Wednesday, August 10, 2022

হে ভাই ও বোনেরাঃ আপনারা কি পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করছেন?

ভাই ও বোনেরা মন দিয়ে শোনেন। দ্বীন ইসলামে এমন কিছু বিষয় আছে যেগুলোতে আবেগের কোন স্থান নাই। মহান আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ ( یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا قُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ وَ اَهۡلِیۡکُمۡ نَارًا وَّ قُوۡدُهَا النَّاسُ وَ الۡحِجَارَۃُ عَلَیۡهَا مَلٰٓئِکَۃٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَّا یَعۡصُوۡنَ اللّٰهَ مَاۤ اَمَرَهُمۡ وَ یَفۡعَلُوۡنَ مَا یُؤۡمَرُوۡنَ) “হে ঈমানদারগণ, তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যাতে মোতায়েন আছে পাষাণ হৃদয় কঠোর স্বভাব ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ। মহান আল্লাহ তা’আলা যা আদেশ করেন, তারা তা অমান্য করেন না, আর তারা তাই করেন, যা তাদেরকে করার জন্য আদেশ দেয়া হয়। (আল কুরআন ৬৬/৬)।

এই আয়াতের হুকুম হলো, আপনার কোন আমল, আক্বিদাহ এর কারণে যেনো আপনার পরিবারের কোন সদস্য যাহান্নামিদের অন্তর্ভুক্ত না হয়। আপনার স্বামী/স্ত্রী, মা/বাপ, ভাই/বোন, ছেলে/মেয়ে যেনো এমন কোন গুনাহে না জড়ায় যার কারণে সে জাহান্নামের আগুনের ইন্ধন হবে।

মানুষ অসংখ্য গুনাহ করে, তবে এসবের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জিনা। যার অধিকাংশ সৃষ্টি হয় নারীদের কারণে, কিন্তু গুনাহের দিকে উভয় সমান অপরাধী হয়ে থাকে। (প্রথমে জিনা-ব্যবিচারসম্পর্কেকুরআনসুন্নাহ’র হুকুম আহকাম এবং দুনিয়া ও আখেরাতের শাস্তি সম্পর্কে জেনে নিন) বোনেরা খেয়াল করুন, দুনিয়া দুইদিনের, আপনার বলে চিরস্থায়ী কিছুই নেই, যে মানুষটাকে আপনি আপনার করে রাখতে গিয়ে তাঁর সকল পাপের বোঝা বইতে রাজি হচ্ছেন আজ, সেও আপনার ৩ কথার আর এক দমের বিপরীতে অবস্থান করে। এইসব ঘৃণ্য কাজ পরিত্যাগ করা লাগবে, আপনার আহাল এর ব্যপারে সজাগ থাকুন, তাঁর চাওয়া পাওয়ার ব্যপারে খেয়াল রাখুন, সে কি পছন্দ করে, কি অপছন্দ করে, আপনার থেকে না পেয়ে অন্যের দ্বারা কি পূরণ করতে চায় তা আগ বাড়িয়ে বন্ধুর মতো জানুন, সর্বচ্চো দিয়ে তা পুরনের চেষ্টা করুন, ব্যর্থ হলে নিজ উদ্যগ্যে দ্বীনদার শতিন নিয়ে আসুন, ভুলেও আহালকে পরকীয়ার দিকে, জিনার দিকে ঠেলে দিবেন না।

ভাইয়েরা আমার, আমরা যেনো ভুলেও কোন বেগানা নারীর দিকে দৃষ্টিপাত না করি, আমরা যেনো আমাদের সকল মুহব্বতের কেন্দ্রবিন্দু আমাদের আহলিয়াদের বানাই, আমরা যেনো যেদিকে তাকাই আমাদের আহলিয়াই দেখি। আর কঠিন হলেও, আমাদের কেউ যদি কখনো বুঝে নেই যে আমি আমার আহলিয়ার উপযুক্ত নই, আমি তাঁর শারীরিক, মানসিক, পারিবারিক যেকোন ধরণের বড় হক্ব আদায়ে সক্ষম না, তাহলে আমাদের উচিৎ তাদের সাথে আলোচনা করে ভালো একজন মানুষ খুঁজে তালাক দিয়ে তাঁর বিয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া, আমাদের অবহেলা, অনাদরে যেনো তাঁরা পরকীয়ার মতো জঘন্য অপরাধে জড়িয়ে না পড়েন। মনে রাখতে হবে যে, সংসার কেবল আবেগ দিয়ে চলেনা। এইখানে অনেক চাওয়া পাওয়া জড়িত, বিয়ের মূল উসুল যদি স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিদ্যমান না থাকে তাহলে তা যুলুম হিসেবে গন্য হবে।

আর শুধু আহাল/আহলিয়াই না, আপনার মা হারা বৃদ্ধ পিতা বা বাপ হারা মধ্য বয়সি মায়ের বিষয়েও ইনসাফ করুন, একজন সৎ মা/বাবা খুঁজে দিন, যেনো বৃদ্ধ বয়সে কোন অপকর্মে জড়িয়ে না পড়েন, একজন বৃদ্ধ মানুষ একজন যুবক/যুবতির চেয়ে অনেক বিষয়ে অসহায়। সমাজ, সংসার আর মানুষের গীবত পরনিন্দার তোয়াক্কা না করে আল্লাজির ভয় করুন, আল্লাজির হুকুম পালনে সারা দুনিয়ার বিপরীত হতে হলে হোন। কিয়ামতের মাঠে মহান আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত কোন গীবতকারী পরনিন্দাকারী আপনাকে যাহান্নামের ইন্ধন হওয়া থেকে বাঁচাতে পারবেনা এটা মাথায় রাখতে হবে। মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের হক্ব বোঝার, গ্রহণের ও মানার তৌফিক দিন আমীন।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুনঃ

এডমিন

আমার লিখা এবং প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বে আইনি।

0 ফেইসবুক: