গতানুগতিক ১৪০০ বছরের সুশৃঙ্খল ইসলামের তাহজিব তামাদ্দুন, তর্য-তরীকা বদলে দিতে উঠেপড়ে লেগেছে বাদশাহ আক্ববরের কপি রাজারবাগের পির দিল্লুর রহমান। বাদশাহ আক্ববরের দ্বীনে আক্ববরের মতো কথিত মুশরিক পির দিল্লুর রহমানও দ্বীনে রাজারবাগি চালু করতে চায়। মূলত মাঠ ফাঁকা পেলে সবাই-ই গোল দিতে চায়। তাদের প্রতিনিয়ত করে যাওয়া কুফুরির বিরুদ্ধে যখন ময়দানে প্রতিবাদ করা উচিৎ ছিলো যেকোন একটি মুসলিম সম্প্রদায়ের, কিন্তু গাফেল, জাহেল মুসলমানেরা তা করছেনা নিজের সাজানো গোছানো ঝামেলাহীন জীবনে, মামলাবাজ সিণ্ডিকেট রাজারবাগিদের মামলা আর অনলাইনে তাদের পোষ্য ইতরদের দ্বারা গালিগালাজ খাওয়ার ভয়ে। তখন আমাদের মতো প্রবাসে থাকা মানুষের দূর থেকে হলেও দায়িত্ব নিতে হচ্ছে দুনিয়ার কাজ কাম ফেলে। আর যেহেতু দেশে নাই, সেহেতু অনলাইন আর কলম-ই একমাত্র ভরশা। এতে যদি অন্তত কিছু মানুষ মুশরিক রাজারবাগীর চুঙ্গল থেকে বের হয়ে আসতে পারে।
আজ রাজারবাগিদের থেকে শিখতে হচ্ছে আল্লাহ পাক কে বাদ দিয়ে পিরের ছানা সিফতের বাহানায় তার ইবাদত করার নামই নাকি মারিফাত আর ইলমে তাসাউফ, কিন্তু মূর্খ মুরিদেরা জানেনা হাক্বিকতে এইসব মূলত দ্বীন-এ-রাজারবাগী, দ্বীন ইসলাম নয়।
এদের মতো হুবুহু আচরণ আরবের সেই সময়ের মুশরিকরাও করতো, তারাও মহান আল্লাহ পাক উনাকে এক বলে বিশ্বাস করতো কিন্তু তারা মূলত দেব দেবির ছানা সিফতের বাহানায় যেটা করতো সেটা মূলত কুফর ছিলো, কিন্তু সেটাকে তারা শিরক বলে গন্য করতনা, অথচ তা করার কথা ছিলো মহান আল্লাহ পাকের জন্যে। তখন আল্লাহ পাক তাদের হেদায়েতের জন্য পবিত্র আল কুরআন পাঠালেন রসূলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লামের নিকট। তিনি সেই কুরআন দ্বারা তাদের হেদায়েতের পথ বাতলে দিলে উনাকে তারা কবুল তো করেইনাই উল্টো অপবাদ দিতে থাকলো, ঠিক একিই কুরআনের বাণী দ্বারা আজকে যখন রাজারবাগি মুশরিকদের আহ্বান করা হয় হক্ব পথের দিকে ফিরে আসার জন্য, তখন তারা তা শুনবেনা, পড়বেনা, মানবেনা উল্টো কুরআনের বিপরীতে নবীকে যেরূপ গালি দিতো সেই একিই গালি নবীর উম্মতকে দিচ্ছে।
এমন হাই লেবেলের মুশরিক আর এতো মারাত্মক শিরক আর কুফরে লিপ্ত এরা যে, সৃষ্টির ইতিহাসে আমি অনেক মুশরিক আর কাফেরের ইতিহাস পড়েছি কিন্তু এদের ধারে কাছেও কারো আসার কোন ক্ষমতাই নাই, এদের কুফুরি দেখে চুপ থাকা প্রায় অসম্ভব, একারণেই দুই বছর অফ থাকার পরেও আজকে ব্লগ নতুন করে খুলে বাধ্য হয়েই ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যায় করে এদের মুখোশ উন্মোচনের লিখা লিখতে হচ্ছে, অথচ এ সময়টা তুরষ্কের যেকোন প্রতিষ্টানে দিলে মাসে লাখ টাকা এক্সট্রা ইনকাম আসতো, কিন্তু এদের কুফর এতো মারাত্বক আকার ধারন করেছে যে নমরূদ, ফেরাউন, সাদ্দাদ, আদ, সামুদ জাতীর মুশরিক কাফেরেরাও এদের ধারে কাছে নাই, মুসলমানদের মধ্যে যে ৭২ বাতিল ফেরকা হবে, এর মধ্যে যেগুলি প্রকাশ হয়েছে সেইসব গুমরাহ ও এদের ধারে কাছে আসতে সক্ষম না, দেওয়ানবাগি, কুতুব্বাগি, শিয়া, রাফেজী, কাদিয়ানিও না। এদের কেউ-ই এতো মারাত্বক কুফর করেনাই যা আজকে রাজারবাগিরা করে যাচ্ছে। বাকিদের কুফর ছিলো ঘোলা পানির মত, যা মানুষ দেখলেই বুঝে ফেলতো এই পানি তো ভালো না এটা খাওয়া যাবেনা, কিন্তু এদেরটা হলো ডিস্ট্রিল ওয়াটেরের মতো স্বচ্ছ পরিষ্কার স্লো পয়জন, তাই মানুষ ধোঁকা খায় খুব সহজে, এদের ধোঁকার মূল দুই অস্ত্র হলো নিজেদের আহলে বাইত বলে দাবি করা, যা ১০০% মিথ্যা আমি অলরেডি প্রমান করে দিয়েছি (এখানে পড়তে পারেন)। আর অন্যটি হলো এদের এক রঙ্গের সাধা পোষাক। তাদের ঐটা ইসলামিক পোষাকের অন্তর্ভুক্ত হলেও তারা এটাকে তাদের লেবেল হিসেবেই সমাজে জারি করেছে, যাতে এই পোষাক পরিহিতকে দেখলেই বোঝা যায় যে সে একজন রাজারবাগী, অথচ আজকে একজন মানুষের পোশাক দেখার পরে অন্যজনের মাথায় এটা আসা উচিৎ যে, সে একজন মুসলিমকে দেখছে, দেখছে একজন আশিকে রসূলকে, যে নবীর সুন্নত অনুসরণে পোশাক পরিধান করছে, কিন্তু তারা খুব সুক্ষভাবে এই নিদৃষ্ট পোশাক সবার মধ্যে দেখতে চায় যেনো মানুষ যেদিকে তাকায় দেখে রাজারগবাগির মুরিদ, এতে দুইটা ফায়দাঃ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে তেমন বাঁধা পাবেনা, এবং যাকাত ফিতরার ব্যবসা হবে আরো বেশি। যদিও যাকাত ফিতরার ব্যপারে তাদের আক্বিদাহ খুবই ডেঞ্জারাস, যা অনুসরণ করলে এই সমাজে কোনদিন কোন ফকির, মিসকিন আর যাকাত ফিতরার অধিকারী হবেনা, দেখতে পারেন (এখানে পড়তে পারেন)।
এবার মূল প্রসঙ্গে চলে আসি, আপনারা অনেকেই অন্ধ হয়ে আছেন যারা রাজারবাগের মুরিদ, আবার যারা নন তারাও অনেকে জানেন না যে কুফুরির সর্বোচ্চ স্থানে আজ রাজারবাগিরা, তারা জাহেলিয়াতের শেষপ্রান্তে চলে এসেছে। আজকে যে বাক্যেই তারা আল্লাহ পাক-কে পাবে, সেখান থেকেই পবিত্র “আল্লাহ” নামটি ডিলিট করে তারা তাদের পিরের নাপাক নাম (দিল্লুর) মহান আল্লাহ তা’আলার পবিত্র নামের সাথে পরিবর্তন করে দেবে নাউযুবিল্লাহ!!!! নাউযুবিল্লাহ!!!! নাউযুবিল্লাহ!!!!
যেমনঃ
- মাশাআল্লাহ থেকে আল্লাহ ডিলিট করে মাশা-মামদুহ অথবা মাশা-শায়েখ কিংবা মুরশিদ।
- ইন’শা+আল্লাহ থেকে আল্লাহ ডিলিট করে ইন’শা+মামদুহ অথবা ইন’শা+শায়েখ কিংবা মুরশিদ।
- আল+হামদু+লিল্লাহ থেকে আল্লাহ ডিলিট করে আলহামদু+লি+মামদুহ অথবা শায়েখ, মুরশিদ।
- সুবহান+আল্লাহ থেকে আল্লাহ ডিলিট করে সুবহানা+মামদুহ অথবা সুবহানা+শায়েখ, মুরশিদ।
(আরো আছে, আজকে আপাতত এই কয়টার-ই আলোচনা হবে দলিল প্রমান দিয়ে)
তাদের এইসব কর্মকাণ্ড দেখে অনেক প্রশ্ন জাগে মুমিনের অন্তরে। যার সামান্য কিছু উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করলামঃ
- পূর্ববর্তী কেউ কি এরূপ করেছেন যাদের অনুসরণ আমাদের জন্য ওয়াজিব কোন ইখতেলাফ ছাড়া?
উত্তরঃ না, এরূপ কেউ করেন নাই, সুন্নতে রসূল, সুন্নতে খোলাফায়ে রাশেদিন, সুন্নতে সাহাবাদের কোন একজনের ও এরূপ আমল ছিলোনা। এমনকি না কোন মাজহাবের ইমাম, ফকিহ, ইমাম, মুস্তাহিদ, মুহাদ্দিস, মুজাদ্দিদ, অলি, আবদাল এরূপ করেছেন। না আছে কোন ইজমায়ে উলামায়ে কেরাম। (মুশরিক রাজারবাগিদের সাথে তাদের থেকে কম দরজার কুফুরিতে থাকা গুমরাহ দেওয়ানবাগি, কুতুব্বাগিও এইসব বিষয়ে ইজমা করবেনা।)
- এরূপ পবিত্র যিকরের বাক্য থেকে মহান আল্লাজীর নাম কেটে কোন মানুষের নামে লাগানো ও সেই মানুষের উপর করা যিকর যায়েজ?
উত্তরঃ না, বরং হারাম ও কুফরি কাজ।
- যদি তা কোন আহলে বাইত হয়?
উত্তরঃ আহলে বাইত তো দূরের বিষয়, সর্বশ্রেষ্ট সৃষ্টি যিনি রসূলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম। উনার নামেও তা পাঠ করা হারাম কুফর।
এবার আসুন কিভাবে কেনো এইসব কুফর, হারাম, নিষিদ্ধ কুরআন হাদিসের আলোকে তা জেনে নেই।
“মাশাআল্লাহ” হল একটি আরবি বাক্যাংশ, “যা তৃপ্তি, আনন্দ, প্রশংসা, বা কোন একটি ঘটনা বা ব্যক্তিকে শুধু উল্লেখ করে তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য ব্যবহার করা হয়”। মুসলিম বিশ্বে এটি মহান আল্লাহ তা’আলার প্রতি যেকোন ভালো কাজের পরিপ্রেক্ষিতে সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত হয়। মাশাআল্লার আক্ষরিক অর্থ হলো “মহান আল্লাহ তা’আলা যা ইচ্ছা করেছেন” কিংবা “মহান আল্লাহ তাআলার যা মর্জি হয়েছে তাই ঘটেছে” অর্থে; এটি অতীতকাল ব্যবহার করে, কিছু ভাল হয়েছে বলার জন্য ব্যবহৃত হয়। ইনশাল্লাহ এর আক্ষরিক অর্থ “যদি মহান আল্লাহ তা’আলার মর্জি হয়” এটিও একইভাবে ব্যবহৃত হয় তবে তা ভবিষ্যতের ঘটনাকে নির্দেশ করে।
প্রথমে এই হাদিস শরীফ খানা দেখে নিন, এতে পরের আলোচনা বুঝতে সহজ হবে। হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী করিম ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম-কে বললোঃ (عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: قَالَ رَجُلٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم: مَا شَاءَ اللَّهُ وَشِئْتَ، قَالَ: جَعَلْتَ لِلَّهِ نِدًّا، مَا شَاءَ اللَّهُ وَحْدَهُ) মহান আল্লাহ তা’আলার মর্জি এবং আপনার মর্জি। তিনি বলেনঃ তুমি আল্লাহ তা’আলার সাথে শরীক করলে। বলো, একমাত্র আল্লাহ তা’আলার মর্জি। (আল-আদাবুল মুফরাদ ৭৮৩, আহমাদ, ইবনে মাজাহ, নাসাঈ, দারিমী, তাহাবী)
পাঠক স্পষ্ট হাদিস, চাইলে শরাহ ও দেখে নিতে পারেন শামেলায় (এখানে), লোকটি যখন বল্লঃ (مَا شَاءَ اللَّهُ وَشِئْتَ) মা-শা-আল্লাহু ওয়া শেয়’তা। অর্থাৎ আল্লাহ পাঁকের এবং আপনার যা ইচ্ছা হয়। তখন সাথে সাথে রসূল ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম তাকে কাউন্টার দিলেন, কারেকশন করে দিলেন, অথচ এই লোক কিন্তু মুশরিক রাজারবাগিদের মতো আল্লাহ পাঁকের নাম ডিলিট করে নাই মা-শা-আল্লাহ থেকে, বলেনাই মা-শা-রসুলুল্লাহ বরং বলেছে মা-শা-আল্লাহু ওয়া শেয়’তা, এর পরেও রসূল ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম তাকে কাউন্টার দিলেন এই বলে যে, "তুমি শিরক করলে" আল্লাহ পাঁকের ইচ্ছার সাথে আমার ইচ্ছাকে অন্তর্ভুক্ত করে। এরূপ কাজ কখনো করবেনা।
অথচ আজকে আমরা কি দেখছি?
সাধারণ এক আদম সন্তান দিল্লুর রহমান অরূন, যার কোন অবস্থান ই নাই সৃষ্টিতে, না সে আখেরি রসূলের মতো কেউ, না সে আম্বিয়ায়ে কেরামের মতো কেউ, না সে সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত। অথচ এই জাহিল মুশরিকের মুরিদেরা একে খোঁদা বানিয়ে নিয়েছে, যেখানে আল্লাহ পাঁকের সাথেও রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লামের ইচ্ছা বলায় শিরক হচ্ছে বলছেন খোদ রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম, সেখানে সরাসরি আল্লাহ পাক-কে ডিলিট করে দিল্লুর নাপাক মুরিদেরা তাদের পিরের নাম লাগানো যায়েজ করে দিচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ!!!
এখানে দেখুন সুবহান-আল্লাহ কি জিনিস, কোন ক্যাটাগরির বাক্যাংশ এটি, আর এর হুকুম আহকাম কি, মহান আল্লাহ পাঁক ও রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম কি শিক্ষা দিলেন আর মুশরিক রাজারবাগি কি শিক্ষা দিচ্ছে সুবহানা-মামদুহ বলিয়ে।
এখানে দেখুন আলহামদুলিল্লাহ বাক্যাংশের ফযিলত ও ব্যবহারের হুকুম, যা না করলে কি কি হতে পারে দুনিয়া ও আখিরাতে। খোদ রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম কি শিক্ষা দিলেন! আর মুশরিক রাজারবাগি কি শিক্ষা দিচ্ছে আল’হামদু-লি-মামদুহ বলিয়ে।
এখানে দেখুন ইন’শা-আল্লাহ না বলায় খোদ রসূলে পাঁক ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লামের জন্য ওয়াহী আসা স্থগিত হয়ে যায়, সোলায়মান আলাইহিস সালামের সন্তান লাভ করা হয়না। এর পরিপ্রেক্ষিতে যারা শিরকি ইন’শা-মামদুহ বলে তাদের কি কি বন্ধ হতে পারে? কি কি থেকে তারা মাহরূম হতে পারে?
যারা পবিত্র কুর'আনুল কারীম ও হাদিস শরীফের ফায়সালার সামনে আত্মসমর্পণ করে না তারা জাহেল ও অভিশপ্ত ইবশের অনুসারী। আল্লাহ পাকের ওয়াদা অনুযায়ী তারা জাহান্নামি।
ReplyDeleteআপনার এই দলিল ভিত্তিক সহজ এবং বোধগম্য লেখা পড়ে রাজারবাগি মুরিদের মধ্যে ( নিজের অজ্ঞতায় কিংবা শয়তানের ধোকায় পড়ে) যেসব ভাই বোন আছেন তারা তাওবা করে পবিত্র ইসলামের সুমহান ছায়াতলে ফিরে আসবেন। এবং ভন্ডপীর দিল্লুর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবেন।
নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক তাওবা কবুলকারী। যদি কেউ খাটি নিয়তে তাওবা করে ফিরে আসে।
Hayre nadan
ReplyDelete