Monday, October 3, 2022

সম্মানিত দ্বীন ইসলামে মূর্তিপূজা হারাম বলায় যুবক গ্রেফতার ও আজকের বাংলাদেশ

বাংলাদেশে এখন কুরআন সুন্নাহ'র কথা বল্লেই চলছে গ্রেফতার। বিশেষ করে তা যদি পাশের শত্রুদেশ ভারতের অনুসারী বাংলাদেশী পুলিশদের সম্মুখে বলা হয়ে থাকে। অদ্ভুত আজ আমার সোনার বাংলা যেখানে কুরআন সুন্নাহ'র কথা বলা অপরাধ।

ব্যপারটা ঠিক এরূপঃ দুদক এর কর্মকর্তা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় গ্রেফতার। মানবাধিকার কর্মী গণহত্যার কথা বলায় গ্রেফতার। পুলিশ চুরির বিরুদ্ধে কথা বলায় গ্রেফতার।

সাম্প্রতিক দেশকাল’র একটি সংবাদঃ (দুর্গাপূজা নিয়ে ফেসবুকে উস্কানিমূলক পোস্ট; যুবক গ্রেপ্তার) ঘাঁটাতে গিয়ে উপরের পোষ্টারটা আবিষ্কার করলাম লোক মারফৎ, যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করিনা। নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলামের দাবী, “কথিত অভিযুক্ত রুবেল নিজের ফেসবুক আইডি থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজাকে কটাক্ষ করে পোস্ট দেয়।

পরে এটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে, বিষয়টি পুলিশের দৃষ্টিগোচর হয়। পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মো. ইয়াসিন রুবেলকে গ্রেপ্তার করে। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এসপি মো. শহীদুল ইসলাম।”

এই হলো বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু মুসলামানদের অবস্থা। যারা আজ ভারতীয় সিন্ডিকেটের হাতে বন্ধি হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় তো খোদ ইসরায়েলের মধ্যে থাকা মুসলমান ও নয় ধর্মীর কথা বলার ব্যপারে। কুরআনের কথা বলার ব্যপারে। সুন্নাহর কথা বলার ব্যপারে।

বাংলাদেশের পুলিশের নিকট জানতে চাচ্ছি কুরআন হাদিসের উদৃতি পেশ করলে কেউ কি অপরাধী হয়ে যায়?

বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ  আইন, ২০১৮ অনুযায়ীঃ “ইয়াবা, সিসা, কোকেন, হেরোইন ও পেথিড্রিন জাতীয় মাদকের ব্যবহার, সেবন, বহন, আমদানি-রপ্তানি বা বাজারজাত করার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।” এখন কেউ যদি এই দলিলের উপর ভিত্তি করে মাদকদ্রব্যের ব্যবসা ও সেবন বাংলাদেশে নিষিদ্ধ বলে ফেইসবুকে পোষ্ট দেয় তাহলে এর জন্য পোষ্টদাতা কি দায়ি না আইন?

যদি আইন হয়ে থাকে তাহলে যে মুসলিম যুবক কুরআন হাদিসের উদৃতি দিয়েছে সেটার দায় ঐ ছেলের হবে কেন? বাংলাদেশ পুলিশের উচিৎ কুরআন হাদিস ব্যান করে দেওয়া কারণ কুরআন হাদিস ভরাই রয়েছে মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে, মুশরিক হিন্দুদের বিষয়ে। তারা কি এখন সেটা করতে পারবে?

মহান আল্লাহ পাঁক নির্দেশ দিচ্ছেনঃ وَ جَاهِدُوۡا فِی اللّٰهِ حَقَّ جِهَادِهٖ ؕ هُوَ اجۡتَبٰىکُمۡ وَ مَا جَعَلَ عَلَیۡکُمۡ فِی الدِّیۡنِ مِنۡ حَرَجٍ ؕ مِلَّۃَ اَبِیۡکُمۡ اِبۡرٰهِیۡمَ ؕ هُوَ سَمّٰىکُمُ الۡمُسۡلِمِیۡنَ ۬ۙ مِنۡ قَبۡلُ وَ فِیۡ هٰذَا لِیَکُوۡنَ الرَّسُوۡلُ شَهِیۡدًا عَلَیۡکُمۡ وَ تَکُوۡنُوۡا شُهَدَآءَ عَلَی النَّاسِ ۚۖ فَاَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتُوا الزَّکٰوۃَ وَ اعۡتَصِمُوۡا بِاللّٰهِ ؕ هُوَ مَوۡلٰىکُمۡ ۚ فَنِعۡمَ الۡمَوۡلٰی وَ نِعۡمَ النَّصِیۡرُ) তোমরা মহান আল্লাহ তাআলার পথে জিহাদ কর যেভাবে জিহাদ করা উচিৎ। তিনি তোমাদেরকে পছন্দ করেছেন। এবং দ্বীনের ব্যাপারে তিনি তোমাদের উপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি। তোমরা তোমাদের পিতা ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের ধর্মে কায়েম থাক। মহান আল্লাহ তা’আলা তোমাদের নাম রেখেছেন ‘মুসলিম’ পূর্বেও, এবং এই কিতাবেও (ঐ নামই দেয়া হয়েছে) যাতে রসূল ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের জন্য সাক্ষী হোন আর তোমরা সাক্ষী হও মানব জাতির জন্য। কাজেই তোমরা নামায প্রতিষ্ঠা কর, যাকাত দাও আর মহান আল্লাহ তাআলাকে আঁকড়ে ধর। তিনিই তোমাদের অভিভাবক। কতই না উত্তম অভিভাবক আর কতই না উত্তম সাহায্যকারী! (আল হাজ্জ ২২/৭৮)

আসুন দেখি আমাদের পিতা ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের ধর্মে কায়েম থাকার যে নির্দেশ দিয়েছেন মহান আল্লাহ পাঁক, সেটা কেমন ছিলো?

ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের দ্বীনের শুরুর ঘটনা আল্লাহ পাঁক হুবুহু তুলে ধরেন আল কুরআনে এইভাবেঃ (فَجَعَلَهُمۡ جُذٰذًا اِلَّا کَبِیۡرًا لَّهُمۡ لَعَلَّهُمۡ اِلَیۡهِ یَرۡجِعُوۡنَ) তারপর তিনি (ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম) মূর্তিগুলোকে টুকরো টুকরো করে দিলেন, (তবে) ওগুলোর বড়টি ছাড়া, যাতে (মূর্তি) পূজারীরা ওটার প্রতিই মনোযোগী হয়। (সূরা আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম ২১/৫৮) এছাড়াও আমাদের যিনি আক্বা রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম তিন কি করেছেন তাঁর নমুনাও দেখা দরকার। যেমন আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতঃ (মক্কা বিজয়ের দিন) রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম যখন মক্কা শরীফ প্রবেশ করলেন, তখন কা‘বা ঘরের চারপাশে তিনশ’ ষাটটি মূর্তি ছিল। তখন তিনি উনার হাতের ছড়ি দিয়ে এগুলোকে ঠোকা দিতে লাগলেন এবং বলতে লাগলেন, (وَ قُلۡ جَآءَ الۡحَقُّ وَ زَہَقَ الۡبَاطِلُ ؕ اِنَّ الۡبَاطِلَ کَانَ زَہُوۡقًا) ‘সত্য এসেছে আর মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। মিথ্যা তো বিলুপ্ত হওয়ারই জন্য’ (বানী ইসরাঈল ১৭/৮১)। ‘সত্য এসেছে আর অসত্য না পারে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে এবং না পারে পুনরাবৃত্তি করতে’ (বুখারী শরীফ ৪৭২০)। এছাড়াও রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “কিয়ামত আসবে না, যে পর্যন্ত না আমার উম্মতের কিছু গোত্র মূর্তিপূজারীদের সাথে মিলিত হবে এবং আমার উম্মতের কিছু গোত্র মূর্তিপূজা করবে।” (আবূ দাঊদ ৪২৫৪)।

আজ বাংলাদেশের পুলিশদের দিকে তাকালে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে এরা নিজেরাই ডেকেডুকে কিয়ামত নিয়ে আসবে মূর্তিপূজারীদের সাথে মিলিত হয়ে। আমি জানি এতেই এদের অন্তর তুষ্ট হবেনা কারণ এরা পুরাই নাপাক হয়ে আছে। তাই তাদের নাপাকি দূর করতে নিম্নোক্ত আয়াত শরীফগুলি তুলে ধরা হলোঃ

মহান আল্লাহ পাঁক, আল কুরআনে বলতেছেনঃ ( یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّمَا الۡمُشۡرِکُوۡنَ نَجَسٌ فَلَا یَقۡرَبُوا الۡمَسۡجِدَ الۡحَرَامَ بَعۡدَ عَامِهِمۡ هٰذَا ۚ وَ اِنۡ خِفۡتُمۡ عَیۡلَۃً فَسَوۡفَ یُغۡنِیۡکُمُ اللّٰهُ مِنۡ فَضۡلِهٖۤ اِنۡ شَآءَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ) হে ঈমানদারগণ, নিশ্চয়ই মূর্তিপুজারিরা নাপাক, সুতরাং তারা যেন এ বছরের পর মাসজিদে হারামের নিকট না আসে। (সূরাহ আত-তাওবা ৯/২৮) এইখানে সমস্থ মূর্তিপুজারিকে নাপাক বলে প্রমান দেওয়া হয়েছে সেটা যে ধর্মের-ই হোক, যারা মহান আল্লাহ তা’আলার সাথে শিরক করে তাদের ব্যপারে মুসলিমদের প্রতি নির্দেশ হলো এরা যেনো মসজিদের ভেতর প্রবেশ না করে।

জানার বিষয় হলো বাংলাদেশের পুলিশ কি এখন কুরআনের এই আয়াত পাঠ করাঃ ইমাম, শোননে ওয়ালা মুসুল্লি, প্রচার করা দাঈ, এর উপর ঈমান রাখা মুসলিমদের জেলে ঢুকিয়ে দেবে নাকি কুরআনকে ব্যান করে দিবে?

মহান আল্লাহ তা’আলা আল কুরআনে আরো বলেনঃ ( ذٰلِکَ ٭ وَ مَنۡ یُّعَظِّمۡ حُرُمٰتِ اللّٰهِ فَهُوَ خَیۡرٌ لَّهٗ عِنۡدَ رَبِّهٖ ؕ وَ اُحِلَّتۡ لَکُمُ الۡاَنۡعَامُ اِلَّا مَا یُتۡلٰی عَلَیۡکُمۡ فَاجۡتَنِبُوا الرِّجۡسَ مِنَ الۡاَوۡثَانِ وَ اجۡتَنِبُوۡا قَوۡلَ الزُّوۡرِ) হে হাজীগণ, “তোমরা মূর্তিদের অপবিত্রতা বর্জন কর আর মিথ্যে কথা পরিহার কর”। (সূরাহ হাজ্জ ২২/৩০) আয়াতের ব্যখ্যায় এসেছেঃ رِجس এর অর্থ অপবিত্রতা। এখানে কাঠ, লোহা বা অন্য যে কোন জিনিসের তৈরী মূর্তিকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, মহান আল্লাহ তা’আলা ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করা অপবিত্রতা এবং মহান আল্লাহ তা’আলার ক্রোধ ও অসন্তুষ্টির কারণ। অতএব এ থেকে দূরে থাকো। অর্থাৎ যেখানে মূর্তিপূজা হবে, এর ত্রিসীমানায় ও যেওনা নাহলে তোমাদের উপর লানত পড়বে। আয়াতের হাক্বিকি অর্থ হচ্ছে গিয়ে, মূর্তিপূজা থেকে এমনভাবে দূরে থাক যেমন দুৰ্গন্ধময় ময়লা আবর্জনা থেকে মানুষ নাকে কাপড় দিয়ে দূরে সরে আসে। অনুরূপভাবে মূর্তিপূজা থেকে দূরে থাক, কারণ তা স্থায়ী শাস্তির কারণ।

এখন কুরআন সুন্নাহর অনুসারী কোন মুসলিম তাঁর অন্য দ্বীনি ভাইকে হিন্দুদের পুজার সময় যদি স্বরন করিয়ে দেয় যে তোমরা এর ধারে কাছেও যেওনা ইহা নাপাক, অপবিত্র লানতের কারণ তাহলে বাংলাদেশের পুলিশ কি এখন কুরআনের এই আয়াত পাঠ করাঃ ইমাম, শোননে ওয়ালা মুসুল্লি, প্রচার করা দাঈ, এর উপর ঈমান রাখা মুসলিমদের জেলে ঢুকিয়ে দেবে নাকি কুরআনকে ব্যান করে দিবে?

মহান আল্লাহ তা’আলা আল কুরআনে আরো বলেনঃ (اِنَّکُمۡ وَ مَا تَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ حَصَبُ جَهَنَّمَ ؕ اَنۡتُمۡ لَهَا وٰرِدُوۡنَ) হে মুশরিকেরা “নিশ্চয় তোমরা এবং মহান আল্লাহ তা’আলার পরিবর্তে তোমরা যেসব (মূর্তিদের) ইবাদাত কর সেগুলোও তো জাহান্নামের ইন্ধন (হবে); তোমরা সবাই তাতে প্ৰবেশ করবে। (সূরাহ আম্বিয়া ২১/৯৮) এই আয়াতটি মক্কার মুশরিকদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে; যারা লাত, মানাত, উয্যা ও হুবালের পূজা করত। এরা ছিল সব পাথরের তৈরী মূর্তি, যা ছিল জড়, অচেতন ও জ্ঞানহীন। সেই কারণে আয়াতে مَا تَعبُدُون শব্দ ব্যবহার হয়েছে। আর আরবী ভাষায় مَا শব্দটি জ্ঞানহীনদের জন্যই ব্যবহার হয়। অর্থাৎ বলা হচ্ছে যে, তোমরা ও তোমাদের পূজ্যরা যাদের মূর্তি গড়ে তোমরা পূজা কর, সকলেই জাহান্নামের ইন্ধন হবে। পাথরের গড়া মূর্তিগুলির যদিও কোন দোষ নেই; কারণ তারা প্রাণহীন জড়পদার্থ, যাদের জ্ঞান বা অনুভূতি কিছুই নেই - তবুও তাদেরকেও পূজারীদের সঙ্গে জাহান্নামে দেওয়া হবে। শুধু মুশরিকদেরকে এই বুঝিয়ে অধিক অপমান ও লাঞ্ছিত করার জন্য যে, তোমরা যাদেরকে নিজেদের ভরসাস্থল মনে করতে, তারাও তোমাদের সাথে জাহান্নামের ইন্ধনে পরিণত হয়েছে।

এখন কুরআন সুন্নাহর অনুসারী কোন মুসলিম তাঁর অন্য দ্বীনি ভাইকে হিন্দুদের পুজার সময় যদি স্বরন করিয়ে দেয় যে তোমরা এর ধারে কাছেও যেওনা ইহা নাপাক, অপবিত্র লানতের, জাহান্নামের ইন্ধন, তাহলে বাংলাদেশের পুলিশ কি এখন কুরআনের এই আয়াত পাঠ করাঃ ইমাম, শোননে ওয়ালা মুসুল্লি, প্রচার করা দাঈ, এর উপর ঈমান রাখা মুসলিমদের জেলে ঢুকিয়ে দেবে নাকি কুরআনকে ব্যান করে দিবে?

মহান আল্লাহ তা’আলা আল কুরআনে আরো বলেনঃ (ا فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِیۡ وَقُوۡدُهَا النَّاسُ وَ الۡحِجَارَۃُ ۚۖ اُعِدَّتۡ لِلۡکٰفِرِیۡنَ) হে মানুষেরা, “(দোযখের) সেই আগুনকে ভয় কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ এবং পাথর’(এর তৈরি পূজনীয় মূর্তিরা), যা প্রস্তুত রয়েছে কাফেরদের জন্য।” (সূরাহ বাক্বারা ২/২৪) দুনিয়াতে মূর্তিপূজারিরা যাদের পূজা করত, পাথরের তৈরি সেই মূর্তিগুলোও জাহান্নামের ইন্ধন হবে বলে মহান আল্লাহ পাঁক ধমকি দিয়েছেন। আর জাহান্নামের আগুন সম্পর্কে হাদীস শরীফে এসেছে, “তোমাদের এ আগুন জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের এক ভাগ। সাহাবায়ে কিরাম বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম! এ এক ভাগ দিয়ে শাস্তি দিলেই তো যথেষ্ট হতো। তখন রসূলাল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বললেন, জাহান্নামের আগুন তোমাদের আগুনের তুলনায় উনসত্তর গুণ বেশী উত্তপ্ত (বুখারী শরীফ ৩২৬৫, মুসলিম শরীফ ২৪৮৩)

এখন কুরআন সুন্নাহর অনুসারী কোন মুসলিম তাঁর অন্য দ্বীনি ভাইকে হিন্দুদের পুজার সময় যদি স্বরন করিয়ে দেয় যে তোমরা এর ধারে কাছেও যেওনা ইহা জাহান্নামের ইন্ধন হবে, এর স্থান হবে জাহান্নামের উত্তপ্ত আগুনে যা উনসত্তর গুণ বেশী উত্তপ্ত, তাহলে বাংলাদেশের পুলিশ কি এখন কুরআনের এই আয়াত পাঠ করাঃ ইমাম, শোননে ওয়ালা মুসুল্লি, প্রচার করা দাঈ, এর উপর ঈমান রাখা মুসলিমদের জেলে ঢুকিয়ে দেবে নাকি কুরআনকে ব্যান করে দিবে?

মহান আল্লাহ তা’আলা আল কুরআনে আরো বলেনঃ (وَ اِذۡ وٰعَدۡنَا مُوۡسٰۤی اَرۡبَعِیۡنَ لَیۡلَۃً ثُمَّ اتَّخَذۡتُمُ الۡعِجۡلَ مِنۡۢ بَعۡدِهٖ وَ اَنۡتُمۡ ظٰلِمُوۡنَ) আর স্মরণ কর, যখন আমরা মূসা আলাইহিস সালামের সাথে চল্লিশ রাতের অঙ্গিকার করেছিলাম, উনার (চলে যাওয়ার) পর তোমরা গরুর বাছুরের (মূর্তি বানিয়ে তাকে উপাস্যরূপে) গ্রহণ করেছিলে; আর বাস্তবে তোমরা ছিলে যালিম। (সূরাহ বাক্বারা ২/৫১) আয়াতের ব্যখায় এসেছে, মূসা আলাইহিস সালাম যখন মহান আল্লাহ তা’আলার নির্দেশে তূর পাহাড়ে ৪০ দিন অবস্থান করেন, তখন উনার অনুপস্থিতীর সুযোগে ইবলিশ এর ওয়াস ওয়াসায় সামেরি নামক জাদুকর সোনা-রূপা দিয়ে গরুর বাছুরের একটি প্রতিমূর্তি তৈরী করলো এবং তার কাছে পূর্ব থেকে সংরক্ষিত জিবরীল আলাইহিস সালাম-এর ঘোড়ার পায়ের খুরের তলার কিছু মাটি প্রতিমূর্তির ভিতরে ঢুকিয়ে দেয়ায় সেটি হাম্বা শব্দ করতে থাকলো। আর বনী ইসরাঈলিরা তারই পূজা করতে শুরু করে দিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে মহান আল্লাহ তাআলা তাদের হাক্বিকত প্রকাশ করে বলেন বাস্তবে তোমরা ছিলে যালিম।

এখন কুরআন সুন্নাহর অনুসারী কোন মুসলিম তাঁর অন্য দ্বীনি ভাইকে হিন্দুদের পুজার সময় যদি স্বরন করিয়ে দেয় যে তোমরা কি মূসা আলাইহিস সালামের কওমের মতো হয়ে যাবে যারা তাদের নবীর অনুপস্থিতীতে দ্বীন থেকে সরে গিয়ে বাছুরের মূর্তির পূজায় লিপ্ত হয়ে যালিমে পরিণত হয়েছিল। তাহলে বাংলাদেশের পুলিশ কি এখন কুরআনের এই আয়াত পাঠ করাঃ ইমাম, শোননে ওয়ালা মুসুল্লি, প্রচার করা দাঈ, এর উপর ঈমান রাখা মুসলিমদের জেলে ঢুকিয়ে দেবে নাকি কুরআনকে ব্যান করে দিবে?

মহান আল্লাহ তা’আলা আল কুরআনে আরো বলেনঃ ( وَ اِذۡ قَالَ اِبۡرٰهِیۡمُ رَبِّ اجۡعَلۡ هٰذَا الۡبَلَدَ اٰمِنًا وَّ اجۡنُبۡنِیۡ وَ بَنِیَّ اَنۡ نَّعۡبُدَ الۡاَصۡنَامَ) আর স্মরণ করুন, যখন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম বলেছিলেন, হে আমার রব! (পবিত্র) এ শহরকে নিরাপদ করুন এবং আমাকে ও আমার আওলাদ-দেরকে মূর্তিপূজা’র (কাছ) থেকে দূরে রাখুন। (সূরা ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম ১৪/৩৫) আয়াতের ব্যখায় এসেছে, ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম দোয়া করেনঃ “আমাকে ও আমার সন্তান-সন্ততিকে মূর্তিপূজা থেকে বাঁচিয়ে রাখুন অথচ সমস্থ নবীগণ নিস্পাপ, মাসুম, মূর্তিপূজার মতো জঘন্য শিরক এ লিপ্ত হওয়া তো ১০০% অসম্ভব উনাদের জন্যে। কিন্তু এর পরেও ইবরাহীম আলাইহিস সালাম দোআ করতে গিয়ে নিজেকেও অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এর কারণ হলো, স্বভাবজাত ভীতির প্রভাবে নবীগণ সর্বদা শংকা অনুভব করতেন এবং উনার সন্তান-সন্ততিকে মূর্তিপূজা থেকে বাঁচানোর দোআ করা। সন্তানদেরকে এর গুরুত্ব বোঝাবার জন্য নিজে নিষ্পাপ হয়েও নিজেকে দোআয় শামিল করে নিয়েছেন। আর মহান আল্লাহ তা’আলা স্বীয় বন্ধুর দো'আ কবুল করেন। ফলে উনার সন্তানরা শির্ক ও মূর্তিপূজা থেকে নিরাপদ থাকে। (তাবারী শরীফ; কুরতুবী শরীফ) ইবন কাসীর রহমতুল্লাহ বলেন, “তবে উনার বংশধরদের মধ্যে মূর্তিপূজা হবে না এমনটি বলা হয়নি এবং ইবরাহীম আলাইহিস সালামও এমন দোআ করেননি। কারণ, মক্কাবাসীরা সাধারণভাবে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এরই বংশধর। তাদের মধ্যে মূর্তিপূজা বিদ্যমান ছিল। তাই প্রত্যেক দো'আকারীর উচিত তার নিজের ও পিতামাতা ও তার সন্তান-সন্তুতিদের জন্য মূর্তিপূজা বিরোধী এই দো'আ করা। (ইবন কাসীর)

এখন কুরআন সুন্নাহর অনুসারী কোন মুসলিম তাঁর অন্য দ্বীনি ভাইকে হিন্দুদের পুজার সময় যদি স্বরন করিয়ে দেয় যে তোমরা তোমাদের মিল্লাতের পিতা ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের অনুসরণ করো, মূর্তিপূজা নামক শিরক নাপাকি কাজ থেকে বেঁচে থাকার দোয়া করো। তাহলে বাংলাদেশের পুলিশ কি এখন কুরআনের এই আয়াত পাঠ করাঃ ইমাম, শোননে ওয়ালা মুসুল্লি, প্রচার করা দাঈ, এর উপর ঈমান রাখা মুসলিমদের জেলে ঢুকিয়ে দেবে নাকি কুরআনকে ব্যান করে দিবে?

মহান আল্লাহ তা’আলা আল কুরআনে আরো বলেনঃ (اَلَمۡ تَرَ اِلَی الۡمَلَاِ مِنۡۢ بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ) আপনি কি মূসা আলাইহিস সালামের পর বনী ইসরাঈলের প্রধানদেরকে দেখননি? (সূরা বাক্বারা ২/২৮৬) ইবনে কাসীর রহমতুল্লাহ সহ অন্যান্য মুফাসসিরগণ যে ঘটনা বর্ণনা করেছেন তার সার কথা হল, বানী-ইস্রাঈল মূসা আলাইহিস সালামের পর কিছুকাল পর্যন্ত সঠিক পথেই ছিল। তারপর তাদের মধ্যে বিমুখতা এলে তারা দ্বীনে নিজের মনমতো যোগ বিয়োগ করলো এমন কি মূর্তিপূজার মতো জঘন্য শিরক শুরু করে দিল। তাদের মধ্যে বিদ্যমান নবীগণও তাদেরকে বাধা দিলেন, কিন্তু তারা অবাধ্যতা ও শিরক থেকে বিরত হল না। ফলে মহান আল্লাহ তা’আলা তাদের শত্রুদেরকে তাদের উপর আধিপত্য দান করলেন। তারা ওদের অঞ্চল ওদের কাছ থেকে কেড়ে নিল এবং ওদের মধ্য থেকে বহু সংখ্যক মানুষকে বন্দী করল। আর তাদের মধ্যে নবী আগমনের ধারাবাহিকতাও বন্ধ হয়ে গেল। নাউযুবিল্লাহ!!!

এখন কুরআন সুন্নাহর অনুসারী কোন মুসলিম তাঁর অন্য দ্বীনি ভাইকে হিন্দুদের পুজার সময় যদি স্বরন করিয়ে দেয় যে তোমরা মূসা আলাইহিস সালামের প্রস্থানের পরে যেরূপ উনার কওম মূর্তিপূজায় লিপ্ত হয়েছিলো অনুরূপ করনা নাহলে তোমাদের উপরও মহান আল্লাহ তা’আলা ভারতীয় শত্রুদেরকে আধিপত্য দান করে দিতে পারেন, বনি ইসরায়েলের মতো তারাও তোমাদের অঞ্চল তোমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারে, মূর্তিপূজা নামক শিরক নাপাকি কাজ থেকে বেঁচে না থাকার ফলে। তাহলে বাংলাদেশের পুলিশ কি এখন কুরআনের এই আয়াত পাঠ করাঃ ইমাম, শোননে ওয়ালা মুসুল্লি, প্রচার করা দাঈ, এর উপর ঈমান রাখা মুসলিমদের জেলে ঢুকিয়ে দেবে নাকি কুরআনকে ব্যান করে দিবে?

মহান আল্লাহ তা’আলা আল কুরআনে আরো বলেনঃ (قُلۡ یٰۤاَهۡلَ الۡکِتٰبِ تَعَالَوۡا اِلٰی کَلِمَۃٍ سَوَآءٍۢ بَیۡنَنَا وَ بَیۡنَکُمۡ اَلَّا نَعۡبُدَ اِلَّا اللّٰهَ وَ لَا نُشۡرِکَ بِهٖ شَیۡئًا) আপনি বলুন, হে ইহুদী ও নাসারাগণ! এসো সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে অভিন্ন; (আর তা হচ্ছে এই যে) আমরা মহান আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত অন্য কারো উপাসনা করব না, কোন কিছুকেই উনার অংশীদার (সাব্যস্থ) করব না। (সূরা ইমরান আলাইহিস সালাম ৩/৬৪) অর্থাৎ আমরা সবাই না কোন মূর্তিকে, না ক্রুশকে, না আগুনকে এবং না অন্য কোন কিছুকে মহান আল্লাহ তা’আলার সাথে শরীক করবো বরং কেবলমাত্র এক মহান আল্লাহ তা’আলারই ইবাদত করব। আর এটাই ছিল প্রত্যেক নবীর দ্বীনের দাওয়াত।

এখন কুরআন সুন্নাহর অনুসারী কোন মুসলিম তাঁর অন্য দ্বীনি ভাইকে হিন্দুদের পুজার সময় যদি স্বরন করিয়ে দেয় যে তোমরা তোমাদের দ্বীনের মূলনীতির উপর ইস্তিকামত থাকো, মূর্তিপূজা নামক শিরক নাপাকি কাজ থেকে বেঁচে থাক। তাহলে বাংলাদেশের পুলিশ কি এখন কুরআনের এই আয়াত পাঠ করাঃ ইমাম, শোননে ওয়ালা মুসুল্লি, প্রচার করা দাঈ, এর উপর ঈমান রাখা মুসলিমদের জেলে ঢুকিয়ে দেবে নাকি কুরআনকে ব্যান করে দিবে?

মহান আল্লাহ তা’আলা আল কুরআনে আরো বলেনঃ ( اِنۡ یَّدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِهٖۤ اِلَّاۤ اِنٰثًا ۚ وَ اِنۡ یَّدۡعُوۡنَ اِلَّا شَیۡطٰنًا مَّرِیۡدًا) তারা মহান আল্লাহ তাআলাকে ছেড়ে শুধু কতিপয় নারীমূর্তির পূজা করে, এবং তারা (তো) কেবল খোঁদাদ্রোহী শয়তানের পূজা করে। (সূরা নিসা ৪/১১৭) إِنَاثٌ বলা হয়ে থাকে সেইসব মূর্তিদের যারা লিঙ্গের দিক দিয়ে হয় নারী। যেমন, আরবের মুশরিকদের দেবি উয্যা, মানাত, নায়েলা ইত্যাদি। এর পর বলা হয়েছে মূর্তি, বা অন্য কোন সত্তার ইবাদত করার মানেই হল প্রকৃতার্থে শয়তানের ইবাদত করা। কারণ, শয়তানই মানুষকে মহান আল্লাহ তা’আলা থেকে সরিয়ে অন্যের আস্তানা ও চৌকাঠে সিজদায় ঝুঁকিয়ে দেয়।

এখন কুরআন সুন্নাহর অনুসারী কোন মুসলিম তাঁর অন্য দ্বীনি ভাইকে যদি হিন্দুদের দুর্গা, কালি পূজার সময় স্বরন করিয়ে দেয় যে তোমরা তোমাদের দ্বীনের মূলনীতির উপর ইস্তিকামত থাকো, এইসব নারী মূর্তির পূজা নামক শিরক নাপাকি আর শয়তানের পূজা থেকে বেঁচে থাক। তাহলে বাংলাদেশের পুলিশ কি এখন কুরআনের এই আয়াত পাঠ করাঃ ইমাম, শোননে ওয়ালা মুসুল্লি, প্রচার করা দাঈ, এর উপর ঈমান রাখা মুসলিমদের জেলে ঢুকিয়ে দেবে নাকি কুরআনকে ব্যান করে দিবে?

আসলে চাইলে আরো অনেক উদৃতি পেশ করা যায় আল কুরআন থেকে কিন্তু তখন আলোচনা বিশাল হয়ে যাবে কারণ প্রায় ১৫৫ যায়গায় মুশরিকদের পূজনীয় মূর্তির ব্যপারে আল কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে আমাদের জন্য।

আর মুশরিকদের পূজনীয় এইসব মূর্তি বিষয়ে রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ তথা “ক্বওল এবং ফেএল” যা হাদিস শরীফে পাওয়া যায় তা হচ্ছে, “আমর ইবনু ‘আবাসাহ আস-সুলামী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত হাদীস। তিনি বলেন, জাহিলী যুগে আমি আমার সম্প্রদায়ের ইলাহগুলো থেকে বিমুখ ছিলাম। একদা আমি নবী করীম ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম যে, তিনি আত্মগোপনে আছেন। আমি গোপনে খোঁজ নিয়ে উনার নিকট প্রবেশ করলাম। আমি উনাকে সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কে? তিনি বললেনঃ নবী। আমি বললাম, নবী কি? তিনি বললেনঃ মহান আল্লাহ তা’আলার রসূল। আমি বললাম, আপনাকে কে পাঠিয়েছেন? তিনি বললেনঃ মহান আল্লাহ তা’আলা। আমি বললাম, আপনাকে কি দিয়ে প্রেরণ করেছেন? তিনি বললেনঃ “এ আদেশ দিয়ে প্রেরণ করেছেন যে, আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখতে হবে, রক্ত সংরক্ষণ করতে হবে, রাস্তা নিরাপদ করতে হবে, (যেকোন) মূর্তি ভেঙ্গে ফেলতে হবে এবং এক আল্লাহ তা’আলার ইবাদাত করতে হবে উনার সাথে কাউকে শরীক (মূর্তিপূজা) করা যাবে না।” আমি বললাম, আপনাকে যা দিয়ে প্রেরণ করেছেন তাতো অত্যন্ত ভাল। আমি আপনাকে সাক্ষী রেখে বলছি যে, আমি আপনার উপর ঈমান এনেছি এবং আপনাকে সত্য বলে ঘোষণা করছি। আপনি বলুন, আমি কি আপনার সাথে অবস্থান করবো? তিনি বললেনঃ তুমি দেখছো যে, আমি যা নিয়ে আগমন করেছি তা লোকেরা অপছন্দ করেছে। কাজেই তুমি তোমার পরিবারের কাছেই থাকো। অতঃপর যখন তুমি আমার সম্পর্কে জানবে যে, আমি আমার অবস্থান থেকে বেরিয়েছি তখন আমার কাছে এসো।” (আহমদ হা/১৭০১৬ - ইমাম যাহাবী বলেনঃ সনদ সহীহ) এছাড়াও নবী করীম ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেনঃ “কোন মূর্তি দেখলেই তা নষ্ট করে ফেলো (মুসলিম শরীফ ২২৮৭, আবূ দাঊদ শরীফ ৩২২০)

অথচ এরূপ তরতাজা হাদিস শরীফের উপর মুসলমান আমল করছেনা, বরং হাদিসের হুকুম পাশ কাঁটিয়ে অন্য মুসলিমদের ঈমান বাঁচাতে নসিহত করছে এতেই ভারত নিয়ন্ত্রিত বাঙ্গালী পুলিশের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। এরা যখন দেখবে জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতঃ তিনি মক্কা বিজয়ের বছর নবী করীম ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মক্কায় বলতে শুনেছেন, ‘নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তা’আলা মদ, মৃতপ্রাণী, শূকর ও মূর্তির ক্রয়-বিক্রয় হারাম করেছন’ (আবু দাউদ শরীফ ৩৪৮৬) তখন কি এরা আবু দাউদ শরীফ মওজুদ থাকা ইসলামিক ফাউন্ডেশন বন্ধ করে দেবে? পারবে?

অথচ রসূলে পাঁক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীদের স্বরন করিয়ে দেন আল কুরআনের আয়াত পাঠ করেঃ স্মরণ করুন, ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম বলেছিলেনঃ হে আমার প্রতিপালক! এই নগরীকে নিরাপত্তাময় করে দিন এবং আমাকে ও আমার সন্তান-সন্ততিকে মূর্তি পূজা থেকে দূরে রাখুন। হে আমার রব! এসব মূর্তি অনেক মানুষকে পথভ্রষ্ট করেছে; তাই যে ব্যক্তি আমার অনুসরণ করবে সে তো আমার দলভুক্ত। (বুখারি শরীফ ২৫/৪৬) এখন কি একজন মুমিনের পক্ষে অন্য কোন মুমিনকে পথভ্রষ্ট করার কোন সুযোগ আছে?

এর চেয়েও ভয়ানক বিষয় হলো, আজকের এই দিন সম্পর্কে সাওবান রদ্বিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিতঃ রসূলে পাঁক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি সবচেয়ে যাদের বেশি ভয় করি তারা হচ্ছে নেতা ও এক শ্রেণীর আলেম সমাজ। অচিরেই আমার উম্মতের কিছু লোক মূর্তিপূজা করবে। আর অতি শীঘ্রই আমার উম্মতের কিছু লোক হিন্দু বা বিজাতিদের সাথে মিশে যাবে’ (ইবনে মাজাহ শরীফ ৩৯৫২)। আজকে যদি আমরা আওয়ামীলীগের মধ্যে থাকা মুসলিম দাবীদার নেতাদের দিকে তাকাই তাহলে দেখবো যে এই হাদিস শরীফের ১০০% মিসদ্বাক হয়ে গেছে এরা। যেমন নিচের ভিডিওতে দেখুন শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেলের অবস্থা?

আর হাদিস শরীফে সবচেয়ে ভয়ানক যে জিনিসটা এসেছে তা হচ্ছে, আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি রসূলে পাঁক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ “নিশ্চয়ই যারা এসব ছবি-মূর্তি তৈরি করে, ক্বিয়ামতের দিন তাদের কঠিন শাস্তি দেয়া হবে। তাদের বলা হবে তোমরা যেসব ছবি-মূর্তি তৈরি করেছ তাতে আত্মা দান কর”। অন্য রিওয়ায়েতে এসেছেঃ কিয়ামতের দিনে ছবি বা মূর্তি নির্মাতাদের (দোযখের মধ্যে) সর্বাধিক কঠিন শাস্তি হবে।’’ নাউযুবিল্লাহ!!! (বুখারী শরীফ ৫৯৫০, ৫৯৫১, মুসলিম শরীফ ২১০৯, নাসায়ী শরীফ ৫৩৬৪, মুসনাদে আহমাদ ৩৫৪৮, ৪০৪০)।

এর পরেও যেসকল গোমূত্র পানকারিদের অনুসারী মুসলিম নামধারী মূর্তিপূজারী পুলিশ নিজেদের মুসলিম ভাবে তাদের জন্যেও মহান আল্লাহ তাআলা মিসাইল হিসেবে একটি আয়াত শরীফ সেই ১৪৫০ বছর আগে নাযিল করে রেখেছেন। তিনি আল কুরআনে বলেনঃ (وَ مَا یُؤۡمِنُ اَکۡثَرُهُمۡ بِاللّٰهِ اِلَّا وَ هُمۡ مُّشۡرِکُوۡنَঅধিকাংশ মানুষ ঈমান আনা সত্ত্বেও মুশরিকদের (অন্তর্ভুক্ত)। (সূরা ইউসুফ আলাইহিস সালাম ১২/১০৬) ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যারা মহান আল্লাহকে সৃষ্টিকর্তা, রিযিকদাতা, জীবন এবং মৃত্যুদাতা বলে বিশ্বাস করে, কিন্তু ইবাদতের ক্ষেত্রে অন্যকে শরীক করে, উক্ত আয়াতে তাদেরকে মুশরিক বলা হয়েছে (ইবনু কাছীর উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রঃ; বুখারী, ‘তাওহীদ’ অধ্যায় ৪০ অনুচ্ছেদ)। আবু জাহল ও আবু লাহাবের ন্যায় আজকের যুগেও অধিকাংশ মানুষ মহান আল্লাহ তাআলাকে একক সৃষ্টিকর্তা হিসাবে বিশ্বাস করলেও ইবাদতের ক্ষেত্রে তারা শিরক করে থাকে যেমন আজকের ভারতীয় বাংলাদেশী অধিকাংশ মানুষ, পুলিশ সহ দুর্গাপূজার সময় করে থাকে। উক্ত আয়াত শরীফে তাদেরকেই উদ্দেশ্য করা হয়েছে।

এবার দেখি আইন কি বলে?

বাংলাদেশ সংবিধান এর তৃতীয় ভাগঃ “মৌলিক অধিকার এ ধর্মীয় স্বাধীনতা”

৪১। (১) আইন, জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতা-সাপেক্ষে

(ক) প্রত্যেক নাগরিকের যে কোন ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার রহিয়াছে।

এখন আমরা যদি ইয়াসিন রুবেলের কপি করা পোষ্টটার দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই তিনি বলেছেনঃ “ইসলামে মূর্তিপূজা এক ভয়ঙ্কর অপরাধ৷ অতএব কোন মুসলমান পূজাকে "উইশ" করতে পারেনা৷ পূজায় শুভেচ্ছা জানানো হারাম, স্পষ্ট কুফুরী”৷

উক্ত লেখায় ভারতীয় কোনো সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের কটাক্ষই করা হয়নি, না টার্গেট করেছে রানিং দুর্গাপূজাকে বরং তিনি তাঁর ধর্ম প্রচার ও নিজ ধর্মের অনুসারীদের সতর্ক করেছন। যা আমাদের সংবিধান অনুযায়ী বৈধ। কারণ উপরোক্ত আল কুরআনের উদৃতিই কেবল নয় এমনকি মুসলিমদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ আল কুরআন এর নির্দেশঃ (لَا تُشۡرِکۡ بِاللّٰهِ ؕؔ اِنَّ الشِّرۡکَ لَظُلۡمٌ عَظِیۡمٌ) তুমি মহান আল্লাহ তা’আলার সাথে শিরক কর না, (নিশ্চয়ই) শিরক হচ্ছে সবচেয়ে বড় যুলুম। (সূরাহ লুকমান আলাইহিস সালাম ৩১/১৩) অর্থাৎ কেউ যেনো শিরকে লিপ্ত হয়ে নিজের উপর যুলুম না করে, কারণ নিশ্চয় শির্ক হচ্ছে সবচেয়ে বড় যুলুম। (বুখারী শরীফ ৪৭৭৬) আর ইসলাম ধর্মের মূলনীতি অনুযায়ী অন্য কারো ধর্মের উৎসবে স্ব-ইচ্ছায় যোগদান করার অর্থই হল মহান আল্লাহ তা’আলার সাথে শিরক করা, কারণ মহান আল্লাহ তাআলা স্পষ্ট বলেছেনঃ (اِنَّ اللّٰهَ لَا یَغۡفِرُ اَنۡ یُّشۡرَکَ بِهٖ وَ یَغۡفِرُ مَا دُوۡنَ ذٰلِکَ لِمَنۡ یَّشَآءُ ۚ وَ مَنۡ یُّشۡرِکۡ بِاللّٰهِ فَقَدِ افۡتَرٰۤی اِثۡمًا عَظِیۡمًا) নিশ্চয় মহান আল্লাহ তাআলা শিরক ছাড়া অন্য যেকোন গুনাহ’র ব্যপারে যাকে ইচ্ছা তাকে ক্ষমা করবেন। আর যে (ব্যক্তি) মহান আল্লাহ তা’আলার সাথে শরীক করল, সে সত্যিই (মহান আল্লাহ তা’আলার ওপর) এক মহা অপবাদ আরোপ করল। (সূরাহ নিসা ৪/৪৮) আর যে শিরক করে মহান আল্লাহ তাআলার উপর অপবাদ দিলো সে মুশরিকেই পরিণত হলো। আর রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি অন্য ধর্মের লোকদের মতো আচরণ করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। (আবু দাউদ, মিশকাত, বুলুগুল মারাম) আর হযরত ওমর ফারূক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম বলেছেনঃ তোমরা মুশরিকদের উপসনালয়ে তাদের উৎসবের দিনগুলোতে প্রবেশ করো না। কারণ, সেই সময় তাদের ওপর মহান আল্লাহ তা’আলার গজব নাজিল হতে থাকে। (তারীখুল কাবীর, ইমাম বুখারী, হাদিস ১৮০৪; শুআবুল ঈমান, বায়হাকী শরীফ হাদিস ৮৭৬৯, মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, আহকামুল জিম্মাহ ১/৭২৩-৭২৪ এই কারণেই সাবাঈ শিয়া ধর্মাবলম্বীদের কাছে উমর ফারূক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম সর্বাধিক অপছন্দের ব্যক্তি।) রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেনঃ এক সময় আমার উম্মতের লোকেরা শিরকে লিপ্ত হবে, তাদের অনেকে মুশরিকদের সাথে মিশে যাবে। (ইবনে মাজাহ ৩৯৫২) অন্য ধর্মের মানুষের সাথে সামাজিকভাবে চলা, তাদের সাথে সদাচরণ করা, সৌজন্যমূলক চলাফেরা করার হুকুম ইসলামেও আছে। তবে মহান আল্লাহ তা’আলার সাথে শিরক, কবিরা গুনাহ, কোনোরূপ পাপাচার করা যাবে না। নির্দোষ সামাজিকতা ও নিষ্কলুষ অসাম্প্রদায়িকতা কিংবা মানবিক সম্প্রীতি ইসলামের চেয়ে উত্তম আর কোথায় আছে?

অতএব আইন অনুসারে নোয়াখালী জেলা পুলিশ উনাকে গ্রেফতারই করতে পারে না। উনাকে গ্রেফতার করে নোয়াখালী জেলা পুলিশ ব্যাক্তির মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করেছেন এবং সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। আর সংবিধান লঙ্ঘনকারী শাস্তি মারাত্মক, এমনকি মৃত্যুদন্ড ও হতে পারে যদি ভারতীয় সিন্ডিকেট বন্ধ হয়ে যায় কোনোদিন।

এখন কারো মধ্যে যদি ০.০১% ঈমান ও বিদ্যমান থাকে তাহলে সে অবশ্যই মূর্তিপূজার বিপরীত অবস্থান নিবে, এইটা যে হারাম কাজ অন্যকে জানাবে, আর একারণে কাউকে গ্রেফতার করার মানে হলো মহান আল্লাহ পাঁক, রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম সহ সমস্থ নবী রসূল আলাইহিমুস সালামকে কষ্ট দেওয়া, আর সরাসরি মুসলিম মিল্লাত ও ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করা। এর পরেও যারা নিজদের ইসলামের ঠিকাদার বলে দাবী করে চুপ থাকবে তারাও ঐসব তাগুত পুলিশদের মতো যারা অলরেডি মুরতাদ হয়ে গেছে আল কুরআন ও হাদিসের ১৮০x বিপরীত অবস্থান নিয়ে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুনঃ

এডমিন

আমার লিখা এবং প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বে আইনি।

0 ফেইসবুক: