মাহমুদুল হক জালীস নামের কথিত ইসলামিক বক্তা ও ভুঁইফোড় সাংবাদিকের ইসলাম বিরোধী মন্তব্যের জবাব
মুসলিম নামধারী ইহুদী এজেন্ট, মাহমুদুল হক জালীস নামের এক ছোকড়া যে নিজেকে সাংবাদিক ও ইসলামিক বক্তা বলে দাবী করে, সে “ছাত্রকে বিয়ে করা সেই শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার” শিরোনামে “আর টিভি”র ফেইসবুক পেইজে শেয়ার করা একিট নিউজে নিম্নোক্ত কমেন্ট করেঃ
লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লাহ বিল্লাহ। দাঁড়ি টুপি লাগিয়ে, নিজেকে ইসলামী বক্তা বলে জাহির করে ইহুদীদের দ্বীন ইসলাম বিরোধী প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে এদেশের এরূপ অসংখ্য নামধারী বক্তা, স্পিকারেরা। এদের নুন্যতম ইসলামিক জ্ঞান পর্যন্ত নাই। দালালী করতে করতে এদের হিতাহিত জ্ঞান পর্যন্ত হারিয়ে গেছে, কি কথা কখন কোথায় বলতেছে, কার উপর যাচ্ছে কোন কিছুই বুঝেনা। জালীসেরা কেনো এমন বক্তব্য দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে বুঝতে এই লিখাটি পড়ুনঃ (যেভাবে টুকরো টুকরো করে দেওয়া হয়েছে দ্বীন ইসলামকে, যার ধ্বংস্তুপে আজ আমরা আছি দাঁড়িয়ে)।
অথচ মুসলমানদের যিনি একমাত্র আদর্শ, একজন মুসলিম যাকে ২৪ ঘন্টা, সারা সপ্তাহ, সারাটি মাস, পুরো বছর, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবনের সকল কাজে যার অনুসরণ বাধ্যতামূলক সেই সর্বশ্রেষ্ট নবী রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবি বয়স মুবারক যখন ২৫, তখন ৪০ বছরের বিধবা মহিলা আম্মাজান খাদিজাতুল কুবরা আলাইহাস সালামকে শাদি মুবারক করেন। রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবি হায়াৎ মুবারক যখন ৫২ তখন ৯ বছরের বালিকা আম্মাজান আয়েশা সিদ্দিকা আলাইহাস সালামকে শাদি মুবারক করেন। এছাড়াও বাকি ১১ জন আম্মাজানদেরও অনেক বয়সের তফাৎ ছিলো রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লামের সাথে। তিনি আমাদের শিখিয়ে গেলেন বিয়ে কি কি নমুনায় করা যাবে, কবে কখন কাকে কাকে, অথচ এই ইহুদী চর জালীস বলেঃ ইসলাম নাকি বিয়ের জন্য স্বামী স্ত্রীর মাঝে সামঞ্জস্যতার বিধান দিয়েছে। এটা লক্ষ না রাখলে অনেক ক্ষেত্রে দাম্পত্য জীবন টিকে না। নাউযুবিল্লাহ!!!
আসুন প্রথমে কুরআন থেকে দেখি, তার এই কথিত মিথ্যা দাবি, “ইসলাম বিয়ের জন্য স্বামী স্ত্রীর মাঝে সামঞ্জস্যতার কোন বিধান দিয়েছে নাকি”?
মহান আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ (وَ الّٰٓیِٴۡ یَئِسۡنَ مِنَ الۡمَحِیۡضِ مِنۡ نِّسَآئِکُمۡ اِنِ ارۡتَبۡتُمۡ فَعِدَّتُهُنَّ ثَلٰثَۃُ اَشۡهُرٍ ۙ وَّ الّٰٓیِٴۡ لَمۡ یَحِضۡنَ ؕ وَ اُولَاتُ الۡاَحۡمَالِ اَجَلُهُنَّ اَنۡ یَّضَعۡنَ حَمۡلَهُنَّ ؕ وَ مَنۡ یَّتَّقِ اللّٰهَ یَجۡعَلۡ لَّهٗ مِنۡ اَمۡرِهٖ یُسۡرًا) তোমাদের যে সব স্ত্রীগণ মাসিক ঋতু আসার বয়স অতিক্রম করেছে তাদের (‘ইদ্দতের) ব্যাপারে যদি তোমাদের সন্দেহ সৃষ্টি হয়, সেক্ষেত্রে তাদের ‘ইদ্দাতকাল তিন মাস, আর যারা (অল্প বয়স্কা হওয়ার কারণে) এখনও ঋতুবতী হয়নি (এ নিয়ম) তাদের জন্যও। আর গর্ভবতী স্ত্রীদের ‘ইদ্দাতকাল তাদের সন্তান প্রসব পর্যন্ত। যে মহান আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করে, মহান আল্লাহ তা’আলা তার কাজ সহজ করে দেন। (আল কুরআন ৬৫/৪)
এইখানে আল্লাহ পাঁক স্পষ্ট করে দিলেন যে, যেসকল মেয়ের মাসিক শুরু হয়নি সেইসব মেয়েদের ইদ্দত হলো ৩ মাস, আর যাদের মাসিক শুরু হয়েছে তাদের ইদ্দিতের সময় হলো ৪ মাস ১০ দিন। (আল কুরআন ২/২৩৪)। এখন একটি মেয়ের মাসিক ৯ বছর বয়সেই শুরু হতে পারে যার প্রমান আমরা পাই আয়েশা সিদ্দিকা আলাইহাস সালাম উনার মুবারক শাদির দিকে দৃষ্টপাত করলে, ৬ বছরে বিয়ে ঠিক হলেও ৯ বছরে উনাদের নিসবতে আযিম হয়। এছাড়াও (হেলথলাইন) অনুসারেও ৮-১৬ বছরের মধ্যে যেকোন সময় এই মাসিক শুরু হতে পারে। জানার বিষয় হলো ১০ বছরের মেয়েকে কি কেউ ১২ বছরের ছেলের নিকট বিয়ে দেবে? নাকি ২০/২৫ এ? তাহলে কি দাঁড়ালো বিষয়টা? বিয়ের মধ্যে বয়সের অনেক গ্যাপ থাকবে, থাকাটাই স্বাভাবিক তাই মহান আল্লাহ পাঁক মহিলাদের ৩ ক্যাটাগরিতে ফেলেছেন ইদ্দতের জন্যে, যারা অপ্রাপ্তবয়স্কা তাদের তিন মাস, যারা প্রাপ্তবয়স্কা তাদের ৪ মাস ১০ দিন, যারা গর্ভবতী তাদের সময় বাচ্চা প্রসব পর্যন্ত। অথচ মাকাল ফল জালীস বলে “ইসলাম বিয়ের জন্য স্বামী স্ত্রীর মাঝে সামঞ্জস্যতার বিধান দিয়েছে” নাউযুবিল্লাহ। ১০০% কুরআন সুন্নাহ বিরোধী আক্বিদাহ ও মন্তব্য।
এছাড়াও দেখি ইসলামের প্রথম সারীর তিন সাহাবীর আমল যাদের দুইজন আবার খোলাফায়ে রাশেদিন ছিলেন।
আসমা বিনতে উমাইস রদ্বিয়াল্লাহু আনহা উনার চেয়ে বয়সে অনেক বড় হযরত সাইয়্যিদুনা জা’ফার ইবনে আবি তালিব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালামকে শাদি করেন, তিনি যখন মুতার যুদ্ধে ৩ পূত্র সন্তান রেখে শহীদ হোন, তখন আসমা বিনতে উমাইস রদ্বিয়াল্লাহু আনহা ইদ্দতের পরে উনার চেয়ে বয়সে অনেক বড় প্রথম খলীফা, সাইয়্যিদুনা হযরত আবু বক্বর সিদ্দিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালামকে শাদি করেন, সেখানে উনার আরেক পূত্র সন্তান জন্ম নেয়, এর পর যখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবু বক্বর সিদ্দিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম অফাৎ লাভ করেন তখন আসমা বিনতে উমাইস রদ্বিয়াল্লাহু আনহা ইদ্দতের পরে উনার প্রথম স্বামীর ছোট ভাই, চতুর্থ খলীফা, সাইয়্যিদুনা হযরত আলী ইবনে আবি তলিব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালামকে শাদি করেন। যার ঘরে আরো দুইজন সন্তান জন্মগ্রহণ করেন। এমনকি উম্মে কুলসুম বিনতে আলী আলাইহাস সালামকে উনার পিতা নিজের চেয়েও বয়সে অনেক বড় দ্বিতীয় খলীফা, সাইয়্যিদুনা হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালামের নিকট বিবাহ দেন।
