Friday, September 16, 2022

আল্লাহ তা'আলাকে ভূলে দুনিয়ার পিছনে ছুটে কি সচ্ছল জীবনযাপন সম্ভব?

হাক্বিকি দ্বীন ইসলাম তালাশ করতে গিয়ে, আজ অনেক বন্ধু বান্ধব আর আত্মীয়স্বজনকে পরিত্যাগ করতে হয়েছে। অনেকে ইচ্ছাকৃত গাফেল হয়ে আছে। অনেকে আবার দ্বীন থেকে দূরে সরে গেছে। অনেকে নামায পরিত্যাগের মতো ভয়ঙ্কর কাজ করেছে অথচ নামায পরত্যাগকারি হলো কাফের মুশরিকদের অন্তভুক্ত। আবার অনেকে ফরজ তো পালন করছে, কিন্তু কেবল নামায রোজাই যে যথেষ্ট না মুসলিম থকতে হলে এটা বুঝতে চায়না। বুঝতে চায়না আখিরাতের জীবন সহজ করতে হলে, দুনিয়ার অভাব অনটন আর সমস্যা থেকে বেঁচে থাকতে হলে দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করতে হবে। অনেক বোন নামায রোজা করলেও পর্দা করেনা, অথচ পর্দাও নামায রোজার মতো ফরজ একটি কাজ মহান আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে। এই বেপর্দা হওয়া যে নিজেকে জিনায় লিপ্ত করে অন্যকেও জিনায় লিপ্ত করার মুল পথ বা দরজা, এটাই অনেকে বুঝেনা। মূলত দুনিয়ার প্রতি চরম আসক্তি, দুনিয়ার প্রতি মজে থাকা গাফেল মন এদের দ্বীন থেকে সরিয়ে রাখে, যার কারণে আজ নারী পুরুষ উভয় দল মহান আল্লাহ পাঁক থেকে দিন কে দিন দূরে সরে যাচ্ছে, মাল সম্পদ আর রিযিকের তালাশে তারা এতো ব্যস্থ একেকজন যে, আজকে তারা ছেঁড়ে দিচ্ছে ইবাদত, করছেনা পর্দা কিন্তু এতে তাদের কোন ফায়দাই মূলত হচ্ছেনা, অথচ আবূ হুরায়রাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য তুমি সময় বের করে নাও। আমি তোমার অন্তরকে ধন-সম্পদ দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিব এবং তোমার দরিদ্রতার পথ বন্ধ করে দিব। আর যদি (তুমি) তা না কর, তবে আমি তোমার (দুই) হাতকে (দুনিয়ার) ব্যস্ততা দিয়ে পূর্ণ করে দিব এবং তোমার অভাবকেও মিটাবো না। (তিরমিযি শরীফ ২৪৬৬, ইবনে মাজাহ শরীর ৪১০৭)

উক্ত হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের কি ম্যাসেজ দিচ্ছেন তা বোঝা প্রত্যেকটি মানুষের জন্যে অত্যন্ত জরুরি। মানুষ দুনিয়ার প্রতি এমন আসক্ত যে আজকাল ভুলেই গেছে তাঁকে মহান আল্লাহ তা’আলা কেনো সৃষ্টি করেছেন। আজকে সে কুকুরের মতো সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করেও তার অভাব মেটাতে পারছেনা, কুকুরের মতো দিন রাত কাজ করেও শান্তি পায়না, এর পরেও বুঝতে চেষ্টা করেনা আসল সমস্যা কোঁথায়। কেউ যদি সমস্যাই বুঝেনা, তাহলে সে কোনোদিন সমাধানও পাবেনা। যাইহোক, এবার মূল বিষয়ে চলে আসি, মহান আল্লাহ পাঁক আমাদেরকে বলতে চাচ্ছেন যে উনার ইবাদতে আত্মনিয়োগ করতে, তাহলে উনি আমাদের অন্তরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন এবং আমাদেরকে সচ্ছলতা দিবেন, তাহলে আমরা জমিনে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারবো, আর যদি তা না করি তাহলে আমাদের দুই হাত দুনিয়ার ব্যস্ততায় ভরে দিবেন এবং দারিদ্রতাও দূর করবেন না। এখন উনার ইবাদত আসলে কি? নামায রোজাই কি কেবল উনার ইবাদত? জি না ভাই ব্রাদার, এগুলি তো ফরজ কাজ, ৫ ওয়াক্ত নামায তো মহান আল্লাহ পাঁক ফরজ করেছেন, কেউ নামায না পড়লে সে কাফের মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত, তাই ফরজ আদায়ের পরেও যারা মহান আল্লাহ পাঁক উনার যিকির ফিকির আর নফলে মগ্ন থাকবে, তারাই মূলত আল্লাজীর ইবাদতে লিপ্ত থাকবে। আর যারা এরূপ ফরজ ওয়াজিব সুন্নত আদায় করে নফল ইবাদতে মত্ত হবে, তারা মহান আল্লাহ তাআলার খালিস বান্দা হয়ে যাবে, আর যখন কেউ আল্লাজির খালিস বান্দা তথা উনার বন্ধু হয়ে যাবে, তাদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোন ওলীর/বন্ধুর সঙ্গে দুশমনি রাখবে, আমি তার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করব। আমি আমার বান্দার উপর যা কিছু ফরয করেছি (যেমনঃ নামায, যাকাত, রোজা, হজ্জ, জ্বিহাদ), সে মূলত এইসব দ্বারাই আমার নৈকট্য লাভ করে থাকে, (তবে) আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদাতের মাধ্যমেই আমার অধিক নৈকট্য লাভ করে থাকে। আর যখন সে (ফরজের পাশাপাশি অত্যাধিক নফল ইবাদত দ্বারা) আমার নৈকট্য লাভ করে ফেলে, তখন আমি তাকে আমার এমন মুহব্বতের মানুষ বানিয়ে ফেলি যে, আমিই তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শুনে। আমিই তার চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দেখে। আর আমিই তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমিই তার পা হয়ে যাই, যা দ্বারা সে চলাফেরা করে। (আর তখন) সে যদি আমার কাছে কিছু চায়, তবে আমি নিশ্চয়ই তাকে তা দান করি। আর যদি সে আমার কাছে (দুশমনঃ মানুষ কিংবা শয়তান) থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তাহলে আমি অবশ্যই তাকে পানাহ দান করি। আর আমি যখন কোন কাজ করতে চাই, তখন আমি তা করতে কোন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগি না, যতটা দ্বিধা করি মু’মিন বান্দার প্রাণ বের করে নিতে। কারণ সে মৃত্যু যন্ত্রনাকে অপছন্দ করে আর আমি তার কষ্ট পাওয়াকে অপছন্দ করি। (বুখারি শরীফ ৬৫০২)

এখন মহান আল্লাহ পাঁক তো বলেই দিলেন, সে যদি আমার কাছে কিছু চায়, তবে আমি নিশ্চয়ই তাকে তা দান করি, কিন্তু শর্ত হচ্ছে, সে আমার বন্ধুর কাতারে আসতে হবে, আর এর অন্যতম ওয়ে হচ্ছে সকল ফরজ, ওয়াজিব, বাধ্যতামূলক সুন্নত আদায়ের পর নফল ইবাদত তথা, সব সময় আমার যিকির ফিকির করে আমার এমন নৈকট্য লাভ করবে যে আমি তাঁকে মুহব্বত না করে থাকতেই পারবনা, আর যদি সে তা না করে, তাহলে আমি তার দুই হাতকে দুনিয়ার ব্যস্ততা দিয়ে পূর্ণ করে দিব এবং তার অভাবও মিটাবো না। 

আজ মানুষ দুনিয়া নিয়ে এমন ব্যস্ত যে তার খবর ই নাই, কায়েনাতের মধ্যে থাকা এই ক্ষুদ্র দুনিয়ার আদতে কোন মুল্যই নাই মহান আল্লাহ তা’আলার নিকট। রাসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যদি দুনিয়ার মূল্য মহান আল্লাহ তা’আলার কাছে মাছির একটি পাখার সমমূল্যও হত, তা‘হলে তিনি কোন কাফিরকে এক ঢোক পানিও পান করতে দিতেন না। (তিরমিযি শরীফ ২৩২০) আউযুবিল্লাহ, আল্লাজির পানাহ চাই, চিন্তা করা যায়? এই দুনিয়ার পেছনে একজন মুমিন কীভাবে দিন রাতে তার রবের স্বরন ভুলে ছুটতে পারে?

অথচ এই হচ্ছে আমাদের চাহিত দুনিয়ার নমুনা যাকে আমরা এমনভাবে আঁকড়ে ধরে আছি, যার সম্পর্কে, “আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম একটি (খালি) চাটাইয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন, তা হতে উঠলে উনার অযুদ মোবারকে চাটাইয়ের দাগ পড়ে যায়। তখন ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু আরয করলেন, ইয়া রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম! আপনি যদি আমাদেরকে নির্দেশ দিতেন তবে আমরা আপনার জন্য একখানা (আরামের) বিছানা তৈরি করে বিছিয়ে দিতাম। তিনি তখন বললেন, দুনিয়ার সাথে আমার কি সম্পর্ক? বস্তুতঃ আমার ও দুনিয়ার দৃষ্টান্ত হল সেই পথিকের ন্যায়, যে একটি গাছের নীচে ছায়ায় কিছু সময়ের জন্য বিশ্রাম নেয়, অতঃপর বৃক্ষটিকে ছেড়ে চলে যায়। (তিরমিযী শরীফ ২৩৭৭, ইবনু মাজাহ শরীফ ৪১০৯, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত তারহীব ৩২৮২, মুসনাদে বাযযার ১৫৩ শুআবুল ঈমান ১০৪১৫) আউযুবিল্লাহ, আল্লাজির পানাহ চাই। এই হলো দুনিয়ার হাক্বিকত, অতচ আমাদের ভাবখানা এমন যে আমরা এইখানে চিরস্তায়ী থাকবো। তবে মানুষ ধোঁকা খাচ্ছে মূলত আজকের দুনিয়ামূখি আলীম উলামা, আর পির দবেশদের কারণে। উদাহরণস্বরূপ এসির ভেতর থাকা রাজারবাগি কুতুব্বাগি পির, দেওবন্দি সলাফি স্কলারদের লাক্সারিয়াস জীবনযাপন যখন তাদের অনুসারীরা প্রত্যক্ষ করে তখন তারা বিভ্রান্তই হয় বটে, তখন তারাও ভাবে তাদের যিনি একমাত্র অনুরসনীয় (নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য রসুল ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লামের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। ৩৩/২১) সেই রসূল ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম ও সম্ভবত এরূপ জীবনযাপন করেছেন, নাউযুবিল্লাহ। এর কারণে আজ মানুষ প্রচুর দুনিয়ামুখি, দ্বীন থেকে ধিরে ধিরে সরে যাচ্ছে, আর ধন সম্পদের মোহে পড়ে ঈমান হারাচ্ছে মহান আল্লাহ তা’আলাকে ভুলে গিয়ে, অথচ রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আমার রব আমার নিকট মক্কার বাতহা অর্থাৎ কংকরময় এলাকা আমার জন্য স্বর্ণে পরিণত করার প্রস্তাব রাখেন। আমি বললাম, হে আমার রব! কোন প্রয়োজন নেই, বরং আমি একদিন তৃপ্তির সাথে খাবো আর একদিন ক্ষুধার্ত থাকব। একই কথা তিনি কয়েকবার (বলার পর) বললেন। আর যখন ক্ষুধার্ত থাকব তখন বিনীতভাবে আপনার নিকট প্রার্থনা করব ও আপনাকেই স্বরন করব এবং যখন তৃপ্তির সাথে খাবো তখন আপনার শুকরিয়া আদায় করব ও আপনার প্রশংসা করব। (তিরমিযি শরীফ ২৩৪৭)।

অথচ ফিকির করে দেখুন আমরা ৩ বেলা কেবল পেট ভরে খাই ই না শুধু, বরং দৈনিক কতো এক্সট্রা খাবার খাই তার পরেও অভিযোগের শেষ নাই। মূলত ভুঁড়ি ওয়ালা রাজারবাগি পীরদের মতো, সলাফি, দেওবন্দি মোটাতাজা গোশতের ডেরি ওয়ালা কথিত উলামাদের দেখে মানুষ ভাবে এটাই মনেহয় ইসলামিক জীবন, অথচ এরা যদি জানতো যে, রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলছেনঃ কোন ব্যক্তি তার উদর অপেক্ষা মন্দ কোন পাত্রকে ভর্তি করেনি। আদম সন্তানের জন্য এই পরিমাণ কয়েক লোকমাই যথেষ্ট যা দ্বারা সে নিজের কোমরকে সোজা রাখতে পারে (ও মহান আল্লাহ তা’আলার ইবাদত করতে পারে)। যদি এর অধিক খাওয়ার প্রয়োজন মনে করে তবে এক-তৃতীয়াংশ খাদ্য যেন সে খায়, আর এক তৃতীয়াংশ পানীয় এবং এক তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য খালি রাখে। (ইবনে মাজাহ শরীফ ৩৩৪৯) অথচ আজকে ফিকির করে দেখলে দেখা যাবে, মানুষ দুনিয়াকে এমনভাবে আঁকড়ে ধরে রয়েছে যে, ধন সম্পদ আর খাবারের পেছনেই তার দিন রাত সে পার করে দিচ্ছে মহান আল্লাহ তা’আলাকে ভুলে। সকালে উঠে কাজে যায়, সারাদিন দুনিয়ার কাজ করে খাবারের ধান্দায়, বিকালে বাসায় ফিরে পেট ভরে খাবার খেয়ে পরের দিনের কাজের জন্য ঘুমাতে যায়। এই হলো আজকের দুনিয়ার কথিত মুসলমানদের জীবন। সে মনে করে, মহান আল্লাহ পাঁক তাকে একারণেই পাঠিয়েছেন দুনিয়ায়, সে সারাদিন মহান আল্লাহ পাঁক উনাকে ভুলে কুকুরের মতো ঘরে বাহীরে কাজ করবে ধন সম্পদ আর খাবারের জন্য, আর রাতে নরম বিছানায় ঘুমিয়ে মৃত্যুর পর জান্নাতে চলে যাবে বিনা বাদায়। অথচ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু নবী করীম ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, কিয়ামতের দিন আদম সন্তানের পদদ্বয় একচুলও নড়তে পারবে না যে পর্যন্ত না তার নিকট হতে পাঁচটি বিষয়ের উত্তর চাওয়া হবে বা পাওয়া যাবেঃ  

(১) তার বয়স সম্পর্কে-সে তা কি কাজে ব্যয় করেছে?

(২) তার যৌবন সম্পর্কে- সে তা কি কাজে ক্ষয় করেছে?

(৩) তার মাল-সম্পদ সম্পর্কে-সে তা কোন উৎস থেকে উপার্যন করেছে?

(৪) আর তা সে কোথায়-কোথায় ব্যয় করেছে?

(৫) এবং যেই ইলম হাসিল করেছিল তা অনুযায়ী কি সে আমল করেছে? (তিরমিযি শরীফ ২৪১৬)

এখন জানার বিষয় হলো, এই যদি হয় কিয়ামত দিবসের অবস্থা, তাহলে এর প্রস্তুতি নিতে হবেনা? নাকি উপরোক্ত নিয়ামত পেয়েই গাফেল হয়ে থাকলে হবে? একারণেই রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম, “জনৈক ব্যক্তিকে নসীহতস্বরূপ একদিন বললেন, পাঁচটি জিনিস আসার পূর্বে পাঁচটি কাজ করাকে বিরাট নিয়ামত মনে করবেঃ

(১) তোমার বার্ধক্যের পূর্বে যৌবনকে।

(২) রোগাক্রান্ত হওয়ার পূর্বে সুস্বাস্থ্যকে।

(৩) দরিদ্রতার পূর্বে অভাবমুক্ত থাকাকে।

(৪) ব্যস্ততার পূর্বে অবসর সময়কে। এবং

(৫) মৃত্যুর পূর্বে হায়াতকে।

(সহীহুল জামি ১০৭৭, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত তারহীব ৩৩৫৫, মুসান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ্ ৩৪৩১৯, শুআবুল ঈমান ১০২৪৮, আল মুসতাদরাক লিল হাকিম ৭৮৪৬)।

এখন যারাই এই বিষয়ে গাফেল হবে তারা আখিরাতে মারাত্বক ধরা খাবে। এ ব্যপারে আল কুরআনে মহান আল্লাহ পাঁক বান্দাদের নসিহত করেন এইভাবে, মহান আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ যে ব্যক্তিকে জাহান্নামের আগুন হতে রক্ষা করা হল এবং জান্নাতে দাখিল করা হল, অবশ্যই সে ব্যক্তি সফলকাম হল, কেননা পার্থিব জীবন ছলনার বস্তু ছাড়া আর কিছুই নয়। (আল কুরআন ৩/১৮৫) অতঃপর বলেনঃ ছেড়ে দাও ওদেরকে, ওরা খেতে থাক আর ভোগ করতে থাক, আর (মিথ্যে) আশা ওদেরকে উদাসীনতায় ডুবিয়ে রাখুক, শীঘ্রই ওরা (ওদের আমলের পরিণতি) জানতে পারবে। (আল কুরআন ১৫/৩)। উপরোক্ত আয়াতের পরিপ্রেক্ষিতে মাওলা হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম বলেন, এ দুনিয়া পেছনের দিকে যাচ্ছে, আর আখিরাত সামনের দিকে এগিয়ে আসছে। এ দু’টির প্রতিটির আছে সন্তানাদি। অতএব তোমরা আখিরাতের সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত হও। দুনিয়ার সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। কারণ, আজ ‘আমলের দিন, অতএব হিসাব নেই। আর আগামীকাল হিসাব থাকবে, অথচ কোন আমল নেই। (বুখারি শরীফ ৫৯৭৫ ইঃফাঃ, ৬৪১৭ আন্তর্জাতিক)

অতএব হে প্রিয় ভাই ও বোনেরা এর পরেও যদি আপনাদের ঘুম না ভাঙ্গে দুনিয়ার মোহ থেকে বেরিয়ে আসতে, তাহলে আমার আর কিছুই বলার নাই। মহান আল্লাহ পাঁক সবাইকে হেদায়েত দিন, হেফাজতে রাখুন, বিশেষ করে আমার ক্বারিয়াতুল ইসলামিয়ার অধিবাসী প্রত্যেক ভাই ও বোনকে, যারা একটি ইসলামিক গ্রামের স্বপ্ন দেখছেন, যেখানে আমরা সবাই মিলে মিশে ইসলামিক সমাজ কায়েম করবো ইন’শা-আল্লাহ।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুনঃ

এডমিন

আমার লিখা এবং প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বে আইনি।

0 ফেইসবুক: