Friday, October 21, 2022

হিন্দু ইউএনও রুলী বিশ্বাসকে সালাম না দেওয়ায়, খতিবকে ‍‍‍ছাগল-বেয়াদব বলে অপমান! আমরা কি মুসলমান?

সালাম না দেয়ায় উপজেলা পরিষদ মসজিদের খতিবকে গালিগালাজ করছে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুলী বিশ্বাস ঘটনায় জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই খতিব

কলারোয়া উপজেলা মসজিদের খতিব মুহাম্মাদ মতিউর রহমান বলেন, আমি তিন বছর ধরে কলারোয়া উপজেলা পরিষদ মসজিদের খতিবের দায়িত্ব পালন করছি। গত ১২ রবিউল আওয়াল রসুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের জন্ম ও অফাৎ দিবস উপলক্ষ্যে কীভাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠান করা যায় সেটি জানার জন্য গত ৮ অক্টোবর ইউএনও স্যারকে ফোন দেই। কিন্তু বেখেয়ালে সালাম দিতে ভুলে যাই। কিছুক্ষণ পর তিনি আমাকে আবার ফোন ব্যাক করে বলেন, আমাকে সালাম করলেন না কেন? আমার স্বাক্ষরে আপনার বেতন হয়। তখন আমি বলেছি, সামনে খেয়াল রাখবো। তখন তিনি বলেন, আপনি তো বেয়াদব মানুষের মতো আচরণ করছেন। আপনি নিজে বেয়াদব মানুষকে কী শেখাবেন, বলে বকাবকি করেন। তখন আমি আবারও বলি, স্যার সামনে থেকে খেয়াল রাখবো। আমি একটু বেখেয়াল হয়ে গিয়েছিলাম।

খতিব আরও বলেন, বুধবার (১৯ অক্টোবর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ইসলামী ফাউন্ডেশন চিঠি দিয়ে আমাকে মিটিংয়ে আমন্ত্রণ জানালে আমি সেখানে উপস্থিত হই সেখানে ইউএনও স্যার আমাকে পূর্বের দিনের সালাম না দেয়ার কথা তোলেন তখন আমি বলি, স্যার আমি একটু বেখেয়াল হয়ে গিয়েছিলাম এছাড়া আমি সবসময় সালাম দেই তখন তিনি বলেন, আমার চেহারা কি এতো ভালো যে আমার চেহারা দেখলে আপনি বেখেয়াল হয়ে যান? অন্যরা তো কেউ বেখেয়াল হয় না আপনি বেখেয়াল হয়ে যান বেয়াদব কোথাকার বের হন, বের হয়ে যান এখান থেকে যান, বের হয়ে যান এর আগে বলেন, ছাগলটা এখনও বের হয়নি! এই বলে সেখান থেকে আমাকে বের করে দেন ঘটনায় আমি জেলা প্রশাসক স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি

অভিযোগ রয়েছে, এর আগে মাস খানেক আগে মসজিদের মোয়াজ্জিন হাফেজ মাসুদুর রহমানকে তিনি বলেছেন, আপনি কি গাঁজা খান?

তিনি বলেন, সুনামের সঙ্গে আমরা দায়িত্বপালন করছি কিন্তু এর আগে কখনও কোনো ইউএনও স্যার এভাবে আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি

মিটিংয়ে উপস্থিত থাকা ইসলামী ফাউন্ডেশনের ফিন্ড সুপার ভাইজার শাহজাহান কবির বলেন, স্যার না বলায় সম্ভবত ইউএনও স্যার একটু মাইন্ড করেছেন মূলত সেকারণে আমাদের মিটিংয়ে একটু ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন স্যার বলছিলেন, আমাকে দেখেই আপনি বেখায়াল হয়ে যান অন্য কেউ তো হয় না এরপর তাকে মিটিং থেকে বের করে দেন

অভিযোগের বিষয়ে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস বলেন, আমি উপজেলা মসজিদ কমিটির সভাপতি বিভিন্ন সময় তাদের সঙ্গে আমার মিটিং হয় কোনো খারাপ ব্যবহারের ঘটনা ঘটেনি অথচ ভিডিওতে রুলির কাণ্ডকারখানা সবার সম্মুখে বিদ্যমান। (সূত্র)

কত বড় স্পর্ধা, ইসলাম বিদ্বেষী উগ্রপন্থী হিন্দু ইউএনোর? যেখানে সাধারণ মুসলিম পুরুষদের জন্য বেগানা মুসলিম নারীদেরকেও সালাম দেওয়ার অনুমতি নাই দ্বীন ইসলামে, সেখানে কিভাবে একজন ইমাম যিনি রাষ্ট্রের সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত তিনি কেন একজন জনগণের গোলামকে সালাম দিবেন আগ বাড়িয়ে তাও সেই ব্যক্তি মহিলা এমনকি ভিন্ন ধর্মাবলম্বী। এছারাও মিটিংয়ে উপস্থিত থাকা ইসলামী ফাউন্ডেশনের ফিন্ড সুপার ভাইজার শাহজাহান কবিরকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হোক, এই মূর্খ ইসলামিক সালামের সাধারণ হুকুম সম্পর্কে কিছুই জানেনা সে কিভাবে ইসলামী ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব পায়? তাছাড়া সেই বেআদব ইউএনোর পাশে বসা হাস্যজ্জল পুলিশ অফিসারের প্রতিও ধিক, একজন ইমামকে তার সম্মুখে জনগণের চাকর অপমান করে আর সে সেখানে প্রতিবাদ না করে উল্টো হাসতেছে।

প্রথমে জানা প্রয়োজন বেগানা মুসলিম নারীদের সালাম দেওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামের বিধান কি?

গায়রে মাহরাম মুসলিম নারীদের সাথে বিনা প্রয়োজনে সালাম আদান প্রদান করা যাবে না যেমন, অফিস-আদালত, পথে-ঘাটে, বাজারে-দোকানে চলাচল করা অবস্থায় তাদেরকে সালাম দেওয়া যাবে না তেমনি তারা সালাম দিলে তার উত্তর শুনিয়ে দেওয়া যাবে না

এমনকি বেগানা পুরুষ কোন বেগানা মুসলিম নারীকেও সালাম দিলে তাকে শুনিয়ে জবাব দেওয়া যাবে না চাইলে মনে মনে উত্তর দিতে পারবেন (দলিল সূত্রঃ ফাতাওয়া খানিয়া /৪২৩; আলইখতিয়ার /১৪৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/৭৮; রদ্দুল মুহতার /৩৬৯ মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৬৩০০; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ১৯৪৪৯; মিরকাতুল মাফাতীহ /৪৬৮; আননাহরুল ফায়েক /২৭১; রদ্দুল মুহতার /৬১৬, আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যা আল কুয়েতিয়া /১৬৬, আলাযকার ৪০৭, ফাৎহুল বারী ১১/৩৪)

অতএব প্রমাণিত হলো যে একজন মুসলিম পুরুষের ধর্মীয় হুকুম হচ্ছে সে কোন বেগানা নারীকে সালাম করবেনা। যদিও সে তার পরিচিত মামি, চাচি হয়ে থাকে। সেখানে কোন হিন্দু মহিলা জনগণের চাকর হয়ে এরূপ কোন বাসনাই রাখেনা। ইমাম সাহেব উনার ধর্মীয় হুকুম পালন করেছেন।

অবিলম্বে এই মুশরিক উগ্রপন্থী হিন্দু ইউএনওকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক, এবং বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনের ২৯৫ক ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে বাংলাদেশের যে কোনো নাগরিকের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অসদুদ্দেশ্যে লিখিত বা মৌখিক বক্তব্য দ্বারা কিংবা দৃশ্যমান অঙ্গভঙ্গি দ্বারা সংশ্লিষ্ট ধর্মটিকে বা কারো ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি অবমাননা করে বা অবমাননার চেষ্টা করে, সে ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তিকে দুই বছর পর্যন্ত মেয়াদের কারাদণ্ড অথবা অর্থদণ্ড কিংবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত করা যেতে পারে

আমি আইনের কাছে জানতে চাই হিন্দু মহিলার টিপ নিয়ে করা নাটকে যদি মুসলিম পুলিশ অফিসারের চাকুরী যায় তাহলে মুসলিম ইমামকে কটুক্তি করা হিন্দু ইউএনওর কেন যাবেনা?

মিটিংয়ে উপস্থিত থাকা ইসলামী ফাউন্ডেশনের মূর্খ ফিন্ড সুপার ভাইজার শাহজাহান কবিরের দাবি, স্যার না বলায় সম্ভবত ইউএনও স্যার একটু মাইন্ড করেছেন

সকল মূর্খদের জেনে রাখা উচিত যে, বাংলাদেশের রানিং জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, 'সরকারি কর্মকর্তাদের স্যার বা ম্যাডাম বলে সম্বোধন করতে হবে, এমন কোনো নীতি নেই' সূত্র (ডেইলি স্টার) কর্মকর্তাদের স্যার-ম্যাডামডাকতে হবে, এমন নীতি নেই: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী শিরোনামে নিউজ করে (প্রথম আলো) সরকারি কর্মকর্তাদের স্যার-ম্যাডামবলার রীতি নেই: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী (বিডি প্রতিদিন)

তাহলে কিসের ভিত্তিতে উগ্রপন্থী হিন্দু ইউএন মুসলিম মিল্লাতের সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি ইমাম/খতিবের থেকে সালামের প্রত্যাশা করে, না পেয়ে গালিগালাজ আর অপমান করার মতো দুঃসাহস দেখায়?

এছাড়াও ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে ম্যাডাম না বলে আপা বলায়স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর উপর ক্ষিপ্ত হয় পাবনার বেড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা খানম তখন ইউএনও সাংবাদিককে বলেছিল, “আপনি কতদিন ধরে সাংবাদিকতা করেন আপনি জানেন না একজন ইউএনওকে স্যার বা ম্যাডাম বলতে হয়এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কে কাকে স্যার বলবে?’ শিরোনামে গুরুত্বপূর্ণ লিখা প্রকাশ করেন সাংবাদিক জিয়া হাসান


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুনঃ

এডমিন

আমার লিখা এবং প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বে আইনি।

1 comment:

  1. এই ইউএনওর দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্তি না হলে আগামীতে আরো বড়বড় ঘটনা ঘটবে।
    বিচার চাই!

    ReplyDelete