এছাড়াও সাধারণ সাহাবীদের ১৫/২০ বছরের ডিফরেন্স তো খুবই আম বিষয় ছিলো। অথচ গণ্ডমূর্খ জালীস বলেঃ ইসলাম বিয়ের জন্য স্বামী স্ত্রীর মাঝে বয়সের সামঞ্জস্যতার বিধান দিয়েছে। এটা লক্ষ না রাখলে অনেক ক্ষেত্রে দাম্পত্য জীবন টিকে না। যার জলন্ত প্রমাণ এটা। কিন্তু এই মূর্খ জাহিল বিঁধান টা কোন কিতাবে নাযিল হয়েছে সেটার রেফারেন্স দেয়নি।
এছাড়াও এই জালীস লানতুল্লাহ তার ফেইসবুক প্রফাইলে ছবি অঙ্কন করে আপ করছে, এই অঙ্কন করা ছবির ব্যপারে যে হাদিস শরীফগুলী কুতুবে সিত্তাহ সহ সকল নির্ভরযোগ্য হাদিস শরীফের কিতাবে পাওয়া যায়, তাতে এই ছবি তোলা, বানানো কিয়ামতের মাঠে সবচেয়ে বেশি আযাবের কাজ বলে আখ্যায়িত, যে লোক সামান্য এই ছবির হাদিস অবগত না, হলেও তা মানেনা, সে কীভাবে নিজেকে ইসলামিক বক্তা দাবী করে আমার মাথায়ই ধরেনা।
আমি তাঁকে কলিমা পড়ে তওবা করে ইহুদীদের অনুসরণ পরিত্যাগের আহ্বান করছি, নতুবা তাঁর এই রসূল, উম্মাহাতুল মু’মিনিন, খোলাফায়ে রাশেদিন, সাহাবী ও ইসলাম বিদ্বেষী বক্তব্যের কারণে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে। কারণ তার বক্তব্য স্পষ্ট কুরআন সুন্নাহ বিরোধী, আর কুরআন সুন্নাহ বিরোধী আক্বিদাহ রেখে, আমল করে কেউ মুসলিম থাকতে পারেনা।
সাথে আরেকটি ঘটনা শেয়ার করি তাহলে বুঝতে পারবেন, দাঁড়ি, টুপি, আর সুন্দর মেকাপ মারা মৌলুভি চেহারা দেখে বিভ্রান্ত হবেন না, যার তার অনুসরণ করে ঈমানকে বিপদে ফেলবেন না, যাকে তাকে সম্মানিত দ্বীন ইসলামের ঠিকাদার মনে করবেন না। নিচের ছবিতে দেখুন এই মুল্লার কাজ, সে পর পর ২ কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় মাহমুদা নামের এক গরীব কৃষকের পর্দানশীল নারিকে তালাক দিয়ে দিয়েছে। অথচ এই মুরতাদ আলিম ও নিজেকে মুসলিম ভাবে, অথচ কুরআনের আয়াত মানেনাই, যেখানে মহান আল্লাহ পাঁক বলেনঃ আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেনঃ (يَهَبُ لِمَنْ يَشَاءُ إِنَاثًا وَيَهَبُ لِمَنْ يَشَاءُ الذُّكُورَأَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًا وَإِنَاثًا وَيَجْعَلُ مَنْ يَشَاءُ عَقِيمًا) তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা দান করেন পুত্র সন্তান। অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা করে দেন বন্ধ্যা। (আল কুরআনঃ ৪২/৪৯-৫০)। এছারাও আজকের বিজ্ঞান বলে যে সন্তান ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে সেটা নির্ধারণ হয় বাপের শুক্রাণুর উপর, মায়ের এতে কোন ভূমিকা নাই, দেখতে পারেন। অথচ এইসব মুশরিকেরা না মানে কুরআন না মানে বিজ্ঞান অথচ মুখে দাঁড়ি, মাথায় টুপি, আর গায়ে ইসলামিক লেবাস লাগিয়ে মানুষকে ধোঁকা দিয়েই যাচ্ছে। তাই কাকে ফলো করছেন, কার কথায় আপনি আপনার দ্বীনি আমল আক্বিদাহ ঠিক করছেন, মেনে চলছেন তা হাজারবার যাচাই করে নেবেন। বদ আক্বিদাহ এমন এক জিনিস যা এক সময় প্রকাশিত হবেই।
মহান আল্লাহ পাঁক তিনিই মহাজ্ঞানী, সবচেয়ে বেশি সকল বিষয়ে অবগত, ভুলত্রুটি উনার নিকটেই ক্ষমা চাই।
0 ফেইসবুক: