসবের বলে সাব্যস্থ করে ফেলবেএরূপ কাজ খুবই ঘৃণিত মহান আল্লাহ পাক ও রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের নযদিকসেখানে কেউ যদি রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের আওলাদ, বংশের লোক বলে নিজেকে দাবি করে অথচ বাস্তবে সে তা নয় তখন সেটা কতটুকু ভয়ানক হতে পারে চিন্তার প্রয়োজন এই দাবি সত্য না হলে নিজের ঊর্ধ্বতন কোন একজন এর স্পষ্ট জিনার দায় চাপে অটোম্যাটিক

প্রথমে এই আর্টিকেল (আওলাদে রসূল ও আহলে বাইতঃ কুরআন সুন্নাহর আলোকে দলিল ভিত্তিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ) পড়ে আসুন, নতুবা এই হাস্যকর স্ক্রিনশটগুলি দেখে আপনি বুঝতে পারবেন না এরা কতো জাহিল ও অন্ধ মুরিদ

রাজারবাগীর অন্ধ, মূর্খ মুরিদেরা এখনো আওলাদে রসূল ও আহলে বাইতের তফাৎই জানেনা, এরা কিভাবে জানবে যে দিল্লুর রহমান ভূয়া আওলাদ ও আহলে বাইতের দাবিদার!

আপনারা যারা আওলাদে রাসূল বা আহলে বাইত মনে করে মুরিদ হয়েছিলেন তাদের সুবিধার্থে এই পোস্ট, আপনারা তাদের নিকট প্রশ্ন রাখতে পারেন, দেখবেন কিভাবে এদের পোশাক নাপাক হয়

জিজ্ঞাসা করেন, “কুরআন হাদিসের রেফারেন্স দ্বারা আহলে বাইতের বিষয়ে দলিল ও ব্যখ্যা দিন

১) (বাবার দেখা স্বপ্নে নয় বরং) কুরআন হাদিসের আলোকে আহলে বাইত কারা?

২) কিভাবে আহলে বাইত বলে কেউ সাব্যস্ত হয়?

৩) কেউ কি চাইলেই আহলে বাইত হতে পারবে?

৪) কেউ আহলে বাইত দাবি করলেই কি আহলে বাইত বলে মেনে নিতে হবে?

৫) আহলে বাইত কতো প্রকার?

৬) সবচেয়ে সম্মানিত কে? আহলে বাইত না আওলাদে রাসূল?

৭) কিয়ামত পর্যন্ত আহলে বাইত কারা?

৮) কোন ধরনের আহলে বাইতকে অনুসরণ হারাম ও পরিত্যাগ করা লাগবে?

৯) কোন কাজ এর ফলে একজন ব্যক্তি আহলে বাইত থেকে খারিজ হয়ে যায়?

১০) কোন আহলে বাইত যদি কোন গুনাহের মধ্যে লিপ্ত থাকে, সাধারণ মুসলিম কি তাকে গালিগালাজ করার অধিকার রাখে?

১১) কেউ যদি আহলে বাইত বা আওলাদে রাসূল না হয়েও দাবি করে থাকে, তাহলে শরিয়ত এর ফায়সালা অনুসারে সে কি? ও তার স্থান কোথায় হবে?

১২) আহলে বাইতের উপর নাজিল হওয়া আয়াত, হাদীস কি মৃত ও জীবিত বিদ্যমান সকল আহলে বাইতের জন্য? নাকি নির্দিষ্ট কোন এক জনের জন্যে?

ইসলাম কারো মনগড়া দাবির উপর বিদ্যমান নয়, ইসলামী কোন বিষয়ে কথা বলার জন্য আল্লাজীর নির্দেশ হলো দলিল পেশ করতে হবে মহান আল্লাহ পাক বলেনঃ (هَاتُوۡا بُرۡهَانَکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ) যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে তোমাদের (সত্যবাদীতার স্বপক্ষে) দলিল/প্রমাণ পেশ কর

আল কুরআনঃ ২/১১১ এবং ২৭/৬৪

অতএব প্রমান করতে হবে রাজারবাগের মুশরিক পির দিল্লুর আহলে বাইত, না হলে নিম্নোক্ত কুরআন হাদিসের হুকুম তার জন্যেই প্রযোজ্য, কারণ সে মিথ্যা আহলে বাইতের দাবিদার, দাবিদার সে মিথ্যা আওলাদে রসূল হওয়ার। উদাহরণস্বরূপ, এরূপ নসবনামা, বংশ লতিকা পেশ করা লাগবে, মনগড়া স্বপ্নে আমি আহলে বাইত বলে ইলহামপ্রাপ্ত হলাম বললে কাজ হবেনা, দলিল চাই দলিল, দলিল দিতে না পারলে গালিগালাজ করে নিজের মা বাবাকে আযাব দিলেও চলবেনা।

স্মরণীয় যে, আওলাদে রসূল বা আহলে বাইত তিনিই হবেন যার প্রত্যেক পিতৃপুরুষ ঈমানদার ছিলেন, ঈমান নিয়ে মারা গেছেন। কারো মা যদি আওলাদে রসূল বা আহলে বাইত হয়ে থাকেন কিন্তু পিতা আওলাদে রসূল বা আহলে বাইত নন, তাহলে তাকে আওলাদে রসূল বা আহলে বাইত বলা যাবে না। এবং তার উপর আহলে বাইতের খেতাব ও প্রযোজ্য নয়, অর্থাৎ, তার উপর যাকাত গ্রহণ করাও তখন বৈধ হবে। কেননা আহলে বাইতের জন্য যাকাত হারাম এবং মহান আল্লাহ পাকের রসূল ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম ব্যতীত বাকি সকল মানুষের বংশ পরিচয় বাবার দিক থেকে হবে, মায়ের দিক থেকে নয়। আর যদি কারো পিতা-মাতা উভয়ই আওলাদে রসূল বা আহলে বাইত হন, তাহলে দুদিক থেকেই নযিবুত ‌‍‌‌‌‍তরফাইন অর্থাৎ অভিজাত আওলাদে রসূল বা আহলে বাইত বলে গন্য হবেন, উদাহরণস্বরূপঃ- হাদিসে এসেছে ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাতু সালামও হাসানী এবং হোসাইনী হবেন। এছাড়াও হযরত গাউসুল আজম আব্দূল কাদের জিলানী ও খাজা মইনুদ্দিন হাসান চিশতী রহমাতুল্লাহি আলাইহিম, যারা পিতা এবং মাতার দিক দিয়ে হাসানী ও হোসাইনী। (উদাহরণস্বরূপ নিচের এই নসবে জিলানী রহমতুল্লাহ)।

যদি কেউ এই দাবি করে যে আমি আহলে বাইত বা আওলাদে রসূল অথচ সে কোন দলিল পেশ করতে সক্ষম নয়, তাহলে সে কাজ্জাব। অন্তত পিতার দিক থেকে ক্রমান্বয়ে নসব গিয়ে মিলিত হতে হবে রসুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম অথবা বনু হাশিমের নির্ধারিত আহলে বাইতগণের সাথে।

কুরআন হাদিসে আহলে বাইতের যেসমস্ত ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে এর মর্মার্থ এই নয় যে, তাঁরা নেক আমল না করে, নামাজ-রোযা না রেখে, শুধু বংশীয় কারণে স্বতন্ত্র সম্মানের অধিকারী হয়ে যাবেন দুনিয়া ও আখিরাতে। কেউ যদি মনে করে যে তাদের কোন আমলের প্রয়োজন নেই, এটা তাদের ভুল ধারণা। আবার কেউ যদি মনে করে তারা আহলে বাইত, তাদের সম্মান নবী রসূল আলাইহিমুস সালামদের মতো তাহলেও সেটা ভূল, প্রত্যেকের স্ব স্ব স্থানে তাকে রাখতে হবে। কোন অবস্থায় বাড়াবাড়ি করা যাবেনা।

যারা খাস আহলে বাইত তথা মুকাম্মিল ঈমানের অধিকারী, তাদের জন্য এটা অতিব প্রয়োজনীয় যে, তাঁরা তাকওয়া, পরহেজগারিতা আর নেক আমলে সবার থেকে এগিয়ে থাকবেন। যাতে সকলের জন্য তারা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকেন। বিমান, ট্রেন বা লঞ্চে দেখবেন প্রথম শ্রেণীর যাত্রীদেরকে তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রীদের চাইতে বেশি টাকা খরচ করতে হয়। তাই তাঁদের জন্য ওয়াজিব হলো, উনারা নিজেদের পূর্ব পুরুষদের অনুরূপ হবেন। যে ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম কারবালার মরু প্রান্তরে যুদ্ধের ময়দানে তলোয়ারের নিচে নামায আদায় করেছেন আজ সেই হুসাইনী রক্ত শরীরে নিয়ে উনার সন্তানগণ যদি নামায রোজা ছেড়ে, ফাসেকি জীবনযাপন করেন, তাহলে তা অবশ্যই আফসোসের বিষয়।

কুরআন হাদিসে যে নবী বংশের পবিত্রতা বা মহাত্বতা আর ফযিলত বর্ণনা করা হয়েছে, তা সেই সকল আহলে বাইতের জন্য প্রযোজ্য যাঁরা সত্যিকারেই বনু হাশিমের রক্ত বহনকারী। অর্থাৎ, হযরত আলী, জাফার, আক্বীল, হারিস, আব্বাস আলাইহিমুস সালামদের থেকে নিয়ে তার পিতা পর্যন্ত তার বংশে কোন গায়রে আহলে বাইত পিতামহের উপস্থিতি নাই। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে বর্তমান সময়ে নকল আহলে বাইত ও আওলাদে রসূলের আধিক্যতা খুব বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। আহলে বাইত না হয়ে যারা আহলে বাইত দাবী করে, তারা যে শুধু হারাম-ই নয় বরং জঘন্যতম মহাপাপ করে তা অনেকের জানাই নাই সম্ভবত।

রসূলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম সে সমস্ত গোলাম তথা দাসকে অভিসম্পাত দিয়েছেন যারা নিজেদেরকে অন্য মুনিবের দিকে সম্পর্কিত করে। আর সে সমস্ত ব্যক্তিকে অভিশাপ দিয়েছেন যারা নিজেদের অন্য বংশের দাবীদার সাব্যস্ত করে। সুতরাং যারা আহলে বাইত বা আওলাদ নয় কিন্তু দাবী করে সাইয়্যিদ তারা মূলত রসূলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে লানতপ্রাপ্ত হয়। অনুরূপ কেউ নিজে আহলে বাইত বা আওলাদে রসূল না হয়েও সাইয়্যিদ বা আহলে বাইত দাবী করে, সে তার মাকে গালি খাওয়ানোর সমান। কেননা সে তার মায়ের স্বামী তথা বাবাকে সাইয়্যিদ বানালো, অথচ দেখুন! হযরত যায়েদ বিন হারেছা রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে যখন রসূলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম নিজের ছেলে বলে বলে ঘোষণা দিলেন, এটা দেখে লোকেও তাকে যায়েদ বিন মুহাম্মদ তথা রসূলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের সন্তান বলতে লাগল। কিন্তু আল্লাহ পাক আযিম, তিনি এটা মেনে নেন নাই, সাথে সাথে ওয়াহী এলো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আয়াত নাযিল করে। মহান আল্লাহ তাআলা বলেনঃ (وَمَا جَعَلَ أَدْعِيَاءَكُمْ أَبْنَاءَكُمْ ذَٰلِكُمْ قَوْلُكُمْ بِأَفْوَاهِكُمْ) অর্থাৎ, মহান আল্লাহ পাক আপনার পালক পুত্রকে আপনার পুত্র বানাননি। এটাতো শুধু আপনার মুখের কথা। (সূরা আহযাবঃ ৩৩/৪) এবং তাকেও নিষেধ করে আল্লাহ বলেনঃ (ادْعُوهُمْ لِآبَائِهِمْ هُوَ أَقْسَطُ عِنْدَ اللَّهِ ۚ فَإِنْ لَمْ تَعْلَمُوا آبَاءَهُمْ فَإِخْوَانُكُمْ فِي الدِّينِ) অর্থাৎ, তাদেরকে তাদের পিতার নামেই আহবান করো। মহান আল্লাহ তাআলার নিকট এটাই পছন্দনীয়। যদি তাদের পিতার নাম জানা না থাকে তাহলে ধর্মে তারা তোমাদের ভাই। (সূরা আহযাবঃ ৩৩/৫) যেখানে স্বয়ং নবীজি হযরত যায়েদ রাদ্বিয়াল্লাহু তাআলা আনহুকে লালন পালন করেছেন, সেখানে তাঁকে পুত্র বলা হারাম করে দিয়েছেন। তাহলে যারা আওলাদে রসূল বা আহলে বাইত না হয়েও নিজেদেরকে সাইয়্যিদ দাবী করে তারা কত বড় অপরাধী তা উক্ত আয়াতের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে যায়। তেমনিভাবে যে সমস্ত ব্যক্তি রাগান্বিত অবস্থায় নিজেদের স্ত্রীকে মা সম্বোধন করে, তাদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাকের স্পষ্ট বাণী হচ্ছেঃ (وَ مَا جَعَلَ اَزۡوَاجَکُمُ الّٰٓیِٴۡ تُظٰهِرُوۡنَ مِنۡهُنَّ اُمَّهٰتِکُمۡ) অর্থাৎ, আর তোমরা যে সমস্ত স্ত্রীগণকে নিজের মায়ের সমতুল্য কর, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে তোমাদের মা বানায়নি। (সূরা আহযাবঃ ৩৩/৪) কোরআন মাজীদে অন্যত্র আল্লাহ তাআলা জিহারকারীদের ব্যাপারে ইরশাদ করেনঃ ( اَلَّذِیۡنَ یُظٰهِرُوۡنَ مِنۡکُمۡ مِّنۡ نِّسَآئِهِمۡ مَّا هُنَّ اُمَّهٰتِهِمۡ ؕ اِنۡ اُمَّهٰتُهُمۡ اِلَّا الّٰٓیِٴۡ وَلَدۡنَهُمۡ ؕ وَ اِنَّهُمۡ لَیَقُوۡلُوۡنَ مُنۡکَرًا مِّنَ الۡقَوۡلِ وَ زُوۡرًا) অর্থাৎ, তোমাদের মধ্যে যারা নিজেদের স্ত্রীদেরকে (আপন) মায়ের সমতুল্য বলে দেয় (এতে) তারা (কিন্তু) তাদের মা হয়ে যায়না। (বরং) তাদের মা তো (হচ্ছে) সেই, যার থেকে তারা ভূমিষ্ট হয়েছে। নিঃসন্দেহে তারা মন্দ ও মিথ্যা বলে। (সূরাহ মুজাদালাহঃ ৫৮/২) যেখানে নিজেদের বিবিকে মায়ের সাথে তুলনা করাকে কোরআন কারীম মন্দ ও মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে এবং তাদের জন্য কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেখানে অন্যকে নিজের পিতা সম্বোধনকারী কুরআন শরীফের ফয়সালা অনুযায়ী বড় মিথ্যুক ও দোযখে কঠিন শাস্তির উপযোগী হবে। তাহলে স্পষ্ট হয়ে গেল,  যারা আহলে বাইত ও আওলাদে রসূল না হয়েও নিজেদের সাইয়্যিদ দাবি করে, তারা মূলত তাদের মাকে গালি দেয়। এবং তারা সরকারে দোআলম রসূলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের নিকট অভিশপ্ত আর মহান আল্লাহ পাকের নিকট মিথ্যুক, ধোকাবাজ এবং জাহান্নামের খোরাক।

অন্যের সাথে বংশ ও জন্মসূত্র স্থাপনের পরিণতি খুবই ভয়াবহ। হাদিস শরীফে এসেছেঃ (عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَنِ انْتَسَبَ إِلَى غَيْرِ أَبِيهِ أَوْ تَوَلَّى غَيْرَ مَوَالِيهِ فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللَّهِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ) ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন, রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের পিতা ব্যতীত অন্যের সাথে জন্মসূত্র স্থাপন করে অথবা নিজের মনিব ব্যতীত অন্যকে মনিব বানায়, তার উপর মহান আল্লাহ পাক, ফেরেশতাকুল ও সকল মানুষের অভিসম্পাত (ইবনে মাজাহঃ ১/২৬০৯)

এছাড়াও এসেছেঃ (عَنْ أَبِي عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ سَعْدًا، وَأَبَا، بَكْرَةَ وَكُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا يَقُولُ سَمِعَتْ أُذُنَاىَ، وَوَعَى، قَلْبِي مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ مَنِ ادَّعَى إِلَى غَيْرِ أَبِيهِ وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ غَيْرُ أَبِيهِ فَالْجَنَّةُ عَلَيْهِ حَرَامٌ) আবূ উসমান আন-নাহ্‌দী (রহমতুল্লাহি) থেকে বর্ণিততিনি বলেন, আমি সাদ ও আবূ বকরা রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমাকে বলতে শুনেছি এবং তাদের প্রত্যেকেই বলেছেনঃআমার উভয় কান শুনেছে এবং আমার অন্তর মুখস্থ রেখেছে যে, মুহাম্মাদ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সজ্ঞানে নিজের পিতাকে বাদ দিয়ে অন্য লোককে বাপ বলে পরিচয় দেয়, জান্নাত তার জন্য হারাম (ইবনে মাজাহঃ ১/২৬১০, বুখারী শরীফঃ ৪৩২৭, ৬৭৬৭, মুসলিম শরীফ ৬৩, আবূ দাউদ শরীফ ১৪৫৭, ১৫০০, ১৫৫৬, ১৯৮৮৩, ১৯৯৫৩, দারেমীঃ ২৫৩০, ২৮৬০, গায়াতুল মারামঃ ২৬৭)

আরো বলা হয়েছেঃ (عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏مَنِ ادَّعَى إِلَى غَيْرِ أَبِيهِ لَمْ يَرَحْ رَائِحَةَ الْجَنَّةِ وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ خَمْسِمِائَةِ عَامٍ) আবদুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন, রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের পিতাকে বাদ দিয়ে অপর ব্যক্তিকে বাপ বলে পরিচয় দেয়, সে জান্নাতের সুবাসটুকুও পাবে নাঅথচ পাঁচ শত বছরের দূরত্ব থেকে জান্নাতের সুবাস পাওয়া যাবে (ইবনে মাজাহঃ ২৬১১)

এছাড়াও যদি কোন হাশেমি বা আওলাদে রসূল ইসলাম পরিত্যাগ করে মুশরিক, শিক, কাদিয়ানী, রাফেযী, শিয়া ইত্যাদি হয়ে যায় তাহলে সে না সাইয়্যিদ না আহলে বাইত থাকবে। না এ মর্যাদার অধিকারী থাকবে। ইতোপূর্বে এই বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে।

কেননা কুফুরীর কারণে রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের সাথে তার সমস্ত সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং শরীয়তের ফায়সালা অনুযায়ী সে পিতৃ পরিচয়ও দিতে পারবেনা। পবিত্র আল কুরআনে নূহ আলাইহিস সালামের পুত্র কেনানের বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা করা হয়েছেঃ (قَالَ يٰنُوحُ إِنَّهُۥ لَيْسَ مِنْ أَهْلِكَ ۖ إِنَّهُۥ عَمَلٌ غَيْرُ صٰلِحٍ) নিশ্চয় সে (কেনান) আপনার আহলে বাইতের অন্তর্ভুক্ত নয়। সে অবশ্যই অসৎকর্মপরায়ণ (সূরাহ হূদ ১১/৪৬)

১) এ আয়াতাংশের তাফসীরে বলা হয়েছেঃ সে ঈমানের বদলে কুফর গ্রহণ করেছিলআর মুক্তি বা নাজাতের ব্যাপারে যারা কুফরে লিপ্ত তাদের সাথে ঈমানদারের কোন সম্পর্ক থাকতে পারে না (বিস্তাতির দেখুন আরবি তাফসীরে এখানে)।

যদি নূহ আলাইহিস সালামের পুত্র কেনান কুফুরির কারণে সন্তান না থাকে। তাহলে সে-সমস্ত বে-দ্বীনরা কিভাবে নবীজী ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের আওলাদ হতে পারে? তাছাড়া পবিত্র আল কুরআনে আস বিন ওয়ায়েল এর ব্যাপারে মহান আল্লাহ তাআলা বলেনঃ (إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الْأَبْتَرُ) অর্থাৎ, (হে আমার হাবীব ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম) নিশ্চয়ই আপনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারীরাই নির্বংশ। (সূরাহ কাউসারঃ ৩) চিন্তা করুন! আস বিন ওয়াসেল সন্তানের পিতা ছিল অথচ মহান আল্লাহ পাক তাকে নির্বংশ বললেন। কেননা তার সকল আওলাদের মুসলমান হয়ে গেল আর সে কাফের থেকে গেল। ফলে সে তাদের পিতা রইল না আর তারা তার সন্তান রইলেন না।

হাদিস শরীফে এসেছেঃ (عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّهُ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ آلِهٖ وَسَلَّمَ ، أَيْنَ تَنْزِلُ فِي دَارِكَ بِمَكَّةَ‏.‏ فَقَالَ وَهَلْ تَرَكَ عَقِيلٌ مِنْ رِبَاعٍ أَوْ دُورٍ ‏.‏ وَكَانَ عَقِيلٌ وَرِثَ أَبَا طَالِبٍ هُوَ وَطَالِبٌ وَلَمْ يَرِثْهُ جَعْفَرٌ وَلاَ عَلِيٌّ ـ رضى الله عنهما ـ شَيْئًا لأَنَّهُمَا كَانَا مُسْلِمَيْنِ، وَكَانَ عَقِيلٌ وَطَالِبٌ كَافِرَيْنِ، فَكَانَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ لاَ يَرِثُ الْمُؤْمِنُ الْكَافِرَ) উসামা ইবনু যায়দ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি মক্কায় অবস্থিত আপনার বাড়ির কোন স্থানে অবস্থান করবেন? তিনি বললেনঃ আকীল (আলাইহিস সালাম) কি কোনো সম্পত্তি বা ঘর-বাড়ি অবশিষ্ট রেখে গেছে? “আকীল (আলাইহিস সালাম) এবং তালিব হযরত আবূ তালিবের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন, হযরত জাফার (আলাইহিস সালাম) ও আলী (আলাইহিস সালাম) হোন নিকেননা উনারা দুজন তখন ছিলেন মুসলিমআকীল (আলাইহিস সালাম) ও তালিব তখন ছিলেন কাফির (পরে আক্বীল আলাইহিস সালাম মুসলিম হয়ে যান)এ জন্যই উমর ইবনুল খাত্তাব (রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম) বলতেন, মুমিন কাফির এর সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয় না (বুখারি শরীফ আরবি ইবারত ইংরেজি সহ এখানে দেখুন)

এছাড়াও মহান আল্লাহ পাক ও রসূলে পাকের স্পষ্ট বিধান রয়েছে এই বিষয়ে। হাদিস শরীফ এসেছে,রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ দুই মিল্লাতের লোকেরা পরস্পর ওয়ারিস হবে নাকোন মুসলিম কোন কাফেরকে ওয়ারিস করবে না(অর্থাৎ ঈমানদার না হলে আওলাদ বলে গন্য হবেনা)অনুরূপভাবে কোন কাফেরও মুসলিমকে ওয়ারিস করবে নাতারপর তিনি এ আয়াত শরীফ পাঠ করলেনঃ (وَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بَعۡضُهُمۡ اَوۡلِیَآءُ بَعۡضٍ) আর যারা কুফরী করে, তারা একে অপরের বন্ধু বিস্তারিত পাবেন আরবি তাফসীরে এখানে। সুতরাং কাফেররা পরস্পর ওয়ারিস, অভিবাবক হবেকারণ, তারা পরস্পর একে অপরের ওয়ালীএখানেও আল্লাহ্ তাআলা (ولي) শব্দ ব্যবহার করেছেনএটি একটি সাধারণ ও ব্যাপকার্থক শব্দএতে যেমন ওয়ারাসাত বা উত্তরাধিকারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত, তেমনি অন্তর্ভুক্ত বৈষয়িক সম্পর্ক ও পৃষ্ঠপোষকতার বিষয়ও

অতএব, জানা গেল যে, ধর্মের ভিন্নতার কারণে বংশ পরিচয় নষ্ট হয়ে যায়। তাই আওলাদ হতে হলে বংশ ও ধর্ম এক হওয়া শর্ত। শুধু তাই নয় তাদের উপর শরীয়তের বিধি-বিধানও আরোপ করা যায় না। কেননা মুসলিম পিতার কাফের সন্তানরা মিরাস তথা উত্তরাধিকারী অংশ থেকে বঞ্চিত হয়। ভিন্ন ধর্ম অবলম্বনের কারণে কাফের সন্তানকে পিতার কবরস্থানেও দাফন করা যায় না। পিতা তার কাফের সন্তানের কাফন-দাফনের ব্যাবস্থাও করতে পারে না। বরং অনেক মুমিনা মা আছেন যাঁরা কাফের সন্তান থেকে পর্দা করে চলেন। মুশরিকদের সাথে মুমিনা নারীর বিবাহ পর্যন্ত যায়েজ নয় (দেখুন)।

অতঃএব একথাই প্রতীয়মান হল যে, মুসলিম পিতার কাফের সন্তানরা জানাযা, উত্তরাধিকার অংশ, বিবাহ, কাফন-দাফন ইত্যাদিসহ শরীয়তের সকল বিধান থেকে বঞ্চিত। এমনিভাবে যে ব্যক্তি সাইয়্যিদ বা আহলে বাইত না হয়েও নিজেকে তা দাবি করে সে মুরতাদ, সে তো মুসলমানও নয়। সাইয়্যিদ হওয়াতো অনেক দূরের কথা!

এইখানে আরবের কিছু মানুষের লিনএইজ দেওয়া হলো যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত তাদের আওলাদ ও আহলে বাইত হওয়ার ব্যপারে। যেমনঃ বর্তমান জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ। বিস্তারিত পাবেন (এইখানে)

আর নিচের গুলির ব্যপারে সত্য মিথ্যা যাচাই করার দরকার পড়েনি, পড়লে করা যাবে, মূল জিনিস হলো, এইযে কুরাঈশি, আহলে বাইত, আওলাদে রসূল দাবীদার তাদেরও বংশ লতিকা অনলাইনে বিদ্যমান, অথচ মুশরিক দিল্লুর কোন বংশ লতিকা নাই। এতেও প্রমানিত হয় দিল্লুর ফেইক। দুনিয়ার সব কিছুই তার ওয়েবে আছে কেবল বংশ লতিকার বেলায় গালিগালাজ করে অরিজিনাল বংশ পরিচয় দেয় এরা।

কিছু বংশ লতিকা তাদের দাবি অনুসারে পেশ করা হলোঃ

১) ফুরফুরার পীর ছাহেবের নসবনামা

২) সিপাহসালার সৈয়দ নাসিরুদ্দীনের নসবনামা

৩) আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী নসবনামা

৪) শাহ সুফি সৈয়দ মালেকুজ্জামানের নসবনামা

৫) এনায়েতুল্লাহআব্বসি সাহেবের নসবনামা

পরিশেষে একটি আয়াত দিয়ে শেষ করছি, রসূলে পাক ছ্বল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম এবং উনার অনুসারীদের ও কথিত বাবা ও তার অনুসারীদের দ্বীনি আহবান এর মধ্যে কি পরিমাণ তফাৎ তার উল্লেখ করে মহান আল্লাহ পাক বলেনঃ (قُلۡ هٰذِهٖ سَبِیۡلِیۡۤ اَدۡعُوۡۤا اِلَی اللّٰهِ ۟ؔ عَلٰی بَصِیۡرَۃٍ اَنَا وَ مَنِ اتَّبَعَنِیۡ ؕ وَ سُبۡحٰنَ اللّٰهِ وَ مَاۤ اَنَا مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ) (হে নবী ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম) আপনি বলেদিন এটাই আমার (মালিকের) পথ; প্রতিটি মানুষকে আমি আহবান করি সজ্ঞানে প্রমাণ সহকারে, আমি এবং আমার অনুসারীগণও; (আর) মহান আল্লাহ পাক তিনি (সম্পূর্ণরূপে) পবিত্র (মুশরিকরা যা ধারণা করে উনার ব্যপারে তা থেকে) এবং যারা মহান আল্লাহ পাকের সাথে শরীক স্থাপন করে আমি তাদের মধ্যে শামিল নই। (আল কুরআনঃ ১২/১০৮) অথচ বাবার মুরিদেরা ডাকে দলিল বিহীন মনগড়া স্বপ্নের মাধ্যমে, আর আল্লাজীর ব্যপারে আক্বিদাহ রাখে সেইসব মুশরিকদের মতো, নাউযুবিল্লাহ এই হলো নবীর ইসলাম বনাম রাজারবাগীর দ্বীন


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুনঃ

এডমিন

আমার লিখা এবং প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বে আইনি।

0 ফেইসবুক: